বর্তমানে কিছু হুজুরদের কথা বলছি যারা ধর্ম বিক্রি করে কতো সুন্দর কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে,আমার বাসার সাথেই অনেক বড় একটা মাদ্রাসা আছে প্রতি বছরই এখানে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়,এই ওয়াজ মাহফিল করে ইসলামের প্রচার করা কোনো কোরআন বা হাদীসে নাই,আর থাকলেও হয়তো এরকম চাঁদা তোলার নিয়ম হয়তো নেই, গতবছর মাহফিলের কথা বলছি,আমার বিছানায় শুয়ে স্পষ্ট ওয়াজ শোনা যায়, একজন বিখ্যাত বক্তা এসেছিলেন আমি নাম বলতে চাইনা, তিনি টাকা তোলার জন্য বিখ্যাত, তিনি একটা গান গাইতে শুরু করলেন মদিনায় যাইতে পারলাম না মদিনা দেখতে পারলাম না,ওই আছেন নি কেউ টাকা দেওয়ার? একজন দাঁড়িয়ে গেলেন, হুজুর:হ্যাঁ কি নাম? কতো টাকা দিবেন? ব্যাক্তি:২ লাখ

হুজুর: আলহামদুলিল্লাহ, এইভাবে করে প্রায় ২৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা তিনি তুললেন, জানিনা যে এখান থেকে কতটা তার ভাগে যাবে?তখন আমি শুয়ে শুয়ে চিন্তা করছি যে হুজুর মদিনায় যাইতে ও দেখতে না পারায় এতো টাকা উঠলো,আর যদি তিনি মদিনায় যাইতে ও দেখতে পারতো তাহলে কি হতো? আমার অনেক খারাপ লাগে যখন এখন এতো এতো টাকা আরো অনেক খাদেম থাকা সত্ত্বেও লিল্লা বোর্ডিং এর যে সকল ছাত্ররা বিনামূল্যে খাবার খায় তাদের খাবারের তালিকা যখন একরকম ই থেকে যায়, এইতো গেলো একটা ছোট্ট গল্প, তারপর আসি বিভিন্ন কৌশলে এতিমখানা ও মসজিদ মাদ্রাসার চাঁদা তোলার,সব হুজুর যে খারাপ তা কিন্তু নয়, অনেক ভালো ও ঈমানদার তো অবশ্যই আছে, যাইহোক প্রায়শই দেখা যায় লঞ্চ ঘাট, বাসস্ট্যান্ড ও বিভিন্ন জায়গায় একটা রশিদ বই হাতে নিয়ে সাহায্য চাইছে, সেদিন আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরে যাওয়ার সময় একজন লোক বাস এ উঠে চাঁদা চাইছে, আমার কাছে আসলো আর বললো ভাই কিছু দিবেন এতিমখানার জন্য? আমার পাশের সিটটি খালি ছিলো, আমি বললাম বসেন এইখানে আপনাকে পেয়ে ভালোই হলো, আমি এতিমখানায় টাকা দিবো দেখে পকেটে টাকা নিয়ে ঘুরছি,তো কোথায় এই এতিমখানা? বললো চৌরাস্তায়, আমি বললাম ও তো ভালোই আমিও ওইখানে যাবো, অনেক টাকা তো তাই চাচ্ছি নিজে গিয়ে দিবো ও দেখি আপনার রশিদ টা? তিনি দিলো আমাকে, আমি রশিদে দেওয়া মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলাম দেখি সেটি বন্ধ, বললাম এই নম্বর বন্ধ কেন? বললো এটা বড় হুজুরের ফোন, মনে হয় চার্জ নাই, আমি বললাম ও তাই, তাইলে সমস্যা নাই আপনি তো আছেন এইবলে ওনার হাত ধরলাম,উনি টেনশনে পারলে চলতি বাসের জানালা দিয়ে লাফ দেন,অলরেডি সে ঘেমে গেছেন,আমার হাতটা জোরে টান মেরে বললেন ভাই আমাকে ছেড়ে দেন,আমার কাজ আছে, বুঝতে আমার বাকি নেই যে এটা নিতান্তই একটা ধান্দাবাজি, গতকালের একটা ঘটনা বলি এক মহিলা একটা বিয়ের সাজের কুলা নিয়ে টাকা তুলছেন,কি হয়েছে তার?তার মেয়ের বিয়ে তাই,বেশ ভালো কথা, আমি আপনাদের বাড়ী কোথায়? বললো নদীর ওপার দিনারের পুল,আমি বললাম আমাদের একটা সংগঠন আছে এসব বিয়েতে আমরা সবসময়ই সাহায্য করি বাড়িতে গিয়ে তো চলুন এখুনি যাবো,ওনার হাত কাঁপছে তখন চায়ের দোকানদার কে বললাম ওনাকে এক কাপ চা দাও, তারপর চাচী এইসব মিথ্যা বলে টাকা নিয়ে লাভ কি?উনি বললেন কি করমু বাবা কোনো কাজ নেই তাই,তখন বললাম আপনার কুলায় কমপক্ষে ২ হাজার টাকা আছে এ দিয়ে বাদাম কিনে বিক্রি করেন না,২ টাকা ইনকাম করুন হালাল ভাবে খান, আপনি তো পুরোপুরি সুস্থ একজন মানুষ, এরকম অনেক মানুষ পেয়েছি আমার জীবনে, সেদিন আরেক হুজুর কে ধরলাম গাবতলী বাস টার্মিনালে তিনি ভোলার এতিমখানার টাকা তুলছেন,তখন বললাম ভোলায় কি বড়লোক মানুষের অভাব পড়ছে যে গাবতলী আইসা টাকা তোলা লাগে? এরকম ধর্ম বানিজ্য অহরহ চলছে,আমার এসব লেখার কারন হচ্ছে,আমি দান‌ করি সাধ্যমত কিন্তু বুঝেশুনে ও ডান হাত থেকে করি বাম হাত টের পায়না,আর এ সমাজে এমন মানুষ আছেন যারা শুধুমাত্র নাম ফুটানোর জন্য দান করে থাকেন, সুতরাং দয়াকরে নামের জন্য দান না করে বুঝেশুনে ও মুক্তহস্তে সঠিক জায়গায় করুন।

0 Shares

১৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ