গোরস্থান

সিকদার সাদ রহমান ১৫ জুলাই ২০২০, বুধবার, ১২:২৩:৫৫পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৯ মন্তব্য

 

 

মাত্র গোরস্তান থেকে ঘুরে এলাম! সেখানে অনেক কবর। কবরের ও শ্রেনী রয়েছে! কিছু কিছু কবর দেখলে বোঝা যায় এটা ধনাঢ্য কোন প্রয়াত ব্যক্তির কবর। একটু উঁচু করে দামি টাইলস দিয়ে সুন্দর করে বাধিয়ে রাখা তার উপর মার্বেলে খচিত নাম ফলক। কবরের উপরে সুন্দর সুন্দর ফুল গাছ লাগানো। একজনকে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারলাম এখানে মাসিক চুক্তিতে কবর দেখাশোনার লোক আছে। মৃত ব্যক্তির কাছের লোকজন মাসোহারা দিয়ে সৌন্দর্য বর্ধন এবং রক্ষনা বেক্ষন করেন।  মধ্য বিত্ত দের কবর গুলিও স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, মোটামুটিভাবে বাঁশের বেড়ার উপরে মৃত ব্যক্তির নামে কালো রঙ এর সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা। গরিব মানুষের কবর খুব স্পষ্ট বোঝা যায়, কবর খুড়ে কোন মতে মাটি চাপা দিয়ে মাথার কাছে একটি বাঁশ গেরে যে দিকে মাথা তার নির্দেশিকা প্রদান হয়। কবরস্থানের যায়গা সীমাবদ্ধ বিধায় নতুন কবর বানানোর সময় সেই গরিবের কবরের উপরেই আগে চাপ পরে। কবরের ভেতরে শুয়ে থাকা গরিব না করতে পারে না, বলতে পারেনা "আমি আর চাপ সহ্য করতে পারি না"। কবর জিয়ারতের প্রশ্নে গরিবেরাই এগিয়ে। মৃত গরিবের আত্মিয় স্বজনেরাই দোয়া করার জন্যে তুলনামূলক বেশিই আসেন। বড় লোক বা বিত্তবান লোকেরা কবরস্থান ভয় পান, মধ্যবিত্তরা সময় কম পান, গরিবের চোখে পানি বেশি তাই আবেগ অনুভূতি ও বেশি!

 

আমিও কবর ভয় পাই, নাহ! আমি কিন্তু বিত্তবান নই। নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসার আমার। মারা গেলে দোয়া করার লোকের ও অভাব দেখা দিতে পারে। মৃত ব্যক্তির সংগী কেউ হয় না। আজরাইল জান কবজের সাথে সাথে সবাই ব্যস্ত হয়ে যায় ঘর থেকে বের করে দাফন কাফনের জন্য ব্যস্ত হয়ে যায়। আমার পরিচিত ব্যক্তিরা আমার কবর কিভাবে দেবে? আমার কবরের ভাগ কি শিয়ালেও পাবে?

 

 

0 Shares

৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ