আমার বাড়ি আমার ঘর, আমি নিজেই যেন হয়েছি পর। এখন নানাবিধ কাজ সম্পাদন করতে হচ্ছে বাসায় এসে। এ যেন এক অন্য আমি। আসলে অভ্যস্ততা আসেনি এখনো তাই মাঝেমধ্যে অস্বস্তি লাগছে।

আগে বাসা ঢুকতে কোন ঝক্কিঝামেলা ছিলনা। ফুড়ুৎ করে এসে সুরুৎ করে ঘরে ঢুকতাম আওয়াজ ছাড়াই। এসে আম্মা আর বউয়ের সাথে হাসিমুখে দুইটা কথা বলে বাকী কাজ সারতাম।

আর এখন?

ঘরে, বাসায় আমার সুরুৎ ফুরুৎ প্রবেশের কারনে যাতে অন্য কেউ (বউ) হাইজিন জাতীয় সমস্যায় না পড়ে সেজন্য ঠিক আমি আসার বিশ মিনিট আগেই বউ গেট বন্ধ করে রেখে দিচ্ছে। যাতে আমার আসার খবররে কলিংবেলের আওয়াজেই সে সতর্ক হতে পারে।

ঘরে ঢোকার আগেই শুনতে হচ্ছে- খবরদার কিছু নাড়বা না!! ঘরে ঢুকবানা!

আমার ঘরে আমি যাবোনা?
না! আমাকে টাচও করবা না। তিন ফুট দূরে থাকো!!

আজিবতো! এ কেমন বউ? এমন বউ আমি চেয়েছি?

এই শোনো!! প্যাটর প্যাটর না করে এই নাও হেক্সাসল। হাত রাব করো। আর হ্যা, তুমি না থাকলে সমস্যা নাই কিন্তু আমি না থাকলে এমন বউ আর পাবা? তাই আমার জন্য এত সতর্কতা বুচ্ছ?

ইদানিং এসব কথা শুনে আমি বেহুঁশ হবার আগমূহুর্তে আম্মা এসে বলেন- বাবা, যা ওযু করে আয়। আগে নামাজ পড় তারপর খাবি।

যে মা আমি বাসায় এলেই সারাদিনের জমানো কথা বলে আজ সে বলছে আগে নামাজ পড় তারপর অন্যকথা!!

মনে মনে বলি- আগেতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তাম আর এখন পারলে এরা দু'জন (মা+বউ) মিলায় আমাকে দশ ওয়াক্ত পড়ায়।

বোধ হবার পর থেকে বাথরুমে নিজের লুঙী গামছা নিজেই নিয়ে গিয়েছি।

আর এখন? বাসায় এসেই সব রেডি পাচ্ছি!!

অনেক সময় বাসায় এসে দেখতাম বউ আম্মা সবাই টিভি দেখছে। আর এখন- আমি গেটে নক করলেই তারা হেক্সাসোলের বোতল নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে!!

এসব কর্মকান্ডে নিজেকে জমিদার জমিদার মনে হচ্ছে। আমি বাসায় আসবো আর পাইক পেয়াদারা সেবা করার জন্য প্রস্তুত!!

আহ! শান্তি শান্তি!!

করোনা! আর যাই হোক আমাদের নিয়মতান্ত্রিক বানাচ্ছে। তাই কিছু সময় মনে হচ্ছে - নিজের ঘরে মাঝেমধ্যে পর হয়ে থাকাতেই আনন্দ।

0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ