
শিরোনাম দেখে অনেকেই হয়তো ভাবছেন, এ আবার কী! হ্যাঁ, এটা আমাদের দেশে হিন্দু পরিবারে সকালে, দুপুরে, আর রাতের খাবার ভাতের সাথে থাকা একরকম সুস্বাদু খাবার। শুধু হিন্দুই নয়, আমরা বাঙালিরা ভাত খাবারের সাথে প্রথম ধাপে হাল্কা পাতলা কিছু তরকারি বা সবজি ব্যবহার করে থাকি। যেমন: শাক, ভর্তা, ডালের বড়া, সবজি বড়া, বেগুন ভাজি, করলা ভাজি, কালিজিরা বাটা ইত্যাদি ইত্যাদি। তারমধ্যে ধনিয়া পাতার বড়াও তেমনই একটা।
এই সুস্বাদু খাবার তৈরি করতে বেশি পরিশ্রম আর বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না। একটু পরিশ্রমের বিনিময়ে আধাঘন্টা সময়ের মধ্যেই ১০ থেকে ১২টি ধনিয়া পাতার বড়া তৈরি করা যায়। খেতেও খুবই মজা। শীতের দিনে গরম ভাতের সাথে গরম গরম ধনিয়া পাতার বড়া অন্যকোনো মজাদার খাবারের সাথে তুলনা করা যাবে না। এ একরকম অতুলনীয় সুস্বাদু ঘ্রাণযুক্ত মচমচে খাবার। তাহলে জেনে নিন, কীভাবে ধনিয়া পাতার সুস্বাদু বড়া তৈরি করবেন!
আমাদের দেশে শীতকালীন অনেকপ্রকার সবজির সাথে ধনিয়া পাতাও প্রচুর পরিমানে বাজারে পাওয়া যায়। আমরা যাঁরা শহরের বসবাস করে থাকি, তাঁদের সম্বলই একমাত্র বাজার। তাই বাজার থেকে মাত্র দশ টাকার ধনিয়া পাতা কিনুন! বাসায় বা বাড়িতে গিয়ে উপরে ছবির মতো ধনিয়া পাতার গোড়াগুলো ছেটে নিন। তারপর ভালো করে ধুয়ে নিন। ধোয়া হয়ে গেলে ধনিয়া পাতাগুলো একটু বড়মাপের করে কুচি করুন! সাথে তিন থেকে চারটে কাঁচামরিচ আর দুটো মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ কুচি করে কুচি করা ধনিয়া পাতার সাথে মেশান। সাথে পরিমাণ মতো লবণ আর একটু হলুদের ফাকি মেশান। এর সাথে একমুঠ সুজি আটা বা চালের গুড়ো মিশিয়ে ভালো করে মাখুন! যাতে ধনিয়া পাতাগুলো আঠা আঠা হয়ে দলা ধরতে পারে। এবার নিচের ছবি লক্ষ্য করুন!
উপরের ছবিটি দেখুন! ধনিয়া পাতা কুচির সাথে কাঁচামরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি, লবণ ও সুজি আটা বা চালের গুড়ো মিশিয়ে মাখার পর এরকম হবে। এরপর বড়া ভাজার জন্য কড়াই নিয়ে গ্যাসের বা লাড়কির চুলোর সামনে যান। চুলায় কড়াই বসান! কড়াইতে পরিমাণ মতো রান্না করার তেল ঢালুন! তেল ঠিকমতো গরম হলে পিঁয়াজু সাইজে কড়াইতে ছাড়ুন! এরপর নিচের ছবি ফলো করুন!
উপরের ছবির মতো এভাবে কিছুক্ষণ সিদ্ধ হতে সময় নিন। বড়ার নিচের পিঠ একটু পোড়া পোড়া হয়ে গেলে উল্টিয়ে দিন। এপিঠ ওপিঠ ইলিশ মাছ ভাজার মতো মচমচা করে ভাজতে থাকুন! নিচের ছবিতে ফলো করুন!
উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ধনিয়া পাতার পিঁয়াজু সাইজের বড়াগুলো একটু লালচে রং ধরেছে। কিন্তু পুরোপুরিভাবে ভাজা হয়নি। পুরোপুরিভাবে হতে আরেকটু সময় অপেক্ষা করতে হবে। যদি পারেন, এর সাথে কয়েকটা শুকনো মরিচ ভেজে নিন৷ নিচের ছবিতে ফলো করুন!
খানিক সময়ের মধ্যেই হয়ে গেল স্বাদের ধনিয়া পাতার বড়া। সাথে আছে স্বাদের শুকনো মরিচ ভাজা। এবার গরম ভাতের সাথে পরিবেশ করুন! নিজেও মনের আনন্দে ইচ্ছেমতো খেতে থাকুন। নিচের ছবিতে ফলো করুন!
মাত্র দশ টাকার ধনিয়া পাতায় অন্তত বিশটা বড়া তৈরি করা যাবে। যা একটি বড়সড় পরিবারের একবেলা ভাত খাবারের প্রথম ধাপের সাথে থাকা সুস্বাদু স্বাস্থ্যসম্মত যথেষ্ট খাবার। দুইজনের সুখী পরিবার হলে দুইবেলা খেতে পারবেন বলে আশা করি। ধনিয়া পাতার বড়া খেতে মন চাইলে পরিবারের কাউকে জ্বালাতন না করে, নিজের টা নিজেই করতে পারেন। খেয়ে মজা পেলে বা ভালো লাগলে আমার এই পোস্ট সার্থক হবে। সবাইকে শুভেচ্ছা।
৪১টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
কালকেই প্রজেক্ট, ধনিয়া পাতার বড়া।
দেখি না কী হয়!
নিতাই বাবু
এই শীতের দিনে গরম ভাতের সাথে অন্তত দুটি ধনিয়া পাতার বড়ার সাথে সামান্য একটু পাতলা ডাল হলে আর কিছুই লাগবে না, দাদা। মাংস পোলাও এর কাছে কিছুই নয়।
সুপায়ন বড়ুয়া
ধনিয়া পাতার বড়া
খেয়ে দেব সাড়া।
শুভ কামনা দাদা
নিতাই বাবু
আপনার জন্যও অনেক অনেক শুভকামনা থাকলো।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দাদা কি দেখালেন! জীহ্বায় জল চলে আসলো। ধন্যবাদ দাদা এমন একটি মেনু শেয়ার করার জন্য
নিতাই বাবু
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি, দিদি।
রেহানা বীথি
দাদা, আমার খুবই প্রিয় ধনে পাতা। এই শীতে ডালের বড়া, পাতাকপির বড়া কিংবা অন্যান্য খাবারেও ধনে পাতা যোগ না করলেই চলে না আমার। তবে এভাবে বড়া বানিয়ে খাইনি কখনও। আপনার রেসিপি অনুযায়ী এখন প্রায়ই বানাবো। খুব সুন্দর রেসিপির জন্য ধন্যবাদ দাদা।
নিতাই বাবু
এই শীতের দিনে অন্তত দুই একদিন পরপর আমার টা আমি নিজেই করে থাকি, দিদি। এগুলো আমার খুবই প্রিয় খাবার। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় দিদি।
তৌহিদ
এটি আমার খুব পছন্দের খাবার। তবে আপনার রেসিপির মত করে কাল ট্রাই করবো।
নিতাই বাবু
অবশ্যই ট্রাই করে দেখন দাদা। বেশি সময় লাগে না। খাটাখাটিও কম।
কামাল উদ্দিন
মনে হচ্ছে আপনার বাড়িতে দাওয়াত খেতে হবে।
নিতাই বাবু
তাহলে তো ভাগ্য আমার এক রাজার মতো। কপালে থাকলে হতে পারে নিশ্চয়! ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয় দাদা।
কামাল উদ্দিন
এমনিতেই আপনার সাথে দেখা করার খুব ইচ্ছে আমার, আপনার থেকে আমার দুরত্ব খুব বেশী নয়।
নিতাই বাবু
আমি নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোদনাইল চৌধুরীবাড়ি এলাকা আরামবাগ থাকি। কিন্তু… আপনি?
সুরাইয়া পারভীন
আমিও বানাবো ধনিয়া পাতার বড়া। অনেক সুস্বাদু হবে নিশ্চয়ই ❤
নিতাই বাবু
খুব কম সময়ের মধ্যে শর্টকাট সুস্বাদু খাবার। অবশ্যই বানাবেন।
ইসিয়াক
জিবে জল চলে এলো যে …………
আজ তো হবে না কাল ট্রাই করবো।
প্রভু যিশুর অসীম করুণা সর্বদা আপনার এবং আপনার পরিবারের সঙ্গে থাকুক। মেরি ক্রিসমাস।
নিতাই বাবু
আপনাকেও শুভ বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দাদা।
ফয়জুল মহী
দাদা আমাকে দাওয়াত দিবেন খেতে
নিতাই বাবু
তাহলে তো এক রাজার কপাল আমার। ভাগ্যে থাকলে হতেও পারে দাদা। আশায় থাকলাম, আশায় রাখলাম।
প্রদীপ চক্রবর্তী
খুবি ভালো রেসিপি দাদা।
আমার খুবি পছন্দের খাবার।
.
ধন্যবাদ দাদা।
নিতাই বাবু
এগুলো আমারও খুবই প্রিয় খাবার দাদা। শুভেচ্ছা জানবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
সুন্দর বড়া
ভাতে খেতে লাগে মজা।
সুস্বাদু ও মচমচে
মুখে আনে ত্রীপ্তি।
নিতাই বাবু
শর্টকাট সময়ের মধ্যে খুবই সুস্বাদু খাবার, দাদা। আজই তৈরি করে খেতে পারেন।
মোঃ মজিবর রহমান
হুম! ফ্যামিলি নাই দাদা, ইচ্ছা মাঠেই মারা গেছে।
নিতাই বাবু
তাতে তো আরও ভালো হয়েছে, দাদা। মনের আনন্দে নিজে নিজেই তৈরি করে খেতে পারেন।
নুরহোসেন
রেসিপিতো ভালোই দিলেন ট্রাই করতে হবে,
ট্রাই করে জানাচ্ছি।
নিতাই বাবু
অবশ্যই ট্রাই করে জানাবেন, দাদা। জানালে খুশি হবো।
সঞ্জয় কুমার
বাসায় তৈরি করা হয়, এবার আপনার রেসিপিতে ট্রাই করবো
নিতাই বাবু
অবশ্যই করে দেখবেন দাদা। ভালো না লাগলে আমার টা আমার কপালে ফিকে দিবেন। আশা করি মজা পাবেন। এর কাছে কোরমা পোলাও কিছু না!
মাহবুবুল আলম
পুরুষ হয়ে রেসিপি ব্যতিক্রম। এই শীতে গরম গরম ভাতের সাথে ধনে পাতার বড়া বা ভর্তা সত্যিই মজাদার ও অতুলনীয়।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
নিতাই বাবু
এরকম শর্টকাট কিছু করতে ঘরের গিন্নিকে বিরক্ত করি না, দাদা। নিজের টা নিজেই বানিয়ে ভাত খেতে বসে পড়ি। তাকেও ভাগ দেই! ঠকাই না।
জিসান শা ইকরাম
বাহ দারুন তো,
বাসায় বড়া তৈরি করে খেতেই হবে।
ধন্যবাদ দাদা।
নিতাই বাবু
অবশ্যই বানিয়ে খাবেন, শ্রদ্ধেয় দাদা। সত্যি খুবই মজার একটা খাবার! সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সঞ্জয় মালাকার
ধনে পাতার বড়া আমার খুব প্রিয় দাদা, মাঝে মধ্যে নিজে নিজেই খাই।
নিতাই বাবু
প্রবাসে যদি ধনিয়া পাতা কিনতে পাওয়া যায়, তাহলে কিছু ধনিয়া পাতা সংগ্রহ করে নিজের টা নিজেই বানিয়ে খাবেন এবং সাথে থাকা বন্ধুদেরও খাওয়াবেন।
সঞ্জয় মালাকার
ওখানে বারমাস পাওয়া যায় দাদা, আমি কিন্ত মাঝেমধ্যে বানিয়ে খাই।
মোহাম্মদ দিদার
আগে খেয়েনেই পরে বলবো কেমন টেষ্ট।।
তবে লেখার টেষ্ট অসাধার।
নিতাই বাবু
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি, দাদা। আশা করি ভালো থাকবেন নিশ্চয়!
সাবিনা ইয়াসমিন
আমরা বাঙালিরা মাছ, মাংস যাই রাধি, খেতে বসলে প্রথমেই হালকা ফুলকো খাবার দিয়ে শুরু করি। ভর্তা, ভাজি, শাক, বড়া, কিছু একটা লাগেই। দারুণ বলেছেন দাদা। ধনিয়া পাতার বড়া আমারও খুব পছন্দের একটা খাবার। গরম ভাতের সাথে খেতে খুব ভালো লাগে।
শুভ কামনা 🌹🌹
নিতাই বাবু
ধনিয়া পাতার বড়ার সাথে ইংরেজি নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা জানবেন,দিদি।