
#পর্ব_৫৪
হেমন্তের কুয়াশাভেজা অর্গলিত চেতনা বিলাসে হারিয়ে যাওয়া পাখির পালক খুঁজি।
আমাদের শহর জুড়ে রোজ বৃষ্টি নামে। নামে কার্নিশ বেয়ে প্রেমের মরশুম। গোধলীর সুবর্ণ রৌদ্রে অস্পৃশ্য হাতে কাশফুল ছুঁয়ে দেখেছিলাম আগমনীর বর্ণিল গন্ধ।
আজ হেমন্তের সপ্তম দিবস। শীতের হিমেলতা আর ভূপৃষ্ঠে পতিত পিব প্রেমবারি আমাদের ভেদ করে চলে যায় গঙ্গার তীরে।
রোদ বৃষ্টি মেখে আমাদের নিত্যদিনের জীবন। অনাবিল শরৎ আর হেমন্তের ডাহুকের নীড়ে উপচে এসে পড়ে শীতের সমাগম। প্রতিটা রাতে চাদরে মুখ মুড়িয়ে অজস্র রম্যগল্প লিখতে লিখতে কখন যে ভোরের সূর্য আমাদের শূন্যতাকে গিলে খায়। ততটা নিউক্লিয়াস গিলে খেতে পারেনি আজ অব্ধি।
তিতাস বহুবার গঙ্গার তীরে আধ্যাত্নিকতা খুঁজতে গিয়ে আমাদের কবে ভুলে গিয়েছে,তবুও ভালোবাসা আমাদের ফুরিয়ে যায় নি। আমাদের পোস্টকার্ডে রোজ কত বার্তা আসে শিশিরসিক্তে তবুও তা পুষে রাখি।
যেমন করে সূর্য পুষে রাখে চাঁদ।
আজও কেউ কাউকে ছেড়ে চলে যায় নি। ছেড়ে চলে গেলে বুকের বামপাশ জুড়ে কত বিষাক্ত বেদনার শূল গ্রথিত হতো। আসুক না হাজারো প্রেমিক,আসুক হাজারো স্বপ্নদ্রষ্টা তোমার মত করে কি কেউ কখনো বলবে আমায়,ভালোবাসি দীপ অনেকটা।
আমি রোজ কবিতা লেখি তাই তোমায় আমার পাঠক হিসেবে রোজ খুঁজি। যেমন করে একবিংশ পুরুষ খুঁজে অষ্টাদশী নারী। যার রূপ অনুরাগে ছোঁয়ে দিবে ষোড়শীর ষোড়শীজ প্রেম।
চাঁপাফুলের মোহনীয়তা আর শ্বেত অপরাজিতার গায়ে রোজ ভ্রমরে কত আনাগোনা,অভিসার শেষে পার্বতী দীপের কাছে প্রিয়তমা।
স্বপ্ন আমাদের রোজকার দিনের মতো করে গিলে খেতে চায়। চোখজুড়ে স্বপ্নবৃত্তান্ত আর প্রস্ফুটিত কলির মঞ্জরিতে কুজ্বভেজা প্রজাপতির স্পর্শতা,যা কবির কবিতাকে একধাপে এগিয়ে নিয়ে যায় বনলতার খুঁজে।
এ জন্মে শিশিরসিক্ত কুয়াশা আর পরজন্মের তুমি যে পুরোটা আমার। তৃষিত অধিবাস আর নিশিযাপনে প্রেমাবিষ্ট হয়ে রহিব তোমার পানে দিবস রজনীর শেষে।
পিব প্রেমবারী অর্গলিত চেতনার বিলাসে,পরজন্মে আমিও খুঁজিব তোমায় তোমারি ঘনশ্যাম রূপে।
ইচ্ছে গুলো আজকাল আমার কাছে বেমানান।
যেমন করে অথৈজলে নোনা জমলে জলের স্রোত বেড়ে যায়। প্রেমিকরা আজকাল ভবঘুরে তাই রসিকজন মন বাঁধতে পারেনা। প্রেমিকরা ভবঘুরে না হলে হয়তো চীনেরপ্রাচীর বেয়ে কত প্রেমিকা উুঁকি দিতো।
যাই হোক পার্বতীকে আমি পেয়েছি অন্তর্যামী বেশে। তাই কলকাতা শহরে পার্বতীর ন্যায় দ্বিতীয় প্রেমিকা খুঁজতে হবে না।
#পর্ব_৫৫
দূরত্ব যখন বাসা বাঁধতে চায় পার্বতী তখন অভিমানী হয়ে ওঠে। ভালোবাসায় অভিমান ভালো।
তবে অহংকার ভালো নয়। যদি অভিমানকে প্রশ্রয় দাও তাহলে সে তোমায় বহুবার গোপনে মারবে।
অন্ধকারের পথে যদিও একটু আলোর সমাগম মোহনীয় রাতের করিডোর জুড়ে। প্রেমিক ষোড়শ শতকের আত্মীয়করণে চোরাবালিতে আজ একবিংশ পুরুষ।
অবশেষে দিল্লীর পথে একা। আজ আসার তৃতীয় দিন।
অজানা অদেখা এক জায়গা হতে অন্যজায়গায় ছুটে চলছি। হাজার হাজার দূরত্ব আর অস্থিমজ্জা জুড়ে একান্ত ভাবনা আর সুনিপুণে একা ঘুরতে বেশ বেমানান লাগছে। তবুও বেশ ভালো লাগছে। কখনো কখনো একাকীত্ব ভালো লাগে আমার। রাত্রি প্রায় নয়টা দিল্লী শহর পুরো জমজমাট। অটোরিকশা করে কিছু বই সংগ্রহ করার জন্য একটা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে চলে এলাম।
হাজারো কবিসাহিত্যিকের মন্ত্রমুগ্ধ ছড়ানো কাব্যগ্রন্থ।
নতুন বই।
আহ্!
কী সুগন্ধি।
নতুন বইয়ের গন্ধ আমার কাছে বেশ প্রিয়।
একে একে বই সংগ্রহ করতে লাগলাম। প্রায় দশটা বই সংগ্রহ করে নিলাম।
টাকা প্রায় হাজার দুএক।
পৃথিবীতে আমার কাছে সবচেয়ে সুন্দর ফুল,প্রকৃতি,শিশু আর বই। শৈশব থেকে এই চারটে জিনিসের সাথে আমার সম্পর্ক রক্তের সাথে মিশিয়ে আছে।
দিল্লী শহরে ফুলের কথা বলতে গিয়ে মনে পড়ে গিয়েছে বাড়ির আঙ্গিনায় লাগানো ভিন্ন জাতের ফুলের গাছ।
বাড়িতে থেকে আসার আজ একমাস পনেরো দিন। তাই ফুল গাছের ঠিকমতো করে যত্ন হচ্ছে কি না তা জানি না। তবে বাবা বেশ প্রকৃতি প্রেমী। ফুল গাছের যত্নে কোন ত্রুটি হবে না।
রোজ সকালে ফুলের গায়ে ভিন্ন রঙের প্রজাপতির মিলনমেলা যা আমায় রোজ মুগ্ধ করে।
যেমন করে কাবেরীর পাতা জুড়ে পড়ে ষোড়শীর উদাসী রাজটীকা।
দেখা হলো কয়েকজন গুণী কবি সাহিত্যিকের সাথে।
মন আনন্দে ভরপুর। গুণিজনদের সাথে কথোপকথনে শেষপর্যায়ে বেশ কয়েকজনের পত্রে আমন্ত্রিত হলাম।
অজানা অদেখা জায়গায় আমন্ত্রিত অতিথি এ যেন মনের মাঝে কত লাইলাক ফুল ফুটছে।
কলকাতা থেকে দিল্লী এ যেন একা থেকে সহস্র।
শূন্য দিয়ে ছক কষতে কষতে আমি যে একটু বড় হয়েছি। কখনো কখনো নিজের কিছু স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়েছি। তবুও সলীল সমাধিতে নিজের অস্তিত্বকে ঠিকিয়ে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা অব্যাহত।
অনেক রাত্রি তাই পুনরায় ফিরে এলাম দিল্লীর পার্কভিউ হোস্টেলে। সেখানে খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়লাম।
ঘুম আসছে না কবিতা লিখতে ভালো লাগছে না।
মনে হয় আজ এ গভীর অমানিশা রাত্রিতে লিখতে পারব না কবিতা।
কবিরা কবিতা প্রেমী হলেও অজস্র কাব্যরসে লুকিয়ে থাকা কবিতার রসমঞ্জরী খুঁজে বের করতে পারেন না সকল কবিসাহিত্যিক।
আমারও মনে হয় তাই হলো আজ।
১৫টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
রোজ সকালে ফুলের গায়ে ভিন্ন রঙের প্রজাপতির মুগ্ধ করে। ভাল লাগ্ল
প্রদীপ চক্রবর্তী
আপনার ভালোলাগা আমার প্রাপ্তি।
অজস্র শুভেচ্ছা ও শুভকামনা দাদা।
মোঃ মজিবর রহমান
প্রদিপ শুভেচ্ছা রইল
সাবিনা ইয়াসমিন
সূর্য পুষে রাখে চাঁদ!!
অত্যন্ত ভালো লাগা থাকে প্রতিটি পর্বেই। দেখা যাক সমাপ্তিতে আমরা কি পাই।
শুভ কামনা প্রদীপ 🌹🌹
প্রদীপ চক্রবর্তী
আপনার ভালোলাগা আমার প্রাপ্তি।
সমাপ্তিতে কখনো বিষাদের অশ্রুবহে কখনো বা আনন্দের অশ্রুজল।
সবসময় চেষ্টা ভালো কিছু উপস্থাপন করার জন্য।
অজস্র শুভেচ্ছা ও শুভকামনা দিদি।
বন্যা লিপি
কেন যেন এ ধকরাবাহিক লেখাটা আমার নিয়মিত পড়া হয়নি। আজ কেন নিজের প্রতি রাগ করেই পড়তে বসে গেলাম। ধৈর্য ধরে পড়েও ফেললাম। এতো অদ্ভুদ লেখা!! প্রকৃতি,ফুল,বই,শিশু, এসব তো আমার প্রিয় তালিকা!! অবাক বিষ্ময়! চমৎকার এগোচ্ছে লেখা । শুভ কামনা। শারদীয়া শুভেচ্ছা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
আপনার ভালোলাগা আমার প্রাপ্তি।
ধৈর্য শক্তি বড় শক্তি দিদি।
ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য উপন্যাসের পর্ব ছোট করে নিয়েছি।
অজস্র শুভেচ্ছা ও শুভকামনা দিদি।
তৌহিদ
বাহ! অন্যান্য পর্বের ন্যায় এটাতেও লেখার শব্দ গাঁথুনি দারুণ ভালো লাগলো প্রদীপ দাদা।
শুভকামনা রইলো।
প্রদীপ চক্রবর্তী
আপনার ভালোলাগা আমার প্রাপ্তি।
অজস্র শুভেচ্ছা ও শুভকামনা দাদা।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
লেখাটি ভালো লেগেছে।
প্রদীপ চক্রবর্তী
আপনার ভালোলাগা আমার প্রাপ্তি।
অজস্র শুভেচ্ছা ও শুভকামনা দাদা।
মনির হোসেন মমি
দিল্লীর অন্দরে হিরো দূরত্ব যতই হোক স্মৃতিতে ফিরে আসে বার বার প্রিয়তমা পার্বতীর মন্ত্রমুগ্ধ মুখখানি। মনে পড়ে বাড়ীর আঙ্গিনায় লাগানো ফুলগাছগুলোকে।
শূন্য দিয়ে ছক কষতে কষতে আমি যে একটু বড় হয়েছি। কখনো কখনো নিজের কিছু স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়েছি। তবুও সলীল সমাধিতে নিজের অস্তিত্বকে ঠিকিয়ে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা অব্যাহত।
মুগ্ধতায় পড়লাম সবটাই। চমৎকার ভাবে শব্দশৈলী নিয়ে উপন্যাস এগুচ্ছে।চলুক ভাইয়া।
প্রদীপ চক্রবর্তী
আপনার ভালোলাগা আমার প্রাপ্তি।
অজস্র শুভেচ্ছা ও শুভকামনা দাদা।
আরজু মুক্তা
মুগ্ধতা!! দারুণ হচ্ছে।
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রাপ্তি,
অজস্র ধন্যবাদ দিদি।