
সদ্য কৈশোরে পা রাখা নয়না নববধূ সেজে( বধূর সাজ বলতে কলাপাড়া রঙের একটা শাড়ি আর ঐ রঙের একটা উড়না। নয়নার দুর্ভাগ্য দেখুন একটা লাল শাড়িও জোটেনি বিয়েতে) নিজের পরিবার, পরিজন, নিজের পৃথিবী ছেড়ে চলে এলো। সেই মেয়েটা যখন দেখলো এমন তুলোর মতো ধবধবে ফর্সা শাশুড়ির অমন মেঘাচ্ছন্ন মুখ। ভয়ে কুঁকড়ে গেলো নয়না। ভয়ে ধুকপুক করছে নয়নার হৃদয়। একটা নব-বিবাহিতা মেয়ের প্রথম দিন, প্রথম রাত, বাসর রাত, নতুন বর এসব নিয়ে ভয়ে তটস্থ থাকা উচিত ছিলো। কিন্তু নয়নার ক্ষেত্রে ঘটলো সম্পূর্ণ তার বিপরীত ঘটনা। শাশুড়ি নামক মহিলাটিকে ভয়ে কাঁপতে শুরু করলো।
উনি থমকে গেলো দেখে সবাই বললো বউ বরণ করতে। নিরুপায় শাশুড়ি একপ্রকার জোর করেই নয়নাকে বরণ করলেন এক জোড়া বালা দিয়ে( বালাজোড়া পরে নিয়েছিলেন)। তারপর হালকা পাতলা নয়নাকে কোলে নিয়ে প্রবেশ করলেন গৃহে।
নয়না প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছে। তার মায়ের মুখটা মনে পড়ছে। নয়নাকে বিদায় দেবার সময় তার মা ছিলো একেবারে নির্বিকার, নিশ্চুপ, নিস্তব্ধ। বাবা হাউমাউ করে কাঁদছে তার কলিজার টুকরো নয়নাকে বিদায় দিতে। বড়ভাইয়াও ছিলো মায়ের মতো নির্বিকার,মেজ ভাইয়ের অশ্রু সিক্ত আঁখি। সব সবগুলো মন পড়ছে নয়না। প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছে সে। ইচ্ছে করে এক ছুটে বাড়ি চলে যেতে।
তখন ঘোর সন্ধ্যা। উঠানে একটা বেঞ্চে বসে আছে নয়না। তখন নয়নার পাশে এসে বসলো তার বর। বর নয়নার পাশে বসেই তার মাকে নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। তার মা তার পৃথিবী। কখনো তার মাকে কষ্ট দেওয়া যাবে না। মায়ের মুখে মুখে কথা বলা যাবে না। মায়ের সব কথা শুনতে হবে। মায়ের এটা পছন্দ নয়, এটা পছন্দ নয়। এসব শুনতে শুনতে নয়নার মনে হলো এ কোথায় এসে পড়লো সে? এটাই কী শ্বশুর বাড়ি? শ্বশুর বাড়ি বুঝি এমনই হয়? তখনই তার শাশুড়ির মুখটা মনে পড়ে আঁতকে উঠলো নয়না।
হালকা পাতলা গড়ন। শ্যামলা গায়ের রঙ। উচ্চতা ৫’৩”। ফেস গড়নও চমৎকার। প্রচণ্ড মায়াবী। এক পলকেই যে কারো দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারে নয়না। শাশুড়ির মুখটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হওয়ার কারণ ছিলো নয়নার গায়ের রঙ। নয়নার শাশুড়ির ফর্সা রঙ পছন্দ। কালো বা শ্যামলা রঙের মানুষকে রীতিমতো ঘৃন্য করে সে। সেই তারই ঘরে কি না এমন রঙের বউ। উফফস! কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
প্রচণ্ড ক্লান্ত-শ্রান্ত নয়নাকে রাতে একটা কালো আকাশী প্রিন্টের শাড়ি পড়িয়ে দেওয়া হলো। তারপর পাঠানো হলো বাসর ঘরে…….
২৬টি মন্তব্য
ইসিয়াক
ভালো লাগছে……….শুভকামনা রইলো।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সবসময়
ফয়জুল মহী
অনন্যসাধারণ লিখনী । শুভেচ্ছা সতত ।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
শাশুড়ি রা সবসময় সুন্দরী , ফর্সা বৌ চায়। এটাই বাংলার চিরাচরিত রীতি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটা উপন্যাস উপহার পাচ্ছি বলে। শুভ কামনা রইলো
সুরাইয়া পারভীন
দিদি কৃতজ্ঞতা অশেষ
ভালো থাকবেন সবসময় 💓
ফজলে রাব্বী সোয়েব
সুন্দর ও সাবলীল হয়েছে। শুভ কামনা রইলো
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সবসময়
সুপায়ন বড়ুয়া
শাশুরী মাদের জন্য
পছন্দের মেয়ে বিয়ে করাই ভাল।
এক্ষেত্রে একটু ব্যতিক্রম।
নব বধুর করালে একটু দু:খই বলা যায়।
ভাল লাগলো শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দাদা
ভালো থাকবেন সবসময়
অন্বেষা চৌধুরী
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
আরজু মুক্তা
ভালো লাগলো।
সুরাইয়া পারভীন
ধন্যবাদ অশেষ আপু
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
কামাল উদ্দিন
গল্পের সামনের অংশে বিপদের তথা আমাদের দেশিয় বউ শাশুড়ির দ্বন্দের আশংকা প্রবল হয়ে উঠছে মনে হচ্ছে। তবে বাচ্চা মেয়েটাকে বেশী কষ্টে যেন ফেলবেন না আপু।
সুরাইয়া পারভীন
দেখাই যাক না কি হয়
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সবসময়
কামাল উদ্দিন
আপনিও ভালো থাকুন সব সময়।
রেহানা বীথি
বিয়ের প্রথম দিন থেকেই নতুন বউকে দিতে হয় নানান পরীক্ষা। দেখা যাক আরও কি কি অপেক্ষা করে আছে নয়নার জন্য। বেশ লিখছেন।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপু
ভালো থাকবেন সবসময় 💓
ছাইরাছ হেলাল
দেখি নয়নার কপালে কতটুকু বেদনা লেপ্টে দেয়া আছে!
সুরাইয়া পারভীন
হুম সেটাই দেখার
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সবসময়
এস.জেড বাবু
হালকা পাতলা গড়ন। শ্যামলা গায়ের রঙ। উচ্চতা ৫’৩”। ফেস গড়নও চমৎকার। প্রচণ্ড মায়াবী। এক পলকেই যে কারো দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারে নয়না। শাশুড়ির মুখটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হওয়ার কারণ ছিলো নয়নার গায়ের রঙ। নয়নার শাশুড়ির ফর্সা রঙ পছন্দ। কালো বা শ্যামলা রঙের মানুষকে রীতিমতো ঘৃন্য করে সে। সেই তারই ঘরে কি না এমন রঙের বউ। উফফস! কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
অশনিসংকেত-
শাশুড়ির এমন দৃষ্টিকোন নয়নার পরবর্তি সময়টাকে কোন দিকে নিয়ন্ত্রন করে দেখি পরের পর্বগুলোতে
ভালো লাগছে
এগিয়ে যাক গল্প
শুভকামনা।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সবসময়
এস.জেড বাবু
শুভেচ্ছা আপু
মিস করে গেলাম পরের পর্বগুলো।
রুমন আশরাফ
ভাল লিখেছেন।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়