জীবনটাকে অর্থহীন লাগে কখনো কখনো। মনে হয় এই যে বেঁচে আছি, হাঁটছি-চলছি-ঘুরছি-ফিরছি, পাওয়া-না-পাওয়ার হিসেব কষছি, শুধু কি এজন্যেই এই পৃথিবীতে আসা? সময়ের বদলে একই মানুষকে একবার ভালোবাসছি, আবার ঘেণ্ণাও করছি। কি অদ্ভূত মানুষ আমরা! যে মানুষটিকে ছাড়া অসহ্য যন্ত্রণা বুকের ভেতর আর সেই সাথে শব্দহীন অনুভূতি অস্থির করে তোলে, তাকে ছাড়া আবার বেঁচেও থাকতে পারি আমরা সকলে। মানুষ কখনো যে কারো অভাবে জীবনকে থামিয়ে দেয়না। কথায় আছে না : প্রকৃতি জায়গা পূরণ করে নেয়। আমরা শোক নিয়ে বেশী সময় থাকতে পারিনা। যেমন আমাদের চোখের জলের ধারার স্থায়িত্ব পনেরো মিনিট। তারপর জল থেমে যায়, শুধু ফোঁপানোর শব্দটুকু থাকে। কেন আমরা বাবা-মা হারিয়ে যাবার পরেও বেঁচে থাকি? কেন হাসতে পারি? কেন পারি আনন্দ করতে? আসলে আমরা হারাবো বলেই মনের অজান্তে প্রস্তুত থাকি। একদিকে যতো হারাই, উল্টোদিকে পাইও কিন্তু। সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে পৃথিবীর সব কষ্ট ভুলে যাই। কিন্তু যাদের সন্তান নেই, তাদের যন্ত্রণা কোনো কিছুর বিনিময়েও ফুরোয় না।
সন্তানধারণের মতো আনন্দ পৃথিবীর আর কোনো আনন্দের সাথে তুলনাযোগ্য নয়। একটা জীবন নিজের শরীরের ভেতর বড়ো হচ্ছে, এ যে কি এক অনুভূতি! যেদিন সন্তানের অস্তিত্ত্ব টের পেলাম, ডাক্তার বললো, চঞ্চল আমি, দৌঁড়ছুট মেয়েটা আমি নিজের যত্ন নেয়া শুরু করলাম। দায়িত্ত্ব পালন বলেনা ওটাকে। যেদিন প্রথম নেচে উঠলো জীবনে সব সুন্দর পাওয়া যেনো তখন ম্লান। আর তারপর ওর মুখ দেখা, আমার সন্তান। পুরোপুরি আমার। আমি আদর করবো, আমি বকবো। এমন অধিকার! যাক আজ সেই ছেলে তরকারী গরম করে ভাত টেবিলে নিয়ে এসে আমায় খেতে ডাকে। মাঝে-মধ্যে সকালে ওমলেট আর টোষ্ট বানিয়ে আমায় সারপ্রাইজ দেয়। যাক সেসব কথা। তখন মনে হয় জীবনটা অনেক সুন্দর। আজ সন্তানের কথা কেন বলছি, তার কারণ বলবো।
জীবনের প্রতি প্রচন্ড ভালোবাসা আমার। বিশাল হতাশাগ্রস্ত সময়ে অনেকেই নিজেকে খুণ করেছে, আমি অপেক্ষা করেছি সুন্দর দিনের। অনেক ছোটবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিলো মাদার তেরেসা হবার। কি সুন্দর সাদা শাড়ী পড়ে! বড়ো হলাম কঠিন সিদ্ধান্ত নিলাম বিয়ে করবো না। সেবা করবো মানুষের আর চাকরী করে বাপি-মামনির দেখাশোনা করবো। 'পড়বি তো পড় মালির ঘাড়ে।' পড়লাম প্রেমে। তারপর ভাঙন। তারপর বিয়ে। পনেরো বছরের সংসার, তেরো বছরের ছেলে। বেশ চলে যাচ্ছে। কিন্তু স্বপ্ন কি স্বপ্ন দেখা ছাড়তে পারে? ডাক্তার হতে পারিনি, সেবা করাও না। কিভাবে জানি কানাডা এসে সে ইচ্ছেও পূর্ণ হয়ে গেলো। যখন এক একজন ক্লায়েন্টের কাছে যাই, নিজের কাজের বাইরেও কাজ করে দিয়ে আসি। মন ভালো হয়ে যায়। ভালোবাসা যে পাই, অমন ভালোবাসা পেলে মন খারাপ করে রাখার সময়টুকুই তো থাকে না। যখন প্রায় অনেক ক্লায়েন্ট অফিসে ফোন করে আমাকেই চায়, আর কি কোনো চাওয়া অপূর্ণ থাকে? এসব পেয়েই তো বেঁচে থাকার লোভ খুব বেশী হয়েছে। কিন্তু বেঁচে থাকা কি যায়? একদিন না একদিন চলে যেতেই হবে। আজ হোক আর কাল। আমি সবসময় প্রার্থনা করি সুস্থ অবস্থায় যেনো যেতে পারি। আর এখন তো আরোও বেশী বেশী করে করি। কেন করি? সেপ্টেম্বর মাসের এক তারিখে সব ফাইনাল করে এসেছি, আমার অর্গান ডোনেট করেছি। ভেবেছিলাম আগষ্টের ২৮ তারিখেই ফাইনাল করবো, কিন্তু খুব ব্যস্ত ছিলাম।
সেদিনের গল্প বলি। হঠাৎ দেশ থেকে ফোন, বন্ধুর। কথায় কথায় বললাম আমার সাথে যাবি এক জায়গায়? বললো কোথায়? ফোনের ভেতর ওটার কন্ঠটাকে নিয়ে গেলাম সাথে। টিকেট নিতে গেলাম মহিলা জানতে চাইলো হেলথ কার্ড রিনিয়্যু করতে এসেছি কিনা! বললাম অর্গান ডোনেটের পেপারটা জমা দেবো। মহিলা এক দৃষ্টে চেয়ে রইলেন। টিকিটটা নিয়ে দুটি ঘন্টা বসে রইলাম ওন্টারিও সার্ভিস সেন্টারের হেলথ ডিপার্টমেন্টে। যখন আমার নাম্বার এলো, গেলাম। মহিলা বললো কার্ড রিনিয়্যু? বললাম অর্গান ডোনেট করবো, ফর্মটা জমা দেবো। আর একদিন যে এসে কথা বলে গেলাম, তোমরা ফর্ম দিলে। মহিলাও চেয়ে রইলো। বললো স্পেশ্যাল হেলথ কার্ড পৌঁছে যাবে। এই কার্ড দেয়া হয় যদি পথে এক্সিডেন্ট হয়, মরে যাই তাহলে...থাক বললাম না। জমা দেবার পর মনে হলো এ আরেক জীবন নিয়ে আমি শ্বাস নিচ্ছি। এ আরেক মাতৃত্ত্বের স্বাদ। আবার নিজের যত্ন নেয়া শুরু করেছি। বাঁচতে হবে সুস্থভাবে। আমি থাকবো এই পৃথিবীতে, নিঃশ্বাস ছাড়া হোক। তাও থাকবো। যদি না দিতাম কি হতো? ওই মাটিতে মিশে যেতে হতো। কি কাজে লাগতো মৃত এই শরীরটা? ভাবতে কি যে ভালো লাগছে সুন্দর এই পৃথিবী আমার এই চোখ দিয়ে অন্য কেউ দেখবে। অবশ্য চশমা রেখে যাবো। এই হৃদয়টায় অনেক ভালোবাসা সেও থেকে যাবে কারো বুকে। বন্ধুরা বলে অনেক সুস্থ আমার হার্ট। অনেক হাসি যে! কিডনিও দারুণ। প্রচুর জল খাই। বান্ধবী বললো, আমার ব্রেনটা যেনো কাউকে না দেই। তাহলে সে বেচারা/বেচারীর অবস্থা শেষ। অনেক হাসলাম। এখন আমি অকারণেও হাসি। এতো আনন্দ হয় ডোনেট করলে? ইস আগে যদি জানতাম! অনেক আগে সন্ধানীতে গিয়েছিলাম রক্ত দিতে, নেয়নি। কি কষ্ট! আজ পর্যন্ত রক্তদান করতে পারিনি। ঈশ্বর সত্যি আমার কোনো ইচ্ছে, চাওয়া বাকী রাখেনি। আর যা পাইনি এখনও তাও জানি পেয়ে যাবো। আমার সদিচ্ছাগুলো কোনোদিন অপূর্ণ থাকেনি।
আমারই বুকের অলিন্দ-নিলয়ে তুমি শ্বাস নেবে
কাঙ্খিত ইচ্ছেগুলো দাপিয়ে বেড়াবে কৈশোর কিংবা তারুণ্য;
অথবা লাঠির উপর ভর দিয়ে চলা, এক আস্ত সময় পাড়ি দেয়া
নুয়ে পড়া নিম্নবিত্ত বয়স।
হিম হয়ে যাওয়া শরীরটার হাড়গোড় মাটির সার
আর ভেতরের অংশে থাকা কাব্য-গল্প-উপন্যাস-নাটক সব ছাপার অক্ষরে
এদিক-ওদিক প্রকাশিত হবে অন্যভাবে।
অনাঘ্রাত জল ফিল্টার হবে তোমারই শরীরে।
আমি কোথাও যাবোনা
এ পৃথিবী ছেড়ে, তোমায় ফেলে কখনোই যাবোনা।
আলোড়িত হবো,
আলোক ছড়াবো---
তোমার ঘাসে-লতায়-পাতায়-সূর্যকণায়-মেঘ-বৃষ্টি-রাতের জোনাক পোকায়
পৃথিবী তোমার থেকে কি করে যাবো?
আমার সমস্ত অহঙ্কার গড়িয়ে গেছে যে তোমার বুকেই।
হ্যামিল্টন, কানাডা
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ইং।
Thumbnails managed by ThumbPress
৩৪টি মন্তব্য
আবু খায়ের আনিছ
পাওয়ার আনন্দের চেয়ে দেওয়ার আনন্দ বেশি। এতটা মহৎ হতে পারিনি কিন্তু দেখার সৌভাগ্য হয়েছে কিছু মানুষের বেচেঁ থাকার তৃপ্তি। রক্ত দিয়েছি জীবনে অনেকবার, আর যতদিন সুস্থ আছি দিয়ে যাব।
মহৎ প্রাণ এই মানুষটার জন্য রইল অনেক অনেক শুভ কামনা। যেখানেই থাকেন ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই আশাটা করতেই পারি সৃষ্টিকর্তার কাছে।
নীলাঞ্জনা নীলা
আনিছ ভাই এই প্রার্থনাটুকু করবেন সুস্থ অবস্থায় যেনো যেতে পারি। তা নইলে এই দান কোনো কাজেই এসবে না।
রক্তদান করতে পারিনি। সন্ধানীর ভাইয়া-আপুরা ব্লাড টেষ্ট করেই বলতো, আপনি পরে অন্য কোনোদিন আসুন। 🙁
ধন্যবাদ আপনাকে। -{@
মেহেরী তাজ
আমার ও কোন দিন কোন না কোন কারনে রক্ত দেওয়া হয় নি। 🙁
অর্গান ডোনেটে করছেন?? খুব ভালো লাগলো জেনে। 🙂
সদিচ্ছা গুলো অপূর্ণ থাকে না কোন না কোন ভাবে পুরন হয়েই যায়।
ভালো থাকুন আপু। 🙂 (3
নীলাঞ্জনা নীলা
হুম শুধু হাড়-গোড়গুলোই দেয়া হলোনা। পুরো আমাকে ডোনেট করলে রিসার্চের কাজে আসতো। পিচ্চি আপু রিসার্চের কাজে লেগে কি লাভ! কি ভয়ঙ্কর দেখাতো আমায়। হাসি ছাড়া নিজেকে দেখলে আমি নিজেকেই ভয় পাই। 😀
হুম আপু প্রার্থনা করো যেনো সুস্থ থেকে যেতে পারি। -{@ (3
ব্লগার সজীব
নীলাদি,আপনি আমার সামনে থাকলে এখন পা ছুঁয়ে ছালাম করতাম।যোগাযোগ আছে (হোক তা ব্লগে) এমন কাউকে আজ প্রথম পেলাম,যিনি নিজের অর্গান ডোনেট করে দিলেন। অনেক অনেক শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা আপনার প্রতি দিদি।
নীলাঞ্জনা নীলা
এভাবে বললে আমি কিন্তু কেঁদে দেবো। অনেক কষ্ট হয় কাঁদতে। প্রথম কথা জল ঝরেনা। ফোঁপাতেও পারিনা। শুধু ব্যথা হয় বুকে, শ্বাসকষ্ট।
ভাইয়া কতো কতো মানুষ অর্গান ডোনেট করে, আমার তো বলার জায়গা আছে। তাই লিখেছি। এমন কিছু করিনি আসলে। মরে গেলে এই শরীরটার তো কাজই নেই কোনো। তাই স্বার্থপরের মতো দিয়ে দিলাম। কি মজা ভাবুন তো আমার চোখ দিয়ে কেউ ওই আকাশ-অরণ্য দেখছে? আমার ব্রেণ নিয়ে ভাবছে। ওটা তো আমি-ই। 😀
অফুরান ভালোবাসা -{@ (3
জিসান শা ইকরাম
এক নূতন নীলাকে জানলাম আজ
এ কাজের জন্য অবশ্যই তুমি শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে গিয়েছো আমার কাছে।
নিজকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছো
উপরে তাকিয়ে দেখছি আকাশের নীলকে।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা আকাশের নীল তো জড়িয়েই আছি জন্মের পর থেকে। আর চারপাশের এই যে সবুজ সেও। পৃথিবী ছেড়ে আমার হাড়গোড় চলে যাবে, কিন্তু আমি থাকবো। কি মজা! \|/
প্রার্থনা করো নানা সুস্থভাবে যেনো যেতে পারি। এই ডোনেট করাটা যেনো স্বার্থক হয়। ভালোবাসি -{@ (3
ছাইরাছ হেলাল
বাঁচিতে চাহি সুন্দর ভুবনে এ কথাটির সার্থকতা আপনি আপনার কাজের মধ্যে দিয়েছেন,
ঠুনকো বা ছেঁদো কথার মোড়কে নয়। আপনি আপনাকে তুলে ধরেছেন উচ্চতর থেকে উচ্চতম স্থানে।
প্রকৃত ত্যাগের মহিমায় নিজের অজান্তে উজ্জ্বল হলেন আরও একবার।
এমন অমলিন হাসি হাসুন চিরদিন আমাদের সাথে নিয়ে ও, এ কামনা করি ই।
একটু কি তাড়াহুড়ো ছিল লেখায়!!
নীলাঞ্জনা নীলা
হুম লেখাটি একটু কম যত্ন নিয়েই লিখেছিলাম। আমি এক সিটিং-এ লিখি, যা কিছু লেখার। থামিয়ে দিলেই আর শেষ করতে পারিনা। প্রচুর লেখা ওভাবে ঘুমিয়ে গেছে। আর জাগাতেই পারিনি।
অনেক সুন্দর মন্তব্য। হুম আমি অনেক বেশী স্বার্থপর। আর এই স্বার্থের জন্যেই এভাবে ডোনেট করা। আপনারা কেউ থাকবেন না, আমি থাকবো। ভূত হয়ে ঝুলবেন গাছে গাছে আর আমি মানুষ হয়ে নাচবো-ঘুরবো-বেড়াবো-ভালোবাসবো। \|/ 😀
অরুনি মায়া
এমন লেখায় কি মন্তব্য করা যায় জানা নেই আমার আপু। শুধু বলব মানবতা সেবার যে মহান উদ্যোগ টি তুমি নিয়েছ তাতে সফল হও। অনেক গুলো জীবনের সেবায় নিবেদিত তুমি মরে গিয়েও যেন বেঁচে রও। পৃথিবীরর বুকে মিশে গিয়েও অনেকের মাঝে জেগে রও।
আমারও ডাক্তার হবার ইচ্ছে ছিল খুব। হতে পারিনি,,,,,, (3 -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু যা পাইনি তা নিয়ে মন খারাপ করে বসে থাকতে নেই। শুধু প্রার্থনা করো সুস্থভাবে যেনো যেতে পারি। যেনো কাজে আসে আমার অর্গানগুলো।
কি সুন্দর লিখলে “পৃথিবীর বুকে মিশে গিয়েও অনেকের মাঝে জেগে রও।” বাহ -{@ (3
অরণ্য
প্রিয় নীলা আপু,
হ্যাঁ, ইহাই আপনি এবং ইহাতেই আমি আপনাকে ফের ফিরিয়া পাইলাম। 🙂 আপনার এই লেখাটি (বোধ ও ভাবনা) চাটিয়া-পুটিয়া খাইয়া ফের পকেটেও কিছু লইয়াছি; যাহা খানিকবাদে আবার খাইব বন্ধুদের আড্ডায়। আমি ইহাও জানি মাঝে মাঝে আমি ঢেকুরও তুলিব অনেকটা নাটোরের ‘অবাক সন্দেশ’ খাইলে যেমনটি সবসময়ই ঘটিয়া থাকে।
একটি উপলব্ধি আসিল আপনাকে লেখিতে গিয়া। বটবৃক্ষ কখনও ভাবিতেই পারে তাহার প্রিয় কোন গুল্মের ছায়া তাহার শরীরে পড়িলে কেমন হইতে পারে। প্রকৃতি তাহা মানিয়া লয় না। কারণ? কারণ একটি রহিয়াছে। বটবৃক্ষের সে সাধ পূর্ণ করিবার লাগি প্রকৃতিও রাজি হইয়াছিল কোন একদিন। বটবৃক্ষের প্রিয় গুল্মটিকে মাটিসহ তুলিয়া লাগানো হইয়াছিল ঐ দূর পাহাড়ে, যাহার ছায়া কিছুক্ষণের জন্য পড়িয়া থাকে পড়ন্ত বিকেলে এই খেয়ালী বৃক্ষের গায়ে।
সেদিন প্রকৃতিতে হৈ হৈ রব পড়িয়া গেল – বটবৃক্ষের ইচ্ছে পূরণ হইবে আজ। মেঘও সেদিন ছুটিতে রহিল। সবার চোখ স্থির রহিল বটবৃক্ষের প্রতি কি ঘটিতে পারে গুল্মের ছায়া তাহার গায়ে পড়িলে। সূর্য আস্তে আস্তে নামিয়া চলিল পাহাড়ের ওপারে। আর এপারে পাহাড়ের ছাড়া বটবৃক্ষের পা-হাত স্পর্শ করিয়া শেষে তাহার মাথার শেষ পত্রটিও ছুঁইয়া গেল। বটবৃক্ষও অবাক হইল সকলের মতই তাহার সেই কাঙ্খিত ছায়া কোথায় হারাইলো! পরের দিনও একই ঘটনা ঘটিল – তাহার প্রিয় গুল্মের ছায়া তাহার উপর পড়িল না। ^:^
কারণ খুঁজিতে খুঁজিতে অনেক বছর কাটিয়া গেল। তাহার পরে একদিন আবিষ্কার হইলো – আলোর ‘রিফ্লেকশন’, ‘রিফ্রেকশন’ -এর পাশাপাশি তাহার ‘ডিফ্রেকশন’ ধর্মও যে রহিয়াছে! 😮
শুভ কামনা রহিবে নিরন্তর। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি ভেবে পাচ্ছিনা কি লিখবো! কি লেখা উচিৎ আমার!! এতো বিশালতায় আমাকে নিয়ে গেছেন, যা আমি আসলেই নই। খুব সামান্য, পথে হেঁটে যাওয়া হাজার মানুষের ভীড়ে একজন নীলা। কেউ বলে পাথর, কেউ বলে আবেগ শুধুই লেখায় আসলে মনে নই, কেউ বলে সয়না। কতোকিছু শুনি, আগলে নেই কেবলই হাসি-আনন্দ। ভালোবাসি, ভালোবাসার কথা বলি। এইতো আমি। কান্না পেলে বুড়োর গান আর আমার আনন্দের কবিতা। তবে সবার মতো কান্নাকে সস্তা করে ফেলিনি। আমার হাসিকে দামী হতে দিইনি। যখন যেখানে পেরেছি বিলিয়ে দিয়েছি অকাতরে এই হাসিটুকু। বড়ো স্বার্থপর আমি। মানুষ তাকেই মনে রাখে যে কেবল হাসে, যারা কষ্টের কথা বলে তাদের কথা উঠলেই নাক সিঁটকায়।
আজ আপনার এই মন্তব্যের সাথে এই কথাগুলো যায়না, মানাচ্ছে না মোটেও। তবুও বলছি কেন? ভাবছেন? আমায় বোঝাতে, জানাতে, চেনাতে। স্বার্থপর যারা তারা যে এমনই চায়। আমায় কখনোও অনেক উঁচুতে নিয়ে যাবেন না, সবার মধ্যে থাকতে চাই। নিজেকে সবার মধ্যে দেখতে চাই।
অফুরান ভালোবাসা অরণ্য ভাইয়া -{@ (3
অনিকেত নন্দিনী
দারুণ কাজ হয়েছে দিদি! এ যে মরে গিয়েও অমরত্বের স্বাদ পাওয়ার মতোই একটা ব্যাপার। ভালো থাকুন নীলাদি, সুস্থ থাকুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
নন্দিনী দিদি প্রার্থনা করবেন যেনো সুস্থ থেকেই যেতে পারি। ভালোবাসা রইলো। -{@
পারভীন সুলতানা
অপূর্ব সুন্দর মানবিক দায়বদ্ধ অনুভুতি এবং লেখা । খুউব ভাল লাগলো ।
নীলাঞ্জনা নীলা
পারভীন আপা চলেই তো যাবো, একেবারে কেন যাবো? এই ভাবনা মাথায় আসতেই ডোনেট করলাম।
প্রার্থনা করুন যেনো ডোনেটটা সঠিক কাজে লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে। -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অসম্ভব ভালো লাগলো জেনে।
মরিয়াও মানব সেবা। শ্রদ্ধা রইলো।
নীলাঞ্জনা নীলা
মারজানা ফেরদৌস রুবা অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। সুস্থ থাকবেন আপনিও। ভালো থাকুন। আর প্রার্থনা করুন যেনো আমিও সুস্থাবস্থায় যেতে পারি। -{@
সীমান্ত উন্মাদ
মানবতা আর জীবনের সঠিক বোধ মানুষকে কতটা মহৎ করে আপু তুমিই তাঁর প্রমান।
তোমার জন্য আপু অফুরন্ত শ্রদ্ধা, ভালবাসা এবং শুভকামনা নিরন্তর।
নীলাঞ্জনা নীলা
সীমান্ত ভাইয়ার বোন যে আমি। খুব ভালো লাগছে এই যে তুমি করে বলা। আপনিটা নিতে পারিনা, দিতেও। কিন্তু ব্লগে এসে তুমি বলাটা যেনো হয়ইনা। তবে এই পরিবারে এসে এতো একাত্ম হয়েছি যে কাউকে দূরের-অজানা-অচেনা লাগেনা।
ভাইয়া ভালো থেকো। যত্নে রেখো নিজেকে। অফুরান ভালোবাসা। -{@ (3
শুন্য শুন্যালয়
সব তোমার হবে? এপাড়, ওপাড়। সব?
নীলাঞ্জনা নীলা
শুন্য আপু 😀
হুম সব জায়গায় আমাকে পাবে \|/
ওপারে ডাকলেও নাচতে নাচতে আসবো,
এপারে তো খুঁজতেও হবেনা আমার টানেই এখানে আসবো। চলো গান করি।
https://www.youtube.com/watch?v=495KFQNo0WA
লাভ ইয়্যু রিয়্যালি। -{@ (3
লীলাবতী
লেখা পড়ে পড়বো, নীলাঞ্জনা আপু, এই চোখ কার? মা গো মা, কি খুনী চোখ!
আপনি অনেক ভালো একটা আপু তা জানি, আজ ভালোলাগা কএকশত গুন বেড়ে গেলো। ছেলেটা আপনার বড়ই লক্ষি।
পৃথিবী তোমার থেকে কি করে যাবো?
আমার সমস্ত অহঙ্কার গড়িয়ে গেছে যে তোমার বুকেই, বেঁচে থাকবার মতো লোভ কি আর আছে? আপনাকে আমার স্যালুট নীলাপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
কাউকে খুন করিনি গো লীলাবতীদি। বরং খুন হয়েছিলাম। এখন চশমার জন্যে বেঁচে গেছি। কেউ আর খুন করতে পারেনা। :p 😀
আর লক্ষ্মী। একটু আগে ডেকে বললাম এই বলতো এই শব্দটার উত্তর? বিরক্তি নিয়ে এসে রামগড়ুরের ছানার মতো মুখ করে বললো, “কি?” বললাম আগে হাসি দে। বলে, “হুম ঠিক আছে।” বললাম কিচ্ছু ঠিক নেই। আয়নায় নিজের মুখ এক মিনিট দেখ। কি ছেড়ে এসেছিস গার্লফ্রেন্ড? বলে “নাআআআআআ। গেম খেলছি।” রাগ ওঠার আগেই বললাম ঠিক আছে যা।
আর আমাকে এতো বিশাল করে তুলবেন না। অনেক অনেক এমন করে। আমার একটা বন্ধু ওর চোখ ডোনেট করেছে।
দিদি অফুরান ভালোবাসা। আর এতো আড়াল কেন? কতোদিন লিখছেন না, এটা কি ঠিক? মিস করছি যে। নিয়ে আসুন আপনার লেখা। ফিরে আসুন অপেক্ষায় রইলাম। -{@ (3
ইমন
অনুপ্রাণিত হলাম এটা যেনে। আসলে ব্লগিং কাকে বলে তা আপনার কাছ থেকে শিখা উচিত। আপনার এই মহানূভবতা আমার চোখে জল নিয়ে আসলো। আমার সালাম নিবেন। ভালো থাকবেন 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
ইমন নাহ আজ আমায় কাঁদিয়েই ফেলছেন সবাই মিলে। এমন কিছু করিনি আমি। ভুরি ভুরি মানুষ এমন দেয়। আমি জানিয়েছি, সবাই জানায় না।
প্রার্থনা করুন যেনো কাজে আসি এই পৃথিবীর অসহায় মানুষদের জীবনে। অনেক ভালোবাসা রইলো। -{@ (3
ছাইরাছ হেলাল
সব আলো নিভে যাবে
জীবন বেঁচে রবে জীবনের সাথে,
রয়ে যাবে কিছু আলোক ছড়িয়ে
জোনাকির স্মৃতি পথে।
পার্থর হৃদয়ে বাঁচবে তুমি
সময় স্রোতের ঢেউ তুলি।
নীলাঞ্জনা নীলা
কি লিখি এ কবিতার বিপরীতে? অনেক আবেগীয় লেখাটা আপনার। কথা খুঁজে পাচ্ছিনা কি বলবো।
আশীর্বাদ করুন যেনো সুস্থভাবে যেতে পারি। যেনো কাজে আসে আমার এই ডোনেট করাটা।
অফুরান ভালোবাসা। -{@ (3
ইঞ্জা
অসাধারণ অনুভাবী কথা গুলো ছুঁয়ে গেলো মন আমার, খুব ভালো একটা কাজ করেছেন আপু অর্গান ডোনেট পেপার সাইন করে, একসময় কারো একজনের মাঝে আপনি বেঁচে থাকবেন তা কি কম কিসে, আপনার প্রতি আমার শ্রদ্ধা এক লাফে অনেক বেড়ে গেলো আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়া আমি অনেক লোভী এই জীবনটাকে ভালোবাসি খুব। যেতে তো হবেই। চলে গিয়েও থেকে যাবো। আমার এই চোখ দিয়ে কেউ দেখবে। ভাবতেই কেমন যে লাগে! আপনিও ডোনেট করে দিন। কতো জীবন যে বাঁচবে!
অফুরান ভালোবাসা আমার হ্যান্ডপাম্প ভাইয়া।
ভালো থাকুন। -{@
ইঞ্জা
আপু আমি ডোনেট করতে চাই, সমস্যা হলো আমার গোষ্ঠী, আমারে মেরেই চৌদ্ধ গুষ্ঠি উদ্ধার করবে। :D)
নীলাঞ্জনা নীলা
হ্যান্ডপাম্প ভাইয়া এটাই তো সমস্যা। আমি আবার কিছু ভালো কাজের জন্য কাউকে পাত্তা দিইনা। আপনিও পাত্তা দেবেন না। 🙂