: বরিশালের খ্যাতনামা সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মিহির লাল দত্ত পরিবার এর বিরুদ্ধে নানা কায়দায় ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে শকুনরা। নগরীর ১৭নং ওয়ার্ডের আগরপুর রোডের বাসিন্দা দত্ত পরিবার। এই পরিবারের সদস্যরা ৩১ মার্চ রোববার সকালে নিজস্ব সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মান করতে গেলে বাধা দেয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী চক্র। এ সময় দত্ত পরিবারের ওপড় হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীরা বসত বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এতে গুরুতর আহত হয় দেবরাজ দত্ত (ডোনা) ও তনু দত্ত। বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার গোলাম কবির ও এস আই চিন্ময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় সূত্র বলছে,১৯৬৮ সনে থানা কোতয়ালী,জেএল-৫০ নং,বগুড়া আলেকান্দা মৌজা,এসএ ১৪৪ ও ১৪৫ নং খতিয়ানের সাড়ে ২৫ শতাংশ জমি শ্রী যামিনী কান্ত ও অবনী কান্ত বন্ধোপাধ্যায়-এর কাছ থেকে দলিল মূলে স্বর্গীয় মিহির লাল দত্ত ক্রয় করেন। যার ফলোশ্রুতিতে তার ওয়ারীশগন এই জমিতে দীর্ঘ সময়ব্যাপী বসবাস করে আসছেন।
প্রয়াত মিহির লাল দত্ত’র ওয়ারীশগন’র বক্তব্য, ১৯৭৬ সনে অ্যাড. মিহির লাল দত্ত জেলা জজ কোর্টের অস্থায়ী পিয়ন মৃত জারফান উদ্দিনকে মানবিক কারনে বসবাসের জন্য আমাদের জমির ওপর বসতঘর নির্মান করে দেন। পরর্বতীকালে তার ছেলে শাহ্ আলম  (৫৫) একটি ভূয়া শোলে ডিগ্রি করে রাতারাতি মালিক বনে যান। সিআর (সিভিল রিভিশন) নং ২৭০/২০০৫ মামলার মাধ্যমে বেশ কিছু দিন আইনি লড়াইয়ের পর উক্ত ভূয়া ডিগ্রিটি বিজ্ঞ আদালত বাতিল করে দেন। অবশেষে আলম দিশেহারা হয়ে হাই কোর্টের এ্যপিলেট ডিভিশনে রিভিশন করেন যা বর্তমানে প্রকৃয়াধিন রয়েছে।
ওদিকে, নেপথ্যে থেকে শাহ আলমের পক্ষে কলকাঠি নাড়ছে নগরীর ভূমিদস্যূ হিসাবে পরিচিত খান কামাল ওরফে বরফ কামালসহ আরো কয়েক জন। ভুমি দস্যু খান কামাল ওরফে বরফ কামালের বাসা কাউনিয়া থানা সংলগ্ন চৌধরী বাড়ির গলি। শাহ্ আলম আত্মীয়  ভুমি দস্যু বরফ কামালের পেশী শক্তি ও তার সহযোগিতায় এলাকায় জানান দেয়,আলম এ জমির ১৮ শতাংশ ক্রয় করেছেন।
জেলা ভূমি শাখার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, থানা কোতয়ালী,জেএল নং-৫০, বগুড়া আলেকান্দা মৌজার, ১৪৪ ও ১৪৫ নং এসএ খতিয়ানের,৩৯৬১, ৩৯৬৩, ৩৯৬৮, ৩৯৬৯, ৩৯৭০, ৩৯৭১,৩৯৭২, ৩৯৭৪ ও ৩৯৭৫ নং দাগের মোট ৫৪ শতাংশ’র অধিক জমি বর্তমান সরকারের অর্পিত সম্পতির ‘ক’ তফসিল অন্তভূক্ত। এ সকল সম্পতির মধ্যে একাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন নামে বেনামে ভূয়া ডিগ্রি ও নিলাম দেখিয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্লান বহিভূত বহুতল ভবন নির্মান করে জবরদখল করে বসবাস করছেন। তবে উক্ত সম্পত্তি ক্রয় সূত্রে স্বর্গীয় মিহির দত্ত-এর ওয়ারীশগন ও নিলাম সূত্রে মৃত খোরশেদ আলম-এর ওয়ারীশগন পৃথকভাবে দাবী করে অর্পিত সম্পতি আইনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট শাখায় দুইটি মামলা দায়ের করেছেন।
প্রসঙ্গত : প্রয়াত মিহির লাল দত্ত ছিলেন একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যার বিচরন ছিল লক্ষ্যনীয়। যিনি বরিশাল প্রেস্রক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতিতে আইনী প্রাকটিসও করতেন মিহির লাল দত্ত । হত দরিদ্র,দরিদ্রদের জন্য কোন ফি ছাড়াই আইনী লড়াই করতেন। সমাজের অন্যায় অনাচার,কুসংস্কার’র বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন স্বোচ্ছার। তিনি বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন। বিশেষ করে তিনি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। মিহির লাল দত্তের পিতা ছিলেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জিতেন্দ্র লাল দত্ত। মিহির দত্তের আরেক ভাই সুবির দত্ত পান্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। দেশের জন্য এই পরিবারের আত্নত্যাগ ইতিহাসে অবিস্মরনীয়। দেশপ্রেমিক মিহির লাল দত্ত পরিবারের ইমেজ ক্ষুন্নে কিংবা দখল সন্ত্রাসে আঘাত হানতে আরো আগ থেকেই বিভিন্ন কৌশুলী পদক্ষেপে অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে সমাজের মানুষরূপী শকুনরা।

0 Shares

৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ