
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিঁখোজ হাফিজ নামের যে ছেলেটার ঢামেক মর্গে লাশ পাওয়া গেলো তার একটা ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতোগুলো দিন পর ছেলেটার খোঁজ পাওয়া গেলো তাও মর্গে। এরপর শোনা গেলো ছেলেটা ডাবওয়ালার কাছ থেকে দা নিয়ে নিজেকে নিজে স্ট্যাব করেছে। পুলিশ তাকে ঢামেকে নিয়ে গেছে, পুলিশ আবার শাহবাগ থানার! আচ্ছা এতোগুলো দিন ধরে এই পুলিশ বা ওই থানার কেউ জানে নাই যে ঢাবির একটা ছেলে নিঁখোজ! তাইলে সে কেন বলল না বুঝলাম না! এদিকে ছেলেটার পকেটে আইডি বা তার ফোন এসব থেকে তো পুলিশ পরিচয় বের করতে পারতো! একজন পুলিশের এইটুকু দায় নেই?
এখন যেই মর্গে লাশের খবর এলো এরপর সাথে সাথেই এলো ভিডিও। রক্তাক্ত ছেলেটা কেমন ভ্যাবলার মতো, মনে হচ্ছে কি হচ্ছে সে বুঝতে পারছে না। সে গিয়ে পুলিশের হাত ধরে রিক্সায় উঠলো! এই ভিডিওটা কি অথেনটিক? ছেলেটার খালি গা কেন? আর এতো রক্ত সারা শরীরে সে নরমাল ভাবে গিয়ে উঠলো! এইটা সম্ভব? সে ডাবওয়ালার থেকে দা নেবার আগে জামা খুলে ফেলেছিলো? মানে একটা ছেলে নিজের জামা খুলে ডাবওয়ালার থেকে দা নিয়ে এরপর নিজেরে নিজে আঘাত করেছে? যদি এই ভিডিও সত্যি ও হয় তাহলে সে মোটেও স্বাভাবিক ছিলো বলে আমার মনে হয়না, সে কোনোকিছু খেয়েছে বা খাওয়নো হয়েছে হতে পারে। তার সাথে যে বন্ধুরা ছিলো তাদের ভাল করে জেরা করা উচিত এই এবনরমাল অবস্থায় ছেলেটারে তারা ছেড়ে দিলো কেন? ভিডিওটা দেখে আমার মোটেও স্বাভাবিক লাগে নাই। কেউ ভিডিও দেখতে চাইবেন না, নিজে খুঁজে নেন। আমি সেভ করে রাখিনি।
আমার অবাক লাগছে পুলিশ বা ঢামেক কেউ জানলো না ছেলেটা ঢাবির! তার আইডি কেউ দেখলো না! বিশেষ করে পুলিস! আমি একবার হলে থাকতে অসুস্থ হইছিলাম, ক্যাম্পাসের এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢামেক নিয়ে যায় আমি সাথে সাথেই এতো যত্ন পাইছি যে বলার না! আর এই ছেলেটা নিজের ক্যাম্পাসে নিজেরে স্ট্যাব করলো কেউ জানলো না!
আর ঢাবি তো পুরা গুলিস্থানের মোড় হয়ে গেছে। দুনিয়ার মানুষ। কোনো প্রাইভেসি নাই। আমি হলে থাকতে শুক্রবার হলের বাইরে আসতাম না, মানুষের ঠেলায় বিরক্ত লাগতো। আর সারা ঢাকার গাঞ্জুটির গাজা খাওয়ার জায়গা ঢাবি। এইপাশে নিউমার্কেট ওইপাশে শাহবাগ আর এখন মাথার উপরে মেট্রোরেল নাচে। মোট্রোরেল হবার পর নাজানি কি হবে ক্যাম্পাসের! ছেলেমেয়েগুলার কোনো নিরাপত্তা তো থাকার কথাও না। এই হাফিজ নামের ছেলে এতো অস্বাভাবিক কাজ কি করে করলো, কাদের সাথে ছিলো আর কি করছিলো বের করা খুব দরকার। ঈদের দিনের একটা ছবি দেখলাম হাসিখুশি ছেলেটা, ঈদের পরদিন ঢাকায় এসে কি করে কোন অবস্থায় এমন ভয়ংকর কান্ড ঘটালো! আর এমন ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে কি সে রিক্সায় উঠেছে দেখে আমার মনে হচ্ছে মোটেও ছেলেটা সেন্সে ছিলো না, প্রচন্ড ইনটক্সিকেটেড মনে হলো! কি করে হলো, কেন হলো, কে করলো বের করা উচিত।
আহারে ভাইটা! আহারে! কোন মায়ের বুকটা খালি হয়ে গেলো! পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত, আত্মহত্যা বলে কাটায়ে দেবার মতো না।
===========
পুস্পিতা আনন্দিতা,
নিউইয়র্ক।
৭টি মন্তব্য
নীরা সাদীয়া
বিষয়টা নিয়ে ভাবতে হবে।
তবে আজকাল জীবনের মূল্য এত কমে গেছে যে কী বলব। চারদিকে নেশা জাতীয় দ্রব্যের ছড়াছড়ি। ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।
রোকসানা খন্দকার রুকু
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের অবশ্যই যথেষ্ঠ ভাবনা দরকার। এর সুষ্টু তদন্ত ও বিচার দাবী করছি।
শুভ কামনা
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আমরা বরাবরের মতই সুষ্ঠু বিচার ও তদন্ত চাইতে পারি। কিন্তু ফলাফল নির্ভর করে প্রশাসনের উপর। ধন্যবাদ আপনাকে বিষয়টি নিয়ে পোস্ট দেবার জন্য। ভালো থাকবেন নিরাপদে থাকবেন
আরজু মুক্তা
মানবিকতা নাই।
সুষ্ঠু তদন্ত হোক।
জিসান শা ইকরাম
পুলিশের দায়িত্বহীনতা প্রশ্নের সম্মুখিন হয়ে গিয়েছে।
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লেখা পোষ্ট করে আপনি সামাজিক দায়িত্ব পালন করছেন, এজন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
হালিমা আক্তার
নিখোঁজ সংবাদ দেখেছিলাম, এরপর দেখলাম লাশ পাওয়া গেছে। খুবই দুঃখজনক জনক ঘটনা। ছেলেটির পকেটে কি আইডি কার্ড বা মোবাইল ছিল না। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য সকলের সামনে নিজেকে কোপানো। মানবতা আজ কোন পথে হাঁটছে।
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
ভীষণ কষ্টের কথা লিখেছেন।।
শুভকামনা রইল।।