দূষিত ঢাকা

ইঞ্জা ১৯ নভেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ০৭:০৬:৩৬অপরাহ্ন সমসাময়িক ৩৮ মন্তব্য

বায়ুদূষণ
======

ঢাকা বায়ুদূষণে বিশ্বে তৃতীয় ও দিল্লির চাইতেও বেশি দূষণের  স্থান অধিকার করেছে, বাহ কি দারুণ কথা, বিশ্বে কোন না কোন কারণে ঢাকার নাম এলো তাহলে, আমাদের তো নাচা উচিত ধেইধেই করে কিন্তু একটা বিষয় শুনে তো চমকে উঠলাম, বছরে প্রায় এক লক্ষ তিরিশ হাজার মানুষ ইন্না লিল্লাহ খায়ঃ সূত্র আমেরিকার গবেষণা প্রতিষ্ঠান, কি খুব মজা লাগছেনা?

আপনারা জানেন কি, বিআরটিএর তথ্য মতে ঢাকায় ৮ লক্ষ রেজিস্ট্রশনকৃত গাড়ী চলে আর তার মধ্যে প্রায় এক লক্ষ ফিটনেস বিহীন গাড়ী আছে, তাহলে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কতো গুলো গাড়ী চলছে তা মনে মনে অংক করে ফেলতে পারেন নিশ্চয়, এ সাথে বিআরটিএ বলছে মোটর সাইকেল ফিটনেসের আওতায় নেই, বুঝুন ঠ্যালা। এই গাড়ীগুলোর ধোয়া এই ঢাকা শহরকে যথেষ্ট বিষাক্ত করে তুলছে আর সাথে গোঁদের উপর বিষফোঁড়া হিসাবে আছে ফিটনেস বিহীন গাড়ী আর মোটর সাইকেল গুলো।
এরপর আরো কিছু আছে ঢাকার বায়ুদূষণে দায়ী আর তা যথাক্রমে ঢাকা মেট্রোর আসে পাশে গড়ে উঠা ইটখোলা, নতুন বিল্ডিং তৈরীতে প্রচুর ধুলাবালি, রাস্তাঘাট উন্নয়নে খোঁড়াখুঁড়ির ধুলা সব মিলিয়ে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ছে।

এই দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি তা সরকার ভাবেনা কেন, উত্তর সরকার দেয়না কেন তা প্রশ্ন করবে জনগণ কিন্তু আমার নিজের একটি উপায় বা মতামত আছে এই দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার যা সরকার চাইলে ব্যবহার করে দেখতে পারে, আমারটা ছাড়াও সরকার নিজেদের ব্যবস্থা নিতে পারে কিন্তু মোদ্ধা কথা হলো এই বায়ুদূষণের মাত্রা অবশ্যই কমিয়ে আনতে হবে আর তা না হলে এই শহর হবে মৃত্যুপুরী, লাখে লাখে লোক মরতে থাকবে কিন্তু সরকার তখন কিছুই করতে পারবেনা।

আমার মতামত হলো, সরকারের উচিত এই মূহুর্তেই যত ফিটনেস বিহীন গাড়ী আছে তা জব্দ করে ডাম্পিং করা বা ধ্বংস করে ফেলা।
যত বাস, কার বা ছয় চাকা, চার চাকার গাড়ী চলে তাদের অল্টারনেটিভ দিন হিসাবে চালানো, যেমন মনে করুন, জোড় সংখ্যার গাড়ী রবিবার চললে, বেজোড় সংখ্যার গাড়ী সোমবার চলিবে আর এতে প্রতিদিন গাড়ী কম সংখ্যক চলার কারণে বায়ুদূষণের মাত্রা কমতে থাকবে, হয়ত প্রশ্ন থাকবে বাস ট্রাকের ইনকাম কমে যাবে, তাহলে আমি বলবো কমবে না বই বাড়বে, কারণ প্রতিদিন গাড়ী গুলো নিজেদের মধ্যে ঠেলাঠেলি করে যাত্রী তুলার জন্য আর এতে আনুপাতিক হারে প্যাসেঞ্জার কম হয় আর অলটারনেটিভ ভাবে গাড়ী চালালে এই ঠেলাঠেলি বন্ধ হবে সাথে প্যাসেঞ্জার বেশি পাবে মানে ইনকাম ডাবল।
বিআরটিএকে আরো শক্ত হতে হবে, লক্কড় যক্ষড় গাড়ী যেন ঢাকা সহ সারাদেশে নামতে না পারে তা অবশ্যই বাধ্যতামূলক করতে হবে।
এক ফ্যামিলি একটা গাড়ী নীতি করতে হবে, দরকার হলে ইঞ্জিন চালিত গাড়ী কমিয়ে দিয়ে সরকারি ভাবে সুইডেন, জার্মানির মতো সাইকেলের ব্যবস্থা করতে হবে প্রতি এলাকায় যা ঘন্টা হিসাবে ভাড়ায় পাওয়া যাবে।
আমার এইসব মতামত ফলো করতে গিয়ে হয়তো মালিক, শ্রমিক সমিতির আন্দোলনের মুখে পড়তে পারে সরকার কিন্তু এতে সরকারকে দমে গেলে হবেনা, দরকার হলে আন্দোলনরতদের পিটিয়ে কাঁঠাল পাকিয়ে হলেও আন্দোলন শক্ত হাতে দমন করতে হবে।
গাজীপুর থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা বা ঢাকার আশেপাশে থেকে মানুষ আসা যাওয়ার জন্য মুম্বাইয়ের মতো সিটি ট্রেইনের ব্যবস্থা করতে হবে যেন মানুষ আশেপাশে থেকে প্রতিদিন এসে অফিস এটেন্ড ও অন্যান্য কাজ সেরে ঘরে ফিরে যেতে পারে, এতে গাড়ী বোঝায় করে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আর জীবন নিয়ে গাড়ী বোঝায় করে আর আসবেনা।

আসুন বাকি গুলো নিয়ে আলাপ করি, ইট প্রস্তুতকারিদের বাধ্য করতে হবে অত্যাধুনিক মেশিনারি ব্যবহারে যাতে দূষণ কমানো যায়, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে খোঁড়াখুঁড়ি করতে হবে এবং যেখানে খোঁড়া হবে সেইখানে সেইদিনই কাজ সেরে ধুলাবালি মুক্ত করতে হবে প্রতিদিন, প্রতিদিন রাতে রাস্তা ধোয়ার গাড়ী রাস্তার ময়লা চুষে নেবে আর পানি দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে নেবে, এতে ধুলাবালির দূষণ কমে যাবে।
নতুন বিল্ডিং তোলার ক্ষেত্রে ধুলাবালি যেন উড়তে না পারে তার ব্যবস্থাপত্র দেবে রাজউক এবং কঠোর ভাবে তা পালন করছে কিনা নজর রাখতে হবে।
প্রতিটি বাড়ীতে বাধ্যতামূলক গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে, জায়গা খালি না থাকলে, ছাদে লাগানোর ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

সরকার যদি এইসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেন আশা করি আমাদের ঢাকা আবার বসবাস উপযোগী হয়ে উঠবে অন্যথায় মরণ ছাড়া উপায় থাকবেনা।

 

সমাপ্ত

0 Shares

৩৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ