চলার পথে-৩ (ডাপা)

চাটিগাঁ থেকে বাহার ৩ নভেম্বর ২০১৯, রবিবার, ০৫:৪৯:১১অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৭ মন্তব্য
(ডায়রীর পাতা থেকে)
১লা জানুয়ারী ১৯৮৮ ইংরেজী। আমি তখন ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্র, গ্রামের বাড়িতেই থাকি। সকালে বাবা সেজ মামার সাথে নবীনগর গেছেন। মামা পুলিশে চাকরী করেন এবং বর্তমানে নবীনগর থানায় পোস্টিং আছেন। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানা। পরে একবার আমিও বেড়াতে গিয়েছিলাম বাক্ষ্মণবাড়িয়া থেকে তিতাস নদীর ইঞ্জিন চালিত বোটে করে। এ সেই তিতাস নদী যাকে নিয়ে কাব্য লিখেছেন কবি আল মাহমুদ। এখানে খুব সম্ভব চিত্র নায়ক আলমগীরের বাড়ি ছিল।( আমার সেজ মামা চাকরি জীবন শেষ করে সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে অবসর নিয়ে বর্তমানে অবকাশ জীবন যাপন করছেন।)
 
আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে ডলুনদীর পাড়ে দোকান ঘাটায় গিয়ে সমিতির অফিসে নোটিশ লাগিয়ে দিয়ে এসেছি। নববর্ষের শুভেচ্ছার নোটিশ। সামাজিক সমিতি, সমিতির নাম সোনাকানিয়া সোনা ছড়ি সংঘ (সোসোস)। উক্ত সমিতি স্থাপিত হয় গতবছর ১৯৮৭ ইংরেজী। আমি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সভাপতি হলেও সমিতির প্রায় সব দাপ্তরিক কাজ আমিই করি। সকালে অফিস খুলে পত্রিকা এনে টেবিলে রাখা থেকে প্রায় সব কাজই আমি করি। প্রচার সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদকের জন্য কাজ রেখে দিলে সমিতির গতি শ্লথ হয়ে একসময় সমিতি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। সভাপতির পদ বলে সম্মানের উচ্চাসন দখল করে গুটিয়ে বসে থাকলে সে সমিতি কখনো প্রাণ পাবে না। তাই আমি নিজের থেকেই সব করি। সেখান থেকেই সামাজিক কাজে আমার হাতে খড়ি।
যাই হোক, সমিতির শুভেচ্ছা নোটিশ লাগিয়ে আমি ডলুনদী পাড় হয়ে সাতকানিয়া গেলাম। সেলুনে সেভ করে বাড়িতে চলে আসি। দুপুরে ভাত খেয়ে নামায পড়ে আবার নদী পেরিয়ে ভোয়ালিয়া পাড়া হয়ে সাতকানিয়া যাই। সাতকানিয়া গিয়ে মোহামেড়ান স্পোটিং ক্লাবের খেলোয়াড়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। শহরে টেলিফোন করলাম। বেলা আড়াইটায় শহর থেকে মোহামেড়ান ক্লাবের খেলোয়াড়রা এসেছেন। তাদেরকে মির্জাখীল পাঠিয়ে দিয়ে আমি বাড়িতে গিয়ে সেখান থেকে মুকুল ভাইয়ের সাইকেলে করে মির্জাখীল চলে যাই। সেখান থেকে বড় হাতিয়া ইউনিয়নের কুমিরাঘোনা পাঁচকোণা মাঠ। এই মাঠের বিশেষত্ব হচ্ছে এটি পাহাড়ের উপর এবং এর পাঁচটি কোণা। তাই এই মাঠকে পাঁচকোণা মাঠ বলা হয়। বর্তমানে বায়তুশ শরফের যেখানে দুদিন ব্যাপী সিরাতুন্নবী/ওরশ/সভা হয় তার সামান্য পশ্চিমে সবুজে ঘেরা অত্যন্ত সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে মাঠটি খুব সম্ভব এখনো আছে। কক্সবাজার রোড হয়ে আসলে আধুনগর দিয়েও আসা যায় আবার চুনতি পুলিশ ফাঁড়ি দিয়েও আসা যায়। আমরা অবশ্য সোজা মির্জাখীল রোড দিয়েই আসা যাওয়া করি।
করিম ভাই শহর থেকে আমাদের টীমের জন্য মোহামেড়ান স্পোটিং ক্লাবের ছয়জন খেলোয়াড় হাইয়ার করে এনেছেন। চট্টগ্রামে তখন আবাহনী, মোহামেড়ান এবং মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের বেশ রমরমা সমর্থক। আমার জেঠাতো ভাই আমার সমবয়সি জাহেদুল আলম জাহেদ তখন চট্টগ্রাম মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের দূর্ধান্ত খেলোয়াড়।(আমার ভাই জাহেদ ১৪/১৫ বছর আগে মারা গেছেন, আল্লাহ তাঁকে জান্নাত নসীব করুন, আমিন।) পাঁচকোণা মাঠে কমিঠির সিনিয়র বড় ভাই নাসির ভাইয়ের সাথে দেখা।
 
ফুটবল বরাবরই আমার প্রিয় খেলা, তখনো, এখনো। আমি নিজেও ফুটবল খেলি। প্যারেড মাঠে ৩/৪ বছর আগে আমি ফুটবল খেলার একটি দূর্ধান্ত ভিডিও ফুটেজ কিন্তু এখনো অনলাইনে আছে!
 
বিকাল ৪ টায় খেলা শুরু, ৪.১৩টায় প্রথম গোল আমাদের বিপক্ষে যায়। তারপর দ্বিতীয় গোল। এসময় খেলার মাঠে হৈচৈসহ গোলমাল হয়। তারপর আবার খেলা শুরু। আবার গোলমাল এবং মারামারি। অতপর মেহমান খেলোয়াড়, ফারুক ভাই ও সেলিম মাস্টারসহ আমার বাড়িতে চলে আসি। বাড়িতে নাস্তা পর্বের পর খেয়োয়াড়দের বিদায়। ওরা মাইক্রোবাসে করে চট্টগ্রাম শহরে চলে যায়। দুপুরে খেয়ায়াড়রা আসার সময় একই মাইক্রোতে শহর থেকে আমার বড় ভাইও এসেছিল।
(ডাপা=ডায়রীর পাতা থেকে)
0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ