আমার জন্ম হয়নি কবিতা লেখার জন্য।
অথচ আমি কবিতা লিখছি।
যাঁর ঔরসে আমার জন্ম সেও কবিতা লেখেনি!
লেখেননি আমার পূর্বপুরুষগণ।

তাহলে আমি কেন কবিতা লিখছি?
আমি তো ঈশ্বরের বরপুত্র নয়।
নয় আমি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বংশধর।
এমনকি কেউ পাঠায়নি ব্যাকরণের নিয়ম ভেঙে কিছু শব্দ ক্ষতবিক্ষত করে কবিতা লিখতে।

অথচ প্রতিনিয়ত শব্দ এসে জমা হয় আমার কাছে।
তাদের মধ্য অনেকে বিকলাঙ্গ।
তারা এসে আকুল প্রার্থনায় আমায় জানায় তাদের সাজিয়ে পরিপূর্ণ সাজে কবিতা লিখতে।
অথচ আমি কবিতা লিখতে জানিনা।
কেমন করে তাদের সাজিয়ে পরিপূর্ণ রূপ দেই ?

বিশাল সমুদ্রের বুকে যে নক্ষত্রের জ্বলন্তময় আলো, সেখান থেকে ছুটে আসে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শব্দ।
এ শ্রেষ্ঠ শব্দ থেকে জন্ম হয় শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ কবিতা!
অথচ সে কবিতা আমি লিখি নি।
কিন্তু সে শব্দ দিয়ে আমায় একজন কবিতা লিখতে বলছে!
তবে সে, কে?
তা জানিনা!

এযাবৎ অক্ষর সাজাতে গিয়ে শব্দের মন্বন্তর আসেনি। কেবল মন্বন্তর এসেছে তোমাকে না পাওয়ার।
সে ক্ষতবিক্ষত শব্দ দিয়ে কবিতা লিখি বলে,
তুমি আমায় ছেড়ে যাও।

কিন্তু একবারও ভাবোনি সে ক্ষতবিক্ষত শব্দের যন্ত্রণা।
উপভোগ করো নি,
তাদের সাজিয়ে কবিতায় পরিপূর্ণ রূপ দেওয়া।
অথচ তুমি আমায় মন্বন্তরে রেখে চলে যাও।

হয়তো তুমি জানো না,
এ মন্বন্তরে দুমুঠো ভাত না পেতে পারি।
কিন্তু সে বিকলাঙ্গ শব্দকে সাজিয়ে সহস্রাধিক কবিতা লিখে পেটের ক্ষুধা নিবারণ করতে পারি!

বরং তুমি চলে যাও।
তোমায় আর ডাকবো না অকাল বোধনের মন্ত্রে।
আমি কবিতা লিখতে না জানলেও,
সে শব্দ দিয়ে কবিতা লিখতে জানি!

শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শব্দের কবিতার মতো ভালবেসেছিলাম।
কিন্তু তুমি ভালোবাসনি বিকলাঙ্গ শব্দকে।
ভালোবাসনি আমায়।

মনে রেখো, হতাশ হয়ে একদিন সমুদ্রের ভাসমান শ্বেত পাথরের উপর নিজেই লিখে রাখবে মন্বন্তর কেবল একার আসেনা!

তাই তোমায় আর কখনো ডাকবো না,
অকাল বোধনের মন্ত্রে।
.
ছবিঃ সংগৃহীত।

0 Shares

১৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ