পঞ্চ প্রপঞ্চ

বন্যা লিপি ১২ জুলাই ২০২২, মঙ্গলবার, ০১:৫৫:০৮পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১০ মন্তব্য

১|

চিমটি কেটে দেখো! এখনো মরিনি….

নিশ্বাস নিয়ে যাচ্ছে বুকের করোটিতে আমার সকল সাফল্যের রোজনামচা।

উনুনের হাড়িতে টগবগে ভাত আর ডালের উপচে পরা শৃঙ্খলতা আটকে দেই যখন তখন! আগুন আঁচে সেঁকে নেই দুচোখের ভেজা নুনের জল।

নির্লিপ্ত ঠোঁটে আলগা রং ঠেসে দিয়ে

সঙ সেজে দাঁড়াই ঘরের বাস্তকোনের আয়নার সামনে; ঐ তো ও ঠোঁটে হাসি লেগে আছে দেখা যায়!  মেডেলটা পেতে আর বাঁধা কোথায়?

২|

জানলার গ্রীলে চড়ুই এসে করে কিচিরমিচির।

রংচায়ের কাপে ধোঁয়া ওঠা উষ্ণতায় আমুদে চোখে তৃপ্তি। সকালটা জানিয়ে গেলো আরেকটা দিন ঠাওড়াচ্ছে জীবন ; সেমিকোলন আর ব্রাকেটে আটকে থেকে ঝুলে আছে নিরাময় হীন ক্যালসিয়ামের অভাব। দুর্বোধ্য মৌণ ঠোঁটের দিকে অপলক প্রতীক্ষায়, তবু ক্লান্তিহীন  অপেক্ষাদের বিরক্ত হতে দেখি না।

৩|

একটা অক্ষর বা শব্দের কাছে হাঁটু ভেঙে নুয়ে থাকা কতযুগ ধরে! প্রবঞ্চনার হতস্যিপনায় দিকভুল বারবার। একটা অক্ষরের অক্ষে ঘুর্ণায়মান গাঙচিল থেকে গেছে মধ্যাকাশের আকর্ষনে তৃষ্ণার্ত।

নীচেই লোনাজলের সীমাহীন জলধী; অথচ ডানায় নেই শক্তি মিঠেজলের হদিস।

ঋতু ভেঙে ভেঙে বেলা গড়ানো বিকেলটায় আবারো উড়ে চলার দুঃসাহস!

কঠিন পাথরের ঝর্ণায় ডুবে মরার আকুল আকিঞ্চন নিয়েই তবে প্রতীক্ষারা গুণে যাক গণিতের সরল সমাধান!

৪|

বিমূর্ত শহরের পিচঢালা রাস্তা লম্বা হয়ে এলিয়ে রেখেছে শরীর; ফুটপাতের ধারঘেষে ফুটো থালার পাশে ধুলোময়লার সজ্জায়, পাগলীটা মরা মাছের চোখ নিয়ে হেলে আছে দেয়াল ভর করে.......

দেয়ালের ওপাশেই ঘন অন্ধকার! দূর জংশন থেকে ষ্টেসনে ছুটে আসা রেলের ফিসপ্লেটে ঝন ঝন শব্দ উঠছে কেঁপে কেঁপে।

কয়েকটা বাঁদুর চক্কর দিচ্ছে ঝুলে থাকার ডাল খুঁজতে.....

মুখ ঢাকা মুখোশে দু'জোড়া পা এগোতে এগোতে গাঁ ঘেষে এসে পাগলীটার পা মাড়িয়ে দিয়ে জানতে চাইলো..... তোর ক্ষিদে পেয়েছে?

৫|

বৃক্ষের কাঁচা পাতা ছিঁড়ে জলে ভাসিয়ে দেখেছি

শিরাউপশিরা নিয়ে ডোবেনি সে। পাতারা চোখ টিপে হেসে বললো ; মরিনি তো! বেঁচেই তো আছি দিব্যি।

ভালোই তো আছি!

আমার বুকে পিঁপড়া নিয়েছে

বেঁচে যাবার গতি।

স্রোতের টানে আমি ভেসে চলি।

ভেসেই তো আছি!

যাইনি তো মরে!

বেঁচেই তো আছি

জলের বুকে

শিরা উপশিরা নিয়ে!

 

 

0 Shares

১০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ