সাহিত্যে মতপার্থক্য থাকবেই, এটাই স্বাভাবিক কিন্তু তাঁর প্রকাশটাওতো হওয়া চাই মার্জিত ভাষায় । নাকি নগ্ন আক্রমনে এভাবে লিখাও শোভনীয় ‘মুর্তজা আপনি শব্দ তৈরি করতে পারেন না । কবিতা লেখার জন্য আপনি শব্দ তৈরি করবেন আর আমরা তা গ্রহন করবো এটা ভাবা ঠিক না ।‘ ? ভালো, খুবই ভালো কথা। আমি এমন কেউ হয়ে যাইনি শব্দ তৈরি করবো, কবিতার পথে হাঁটছি কম বেশী বছর আটেক মাত্র । তবে হ্যাঁ কবিতা লিখতে যেয়ে অবশ্য ছন্দের প্রয়োজনে শব্দ তৈরি হয়, চর্যাপদ থেকে শুরু করলেও অন্তত কবিতার ইতিহাস তাই বলছে। কিন্তু তাঁর আগেও বোধকরি জানা উচিত টেকনিকের ইতিহাস কী বলে । সবিনয়ে জানাচ্ছি আমিই প্রথম নয় নারীশ্বরী শব্দটি বাংলা সাহিত্যে প্রথম ব্যাবহার করেন সম্ভবত আহমেদ ছফা । আবদুল মান্নান সৈয়দ, সৈয়দ আল ফারুক এমনকী সমকালীন উম্মে মুসলিমাও তাঁর কবিতায় নারীশ্বরী শব্দটি ব্যাবহার করেছেন ।

কবিতার সচেতন পাঠকমাত্রই কবিতার যে কোন ফর্মকে অস্বীকার করতে পারেন না, পারিনা তেমনি আমিও। তবে আমি এও স্বীকার করি সোনেলায় ‘নারীর নিভৃত নীড়ে’ প্রকাশ হয়ে কেবল ব্লগটির শ্রীবৃদ্ধি করতেই ব্যার্থ হয়নি উপরোক্ত কারো কারো অস্বস্তির কারণও হয়েছে । এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত । তবে আমি কোনভাবেই স্বীকার করতে পারিনা কবিতাটি সভ্যতা বহির্ভূত কিংবা সোনেলা যৌনতা প্রকাশের ব্লগ । একটু খেয়াল রাখলেই আমরা দেখতে পাই সমকালীন বাংলা সাহিত্যেই হুমায়ুন আজাদ, শামসুর রাহমান, হাসান হাফিজ, নির্মলেন্দু গুণ, তসলিমা নাসরিন এমন অজস্র কবিতার উদাহরন সৃষ্টি করেছেন। তাই বলে কী তাঁরা সভ্যতার বিপক্ষে চলে গেছেন ? বরঞ্চ, তাঁর অনেক কবিতাই উঁচু দরের শিল্পকলা বলে পরিগণিত। এক হাংরি জেনারেশনের কবি মলয় রায় চৌধুরীতো রীতিমত জীবন্ত কিংবদন্তী কেবল হাংরি কবিতা লিখে । সভ্যতা বহির্ভূত কবিতার কবি হিসেবে কই কেউতো তাঁকে আখ্যায়িত করেনি । নতুন প্রজন্মের অনেক কবিরই আদর্শ তিনি ।

গদ্যের হাত আমার অত্যন্ত দুর্বল, লেখা তাই দীর্ঘায়িত করছি না তবে এতটুকুন দৃঢ়ভাবেই জানাচ্ছি সাহিত্য শিল্পের সাথে তুলনীয় তাই এর আলোচনা বা সমালোচনা দুইই শিল্পিত হওয়া উচিত বলেই মনে করি আমি, দৃষ্টিকটু ভাবে নয়। যেহেতু সোনেলায় ‘নারীর নিভৃত নীড়ের’ মত সভ্যতা বহির্ভূত কবিতা প্রকাশ করে আমি মহা অন্যায় করে ফেলেছি তাই এর প্রায়শ্চিত্য করার জন্য সোনেলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি আমি । এতদিন সোনেলার যেসব ভাইয়া আপি ছোট ভাইয়ের মত প্রেরণা যুগিয়ে নিঃস্বার্থভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন তাঁদের প্রত্যেকের কাছে মার্জনা চেয়ে এই পোস্টের মাধ্যমে সোনেলায় আমার ব্লগিং এর ইতি টানছি ।

বি দ্রঃ মডারেশন প্যানেল চাইলে সোনেলায় প্রকাশিত আমার সমস্ত কবিতা মুছে ফেলতে পারেন ।

0 Shares

১৬টি মন্তব্য

  • জিসান শা ইকরাম

    ব্লগে প্রকাশিত লেখায় যে কেউ মন্তব্য করবেন , মন্তব্যকারী তাঁর নিজস্ব চিন্তা থেকেই মন্তব্য করেন। লেখকের কাছে তাঁর লেখার মুল্য অপরিসীম । লেখক একটি লেখা লিখেন , তাঁর নিজস্ব চিন্তা থেকে। পাঠক পড়ে সিদ্ধান্তে উপনিত হন তাঁর নিজস্ব চিন্তায়। লেকক যে চিন্তা ভাবনা আবেগ দিয়ে লেখেন কখনো তা কিছু সংখ্যক পাঠক বুঝতে পারেন , আবার অনেকে কিছুটা বুঝতে পারেন না।

    সমালোচনা সহ্য করাও কিন্তু লেখকের একটি গুন। হুমায়ুন আহমেদ অনেকের কাছে একটি রত্ন , আবার অনেকের কাছে ফালতু একজন লেখক। তাতে হুমায়ুন আহমেদের কিছুই আসে যায়নি। তিনি আলাদা বৈশিষ্ট নিয়েই আছেন পাঠাকের হৃদ্যয়ে ।

    সমালোচনা করার ধরনটিও ভিন্ন । একেকজনের প্রকাশ ভঙ্গিও ভিন্ন। এসব সহজ ভাবে নেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
    আর সোনেলা ব্লগ ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত কতটুকু যৌক্তিক , একজন পাঠক হিসেবে তা আমি আসলে বুঝতে অক্ষম। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে খুশি হই।

    • মর্তুজা হাসান সৈকত

      ভাইয়া খুব হার্ট হয়েছি আমি । আমার তিন বছরের ব্লগিং লাইফে এভাবে কেউ বলেনি যে আমার কবিতা সভ্যতা বহির্ভূত । বললেই কবিতাটি সরিয়ে নিতাম আমি । এমন অজস্র কবিতা কিন্তু বাংলা সাহিত্যের শ্রী বৃদ্ধি করেছে । আর সকালে সোনেলায় এসে দেখলাম দু একজন না বুঝে লিখা মূল্যায়ন না করেই ঢালাওভাবে আগের কমেন্টই সর্মথন করলেন আর একজন চেষ্টা করলেন সত্যি, মিথ্যার মিশেলে বিভ্রান্ত করার ।

  • মিসু

    মানে কি ? বললেই হলো আপিনি চলে যাবেন ? মানিনা আপনার সিদ্ধান্ত । আপনি চলে গেলে আমরা সবাই যে ঘন্টার পর ঘন্টা আপনার লেখা পড়েছি , সেই সময় ফেরত দিয়ে যাবেন। ফেরত দিতে পারলে যাবেন । নইলে যেতে পারবেন না ।
    সিদ্ধান্ত মানিনা । এই লেখা ভালো লাগে নাই ।

  • আফ্রি আয়েশা

    কোথায়ও যাওয়া যাওই চলবে না।
    আপন মনে লিখতে থাকুন ,
    যিনি আপনার একটি পোস্টে আপত্তি দিয়েছেন , আপনার অন্য পোস্টে তো তিনিই লেখার প্রশংসা করেছেন।
    সিদ্ধান্ত পাল্টান । সমালোচনা তো থাকবেই 🙂

  • ব্লগার সজীব

    লেখায় কিছুটা সমালোচনা থাকতেই পারে ব্রাদার । এসব এড়িয়ে যেতে হয়। খসড়া ভাই অত্যন্ত মিশুক একজন ব্লগার। সবার পোস্টে উনি অত্যন্ত চমৎকার মন্তব্য করে সবাইকে উৎসাহিত করেন। আমরা একটি ছোট পরিবার । এভাবেই ভাবার জন্য অনুরোধ করছি। আপনি মনে হয় একজনকেও পাবেন না , যিনি আপনার এই ব্লগ ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবেন। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করছি ব্রাদার।

  • খসড়া

    ভাই লিখছেন লিখুন। পাঠক কি চাইছে বুঝুন। সমালোচনা সহ্য করতে হবে তবেই জীবনে কঙ্ক্রিট কিছু পাবেন।সমস্যা থেকে পালানো যায় না।সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। পালায় কাপুরুষ এরা। আপনি লিখুন। আরও লিখুন। লিখে লিখে আমদের মুখ বন্ধ করে দিন। সমালোচনা করা হয় নিজেকে আরও সুন্দর আরও পার্ফেক্ট করার জন্য। এত আপনার সৌভাগ্য যে আপনার লেখা সমালোচিত হয়েছে।

    একজন লেখকের সব লেখা মাস্টারপিচ নয়। এটা মাথায় রাখতে হবে। সব লেখা সবার কাছে গ্রহন যোগ্যও নয়। বাচ্চার হাতে বই তুলে দেই বুঝে এই বইটি তোমার জন্য বলে। বাচ্চার হাতে ব্লগ তুলে দিয়ে বলেছি এই সাইডগুলোতে ঘুরো। সেই বাচ্চা যখন সেখানেও কাদা পায় তখন অভিভাবক হিসাবে আমার কিছু বক্তব্য থাকবেই।

    আপনি আবার ও বলছি কবিতার প্রয়োজনে শব্দ তৈরি না করে যে শব্দ সম্ভার আছে তা থেকেই কবিতা লিখুন। একদিন যখন এক নামে সবাই চিনবে সেদিন শব্দ তৈরি শাব্দিক প্রয়োজনে গ্রহনযোগ্য।
    আপনাকে কঠিন শব্দ ও বাক্যবানে আহত করার উদ্দেশ্য আপনি ভাল কবি হয়ে উঠবেন। যা লিখলেন তাতেই বাহ বাহ বললে আপনার আর খাটি সোনা হয়ে উঠা হবে না। চলে আসুন ব্লগে। এটা আপনার যায়গা। কেন যাবেন? আসুন লিখুন আমি আবার সমালোচনা করি।

    • মর্তুজা হাসান সৈকত

      আমি আবারো বলছি এ কবিতায় ব্যাবহারকৃত একটি শব্দও তৈরি করিনি আমি । আর আপনার অভিযোগকৃত নারীশ্বরী শব্দটি বাংলা সাহিত্যে প্রথম ব্যাবহার করেন সম্ভবত আহমেদ ছফা । আবদুল মান্নান সৈয়দ, সৈয়দ আল ফারুক এমনকী সমকালীন উম্মে মুসলিমাও তাঁর কবিতায় নারীশ্বরী শব্দটি ব্যাবহার করেছেন ।

  • ফাহিমা কানিজ লাভা

    পাছে লোকে কিছু বলে, এই ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ না। পথে কাঁটা এলে কষ্ট করে কাঁটা সরিয়ে সামনে এগোনো উচিত, কাঁটার কারণে ফিরে যাওয়া বোকামি। শুভ কামনা। 🙂

  • স্বপন দাস

    মর্তুজা ভাই, আমি সোনেলায় নবাগত। আপনার আগের কবিতাগুলি পড়ার সৌভাগ্য হয়নি। এ কবিতাটিরও প্রসংশা করেছিলাম । তবে সমালোচনায় আপনার প্রতিক্রিয়া দেখে অবাক হয়েছি ।। আর হ্যাঁ, শব্দ আপনি তৈরি করেননি তবে শুধু মাত্র কঠিন শব্দাবলী ব্যবহারের কারনে আসলে অনেকক্ষেত্রে তা আসলে কোন অর্থপূর্ণ লাইন সাজাতে ব্যর্থ হয়েছে। ।
    একটা উদাহরণ দেঈ — রিরংসা মানে হচ্ছে সুতীব্র সম্ভোগের ইচ্ছা ।।। এই শব্দটিকে নিয়ে আপনি লিখলেন,
    ” শরীরী আহবানে ঝড়ে রিরংসার ঝাড়বাতি ।”
    —– ভালো করে খেয়াল করে দেখুন, তেমন কি কিচ্চু বোঝা যায় — শুধুই অবিন্যস্ত কিছু জটিল শব্দ ছাড়া ।।।

    যাক, আগামীতে আরও সুন্দর লেখার প্রত্যাশায় রইলাম ।।

    • মর্তুজা হাসান সৈকত

      ভাই স্বপন দাস ভুল ধরিয়ে দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ কিন্তু বিভ্রান্ত করাটা নিশ্চয়ই উঁচু মনের পরিচায়ক হতে পারেনা । অথবা এও হতে পারে পুরো ব্যাপারটা সুচেতনভাবে আপনি ওয়াকিবহাল হতে পারেননি । সমালোচনা সাহিত্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা তবে এভাবে অবিবেচনাপ্রসুত হোক তা আমার শত্রুর ক্ষেত্রেও চাইবো না আমি । যা খুশি তাই লিখলেই কিন্তু তা মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়ে যায় না, তাঁর জন্য প্রয়োজন গভীরভাবে বিষয় বস্তু অনুধাবন । আপনার ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে যা হয়নি।

      অভিধান ঘেঁটে সেবারের মত নিশ্চয় আরও একবার দেখবেন রিরংসা শব্দটি অভিধানে কীভাবে প্রযুক্ত হয়েছে । বাংলা একাডেমীর অভিধান বলছে রিরংসা শব্দটির অর্থ দাঁড়ায়, সঙ্গম কিংবা কাম, আরেকটু এগিয়ে গেলে বলছে, মিলনের ইচ্ছে । আপনি বলছেন, সুতীব্র সম্ভোগের ইচ্ছে । আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি সম্ভোগ শব্দটিই কবিতার সাথে যায়না, অন্তত টেকনিকের ইতিহাস তাই বলছে। খারাপ অর্থ নির্দেশ করছে সুতীব্র সম্ভোগের ইচ্ছে, যা শিল্পমান বিবর্জিত। তবে হ্যাঁ ব্যাপারটাকে মোডিফাই করে তেমন ভাবেও বিশ্লষন করবেন হয়তো আপনার মত কেউ কেউ, কিন্তু এ কবিতায়ও কী তা যাবে ? কবিতা বিশ্লষনে বুঝতে হবে, হিসেবে নিতে হবে কবিতার অর্থ কোথায় যাচ্ছে ।

      কবিতার প্রতিটি শব্দ চয়নেই অত্যন্ত পরিশ্রমী ছিলাম আমি । যেটা চয়ন করছি, যেটা প্রয়োগ করেছি অত্যন্ত ভেবে চিন্তেই করেছি। নিদেনপক্ষে অভিধান সম্পর্কে ন্যূনতম সচেতন হয়ে হলেও। তাই আপনার মন্তব্যটি নিতে পারছি না আমি, সুচেতনভাবে মন্তব্য করুন সে মন্তব্য অবশ্যই নেবো ।

  • লীলাবতী

    লেখায় সমালোচনা থাকবেই ভাই । এটি মেনে নেয়াও একজন ভালো লেখকের গুন। খসড়া ভাইয়া নিজে এসে আপনার এখানে আবার মন্তব্য করেছেন। ওনার মন্তব্য দেখে কিন্তু আমার মনে হয়েছে , উনি আপনার মঙ্গল কামনা করেন। আপনার সিদ্ধান্ত সঠিক মনে হচ্ছে না ।
    অভিমানি ভাইয়া আমার , সিদ্ধান্ত পাল্টান।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ