নিশ্চুপ আওয়াজ

বন্যা লিপি ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, রবিবার, ০৪:৪৮:২৭অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৫ মন্তব্য

দীপ্র সময় এখন।

দীপ্র কী?

এটা একটা প্রতিকী শব্দ।

বুঝলাম... কিন্ত এখানে দীপ্র প্রতিকে কী বোঝাচ্ছো সেটাই তো বুঝতেছি না।

আচ্ছা তুমি বসে আছো কোথায়?

এ কেমন প্রশ্ন! তুমি যেখানে! আমিও সেখানে!

কোথায়?

আরে!!

বলো-- কোথায়?

শাহবাগ

হলো না

কেন?

তুমি বসে বা দাঁড়িয়ে যাইই থাকো! তুমি অবস্থান করছো একবিংশ শবতাব্দির জলপিঁড়ি তে।

আবার জলপিঁড়ি কী?

জলপিঁড়ি বলাও ভুল অবশ্য...বলা যেতে পারে অগ্নাসন।

আগুনের আসনকে বলছো অগ্নাসন?

হুম, আগুনের সাথে দীপ্র সময়ের একটা যোগসূত্র আছে।

তা হয়ত আছে! কিন্ত তুমি কিভাবে দেখছ,,, আসলে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।

 

শাহবাগ, শেখ মুজিব মেডিকেল মোড় ছাড়িয়ে গাড়ি এগিয়ে চলছে বাটা সিগন্যাল,সাইন্স ল্যাবরেটরি হয়ে নিউ মার্কেটের উদ্দশ্যে। আজিজ মার্কেট সামনে। তীব্র রোদ গায়ে মেখে  পাঠক সমাবেশের সাইনবোর্ডটা জ্বল জ্বল করছে।  কতদিন এখানে আসতে চেয়েছি! তিন দশক ধরে এ শহরটার অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত।  পাবলিক লাইব্রেরী তে কোনো একদিন একা একা বইএর মধ্যে মুখ গুঁজে ডুবে থাকার ইচ্ছেটা ইচ্ছেই রয়ে গেলো। ধানমণ্ডি বেঙ্গল বইএও যেতে চেয়েছিলাম। কফি মগের ধোঁয়ায় নিজেকে বুঁদ করে নিস্তব্ধতার অতলে চুপ করে শুধু বইয়ের পাতায় চোখ রেখে আদ্যোপান্ত নিজেকে হারিয়ে ফেলা। হয়নি আজও। কদাচিৎ কখনো সখনো প্রোয়জন টেনে বের করে ঘর থেকে বাইরের রোদেলা অথবা মেঘ জড়ানো একটা দিনের মধ্যভাগে। চুপচাপ কিছু হিসেব তখন প্রবল ভাবে জেঁকে বসে একান্তে।

এইযে এত এত ছড়ানো ছিটানো মানুষের মাথা!  এইযে ছুটাছটি! এখানে সেখানে একই সময় ভাগ বন্টন হচ্ছে এক একজনার কাছে! প্রত্যেকের একটা করে গল্প আছে।

তুমি চুপ হয়ে গেলে!

দেখছি...

কি দেখছ?

অবাক হওয়া উচিত না... তাও হচ্ছি। আমি খুব সাধারন তো! তাই হয়ত অসাধারনকে মাঝে মাঝে সাধারন বোধ বুদ্ধি দিয়ে সাধারন করে ফেলি! আবার অসাধারন ব্যাপারটাই সাধারন বোধ থেকে  বেমালুম সরল ভেবে ফেলি!

কি যে সব বলো!

ওইদিকে দেখো!

কই? কোথায়?

ওই যে!  আজিজ মার্কেটের দোতলার বারান্দায় একদম শেষদিকে।

হুম...দেখলাম। তুমি এটা দেখাতে চাইছ?

আরো দেখতে চাও? চলো ঢাকা ভার্সিটি ক্যাম্পাসে অথবা খিলগাঁও ক্যাফেতে।

আমি জানি এরকম আরো বহু আছে দৃশ্যের ধারাবাহিকতা। কিন্ত আমি দেখছি ওই মেয়েটা আসলে কিছু মগজের ধোলাই দিচ্ছে এই ভর দুপুপরের মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে বিশাল এক শ্রেনীর বিকল মস্তিষ্কের ধারক বাহকদের।

তুমি প্রত্যেকটা কথাকে ভারী করে বলো।

আমি হয়ত ভারটাকেই আয়ত্ত্ব করতে পেরেছি!

কি যেন বলছিলে?

ওই মেয়েটার কথা।

বলো- শুনি, আসলে তুমি কি দেখতে পাচ্ছো প্রতিকী শব্দের উপমায়!

বলতে গেলে তোমার ধৈর্য্য থাকবে না শোনার। বলতে গেলে আমি তখন একটা ছেড়ে আরেকটায় চলে যাব কিংবা অনর্গল বকে যাবার নেশাতুর হয়ে উঠব। তুমি তখন ভাববে ব্যাক্তিত্বহীন মানুষই বেশি কথা বলে।

ভুল বললে.... মানুষ তখন বেশি বলে,যখন আপ্রান চেষ্টা করে সঠিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টাকে তুলে ধরার মত পর্যাপ্ত ডিপ্লোমেটিক অর্ধ বাক্য প্রয়োগ করতে না শেখে। সেক্ষেত্রে এমনও হয়...মিথ্যের মিশেলে মানুষ সত্যটাকে দাঁড় করিয়ে দেয় বড় শক্তপোক্ত করে।

আসলে কি জানো? খুব কম মানুষ আছে পৃথিবীতে, শব্দের যত্ন নিয়ে ভাবে। আর এই যত্নের অভাবটাই যত অনাসৃষ্টির মূল কারন।

এখন বলো ওই মেয়েটা কি করে মগজ ধোলাই করছে বিকল মস্তিষ্কের ধারক বাহক প্রতীকের মনুষ্য জনদের!

কেন যেন এখন আমার নিজেরই আর কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। আরেকটা গল্প এসে মনের দোরগোড়ায় জোরেসোরে আঘাতের পর আঘাত করছে...........

 

 

শেষ হয়নি….

 

ফিচার ছবি সোনেলা গ্যালারি থেকে

0 Shares

১৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ