ক থেকে চন্দ্রবিন্দু

তৌহিদুল ইসলাম ১ জুন ২০১৯, শনিবার, ০৫:২৮:২৫অপরাহ্ন অন্যান্য ৩৪ মন্তব্য

(ক-ঙ)
কুঞ্জলতার কুঞ্জে আলেয়া হয়ে ডেকেছিলো যে কুহক,
খেয়ালী মনের অবগাহনে নিজেকে আজ করেছে সমর্পন।
গড়েরমাঠে গোল্লাছুটে ছুঁয়ে দেয়া যুবকের সে হাত;
ঘরের মেঝেতে আঁচল বিছিয়ে,
ব্যাঙের কোলাহলে মাখামাখি একজোড়া কপোত-কপোতী।

(চ-ঞ)
চঞ্চল মনের কুহুডাকে সাড়া দিয়ে,
ছন্দে ছন্দে হৃদপিন্ডটা বারি খায় ধুকধুক শব্দে-
জন্ম যেন স্বার্থক হয়েছে এ ধরণীর বুকে।
ঝিমিয়ে পরা যৌবন প্রকম্পিত হয় বিদ্যুৎবেগে,
বঞ্চনা নয়; বেহুলার ঘরে ওৎ পেতেছে সূতানলী গোক্ষুর!

(ট-ণ)
টগবগে যুবতীর গালে মৃদু টোল পরে,
ঠনঠনে উঠোনে ঝুমুর বাজিয়ে মাতে উর্বশী নৃত্যে।
ড্যাবড্যাব নেত্রে চেয়ে থাকা যুবকের পাণে;
ঢাকা লাজলজ্জার সমস্ত বাঁধন হয় ছিন্ন,
ণত্ব-বিধানের নিয়ম ভেঙে শুরু করে রাসলীলা।

(ত-ন)
তারপর! তপ্ততার রেশ কেটে যায় যুবকের
থমকে ওঠা বিবেকের হাতছানি ডাক দেয়,
দগদগে গ্লানিতে হয় নিমজ্জিত।
ধুরন্ধর গোক্ষুরের ধোঁকাবাজিতে...
নুয়ে পরেছে সে অবলীলায়; অক্ষমতার আবডালে।

(প-ম)
পরাক্রান্ত যোদ্ধার আহাজারিতে বিদীর্ণ আকাশ
ফেণীল সমুদ্রের ঘোলা নোনাজলে-
বলীয়ান হয়েছিলো যে লজ্জাবতী শামুক,
ভয়কে জয় করে সে আজ বেড়িয়ে পরেছে খোলস ছেড়ে;
মৃত্যুঞ্জয়ী অবাধ্য প্রেমের বাউলা টানে।

(য-শ)
যবনিকা টানার সময় ঘনিয়ে আসে
রক্তাক্ত দাঁড় দুটি দিয়ে গন্ধ শোকে বাতাসে;
লালাঝড়া ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে করে শেষ চুম্বন।
বিহব্বলতায় আক্রান্ত পরিযায়ী কুহক ;
শব হয়ে লুটিয়ে পরে বালিয়াড়ির বুকে।

(ষ-র)
ষাট গম্বুজ অট্টালিকার কার্নিশে,
সম্মুখ প্রহরে মুখোমুখি সে আলিঙ্গনখানি-
হয়ে উঠেছে এক অসম প্রেমের উপাখ্যান।
চুড়ির মৃদু ঝনঝন শব্দ কর্ণকুহরে কম্পমান;
রুঢ় বক্ষে বাণ ডাকা কুঞ্জ নুয়ে পরে অবলীলায়।

(য়-চন্দ্রবিন্দু)
আয়নার প্রতিচ্ছবিতে আজ বিষাদের ছায়া
জগৎ সংসার ছেড়ে বৈরাগীবেশে;
ফড়িংয়ের রুপ ধরে ওড়ে শুধু এ ডালে সে ডালে।
নিঃশ্বাস থেমে আসছে লক্ষীন্দরের...
চাঁদের গায়ে বেহুলা নিজ হাতে আঁকছে কলঙ্কের কালো দাগ।

(ব্যঞ্জনবর্ণের ক্রমানুসারে ক খ গ ঘ ঙ এভাবে প্রতিটি অক্ষর দিয়ে প্রত্যেকটি লাইন শুরু হয়েছে। ব্যঞ্জনবর্ণ মনে রাখা তেমন কঠিন কিছু নয়। একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু সম্ভব।)

0 Shares

৩৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ