বাঙালী ললনার নাম Must Begum! কেমন কেমন লাগছে না? নামের এমন ধরন দেখে কি মনে হচ্ছে? এমন উদ্ভট নাম আবার হয় নাকি? কিন্তু তাইতো হয়েছে। আমাকে Must Begum নামে কেউ একজন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলো। প্রথমে আমি ফেক ID ভেবে accept করিনি। পরে দেখি সে আমারই পরিচিতা !!! এ কয়দিন যে কিনা বরের ID ব্যবহার করে আমার সাথে যোগাযোগ করেছে; এবার সে নিজ নামেই Facebook ID ওপেন করেছে। তাকে আমি জলি নামেই জানতাম। গতকাল কথা বলার সময় সেই আমাকে জানালো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে, তখনই জানলাম সেই হচ্ছে Must Begum!

জানতে চাইলাম এমন নামকরনের হেতু কি? শুনালো এক ইতিহাস! ইতিহাস শুনে তো আমি হেসে লুটুপুটি। বেচারী সামান্য ভুলের কারনে আজ নিজের আকীকা দেয়া নামটা হারিয়ে Must Begum হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। আমেরিকার মাটিতে পা রাখার পর থেকে এই উদ্ভট নাম তাকে বহন করে চলতে হচ্ছে।

ঘটনার শুরু এস,এস, সি পরীক্ষার Registration Form ফিলাপের সময়। Registration Form এ নাম লেখার সংরক্ষিত ঘরগুলোর তুলনায় তার নাম বড়। কি করবে সে? এক শিক্ষক তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন। তার নাম মোছাম্মৎ মাহমুদা বেগম। শিক্ষক তাকে পরামর্শ দিলেন মোছাম্মৎকে সংক্ষিপ্ত করে Must লিখতে। শিক্ষকের আদেশ শিরোধার্য। ছাত্রী সে কাজটিই করলো। তখনও শিক্ষক বা ছাত্রী কেউই জানতো না যে একসময় ছাত্রী আমেরিকা প্রবাসী হবে আর আমেরিকান নিয়মের বিড়ম্বনায় পড়ে আকীকা দেযা নাম মাহমুদা বেগম হারিয়ে Must Begum নাম ধারন করে তাকে দিনাতিপাত করতে হবে।

ইংরেজীতে Musammat Mahmuda Begum এর সংক্ষিপ্ত রুপ Must Mahmuda Begum আর আমেরিকার নিয়ম অনুসারে Surname হিসাবে Must Begum বলে ডাকা হয়। অনাকাঙ্খিত এই বিড়ম্বনার স্বীকার হয়ে তার অনুযোগের শেষ নেই। এহেন এই ঘটনাটির দায় সে কারু উপড় দিতে না চাইলেও চেনা জগতের সকল অভিবাবকদের প্রতি তার পরামর্শ তাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে যেনো এমনটি না ঘটে, যেহেতু একবার Registration হয়ে যাওয়ার পর নাম পাল্টানোতে অনেক আইনি জটিলতা পোহাতে হয়, আর সমযসাপেক্ষ ব্যাপারও বটে।

সুতরাং মা-বাবাদের প্রতি অনুরোধ যেকোন কাগজপত্র ফিলাপের সময় বাচ্চাদের হাতে ছেড়ে না দিয়ে নিজেরা একটু নজরদারি করুন।

0 Shares

২৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ