কিছু একটা লিখবো ভেবেছিলাম। সারাদিন অফিস করে, সন্ধ্যায় জ্যাম ঠেলে বাড়ি ফিরে আসা। সন্ধ্যা থেকেই থেমে থেমে বাজি ফোটানোর মহড়া চলছে। তার সাথে উচ্চস্বরে গানের আওয়াজ। ২০২৩ এর আগমন উপলক্ষে উদযাপনের সংকেত জানিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ ফেসবুকে একটি লেখা চোখে পড়লো। বাবাকে হারানো এক মেয়ের করুন আর্তনাদ। কোন এক নতুন বছর বরণ উদযাপনের উচ্চ শব্দে অসুস্থ বাবাকে হারিয়েছেন। বাবা ছিলেন হার্টের রোগী।

গত বছরও আতশবাজি ফোটানোর শব্দে এক অসুস্থ শিশুর মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। এছাড়া আতশবাজির শব্দে পাখির মৃত্যুর খবর এসেছিল। ফানুস ওড়াতে যেয়ে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনার খবর এসেছে।

যেকোনো উৎসব মানেই আনন্দ। আনন্দ উৎসব পালন করা দোষের কিছু নয়। পাশ্চাত্য রীতি অনুসারে আমাদের দেশেও খ্রিস্টীয় বছর বরণের প্রচলন হয়েছে। কিন্তু যে উৎসব মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্ন ঘটায়। সেটা কোন উৎসব হতে পারে কিনা জানা নেই। নিজের আনন্দের জন্য অন্যের ক্ষতি করা কোন ধরনের উৎসব।

মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এবারও কিছু দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোথায় এর বাস্তবায়ন। হাজার হাজার লোক আতশবাজি ফোটাচ্ছে। এদের কয়জন কেই বা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। যদি এরা নিজেদের থেকে কখনো সচেতন না হয়। তাহলে শুধু আইন দিয়ে সচেতন করা সম্ভব নয়। সারা আকাশ জুড়ে যেন আগুন জ্বলছে। আতশবাজির শব্দে কান রাখা দায়। সবচেয়ে বেশি শঙ্কা জাগছে কোথায় না আগুন ধরে যায়। হায়রে উৎসব উদযাপন। এটা উৎসব না অরাজকতা।

পরিশেষে একটি প্রশ্ন। এক রাতের এই উৎসবে কত কোটি টাকার বাজি ফোটানো হলো। রাস্তার পাশে ন্যায্য মুলের দোকানে মানুষগুলো লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকে অল্প দামে চাল ডাল কেনার জন্য। আজ এই উৎসবে সে সকল বাবা-মার সন্তানেরা অংশগ্রহণ করে নাই । তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। একদিকে ক্ষুধার স্বর্গ, আরেক দিকে আনন্দের নামে অর্থের অপচয়। একই ঘরে দুই বিন্দুর সমাবেশ। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কোথায়।

0 Shares

৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ