ক্লিওপেট্রার সরোবরে

সৌবর্ণ বাঁধন ২৮ জুলাই ২০২০, মঙ্গলবার, ১২:৩৩:৪৭পূর্বাহ্ন কবিতা ১১ মন্তব্য

প্রাচীন চাঁদের ছায়ায় ভেজা নীল সরোবরে লুকোচুরি,

খেলে হোরাসের চোখ!

এখনো মৎস্যজীবী লোক কারেন্টের জালে ছুড়ে দিলে,

বিদ্যুতচ্ছটা মেমফিসের জলে,

আধা খাওয়া প্রেম উঠে আসে! আধা পচা শরীরে-

কটু ঘ্রাণ! প্রতিটি অমরত্বের সাথেই তো মিশে থাকে

নশ্বর লাশ!

ক্লিওপেট্রা কী চেয়েছিলে সাইমুমে মাখা বিছানায়?

তাজা গোলাপের সাথে প্রতিরাতে সহবাসে মত্ত!

ধারালো তলোয়ার; নিয়ম করেই কাঁচি তাকে কাটে!

নিরাভরণ নারী পেয়েও তো পুরুষেরা আজন্ম অসুখী,

সুস্ফিত বক্ষ, উদ্বলিত উরু অভ্যাসে পানসে,

পুরুষের চোখে তুমি মদিরার গেলাস!

কাঁদে ইঁদুরে খাওয়া মমিদের স্নায়ু, মাংসপেশী,

ফোয়ারায় পৃথিবীর জল কাঁদে!

সুদুরে বিদায় নিচ্ছে সিজারের অশ্বেরা; দ্দুঃখ ছোপ ছোপ!

আরেকটু পর সে কি থামবে না? সে কি ফিরবে না আর?

ঠোঁটের ভাঁজে মিশে আছে তার ঠোঁট,

হাতের মাঝে দিয়ে গিয়েছে হৃদপিন্ড পুরোটাই,

শরীরের পুরোটা স্পন্দন, প্লেটে পড়ে আছে আধা খাওয়া-

আপেলের সাথে! স্বর্গের উদ্যান পালাচ্ছে কোথায়!

মিশে যাচ্ছে সিজারের ছায়া দিকের বলয়ে! আহা!-

মানুষটা চুম্বন রেখে চলে গেলো; পালালো হৃদয় ফেলে!

পুরূষ তুমি বাঁচবে কিভাবে আবার? তুমি ফিরবে না আর!

আইসিসের মন্দিরে কাঁপে পুরোহিতের আরতি,

টুক করে রাজহাঁস খেয়ে নিল মেঘ,

সাকারার গুহায় ন্যাট্রনে মমি করা ছিল সমস্ত আবেগ,

তবু তারা ফিরে এলো! গলে গলে চলে এলো ঘরে!

আসপ ভাইপারের মতো নিয়ে এলো বিষ ভরপুর,

একটি কামড়ই সন্ধান দিয়ে দিবে নিশ্চিত মৃত্যুর!

গভীর মন্ত্রের উচ্চারণে বহু শোক জমা; অনাগত প্রলয়,

মাথা চাড়া দিচ্ছে সীমানায়!

পুরুষেরা পরিযায়ী পাখি, বশ তো মানেনা নির্দিষ্ট বাসায়,

উন্মত্ত হস্তিনীর প্রেম, অগ্ন্যূৎপাতের মতো কাম,

সবকিছু একদিন ঠান্ডা রুটির সাথে,

তার প্লেটে বাসী হয়ে যায়! সে বিবিধ ভোজন প্রতাশী!

ক্লিওপেট্রা এখনো নির্ঘুম তুমি কিসের আশায়,

মরণের বহু আগে কতো প্রেম মরে যায়!

ক্রমশ যাচ্ছে দুরে সিজারের ঘোড়া, নগর তোড়ণে-

কড়াঘাতে এসেছে নতুন এন্টনি!

যুদ্ধের মতো পোড়া বালু; মমি হওয়া আত্মার বিলাপ,

ইটের খোলার ফাঁকে ফাঁকে বিদীর্ণ ফোঁসফাস,

রঙ্গিন মদিরার গেলাসে প্রতিফলিত নীল চোখে ছিল-

রোমান চুম্বন!

সরোবরে পাথরের গলে যাওয়া মানা,

পদচিহ্নে টোকা খেয়ে অমর্ত্য থেকে চন্দন গন্ধের পদ্ম,

এলো মর্ত্যলোকে; প্যাপাইরাসের বনে বিলাসী বাতাসে-

হেঁটে যাওয়া; ডোবা সূর্য্যের সাথে-

সামান্য কলতান মিশিয়ে ককটেল বানিয়ে পানোৎসব,

পুরু বর্মের ভাঁজে রাখা প্রেমের আহ্লাদ,

নাকি কামের আকাঙ্ক্ষায় মরে যাওয়া ময়ূরের চোখ!

কি ছিল আইভরি ক্যাসকেটে তোমার?

ভূমধ্যসাগরের তীরে মন্দিরে হাওয়া খেতে বসে,

আইসিস তোমাকেই ভুলে গ্যালো শেষে!

আকাশের মতো নীল তুমি আজ,

স্বেচ্ছায় বুকে নেওয়া গোখরার বিষে!

0 Shares

১১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ