মহাবিশ্ব শূন্য নাকি পরিপূর্ণ থালায়? আজন্ম ভেবে পার হলো নিহত সময়, এখন আঁকাইনা বেশী সম্পাদ্যের কাটাকুটি! রজত, সুবর্ণ থাকুক বা না থাকুক ছড়ানো, কি বা আসে যায়? তার চেয়ে বরং শোনা যাক- অনির্বাণ কলতান! রাজপথে আজো রাতে এক অন্ধ হোমার, গেয়ে যান গান! টুং টাং! টুং টাং! গিলগামেশের ঘোড়া পুরো বিশ্ব না দেখেই, থেমে গেলো কুটিরে তোমার! দজলার জলে দহরম মহরমে ক্লান্ত নারীরা, খানিক জিরাতে গিয়ে পড়েছে ঘুমিয়ে, তারা আরতো জাগেনা! নারী তুমিই বুকেতে রেখেছ লুকিয়ে, কোরালের গন্ধ মাখা সঞ্জীবনী বৃক্ষের ডাল, প্রেমিকের হাত তার খোঁজই তো পায়না! গিলগামেশের আজো হওয়া হলোনা অমর, বাকী থাক রুপকথা! কন্যা ফিরবে সত্বর! শুকনো মরুর বুকে আখরোট মরে আছে, নীরব রাস্তায় কি ভাব দাঁড়িয়ে? শুষ্ক পাতার মতো গুড়িয়ে যাচ্ছে মর্মর, শব্দেরা পায়ের তলায়! আলতা দিয়েছ নাকি! নারীর মসৃণ পা আজন্ম লাল, সৌখিন বিম্বের টুকরো টুকরো কাঁচে, প্রতিদিনই বিম্ববতী পায়ের পাতাটা কাটে! কি মেখেছ পায়! সুলভ রঙের জল নাকি- ধমনী কাটা রক্তের উদ্ভ্রান্ত স্রোত! প্রেম সেতো প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের মতো- সুস্বাদু বিষ, না চাইলেও পড়ে যাবে ভাগে, রাজভোজে এসে যাবে প্লেটে একদিন ঠিক! সামনে অগ্নিকুন্ড পাশেই রাখা তেলচিটে বালিশ, ভুলে মাথা দিওনা আগুনে আর! এমননি জানকী সেওতো পারেনি নিতে, বারংবার নারকীয় ব্যাথা আগুনে হাঁটার! এইভাবে কতো নারী চলে যায় বসুধার বুকের- ভিতর! বাহিরে জ্যান্ত লাশ- উঠোনে বাগানে ঠিকই হাঁটে, তান্ত্রিকেও জানেনা তারা যে আস্ত বেতাল! একাকী ঘরের কোণে জ্বালাচ্ছ পিদিম, কষ্টের সলতেটা পুড়ে তবু হচ্ছেনা বুঝি শেষ! বিনা দোষে বনবাস দেয়া এই নগরের অভ্যাস, তবুও মৌষলকাল শেষে তুমি একমাত্র অবশেষ! সমাধিস্থ সৈন্যরা বালু ঝেড়ে উঠবে এখুনি, কাঁপছে শিবির! কিভাবে বুঝবে কুন্তী কর্ণের লাঞ্ছনা! নারী, তবু তুমি আনমনা! দেখেছ কুরুক্ষেত্র, জাম্বিয়ান সর্দারের শরীরে লেগে থাকা দাগটাই- জমাট ট্রয়ের রক্ত! সব গন্ধ এক! সব রক্ত পরিপূর্ণ মাতলামিতে মত্ত, নিঃসঙ্গ ফ্লেমিঙ্গোর মতো লাল লেকে পান করে- পুরুষের একই রকম গন্ধ, তুমি কি আজ প্রচন্ড বিরক্ত? নারী এখন নীরব! কিছুতেই তার যায় আসেনা! পুরূষের চোখ মহাবিশ্বের মতো তীব্র আদিম, চুরূটের ধোঁয়া চোখে মেখে তত্ত্ব চেখে দেখলেন, একজন ফ্রয়েড! নারী তো তা জানে? বহুকাল ধরে সবই জানে, তবুও সে আটকালো, তবুও সে আটকাবে, মেডুসার মতো ক্লেদমাখা অভিশাপে! জানো নাকি থিসিয়ুস, মেডুসার কর্তিত মুন্ডু কেঁদেছিল কার শোকে? দুমদাম পড়ে যাচ্ছে নগরের পর নগর, খেলার ঘরের মতো! একাকী রাস্তায় কোথায় যাচ্ছ তুমি? সম্রাটের ঠোঁটের কাছে ঠোঁট রেখে বলল বিশুদ্ধ নর্তকী- ‘কোথায় পরাক্রম ভেসে গেলো পুরূষ?’ ‘হেরেমের লাস্যময়ীদের ভিড়ে তুমি প্রচন্ড একাকী!’ মহাবিশ্বের লৌকিক পথে, পুরূষ তুমি অলৌকিক ভাবে নিঃসঙ্গ সওয়ারী! বৃষ্টির ফোঁটার মতো আত্মারা মিশে যায়, কোথায় ত্রিস্তর বিশ্ব তার মেলেনা হদিস! তবু নারী তুমিই জীবনের আপিম, সব বুঝে পুরুষেরা নেশায় ঘুমাতে আসে তীব্র ঘোরে! নগরীর চত্বরে চত্বরে প্রেমের পসরা, যদিও দোকানী জমিয়ে রেখেছে দুনম্বরী সব মশলা! চলো মেয়ে যাব দারুচিনি দ্বীপে, সুর্য্যব্রম্ভণ এর মিনারের পাশে শুয়ে থেকে, প্রেম খোঁজে যেই পদ্মাবতী; হয়ে তার প্রিয় তোতাপাখি, চলো প্রেমের নিগূড় তত্ত্ব শিখি!
৪টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
নান্দনিক লেখনী । অতুলীয় ভাবনা
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অসাধারন। তবু নারী তুমিই জীবনের আপিম,
সব বুঝে পুরুষেরা নেশায় ঘুমাতে আসে তীব্র ঘোরে!
নগরীর চত্বরে চত্বরে প্রেমের পসরা,
যদিও দোকানী জমিয়ে রেখেছে দুনম্বরী সব মশলা!
চলো মেয়ে যাব দারুচিনি দ্বীপে,
সুর্য্যব্রম্ভণ এর মিনারের পাশে শুয়ে থেকে,
প্রেম খোঁজে যেই পদ্মাবতী; হয়ে তার প্রিয় তোতাপাখি,
চলো প্রেমের নিগূড় তত্ত্ব শিখি! শেষের টুকু্ জাস্ট অনবদ্য। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন শুভ কামনা সতত
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ।