পরিবর্তন

শুন্য শুন্যালয় ২২ জানুয়ারি ২০১৫, বৃহস্পতিবার, ০২:০৪:৩১অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি, সমসাময়িক ৫৪ মন্তব্য

পরিবর্তন। পরিবর্তনের কথা শুনলেই আমরা একটু নড়েচড়ে বসি। রবীন্দ্র কিংবা নজরুলের গানে একটু গিটার কিংবা ব্যান্ড ধাঁচ শুনলেই অনেকেই আগে মুখ বাঁকিয়ে বলে ফেলি, গানের বারোটা বেজে গেছে। ভালো করে শুনে দেখা পরের কথা। ঈদে বাড়ি ফিরছেন, রাস্তায় কোন জ্যাম নেই, বলে বসবেন দেশের অবস্থা এতো খারাপ যে ঈদে পর্যন্ত আনন্দ করতে মানুষ বাড়ি যায়না ( বাসে এক বেকুবের মুখে শোনা )। ফেসবুকে হোম পেজ চেঞ্জ হবার সময় দেখেছি, ব্যাপক কান্নাকাটিতে মুখ আর বুক সয়লাব, আগেরটাই সুন্দর ছিলো, এইটা কি হইলো, দুইটা লাইন ইত্যাদি ইত্যাদি। সেই কান্নার মেয়াদোত্তীর্ণ হইতে কিন্তু বেশিদিন লাগেনি।
এরকম অনেক অনেক উদাহরন আছে, পরিবর্তনে আমাদের ব্যপক এলার্জি।
মনে আছে শেখ হাসিনা সরকার একবার সময়ের সাথে ১ ঘণ্টা যোগ বা বিয়োগ করবার ডিসিশান নিলেন, পুরো টাইফুন ঝড় শুরু হয়ে গেলো। কঞ্জুস ব্যক্তি যার থলে থেকে এক আনাও বের হবেনা, মুখ খুলতে পুরাই হাতেম তাই। এদেশে এসে তো কোন সমস্যা দেখছিনা, দিব্যি সবাই এই সিস্টেমে মানিয়ে চলছেন। তাহলে সমস্যার গোড়া টা আসলে কোথায়? (বেশি খোড়াখুড়ি করা মানা )। সমস্যা আসলে যুক্তিতে, যত বকরবকর সব সংসদ ভবনে। মমতাজের গান সব সংসদ ভবনে না গেয়ে, সুস্পস্ট যুক্তি সবাইকে বুঝিয়ে বলতে হবে। একটা সিস্টেম চালু করে তার পেছনে যুক্তি দিতে না পারলে, দুইটা সমালোচনা শুনেই পেছন দিয়ে দৌড় দিলে হবেনা।
সপ্তাহে দুদিনের ঘোষনাতেও এরকম সমালোচনা শুরু হয়েছিল। আমরা বহুত কর্মঠ জাতি, দুদিন কাজ বন্ধ শুনে তাই খারাপ লাগারই কথা। তবে অচিরেই অফিসের চেয়ারে দোল খাওয়ার চাইতে বিছানায় নিদ্রাকুসুম স্বপ্ন দেখা বেশি আপন মনে হওয়ায় আমরা তা দ্রুত মেনে নিয়েছি। আসলে আসল কথা হলো এটাই, পরিবর্তন মানতে পারিনা আমরা। সৌভাগ্য যে দেশের পোলাদেরও বিয়ের পর বাড়ি পরিবর্তন করে শ্বশুরবাড়ি যাওয়া লাগেনা, নইলে বিয়ে সিস্টেমই বন্ধ করে দিত কিনা কে জানে।

আমার এতো প্যাচালের জন্য দায়ী জিসান ভাই এর মুদ্রা পোস্ট ( আমি না )। মুদ্রা নিয়ে একবার একটা প্রচার কিংবা অপপ্রচার (আশা করবো অপপ্রচারই হোক ) শুনেছিলাম। ১ টাকার মুদ্রা এদেশ থেকে পাচার হয়ে যায়, যা দিয়ে নাকি ৩/৪ টা ব্লেড বানানো সম্ভব। যদি তাই হয় তবে এসমস্ত দেশে কিভাবে তা প্রচলিত আছে। এখানকার ৫০ সেন্ট দিয়ে তো তাহলে ১০ টা ব্লেড বানানো যাবে। আবার এও শুনেছিলাম কয়েন নিয়ে সবাই মাটির ব্যাংক বন্দি করে। আরে বাবা টাকার চল উঠিয়ে দিলে কয়েন খরচ না করে সবাই যাবে কোথায়? অবশ্যই আমাদের মুদ্রার প্রচলন করা উচিত। থুথু দিয়ে মহা আয়েশে টাকা গুনতে না পারার দুশ্চিন্তা অনেকের মধ্যে আসতে পারে, হয়তো একারনেই অনেকে ব্যাপক কান্নাকাটি করছেন। কয়েনের ঝনঝনানি একটু শুনেই দেখুন না, দেখবেন কেমন মায়া মায়া করে খাবারদাবারে মিতব্যায়ী হয়ে যাচ্ছেন। লাইফটাইম বউ ভালো না লাগলেও কয়েন লাগবে, গ্যারান্টি।
পরিবর্তনের বিকল্প নেই, এগিয়ে যেতে হলে অনেক সিস্টেমকেই ঘষে মেজে কিংবা নতুন আবরনে সাজাতেই হবে। যেই সিদ্ধান্তই নিন, আগে ভেবে দেখতে হবে তা কতোটা প্রয়োজনীয়, যুক্তি দিন। আমার প্রিয় একজন স্যার বলেছেন একবার, ভাইভা বোর্ডে গিয়ে যদি তুমি ভুল উত্তর দাও কখনো, তাহলে তার স্বপক্ষেও যুক্তি দাও। তোমার যুক্তি সঠিক হলে তোমার ভুল উত্তর গ্রহন করা হবে।
সবকিছুই পরিবর্তন হয়, আমি, আপনি; সিস্টেম কোন ছাড়?

0 Shares

৫৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ