#খেরোখাতা_১৩

হৃদয়ের স্পন্দন ১৬ মার্চ ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১২:৫৩:১০অপরাহ্ন বিবিধ ৪ মন্তব্য

আমি সুবর্ণা। রক্ষনশীল পরিবারে বিশ্বাসে বেড়ে ওঠা একজন। ডায়রী লিখার অভ্যাস সেই ৮ম শ্রেণী থেকে। আমার জীবনের প্রতিটা খুটিনাটি লিখা থাকলেও আমি জানিনা এটা আমি কেনো লিখিনাই। এটা কোনো কলঙ্ক ছিলো কিনা তা আমি আজো জানিনা, কলঙ্কের ই তো মনে হয়। খেরোখাতা ৮৯ পর্ব চললেও তেরো টা বাকি ছিলো। অশুভ তেরো তাই লিখতে বসা। আমি এবার এইচ এস সি দিলাম, গতকাল বাসে ফেরার পথে একটি ঘটনা আমাকে মনে করিয়ে দিলো আজ থেকে ১২ বছর আগে থেকে ঘটতে শুরু করা এক স্মৃতি।
মতিঝিল থেকে বাসায় ফিরছিলাম, বাসে সিট নাই, দাঁড়াইয়া আছি, প্রায় লোকজন নামছে, উঠছে, সিট খালি হচ্ছেনা, কেউ কেউ উলটা ঘুরে নামছে। তাতে শরীরের সাথে আমার শরীর লাগলেও কমন অঙ্গের স্পর্শ বেশি হচ্ছিলো। এতে আমার কাছে তেমন কিছুই মনে হয়নি, বাংলা মোটরক্রস করার সময় পিছনের সিটের একটা লোক নামলো, আমি অবাক হয়ে খেয়াল করলাম, সাইডে যথেষ্ট জায়গা থাকার পরেও তিনি গা ঘেষে নামলেন শুধু তাই নয়, উথিত শক্ত কিছুর ছোয়া আমার পশ্চাৎপট ঘেষা দিয়েই তিনি নামার চেষ্টা করলেন, সেটা হলেও মেনে নিতে পারতাম, তবে তার কনুই দিয়ে একটু বাকা হয়ে আমার স্তন ছোয়ালেন, সহ্য করতে পারলাম না, ঘেন্না জমে গেলো। সিদ্ধান্ত নিলাম আমাকে লিখতে হবে সে অতীত।
সময় ২০০২। স্কুলে ভর্তি হয়েছি মাত্র। আমার ভাই মোর্শেদ তখন ৩য় শ্রেণীর ছাত্র। আমাদের জন্য এক শিক্ষক ঠিক করা হলো। নাম রঞ্জু। দিন ভালোই কাটে আমাদের। অবসর সময়ে মা গল্প পড়ে শোনান, আমার রক্ষনশীল মা হয়তো তখনো ততটা কুসংস্কার কাটিয়ে উঠতে পারেন নি, বাসায় মাত্র দুইটা ঘর। কর্মজীবী বাবার টাকায় এর বেশি ঘর ভাড়া আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিলোনা তাছাড়া দরকার ও ছিলোনা। স্যার আমাদের পড়াতে আসতেন। টেবিলের একটি দিক ছিলো দেয়াল ঘেষা। তাই স্যার মাঝে আর আমরা দু ভাই বোন দু দিকে বসতাম। হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য স্যার আমাকে চাপ দিতেন। তিনি আমার হাত ধরে আমাকে লেখা লিখাতেন। তবে টেবিলে বসে প্রথম কয়েকদিন। এর পর থেকে শুরু হলো একটু অন্যরকম, স্যার বলতে লাগলেন এভাবে হাত ধরতে তার কষ্ট হয়। তিনি আমার জন্য চকলেট নিয়ে আসতেন। আমাকে কোলে বসিয়ে তিনি লিখা লিখাতেন। ভালোই লাগত আমার, তখন ও বুঝিনাই আমি যৌনতা কি! এভাবেই চলল একদিন মা দেখে ফেললেন। মা ছোটো এক টেবিল কিনে আনলেন, বসার ব্যবস্থা ভিন্ন হয়ে গেলো, কোলে নেয়ার মত জায়গা ও থাকলোনা। স্যার বসলেন এক সাইডে, আমি স্যারের মুখোমুখি মোর্শেদ মাঝে। পড়ানোর ফাকে স্যার হাই তুলতেন। হাই তোলার সময় টেবিলের নিচ থেকে পা উঠিয়ে প্রথমে আমার চেয়ারে রাখতেন । ধীরে ধীরে তা উরুতে, একসময় দু পায়ের খাজে। অস্বস্তি লাগত আমার। কিছুই করার ছিলোনা। ভাই মনে হয় বুঝতে পারতো ভাই আমাকে একবার জিজ্ঞাসা করেছিলো স্যার কি তোকে পা দিয়ে লাথি দেয়? আমি বলেছিলাম না। কয়েকদিন এভাবেই কাটল। একটা সময় খেয়াল করলাম স্যার তার পায়ের আঙ্গুল দিয়ে আমার প্রসাব করার রাস্তায় খোচা দিচ্ছেন। ব্যাপারটা বেশ খারাপ লাগতে হুরু করলো আমার। আমি কাউকে কিছু বলতে পারলাম না, আমার মা কে ও না। কয়েকদিন পর স্যার আর এলেন না। সেই যে গেলেন তিনি আর এলেন ই না। আমি মনে মনে হাফ ছেড়ে বাচলাম। যাক বাচা গেলো, ততদিন আমি বুঝেছিলাম আমি একজন মেয়ে, আমাকে চুপ করে থাকতে হবে, এটা সম্ভবত জন্মগত সব মেয়েরাই বোঝে।
বছর তিনেক পরের কথা-
আমি আর আমার ভাই একই ঘরে ঘুমাই। একই খাটে। ছোটো থেকেই, যখন রঞ্জু স্যার পড়াতো তখন থেকেই। আমি ৩য় শ্রেণী তে পড়ি, ভাই ক্লাস সিক্সে। আমাদের হাঁসি ঠাট্টা পড়াশোনা সব ভালোই কাটছিলো। ততদিনে মায়ের কাছ থেকে অল্প অল্প শুনি মেয়েদের জীবনের গল্প। মা আমাকে টুকটাক কিছু কথা বলে, রক্ত দেখলে ভয় পেতে নেই, নিজের রক্ত হলেও না। সে নাক ফেটে বের হতে পারে, তাহলে ভয় পেতে হবে, কিছু না ফেটে যদি পেট ব্যাথা হয় তাহলে ভয় পাও্যা যাবেনা, যদিও মায়ের এ ধরনের কথার মর্মার্থ আমি বুঝেছিলাম আরো বছর ৫ পরে। আমি আর ভাই দুজন ভিন্ন কাথায় ঘুমাতাম। একদিন দেখলাম ঘরে কাথা একটাই, তাও আমার টা নাই, শুধু মোর্শেদের টা আছে। কিছুই করার নাই, আমরা একই কাথা গায়ে দিয়ে ঘুমাতে লাগলাম। প্রায় রাতে আমার অদ্ভুত কিছু ব্যাপার দেখা হতে থাকলো। মোর্শেদ আমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে, ঠিক কেমন যেনো এক আজব পরিস্থিতি। আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়, আমি কিছুই বলিনা। আমিও ঘুমের ভান ধরে শুয়ে থাকি। এর মাঝে মাকে জানালাম কাথা লাগবে আরো একটা। মা কাথা বের করে দিলেন। মোর্শেদ বুঝতে পারলো কিনা জানিনা সপ্তাহ খানেক এর মত ভালোই ছিলাম আমি। এর পর যা শুরু হলো তা ভাবলেই শরীরে শিহরণ বয়ে যায়। একদিন রাতে আমার কাছে মনে হলো কেউ আমার পশ্চাৎদেশে হাত দিচ্ছে, যেহেতু আমি উপুড় হয়ে ঘুমাতাম সে একটি স্থান ই ছিলো হাত দেয়ার, এখন বুঝি আগে বুঝতাম না। আমি ঘুমের ভান ধরে শুয়ে থাকতাম। হাত বেশি নড়াচড়া হলে একটু গড়িয়ে সড়ার চেষ্টা নিতাম। হাতের নড়াচড়া থেমে যেত। এর পর থেকে আবিস্কার করতে লাগলাম আমার প্যান্ট খোলা। আমি তখনো হাফপ্যান্ট পরি। একদম ছোটো প্যান্ট, শুধু মাথা কোমরের নিচে থেকে হাটুর এক বিঘা উপর পর্যন্ত দেহ ঢেকে রাখার জায়গা। শুধু প্যান্ট খোলা তাই না, মোর্শেদের হাত আমার গায়ে নাড়াচাড়া করছে। বিরক্ত লাগত, ঘুমের ভান ধরেই সড়ে যেতে থাকলাম আমি। কিন্তু দিন দিন বাড়তেই লাগলো। একদিন রাতে ঘুমের ভান ধরেই খেয়াল করলাম মোর্শেদ সম্পুর্ণ ল্যাংটা। সে আমাকে নগ্ন করছে। আমি চুপ করে ছিলাম, নিষিদ্ধ এ জিনিসের প্রতি আমারো আগ্রহ তৈরী হলো, কিন্তু এরপরের ঘটনার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত না। অন্ধকারেও স্পষ্ট বুঝলাম ভাইয়া তার শরীরের কোনো একটা অচেনা অংশ দিয়ে আমার নাভী আর নাভীর নিচে কেমন যেনো করছে। আমি স্বপ্ন দেখার মত করে চোখ বন্ধ করে কান্না শুরু করলাম, মা ছুটে এলো। জানালাম স্বপ্ন দেখেছি। আমি আর ঘুমাবোনা এ ঘরে। সেদিনের পর থেকে আমরা আলাদা। আমি মায়ের ঘরে ঘুমাতাম।

দিনে দিনে কত বেলা হলো, ভুলেই গিয়েছিলাম সব, আজ আবার মনে পড়ল, আমি একজন মেয়ে। চোখ বুঝে সব সহ্য করে যেতে হয় আমাদের!

#সত্য_ঘটনা
ইনবক্সে পাওয়া। পাওয়া নয় ঠিক খুঁজে নেওয়া। তাকে ধন্যবাদ থীম টি দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য। উত্তম পুরুষে লিখছি। উত্তম নারী বলা যেতে পারে। আমি ভাবিনি এমন হতে পারে, তবু হয়েছে। ভাবিনি বলা টা ভুল হবে, এতটা ভাবিনি।

0 Shares

৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ