এক পা স্বর্গে আমার, আরেক পা নরকে!
একফালি বদ্বীপ গেয়েছিল শ্বাশত প্রেমের কীর্ত্তন,
অমৃতের জল ভেবে গিলে নিয়ে নিষিদ্ধ যৌবন,
পাথরের বালিহাঁস অনড় বারান্দায় স্তব্ধ মড়কে!
শুধু বিকালের বহ্নিমান চিতা দিল অচেতনে চেতন,
চুপিসারে চলে যায় রাধা! মহাকাল দিয়েছে শমন!
আহা! জীবন মশলায় মেখে পার হলো চেখে চেখে,
সেও তো ড্রেসিংটেবিলে পাড়ি দিল অর্ধেক জীবন!
মুক্তির চেয়েও মোহময় নিজস্ব সৌন্দর্যকে পান,
পরাবাস্তব পাউডারে আয়নায় মুখ ছিল অম্লান!
তবু আমি কি নরকে যাব একা একা?
শরীর শিউরানো তীব্র আগুনে পেতেও তো পারি,
একটি পলক স্বর্গীয় শিখায় তার সামান্য দেখা!
এক হাত স্বর্গে আমার, আরেক হাত নরকে,
মাঝপথে ছুটন্ত সরীসৃপ ব্যাকুল কন্ঠে শুধু ডাকে!
জানেনা সে নিজস্ব বিষের খন্ডিত দুঃসহ খবর,
দংশানো মানা! তবু ছোবলের ভুত দিচ্ছে আছর!
মেয়েটি মেঘের জন্য ছিল কৃষ্ণচূড়ার মতো আকুল,
আমার মেঘে আকাশ ছিল,
আরো ছিল মায়ার সিন্দুক, চোখে স্নেহময় জল!
সেদিন তার চোখে পড়েনি! মনটা বুঝি ছিল উতলা!
আমিও তাই পিছলে গেলাম, মেঘ হারালাম,
এখন ঘুরি এদিক ওদিক ঘুড়ির মতো আত্মভোলা!
হয়তো আমি স্বর্গ পাইনি! নরকলোকের পাশেই বাঁচি,
হয়তো আমি দুয়ের মাঝে খেলছি খেলা বউছি!
এখন অতো রাখিনা খবর, তবুও থামেনা দৌড়ঝাঁপ,
আমার জন্য স্বর্গ নরক কোনটারই নেই আশ্বাস!
লার্ভার জীবন টেনে নিয়ে স্পাইরাল গ্যালাক্সি,
বাড়াচ্ছে পরিধি তার প্রতিরাতে!
প্রতিদিন ঢুলে ঢুলে প্রেম পড়ে যায় একদিন খাদে,
পৃথিবীর পথে ঘুরে চিরতরে নিহত হয় যেসব ট্যাক্সি,
তুমি আমি সেই সব বাহনের সওয়ারী!
রাত্রি গভীর হলে পরিপক্ক লিচুর মতো আলিঙ্গনে,
দুইজন অবিরাম করি স্বর্গ ও নরকের ভাগাভাগি!
১৪টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
স্বর্গ আর নরকের দারুণ ব্যবচ্ছেদ। পাওয়া না- পাওয়ার হিসেব ছাড়াই।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
স্বর্গ ছুঁয়ে যাক, নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চাই। চলমান জীবনে কখনো স্বর্গ কখনো নরক এই নিয়েই তো জীবন সংগ্রাম সমান্তরালে বয়ে যায়। চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছো স্বর্গ-নরকের ব্যবচ্ছেদ। অবিরাম শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
সৌবর্ণ বাঁধন
শুভকামনা দিদি।
প্রদীপ চক্রবর্তী
রাত্রি গভীর হলে পরিপক্ক লিচুর মতো আলিঙ্গনে,
দুইজন অবিরাম করি স্বর্গ ও নরকের ভাগাভাগি!
.
প্রতিটা লাইন ভাবার্থ।
অসাধারণ উপস্থাপন।
ভালো লাগলো।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
আরজু মুক্তা
আপনার কবিতাতা মন দিয়ে পড়তে হয়।
স্বর্গ আর নরক পাশাপাশি থাকাই ভালো। তাহলে মূল্যটা বোঝা যায়।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য। শুভকামনা রইলো।
পপি তালুকদার
প্রতিটি লাইন গভীর অনুভূতির ও তাৎপর্যপুর্ন।
তবে নরকের পাশে নয় স্বর্গের পাশে থাকতে চাই।
শুভ রাত্রি।
ভালো থাকুন।
সৌবর্ণ বাঁধন
স্বর্গ নরক বড়ই প্রতীকি ধারণা। ধন্যবাদ জানবেন অনেক।
সাবিনা ইয়াসমিন
❝তবু আমি কি নরকে যাব একা একা?
শরীর শিউরানো তীব্র আগুনে পেতেও তো পারি,
একটি পলক স্বর্গীয় শিখায় তার সামান্য দেখা❞
যার জন্য এত লেখা তাকে ছাড়া একা একা কোথাও যেতে ভালো লাগবে না, হোক স্বর্গ অথবা নরকের লেলিহান দাবানল। সঙ্গী একটা লাগেই।
আচ্ছা, হিসেবের আঁকিবুঁকি নাহয় বাদ। এখন লেখায় ফিরি। স্বর্গ নরকের প্রতিচ্ছবি এখানেই পেলাম। বুঝি না কীভাবে লেখেন এত যত্ন নিয়ে!
শুভ কামনা সৌবর্ণ 🌹🌹
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ জানবেন। সবসময়ই খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েন। শুভকামনা।
তৌহিদুল ইসলাম
লেখালিখির হিসেব নিকেষে স্বর্গনরক ভাগাভাগি এ বড্ড কঠিন কাজ। চমৎকার অনুভূতি লিখেছেন।
শুভকামনা রইলো।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ জানবেন। শুভকামনা নিরন্তর।