প্রিয়মুখের সন্ধান

মুহম্মদ মাসুদ ২০ জানুয়ারী ২০২০, সোমবার, ০৮:৩৪:০৪অপরাহ্ন অণুগল্প ১৮ মন্তব্য

ঘুমের শহরে তখন গরমের দাবদাহে শরীরের চামড়া জুড়ে ঘামের শিশিরবিন্দুর অতিষ্ঠে উইপোকাগুলোপ লাফিয়ে লাফিয়ে উড়ছে। আর সে শব্দের উৎকন্ঠা আওয়াজে রূপ-প্রতিরূপ কারো চেহারার আলোকোজ্জ্বলে দেহ থরথর করে কাঁপতে শুরু করেছে। অবশেষে গোলগাল মুখউজ্জ্বল বর্ণের মানুষটি মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই বলে উঠলাম, ‘আমি কিছু করিনি। আমি কিছু করিনি।’
শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক হওয়ার পর সেই তথাকথিত মানুষটি জিজ্ঞেস করলো, ‘এখন কি স্বাভাবিক হয়েছো?’
দুহাত তখন চোখ ঘষামাজায় ব্যস্ত। ভয় অনুভূতির দাউদাউ করে জ্বলে ওঠা আগুনও কিছুটা নিভু নিভু অবস্থার স্বভাবে বিরাজ করছে। তখন মানুষটির মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘হুম, অনেকটা স্বাভাবিক। তবে…। তবে, আপনাকে খুব চেনা চেনা লাগছে।’
তিনি প্রতিত্তোরে বললেন, ‘আমি শুধু আমার প্রিয়জনদের সাথেই দেখা করি। যারা আমাকে দরদ করে ভালোবাসে।’
কিছুটা বিস্মিত হয়ে মুখপানে চেয়ে রইলাম। কি বলবো? কি বলবো? এই ভাবনা বুকের মধ্যে ডুবে জ্বালা যন্ত্রণার পুকুরে হা-হুতাশ হৈ-হুল্লোড়ে মজা মাস্তিতে ব্যাস্ত।
ভাবনার কোন কূল কিনারা খুঁজে না পেয়ে অবশেষে সরাসরি প্রশ্ন করলাম, ‘আপনি আমার কাছে এসেছেন কেন?’
তিনি প্রতিত্তোরে বললেন, ‘তুমি আমাকে, আমার হিমুকে নতুন করে সবার মাঝে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছো। এজন্যই তুমি আমার…।
ও, আচ্ছা। আপনিই হুমায়ূন আহমেদ। সত্যি! আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না। এই প্রথম আপনাকে স্ব চোখে দেখলাম।
আমার আবেগের দুর্যোগ তখন চরম মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের মতো। আর অনুভূতির রোষানল এতো কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিলো যে তাঁকে আপ্যায়নের কথা ভুলেই গিয়েছি।
তিনি আমার পাগলামি দেখে কাছে এসে পাশে বসে বললেন, ‘নৃ, সময় কম। তোমাকে একটা কথা বলে যাই। আমার চরিত্র নিয়ে লিখছো। অনেকেই অট্টহাসি হাসবে, অপমান অপদস্ত করবে। তবে, থেমে থাকা যাবে না। তুমি তোমার মতো এগিয়ে চলো। সফলতা আসবেই।’
আমি মাথা নিচু করে নিচু স্বরে বললাম, ‘স্যার, আপনাকে একটু জড়িয়ে ধরতে চাই।’
স্যার, ‘অবশ্যই, কেন নয়।’
জড়িয়ে ধরতে গিয়ে খাট থেকে ধপাস করে মেঝেতে পড়ে গেলাম। কোমরে বেশ ব্যথা।

৪৭০জন ৩৬০জন
18 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ