সকাল বেলায় আমার হাঁটার অভ্যাস। কিন্তু শীতকালে এই অভ্যাসটা বাঁচিয়ে রাখা খুবই কঠিন একটা কাজ! তবুও চেষ্টা করি! হাঁটলে ব্রেনটা ঠিকমতো কাজ করে!
সেদিন ছিলো বুধবার! মোবাইলের শব্দে ঘুম থেকে উঠলাম! হাঁটতে বের হলাম! সময় সকাল ৬:২০! চারদিক ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা! ( এই ঢাকা সেই ঢাকা না) হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম রেল লাইনের কাছে!
কুয়াশায় পাথর গুলো হালকা ভিজে আছে! পাশে ঘাসের উপর শিশির কণা! সূর্যের তখনো দেখা নেই! সূর্য উঠলে শিশির কণা ঝল ঝল করে মলিন হয়ে যায়!
রেলগাড়ীর আশার শব্দ শুনে এক পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম! রেলগাড়ী চলে যাওয়ার পর আবার রেল পথ ধরে হাঁটছি! পিছন থেকে কোকিলা কন্ঠে কে যেন আমার নাম ধরে ডাকলো
- আরিইইইইফ .....এই আরিফ
- কে?
- আমি! আমাকে চিনতে পারছো না?
- চেনার কি কথা ছিলো? আমি তো চিনতে পারছি না! কে আপনি?
- আমি রুবাইয়া! অভিনয় করি! ফেসবুকে তুমি আমাকে ফলো করো! তাই ভাবলাম আজ তোমাকে একটা সারপ্রাইজ দেই!
- রুবাইয়া!!! ?? ফেসবুকে আমি ফলো করি?? সারপ্রাইজ দিতে চলে এসেছেন???!! আমার জীবনে এক বিরাট বিস্ময় আপনি! আমি তো আপনার নামই আজ প্রথম শুনলাম!! আপনি কে সত্যি করে বলেন তো!
- আমি মিথ্যা কথা বলি না। এটাই সত্যি। চলো হাঁটি।
আমি কিছু না বলেই হাঁটতে লাগলাম তার সাথে! আর তাকে দেখতে লাগলাম! খোলা চুল! পায়ে নুপুর পরা! এক অদ্ভুত শব্দ!! এই শব্দের সাথে আমি তেমন পরিচিত নই! মেয়েটার গালে একটা তিল আছে। চোখে কাজল দেয়া! নাকে নাকফুল! যেন এক মায়াবীনি!!
এরকম ঘটনা আমার সাথে এই প্রথম ঘটছে! কিছুই বিশ্বাস হচ্ছে না! স্বপ্ন কিনা তা বুঝার জন্য নিজেকে চিমটি কাটলাম! সেইরাম ব্যথা পেয়েছিলাম! 🙁 কিছু প্রশ্ন করলাম!
- আপনি অভিনয় ছাড়া কি করেন?
- সারপ্রাইজ দেই!
- ও আচ্ছা!( মনে মনে ফাজিল বললাম ^:^ ) আপনার বাসা কোথায়?
- ভূতের গলি, হি হি হি
- মজা করছেন?
- হু! কেন ভয় পেলে নাকি! আমার বাসা অনেক দূরে চিনবে না!
- বলেন না! গুগল ম্যাপে দেখো নিবো প্রয়োজনে! 🙂
- তোমার মাথায় তো অনেক বুদ্ধি! আমার বাসা কার্টিলিওতে!
- ( কি সব অদ্ভুত কথা বলছে! হাঁটছি তো হাঁটছি! আশেপাশে আর কোন মানুষ দেখছি না! কি হচ্ছে আমার সাথে!) ওওও
- চা খাবে?
- খাওয়া যায়! তবে এখন খাবো না। আপনার বাসায় কে কে আছে?
- এখন খাবে না কেন?
- এমনি!
আরেকটা ট্রেন আসার শব্দ হলো! আমি একপাশে এসে দাঁড়ালাম! রুবাইয়া অন্যপাশে! ট্রেন যাওয়ার পর আর রুবাইয়াকে পেলাম না! কেমন এক অদ্ভুত কান্ড! ঐ পাশে গিয়ে নিচে তাকালাম! পড়ে গেল কিনা! নাহ্ নেই! ট্রেন ও দূরে মিলিয়ে যায়!
তারপরই মনে হলো আমি এক নির্জন জায়গায় চলে এসেছি! এখানে আসার কথা ছিলো না! ঐখান থেকে আসতে ছয় ঘন্টা লেগে যায়! কত অদ্ভুত কান্ড ঘটে যায় মানুষকে ঘিরে! মোবাইলটা ঘেটে ফেসবুকের ফলোয়িং লিস্টে কোন রুবাইয়াকে পেলাম না! তবে কে ছিলো ঐ মায়াবীনি!!
Thumbnails managed by ThumbPress
২১টি মন্তব্য
ভোরের শিশির
বাহ্!!! বেশ ভাল লেগেছে… পরে কি কিছু হয়েছে আবার! জানতে চাই…
সোনেলায় নিয়মিত আপনাকে পাবো আশা করছি এবং সেই সাথে অন্যদের পোস্টেও আপনাকে নিয়মিত পেতে চাই। ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা -{@
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।।
হুম। অবশ্যই নিয়মিত আসার চেষ্টা করবো। আর সবার পোস্টেই পাবেন।
ভোরের শিশির
(y)
শুভেচ্ছা।
ছাইরাছ হেলাল
গল্পটি দারুণ ভাবেই শেষ করেছেন।
ট্রেনে কাটা পড়েনি এই বেশি।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
আপনার কাছে দারুন লেগেছে এটাই বেশী।
ট্রেন কাটা পড়ি নি!
হু! এটা হয়তো ভালো দিক!
অনিকেত নন্দিনী
অদ্ভুতুড়ে ভূতের গল্প ভালো লেগেছে।
পথে প্রান্তরে এমন বিস্ময়ের মুখোমুখি হইনি কখনোই।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
ধন্যবাদ।
বয়স নিশ্চয়ই বিশী হয় নি, দোয়া রইলো নতুন অভিজ্ঞাতার সম্মুখীন হউন।
অনিকেত নন্দিনী
বেশি হয়নি আবার! ঢের বেশি হয়েছে। এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে চাইনা। ভয়েই মরে যাবো যে!
অ. ট. দয়া করে লেখার শিরোনামটা ঠিক করে দেবোন কি? তড়িঘড়ি করতে গিয়ে হয়তো “পথে পান্তরে বিস্ময়” হয়ে গেছে। 🙂
ভোরের শিশির
হাহাহাহ :D) বয়স!!!!!!!!! :D)
শিরোনামে বানান বিভ্রাট আছে। ‘প্রান্তরে’ হবে 🙂
অনিকেত নন্দিনী
এই শিশিররে কবে জানি ধইরা আছাড় দেই! :@
আমি যেদিকেই যাই পিছে পিছে গিয়া দাঁত দেখাইয়া গড়াগড়ি খায়। :@
বয়েসের কথা কইয়া গড়াগড়ি খাওনের কী আছে? আমি কি কইছি নাকি যে আমি পিচ্চি ন্যাদাবাচ্চা? :@ :@ :@
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
ঠিক বলেছেন!
বানান টা ভুল হয়েছে।
আর প্রোফাইলে কদম ফুল দেখেই মনে হয়েছিলো বয়স খুব একটা বেশী হয় নি।
আবু খায়ের আনিছ
ভাইজান, ভাবি কি জানে এই কথা?
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
ভাবি নাই তো।
আবু খায়ের আনিছ
এই জন্যই ত এই অবস্থা।
যাইহোক ফ্যান করলাম। লেখা ভালো লেগেছে।
অপার্থিব
বুঝতে পারছি গল্পটি কাল্পনিক কিন্ত যদি সত্যি হত তবুও এই ঘটনার একটা উপযুক্ত ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। তা হচ্ছে এই গল্পের প্রধান চরিত্র স্কিজোফ্রেনিয়া নামক এক জটিল মানসিক রোগে আক্রান্ত। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা তাদের চারপাশে এক বা একাধিক গায়েবী অস্তিত্ব খুঁজে পায়। তাদের সঙ্গে গায়েবী সম্পর্ক ও গড়ে তোলে। এই সম্পর্ক কখনো বন্ধু সুলভও হয় আবার কখনো শত্রুভাবাপন্নও হয়। এর দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
আহা!
আমার উর্বর মস্তিষ্কে সৃষ্টি এই গল্পও কোন রোগের উদাহারণ বহন করিলো!!!
এই ডাক্তার সমাজকে নিয়া আর পারা যায় না! ;(
বাই দা বাইই, ধন্যবাদ ভাই
অরুনি মায়া
মনে হয় ঘাড়ে ভূত লেগেছে | এই ভূত তো এত সহজে ছাড়বেনা | আমি নিশ্চিত আবার আসবে অন্য কোন মুহূর্তে | সেই গল্প শোনার অপেক্ষায় রইলাম 🙂
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
ভূত চাপিলে তো হইতোই!!!
মাঝ রাস্তায় ছাড়িয়া গিয়াছে!!!
আজকাল কি যে হইতেছে!!!
একই বিষয় নিয়া নতুন গল্প আমাকে দিয়া হয় না।
আপনার ফেসবুক লিংক টা কি দেয়া যাবে??
শুন্য শুন্যালয়
রুবাইয়া বাড়ি গিয়েই আইডি চেঞ্জ করে ফেলেছে, নাম চেঞ্জ করা যায়তো। অপেক্ষা করুন, আবার আরেক নাম নিয়ে সারপ্রাইজ দিতে চলে আসবে 😀
সকাল বেলা একা একা হাঁটতে যাবেন আর?
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
নাম চেন্জ কইরা ফেলছে!!!
চিন্তার বিষয়!! ^:^
আমি তাহলে সকাল বেলা কুয়াশা ঘন রাস্তায় হাঁটা ছাড়িয়া দিলুম
শুভ্র রফিক
চমৎকার ছোট গল্প।