নীলা (শেষ পর্ব)

অনুশঙ্কর গঙ্গোম্যাক্সিম ২৮ নভেম্বর ২০১৩, বৃহস্পতিবার, ০১:২৭:৪৪অপরাহ্ন বিবিধ ৯ মন্তব্য

নীলার সন্তানের নাম রাখা হয় আকাশ, বাচ্চাটা একেবারেই নীলার চেহেরার অবয়ব। নীপা এখন হোষ্টেলে থাকে মাঝেমধ্যে ছুটিতে নীলার বাড়িতে বেড়াতে আসে। নিজেদের বাড়ি গেলেও মায়ের কবর জিয়ারত করে চলে আসে, শুনেছে বাবার ঘরে নতুন একটা বাবু এসেছে, যদিও তাদের ভাই হয় তবুও কখনও দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে হয়নি। আদিল নামের এক সহপাঠীকে ভালো লেগে যায় নীপার,তবুও মুখ ফুটে বলার সাহস পায়নি। আদিল ও নাকি এতিম, ছোট বেলায় মাকে হারিয়েছে,বাবা আছে।একদিন ক্লাসে নোট দেওয়ার ছলে একটি চিরকুট আদিলকে দেয় নীপা,যাতে লিখা ছিলো নীপার জীবন কাহিনী আর প্রেমের প্রস্তাব। তিন দিন পর আদিল নীপার চিরকুটের উওর দেয়, যাতে লিখা ছিল। আমার এ ছন্নছাড়া জীবনে যদি জড়াতে ইচ্ছে হয় তাহলে বিকেল চারটার সময় ভার্সিটির বটতলে এসো।যথাসময়ে দুজন বটতলার নিচে চেয়ারে বসে। আদিলকে নীপা জীবনের চাওয়া পাওয়া, আনন্দ বেদনা সব মন খুলে বলে,শুনে কষ্ট পায় আদিল। আদিল ভাবে তার জীবন ও তো এমন হতে পারত,যদি ছায়ায় মত বাবা আগলে না রাখত। ছোট বেলায় মা মারা যাওয়ার পর ছেলের মুখের দিকে চেয়ে দ্বিতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হয়নি বাবা, অনেক কষ্টে আগলে রেখে বড় করেছে আদিলকে। নীপা ও বলে যদি আমার বড় বোন না থাকত তাহলে এতদূর আসা আমার পক্ষে সম্ভব হতো না।দুজনের চাওয়া পাওয়া তে খুব একটা মিল। আদিল আর নীপা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দুজনে লেখাপড়া শেষ করে গ্রামে গিয়ে মানুষের উপকার হয় এরকম কিছু করা। নীলা ও জেনে যায় আদিল আর নীপার সম্পর্কের কথা,ছোট বোনের পছন্দ তাই সহজে মেনে নিল।লেখাপড়ে শেষে তাদের বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় নীলা। একদিন বাড়ি থেকে খবর আসে বাবা খুব অসুস্থ। নীলা আর নীপা দুই বোন বাবাকে দেখতে গেল। বাবা শয্যাশায়ী মুখদিয়ে দুয়েকটি কথা বের হচ্ছে, বিছানার নিজ থেকে দুটি কাগজ বের করে নীলাকে একটি নীপাকে একটি দিল। বসতবাড়ি বাদে সমস্ত জমিজমা সমান দুই ভাগে নীলাও নীপার নামে উইল করে দিল। মাসখানেক অসুস্থ থাকার পর বাবাও একদিন মারা যায়। ছোট ভাইটির মুখের দিকে চেয়ে নীলা তার নামের সম্পত্তি গুলো ছোট ভাইয়ের নামে দিয়ে দেয় আর নীপার গুলোতে প্রতিষ্ঠিত হয় তাদের স্বপ্ন মায়ের নামে "মনোয়ারা এতিম নিবাস "।

0 Shares

৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ