চিঠি (৫)

সুলতানা সোনিয়া ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩, রবিবার, ০৩:৩৪:০৮অপরাহ্ন বিবিধ ৬ মন্তব্য

খোকন সোনা ..

ক্যামন আছিস ? আজ সারাদিন স্কাইপি অন করে বসে ছিলাম। তোর কি একটু ও সময় হলোনা আমার কাছে আসার ? মা কে ভুলে গেলি? দুর ! আমিও যে কি সব ভাবছি! মা কে কেউ ভুলতে !পারে ? আচ্ছা বলতো , কবে তুই সারাঘর উলটপালট করে আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়বি... ??তোর জন্য ভেবে ভেবে আমার বুকের অলিন্দতে জমে আছে শুধুই কষ্ট আর কষ্ট। তোর আলতো হাতের ছোঁয়া, খিল খিল হাসি নুপুরের মতন আমার কানে বেজেই চলেছে !কবে তোর পেছন পেছন আমি দৌড়ুবো বল তো।

আবার আগের মতন, দুষ্ট হাসিতে মায়ের এই খালি হওয়া বুকটা ভরিয়ে দিবি তুই। তোর অভাগী মা বড্ড একা রে। চারিদিকে কেউ নাই... কিছু নাই... শুধুই অন্ধকার। বুকের মাঝে শুধু হাহাকারের ঝড় ! মাঝে মাঝে সারারাত ঘুমুতে পারিনা । এপাশ ওপাশ করি । সারাক্ষণ তোর ভাবনায় নিমগ্ন থাকি। ভাবতে ভাবতে আমি টুকরো হই , ভিতরে ভিতরে রক্তাক্ত হই । তারপরেও বেঁচে থাকি ! এ্যালবামে রাখা তোর ছবি গুলোকে স্পর্শ করি । তোর নাক , ঠোঁট , মুখ ছুঁয়ে তৃষ্ণা মেটাই । আমার আর্তনাদ ঘরের চার দেয়ালের ভীতর ধাক্কা খেয়ে আবার আমার কাছেই ফিরে আসে । আমার চোখের জল নদী হয়ে বিছানার উপরে ছড়িয়ে থাকা তোর ছবি গুলোকে ভিজিয়ে দেয় ! ভাসিয়ে দেয় ...তুই হীন শূন্যতা আমাকে ভয়ঙ্কর সাপের মতো পেঁচিয়ে রাখে দীর্ঘশ্বাস তো দেখাবার জিনিস নয় । আমার দীর্ঘশ্বাস , আর্তনাদ ঘরের চার দেয়ালের ভীতর ধাক্কা খেয়ে আবার আমার কাছেই ফিরে আসে । আমার চোখের জল নদী হয়ে বিছানার উপরে ছড়িয়ে থাকা তোর ছবি গুলোকে ভিজিয়ে দেয় ! ভাসিয়ে দেয় !

এখন বড় একা হয়ে গেছিরে আমি ! পৃথিবীর পথে পথে অনাথের মতো হেঁটে বেড়াই ! তুই যদি কোনোদিন ফিরে আসিস ! এই অপেক্ষায় কাটিয়ে দেই সকাল , দুপুর , সন্ধ্যা বেলা ! আমি যদি অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে মরেও যাই / যদি কোনোদিন আমার এই লেখা তোর চোখে পড়ে একদম কাদবিনা বলে দিলাম ! আমি মরে গেলেও তোর কান্না আমি সইতে পারবোনা । ভালো থাকিস । আমার সবটুকু ভালোবাসা তোর জন্য তুলে রাখলাম ।

ইতি
তোর মা

0 Shares

৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ