
আষাঢ় মাস সারাদিন ধরে বৃষ্টি পড়ছে। কখনো উঁকি দিচ্ছে রোদের তেজস্বী ফণা। আবার শুরু হচ্ছে মেঘ ডাকার শব্দ। একদল শিশু বৃষ্টিতে ভিজছে আর বলছে, মেঘ হচ্ছে বৃষ্টি হচ্ছে খেঁকশিয়ালের বিয়ে হচ্ছে।
একটা মেয়ে সংক্রান্ত ঝামেলায় পড়ে দ্রুত বিয়ে করতে হয়েছে আফরানকে।
বারান্দায় বসে বই পড়ছে সদ্য বিয়ে করা আফরান। কিন্তু বৃষ্টি প্রপাতের দিকে চলে গেছে তার দৃষ্টি সে এক নজরে তাকিয়ে দেখছে বৃষ্টির ফোঁটা।
কাছেই নতুন বউ মেহেদী রাঙা হাত শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে ভালোবাসার গন্ধ। পুরো ঘরটাতে প্রবাহিত হচ্ছে স্বর্গীয় হাওয়া। নতুন বউ লাজুক ঠোঁট দুটো বাঁকিয়ে বললো, “কিছু খাবে “? আফরান বললো “না কিছু খাবো না বৃষ্টি দেখছি” তবুও নতুন বউ আদর করে ঝাল মুড়ি নিয়ে এলো এবং বসলো জানালার কাছে পাশের মোড়াটাতে।
আফরান ভাবছে
সামান্য একটা জলের ফোঁটা মাটিতে পড়ে কেমন লাফিয়ে উঠে। নতুন বউ তখন মুখের দিকে তাকিয়ে বললো কি ভাবছো? আফরান না কিছু না! বউ তখন জোর দিয়ে বললো, তুমি অস্বীকার করছো কেন? বলো! আফরান তখন বললো, দেখো বৃষ্টির ফোঁটা মাটিতে পড়ে কেমন আহুতুকের মতো লাফিয়ে উঠে।
নতুন বউ বললো মানে কী বলছো তুমি কিছুই বুঝিনি! আফরান তখন বললো বৃষ্টির ফোটা মাটিতে পড়ে লাফিয়ে উঠে গুলিবিদ্ধ মানুষের মতো। নতুন বউ তখন একগাল হেঁসে বললো তাই নাকি? আমিতো কখনো গুলিবিদ্ধ মানুষ দেখিনি। কিন্তু একজন হত্যাকারীর জলছাপ দেখেছি। বৃষ্টি ভেঙে পড়ছে হুইশেলের শব্দ।
২২টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
বাহ সুন্দর জলছাপ ভাল লাগল দাদা
দালান জাহান
ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকুন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অনুগল্প হৃদয় ছুঁয়ে দিলো। খুব ভালো লিখেছেন ভাইয়া। শুভ কামনা রইলো
দালান জাহান
কৃতজ্ঞতা কবি ভালো থাকুন সবসময়
সুরাইয়া নার্গিস
বাহ্! দারুন উপভোগ্য ছিলো লেখাটা।
চমৎকার অনুগল্প লিখছেন ভাইয়া, শুভ কামনা রইল।
দালান জাহান
ধন্যবাদ সুপ্রিয় ভালো থাকুন সবসময় শুভেচ্ছা
নিতাই বাবু
এই আফরান একসময় এরকম বৃষ্টির দিনে বৃষ্টিপাতের সময়ই একজন মানুষকে গুলি করেছিল বলে মনে হয়! তাই আজ এই বৃষ্টির দিনে বৃষ্টির ফোটা মাটিতে পড়ে লাফিয়ে ওঠার দৃশ্য দেখে আফরানের ওই কথা মনে পরে যায়। সেসময় ওই লোকটিও বৃষ্টির সময় আফরানের গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছটফট করেছিল এবং হয়তো বলেছিল, “একদিন এই বৃষ্টির ফোটায় সাক্ষী দিবে তুই আমাকে হত্যা করেছিস।”
সেটাই আজ আফরানের নববধূর ধরা খেয়ে গেলো। সাক্ষী দিলো বৃষ্টির ফোটায়।
দালান জাহান
আপনি যথার্থ বলেছেন দাদা। ঘটনা এক-ই। শুধু ভিন্নতা আছে যে, বিয়ের আগে আফরান তার প্রেমিকাকে হত্যা করেন। প্রেমিকা যখন গুলি খায় গুলি খেয়ে আফরানকে আঁচড়ে ধরে, তখন আফরানের হাতের জলছাপ পড়ে মেয়েটির হাতে। আর আফরানের বিবাহিত স্ত্রী একজন টিকটিকি। যে এ-ই কেইস সুরাহার জন্য বিয়ের নাটক করেছেন, বউ হয়েছে। এমনকি তার সাথে সহবাসও করেছেন।
নিতাই বাবু
যাক, আপনার দরবারে মন্তব্য আমার গৃহীত হয়েছে বলে আমি আনন্দিত।
শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় কবি দাদা।
দালান জাহান
আপনি একজন গুণী লেখক। আপনার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ভালোবাসা সবসময়
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
এটাই মনে হয় গল্পের সারমর্ম –আমিতো কখনো গুলিবিদ্ধ মানুষ দেখিনি। কিন্তু একজন হত্যাকারীর জলছাপ দেখেছি। বৃষ্টি ভেঙে পড়ছে হুইশেলের শব্দ।
ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
দালান জাহান
জি ভাই আপনি যথার্থ বলেছেন
ফয়জুল মহী
চমকপ্রদ ভাবনা। ভালো লাগা অনাবিল ।
দালান জাহান
ধন্যবাদ কবি ভালো থাকুন সবসময়
আরজু মুক্তা
চোর চুরি করলে তার প্রমাণ ও রেখে যায়।
গল্প ভালো লাগলো
দালান জাহান
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি
সুপায়ন বড়ুয়া
“আমিতো কখনো গুলিবিদ্ধ মানুষ দেখিনি। কিন্তু একজন হত্যাকারীর জলছাপ দেখেছি। বৃষ্টি ভেঙে পড়ছে হুইশেলের শব্দ।“
অনুগল্পের সুন্দর পরিসমাপ্তি। ভাল লাগলো।
শুভ কামনা
দালান জাহান
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি দাদা
খাদিজাতুল কুবরা
গল্পটি পড়ে স্তম্ভিত হলাম কিছুক্ষণের জন্য।
অল্প কথায় এতো গভীর লেখা পাঠকের উপলব্ধিতে পৌঁছাতে যে ক্ষুরধার লেখনী দরকার সেটাই আপনার লেখাতে। প্রথমবার পড়লাম আপনার লেখা।
শুভকামনা রইল।
দালান জাহান
আপনার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি
খাদিজাতুল কুবরা
আপনার লেখাতে পেয়েছি।
দালান জাহান
ভালো থাকুন সবসময় অনেক দোয়া রইলো