নির্ঘুমে শূন্যতা

প্রদীপ চক্রবর্তী ৩১ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ০৩:০৬:০৪অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৯ মন্তব্য

চিরাচরিত অসুখের নিয়ম ভেঙে আমরা নিয়ন আলোয় শব্দ সাজাই।
প্রতিটা নির্ঘুম রাত যখন নাম না জানা পড়ন্ত বিকেলের আলো খোঁজে,আমরা তখন পৃথিবীর কক্ষপথে চলে যাই।

সে সুবাদে আমাদের আর শিউলি ফুলের সুগন্ধি নেওয়া হয়না। পড়া হয়না সুনীলের কবিতা।
একে একে ফুল ঝরে পড়ে। অন্তরালে মেঘ লুকিয়ে থাকে বৃষ্টি ঝরার অপেক্ষায়।

কেউ কবিতা লিখে নগর নির্মাণ করে।
কেউ ব্যারিকেড সাজিয়ে প্রেমের প্রতিমূর্তি তৈরি করে।আমরা শতাব্দীর শূন্যতা নিয়ে পথ চলি।

বুক জুড়ে বিবর্তন আর পরিবর্তনের ছায়াসঙ্গীরা ছুটে বেড়ায়। যেমন করে আকাশের বুকে মেঘ উড়ে বেড়ায়।
সবুজমাঠের আলপথ দিয়ে পূজোর গন্ধ মাখতে গিয়ে আমি বারবার কুয়াশায় ভিজে যাই।

সেই কবে আগমনী মা এলো সবার ঘরে ঘরে, তাবৎ পৃথিবীর জরাজীর্ণতা দূর করবে বলে।
আমি যে দৈবনন্দনের মতো নগর নির্মাণে ব্যস্ত থাকি।
শতকষ্ট গোপনে রেখে জয়ন্তী ফুলের মতো হেসে হেসে যাই। তবুও শূন্যতা আমায় ছাড়েনা।

সেই ভোর হলে ছুটে বেড়াতাম আগমনী মায়ের পুষ্পাঞ্জলি কুড়োতে।
বেলা পড়েছে অনেক, দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততা একে একে এসে গ্রাস করেছে।
এ যেন দিনের পর দিন একেকটা বিদ্রোহ আর জরাব্যাধির গন্ধ তীব্রতর হয়ে উঠছে।

আগমনীর গন্ধ পেলে পাখিরাও গান গায়।
ভোর হলে মৃণালিনী শিউলি ফুলের মালা গেঁথে রাখে। গুনগুন সুরে ফুলের গায়ে ভ্রমর এসে বসে।
মন্ত্রমুগ্ধে আগমনীর চরণকমলে ফুল গুলো লুটিবার তরে প্রাণ খুলে হাসে।
মাঠেঘাটে নামে গোধূলির আলো ছায়া।

আগমনী তখন বোধনের আমন্ত্রণ সাজে সজ্জিত হয়।
এতসবের মাঝে শূন্যতা আর মনখারাপের একেকটা অসুখ আমাদের এসে গ্রাস করে।
আমরা আর পারিনা শূন্যতার বুকে পূর্ণতার আলো মাখতে।
বরং সে শহরে আজ কারফিউ জারি।

0 Shares

১৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ