নানা বাড়ি
♣
শোকনা জমিনে নাড়া মাড়িয়ে যাচ্ছি নানার বাড়ি
সেকালে যেতাম স্কুল পালিয়ে পড়ালেখা সব ছাড়ি।
নানী বলতেন ভাত যে খাবি চাল এনেছিস চাল,
নানীর কথায় অভিমান করে ফুলাতাম আমি গাল।
বাইন্না পুকুরে বটের শিখড়ে বসে থাকত নানা
দুপুরের পর নামাজ পড়ে খেতে আসত খানা।
আমারে দেখে নানার মুখে ফুটত ফুলের হাসি
পুকুরের বড় মাছটি ধরত পাইলে জবাইত খাঁসী।
নানার ছিল দুটি ঘোড়া সৌখিন ছিলেন বটে
মিয়াজান বলীর ছেলে ছিলেন দশগ্রাম রটে।
আরব থেকে মুসাফির এসে নানার ঘরে থাকত
দশ গ্রামের হাদিয়া নিয়ে আরব দেশ ফিরত।
নানা ছিলেন দাদার বন্ধু উভয়ের ছিল ঘোড়া
দাদার ভগ্নী নানাকে দিয়ে কুটুম্ব করেছিল থোঁড়া।
আমার বাড়ির অদুরে রাস্তায় হেটে বাজারে যেত নানা
ফিরবার কালে দাঁড়াতাম নানায় প্যাকেটে আনত খানা।
নানার যেন মুখস্থ ছিল নাতীরা সদলে দাঁড়াবে পথে
কোনদিন খালি ফিরত না নানা নাস্তা না নিয়ে হাতে।
আমার নানার মতন নানা কারো ছিলো না কারো
নানা হারিয়ে গেলেন যখন আমার বয়স বারো।
১৯টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
আহারে নানা বাড়ীর সূখ এ কর্পোরেট যুগে সব যেন অসূখ।
আসলে সেকালে (একালেও অনেকটা আছে) নানা বাড়ীর বেড়াতে যাবার কথা শুনলেই মনে এক প্রফুল্ল ইমেজ আসত।অসংখ্য ধন্যবাদ।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে প্লাবিত ধন্যবাদ, মমি ভাই।
আরজু মুক্তা
এখন নানাবাড়ি ও ছোট ছোট এ্যাপার্টমেন্টের খাঁচায় বন্দি।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
হায়, এ বড়ো নির্মম বাস্তবতা।
এ থেকে মুক্তির আধো কোন সম্ভাবনাই নাই।
ছেলেমেয়ে গুলো এখন বদ্ধ খাচার পাখি।
আপনাকে ধন্যবাদ।
নিতাই বাবু
আহারে নাতি নাতকুর! আমি মেয়ের বাড়িতে গেলে আমার তিন তিনটে নাতিন নাতিরাও এই আশায়ই পথ চেয়ে বসে থাকে। কখন বাজার থেকে দাদু আসবে।
জয় হোক সকল নানাদের। দীর্ঘজীবী হোক সকল নায়-নাতি।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
জয় হোক সকল নানাদের। দীর্ঘজীবী হোক সকল নায়-নাতি।
ধন্যবাদ আপনাকে দাদা।
সুরাইয়া পারভিন
নানা বাড়ি ,নানা-নানী নিয়ে দারুণ প্রকাশ
ভালো লাগলো
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
বাহার ভাই, শিরোনামে অক্ষর ব্যাতীত অন্য কোনো কিছু না দেয়াই ভালো।
শুভ ব্লগিং
চাটিগাঁ থেকে বাহার
হৃদি ব্লগিং….
প্লাবিত ধন্যবাদ!
এখানে ইমু কিভাবে আনবো ভাইয়া?
আকবর হোসেন রবিন
সুখ-পাঠ্য কবিতা।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
জেনে খুশি হলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে।
জিসান শা ইকরাম
ছোট বেলার নানা বাড়ির স্মৃতিতে উজ্জ্বল এখনো,
সময়ের সাথে সাথে পালটে গিয়েছে তা।
অজ পাড়াগাঁ নানা বাড়িতে বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।
ভালো লেগেছে কবিতা।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
বেশীর ভাগ নানা বাড়ি এখন পরিত্যক্ত খামার বাড়ির মতো হয়ে গেছে। ঐ বাড়ির সবাই এখন শহরমুখি।
প্রদীপ চক্রবর্তী
নানাবাড়ি সাথে সবার কমবেশি অনেক স্মৃতি রয়েছে।
কবিতার ভাষায় বেশ লিখলেন দাদা।
শুভকামনা দাদা।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
ছোটকালে নানার বাড়ি
কিশোর কালে ফুফুর বাড়ি
তরুণ কালে বোনের বাড়ি
যুবক কালে শশুর বাড়ি
বুড়া কালে বিয়াইর বাড়ি!
তৌহিদ
ঠিক যেন আমার নানা বাড়ির গল্প উঠে এসেছে আপনার লেখায়। কত সুখ স্মৃতি মনে পড়ে গেলো।
লেখা ভালো লেগেছে ভাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
নানা বাড়ির স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন বাহার ভাইয়া। আমার নানার আদরে কত যে প্রশান্তি ছিলো তা আজো অনুভব করি। নানী বেঁচে আছেন। দেখা করতে গেলেই ফিরে যাই শৈশবে। নানির চোখে আমি যেমন তার ছোট্ট নাতনী, তেমনি আমিও ভুলে যাই কত বড় হয়েছি এখন।
আমার মেয়েদের সাথে তাদের নানা-নানুর স্নেহ ভালোবাসা, আদর-খুনসুটি দেখি, আর বলি আমার নানা-নানী বেশি ভালো, তোমাদেরটা পঁচা 🙂
আপনি ভীষণ ভালো লেখেন বাহার ভাই। আপনার লেখার ভক্ত হচ্ছি ডে বাই ডে 🙂
শুভ কামনা 🌹🌹
বন্যা লিপি
নানা বাড়ির স্মৃতী মনে পড়ে গেলো লেখা পড়ে। খুব ভালঁ বর্ননা করেছেন। তবে নানা শব্দটা বহু ব্যাবহারে কিছুটা….. অতিরঞ্জিত লেগেছে।
শুভ কামনা।