
মেয়েরা ভীষন রকম হিংসুটে হয়। তাদের একের সৌন্দর্য অপরের অসহনীয়। খুব সহজে কোন মেয়ে অন্য মেয়েকে সুন্দর বলে না। প্রত্যেককে নিজেকেই সবসময় সুন্দর মনে করে। কথা ১০০ ভাগ সত্যি নয়।
কারন আব্দুলাহ আল- তানিম ( প্রকাশক) সাহেবের মতে, শুধুমাত্র বড় মনের অধিকারী মেয়েরাই একে- অপরের প্রশংসা করতে জানে বা করে থাকে।
বাপরে! এক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে আমি একজন বড় মনের অধিকারী মানুষ।
সহকারী অধ্যাপক নার্গিস ম্যাম, বেশ দিন পনেরর কিউট ছুটি কাটিয়ে; জম্পেশ কাতানে সেজে- গুজেই কলেজে ঢুকলেন। ক্লাস নয়, আজ তার পরীক্ষার ডিউটি।
তার মেয়ে এবার এল, এল,বিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। কিন্তু সমস্যা হলো, তাকে বয়সের চেয়েও বেশিই কমবয়সী দেখায়। আমাকে হাই দিলেন দুর থেকে। আমি হালকা রোদ- ছায়ায় দাঁড়িয়ে শুধু হাসি দিলাম। কারন আমরা সৌন্দর্যের ব্যাপারগুলো মেয়েরা মেয়েদের মুখে শুনতে অতোটা পছন্দ করিনা। তো অযথা বাক্যালাপে লাভ কি?
সকাল সকাল কারও সৌন্দর্যে শুভ সকালের সাথে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে। বা বাহ! বেশ লাগছে বলাই যায়। কাউকে সুন্দর লাগলে আমি মনে করি তিনি অধিকার রাখেন সেটা শোনার। সেটা নারী- পুরুষ যে কারও মুখ থেকেই।
পাশাপাশি যেকটা রুম আছে সব গুলোয় আমি আর ম্যাম মহিলা শিক্ষক। মোটামুটি ঘন্টা খানেক পর বেচারী ম্যাম বেশ উশখুশিয়ে আমার রুমে চলে এলেন।
– দেখ তো, কি এক্টা অবস্থা! মেয়েকে এতো করে বললাম, বয়স হচ্ছে এসব শাড়ি আর পরা যাবে না। তারপরও সে কিনে দিল এবং সকালে যেন পরে কলেজে আসি এমন বাধ্যতামূলক আদেশ দিয়ে রেখেছে। তাই পরতে হলো আর কি! তুমি বলোতো আমাকে কি খুব পঁচা লাগছে?
তাকে অনেক কিউট লাগছে। কিছু মানুষ এতো সুন্দর হয় যে, শুধু চেয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। আমার তার জন্য বেশ কষ্ট হলো। বোঝা গেল, পুরো কলেজের এতো পুরুষ সহকর্মী কেউই তাকে কিছু বলেনি বা বলছে না এতে তিনি কিছুটা হতাশ। যেখানে আমার মতো অসুন্দর একজন মানুষও নিজেকে সুন্দর শোনার অনেক কৌশল করে।
আজকাল মজা করা, হাস্যরস কিংবা কথার ছলে কথা বলাটা বা আঞ্চলিকতা ব্যবহারটাও সাংঘাতিক লেভেলে চলে যায়। আমরা নেগেটিভিটি খুঁজতে পছন্দ করি। যেমন বিউটি কনটেস্টে আমাদের বিচারকের হাস্যরস বা আঞ্চলিক বাক্যালাপ তাকে অনেক সমালোচনায় ফেলেছে। কিন্তু সেটা তো বরিশালের সহজ একটা ভাষাই ছিল।
আজকাল নারী- নারী, পুরুষ – পুরুষ কেউ কারও কাছের মানুষ, প্রিয় মানুষ হতে পারে আমরা এটা ভাবতে পারিনা। আবার সহজে যে কেউ যে কারও সৌন্দর্যের প্রশংসা করতে পারে বা সুন্দরকে সুন্দর বলা বা সম্পর্কের সহজ ক্যামিষ্ট্রির ব্যাপারটা এখনও আমরা সহজ করে দেখতে শিখিনি।
আরও মজার ব্যাপার হলো, নারী- পুরুষ সম্পর্কের শেষ পরিনতি বাধ্যতামূলক প্রেম, পরোকীয়া বা বিয়ে হওয়া জরুরি। এখানে বন্ধুত্ব বলে কোন কথা নেই বা থাকতে পারে না এমনটাই আমরা বিশ্বাস করি।
ম্যাম তার কথা বলা শেষ করেই হুরমুড়িয়ে চলে যাচ্ছেন। টেনশানে নাকে হালকা শীতেও ঘাম বের হচ্ছে।
আমি পেছন থেকে বললাম- ম্যাম, আল্লাহ তাঁর একান্ত অবসরে, অতি যত্নে আপনাকে বানিয়েছেন। আপনি সবসময়ই সুন্দর আর আজকে শাড়িতে আপনাকে আরও অনেক সুন্দর লাগছে। এমন করেই আসবেন সবসময়।
কলেজ আর পরীক্ষা না হলে নিশ্চিত তিনি জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিতেন। খুশিতে তার মুখ ঝলমল করে উঠলো। ঘামগুলোকে মনে হলো ছোট ছোট মুক্তোদানা। আমরা কাউকে কতো সহজে আনন্দ দিতে পারি আবার কষ্টও দেই এমন সহজ করেই; স্বাচ্ছন্দ্যে!!!!
ছবি- নেট থেকে।
২টি মন্তব্য
হালিমা আক্তার
অনেক বছর আগে এক স্কুলে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে একটি মেয়েকে দেখেছিলাম শ্যামবরণ। ছেলে হলে তার প্রেমে পড়ে যেতাম। সহকর্মীদের যাকেই সুন্দর লাগে বলেই ফেলি পুরুষ হোক আর মহিলা। দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের ফলে ছেলে মেয়ের বন্ধুত্ব হচ্ছে। তারমধ্যে সামান্য একটা অংশ শেষ পর্যন্ত বন্ধুত্ব থেকে অন্য দিকে বাঁক নিয়ে যায়।
বয়সের সাথে পোশাকের রঙের পরিবর্তন এর কারণ খুঁজে পাই না। আমার কাছে যা ভালো লাগে সেটাই পরিধান করবো। খুব চমৎকার লিখেছেন। আরো লেখা চাই। শুভ কামনা ও শুভ রাত্রি।
কামরুল ইসলাম
সুন্দর লিখেছেন,
তবে হিংসে টা মেয়েদের সাথে মানানসই । মেয়েদের হিংসে থাকতে হয় ।