মানুষ মৃত্যুর পরে পদক কেন পায়, কেন জীবদ্দশায় পায়না? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তি বেঁচে থাকাকালীন আমরা কেন তার কর্মকে শ্রদ্ধা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করি? আচ্ছা এ নিয়মটি বদলানো যায়না?
গুরু আপনি কি ওপার থেকে দেখতে পাচ্ছেন একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন আপনি? অবশেষে এ দেশ আপনাকে সম্মান জানিয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য আপনার এ খুশি আমরা দেখতে পারছিনা। জানি আপনাকে সম্মান জানাতে খানিক দেরী হয়েছে, তবুও ক্ষমা করে দেবেন আমাদের।
দেশকে ভালোবেসে যারা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা, কর্ম এবং শ্রম দিয়ে দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য অবদান রাখেন তারাই এসব পদকের জন্য বিবেচিত হন। নিজেদের জায়গায় তারা বেঁচে থাকলে হন সম্মানিত আর মৃত্যুবরন করলে হন গৌরবান্বিত।
অফটপিকে একটু বলি, এই যে আমরা জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশে গণতান্ত্রিক দলগুলিতে কাউয়াদের ছাঁকুনী দিয়ে ছেঁকে নিলাম; দল গঠন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচিত করলাম এবং সেজন্য ফেসবুকে চিৎকার চেঁচামিচি করে কত লেখালিখি করলাম। কাউন্টার পোস্ট দিয়ে একে অন্যকে নাজেহাল করেছি, বন্ধুর মত মধুর সম্পর্ককেও কোরবানি দিতে দ্বিধা করিনি এবং অবশেষে নির্বাচন হয়েছে। এটাওতো দেশের জন্য আমাদের অবদান হিসেবে গন্য হওয়া উচিত তাই কি না বলেন?
ফেসবুকে এসব করতে গিয়ে কত কষ্ট হয়েছে, সময় ব্যয় হয়েছে। আমাদের এহেন কর্মকান্ডকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে সেসব ফেসবুকারদের পদক দেয়া যায়না? তাহলে নিজেরও একখান পাবার সম্ভাবনা থাকতো আরকি!
গুরু তোমরা যুদ্ধ করেছে অস্ত্র হাতে, বুলেট দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছো শত্রুশিবিরকে। গান গেয়ে সুস্থ বিনোদন করে পথ দেখিয়েছো দেশের পরবর্তী প্রজন্মকে। তাই একুশে পদক তোমারই প্রাপ্য।
আজ আমরাও যুদ্ধ করছি ফেসবুকে, আমাদের ব্যাটালিয়নের নাম অনলাইন এক্টিভিস্ট। আমাদের বুলেট নেই, আছে মেগাবাইট আর লিখালিখির অদম্যতা। ফেসবুকে তা দিয়েই আমরা সফল আন্দোলন করেছি রাজাকারদের ফাঁসির দাবীতে।
মাঝেমধ্যে নিজের মধ্যেও সেমসাইড ফায়ারিং মানে লেখালিখি হয়েছে নির্বাচনের সময়, যেন একে অপরের দেশের শত্রু। তবে এখন আবার আমরা গলায় গলায় ভাব করে নিয়েছি। আদতে আমরা যে সবাই এক মায়ের সন্তান। আমরা সবাই ভাই, আমাদেরই সবাই বোন। আর বাংলাদেশ আমাদের মা।
ওপারে ভালো থাকবেন গুরু। আপনাকে স্যালুট।
১৮টি মন্তব্য
রেজওয়ান
😇সুন্দর লিখেছেন ভাই❤ওপারে ভাল থাকবেন গুরু🌹
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই, শুভেচ্ছা জানবেন।
জিসান শা ইকরাম
এ সন্মননা দিয়ে কি হয়? বেচে থাকতে মূল্যায়ন করলাম না, মৃত্যুর পরে মূল্যায়নে কি আসে যায়?
ভালো লিখেছেন।
গুরুর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী
তৌহিদ
সেটাই ভাই, আমার সম্মান আমি দেখে যেতে পারলামনা এটা অনেক বড় কস্টের। ধন্যবাদ জানবেন।
মাহমুদ আল মেহেদী
দারুন লিখেছেন ভাই। আসলেই মানুষ বেঁচে থাকলে তাঁর সন্মানটা পায় না ।
তৌহিদ
এটা আমাদেরই ব্যর্থতা মনে হয় ভাই। বেচে থাকলে অন্যকে সম্মান দেই না আমরা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
শুধু জানি ঐপারে আল্লাহ তাঁকে ভাল রাখুন আমিন।
তৌহিদ ভাই, সবাই স্বারথবাদি। সরকার আরো বেশি শুধু জনগনের কাছে থেকে নিতে জানে। শাহবাগ আন্দোলনে আমার জুনিয়র হুমকি পেলে আমাকে অগ্রসর হত বলল। আপনি যান। এগতে থাকলাম একদিন আমাকেও ক্ষুদ্র হুমি দিল। কিন্তু আমরা আলুব্দিগ্রামে শয়তান কাদের মোল্লার প্রতিকি ফাঁসি দিয়েছিলাম। আদালতের পূর্বেি, হয়তো কিছুই না। তক্ষণ আমরা ১৫/২০জন এই কাজ করেছিলাম। তবে বিডিব্লগ থেকেই। কয়েকজনের স্বাক্ষাতকার নিয়েছিলাম।
আমার ক্ষুদ্র মতে শাহবাগ আন্দোলনের পূর্বে সরকারের পায়ের তলায় কতটুকু মাটি ছিলো জানিনা। মনে হয় তখন সরকার খুবই নড়বড়ে ছিল। ঐ আন্দোলন সরকারকে অনেক দাড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে।
আপনার লেখার প্রতি ১০০% সহমত।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই, শাহবাগের আন্দোলন আমাদের অনেক কিছুই শিখিয়েছে। সে সরকার হোক কিংবা নতুন প্রজন্ম।
মোঃ মজিবর রহমান
কষ্ট লাগে। হয়তো যারা হুমকি পেয়েছে পোক্তভাবে। তাঁরা মারা গেলে একদিন কোন রাজনৈতিক দল বলত আমাদের কর্মী, একটি স্লোগান হত যার যাবার তাঁর যেত।
তৌহিদ
সেটাই হতো আসলেই।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এ লেখায় আর কিছু বলার নেই যা বলার তা আপনিই বলে দিয়েছেন।তবে পদক কোম্পানীগুলো ফেবুকার জন্য পদক রাখা উচিত।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই, ভালোবাসা জানবেন।
ছাইরাছ হেলাল
আমার প্রিয় শিল্পী তিনি।
যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন সেটি চাই।
তৌহিদ
ওপারে ভালো থাকুন প্রিয় শিল্পী। তবে দুঃখ একটাই এ পদক তিনি দেখে যেতে পারলেন না।
সাবিনা ইয়াসমিন
এমন অনেক আক্ষেপ নিয়ে কত জ্ঞানী–গুণীরা পৃথিবী থেকে চলে গেছেন। বেঁচে থেকে যদি তারা এগুলো দেখে যেতেন তাহলে ব্যক্তিজীবনে মানুষগুলো একটু শান্তি আর সান্ত্বনা নিয়ে বাঁচতে পারতেন। কিন্তু রাস্ট্র কেন জানি সব সময়ে এই কাজটিতে খুবই উদাসীনতা দেখায়।
প্রকৃত বীরের কখনো মৃত্যু হয়না তারা বেঁচে থাকে মানুষের মুখে, হৃদয়ে। তিনি আমাদের মাঝে নেই,,যেখানেই আছেন যেন শান্তিতে থাকেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করি।
শুভকামনা রইলো ভাই।
তৌহিদ
দুঃখিত আপু, কমেন্ট আগে মিস করে গেছি। আপনার কথার সাথে একমত। প্রকৃত বীরেরা কখনো মরেনা।
শুভ কামনা জানবেন।🌹
শামীম চৌধুরী
উনি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন। স্যালুট আজম খানকে।
তৌহিদ
ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া।🌹