ক্যান্টন ফেয়ার (২য় পর্ব)

ইঞ্জা ১৭ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার, ০৭:৪৯:৩৮অপরাহ্ন ভ্রমণ ২১ মন্তব্য

 

 

 

জিজ্ঞেস করলাম, তোমরা বাংলাদেশকে কেন মুঞ্জালা বলো?
উত্তরে যা বললো তা হলো, ওদের দেশে বাংলাদেশকে ওরা মুঞ্জালা নামেই চিনে, আমরা ওদের থেকে বিদায় নিয়ে নিজ রুমে এলাম, নির্ঘুম সারা রাত্রির যত ঘুম সব এক হয়ে আসছে আমাদের চোখে, দুজনের জন্য টুইন বেড আছে, যার যার বেডে শুয়ে দুজনে সিগারেট ধরিয়ে কিছুক্ষণ গল্প গুজব করে ঘুমিয়ে পড়লাম, এক ঘুমেই বিকেল হয়ে গেলো।
বিকেলে দুজন বেড়িয়ে এলাম হোটেল ছেড়ে, এদিক সেদিক ঘুরতে লাগলাম দুজনে, ঘুরে ফিরে সন্ধ্যার পরে ফিরে এলাম হোটেল রুমে, ঘণ্টা খানেক পর ইস্টেফেন এলো দেখা করতে, আগামীকাল যাবো আমরা ক্যান্টন ফেয়ার কেন্দ্রে, কিছু ব্যবসায়ীক কথাবার্তা শেষে তিনজনই বেরুলাম খাওয়ার উদ্দেশ্যে, ইস্টেফেন বললো হোটেলের রেস্তোরা পুরা ফিলাপ হয়ে আছে, এর চেয়ে বেটার নিচের কেএফসিতে যাওয়া, এইবার কেএফসিতে ইস্টেফেন আমাদেরকে খাওয়ালো, আমি নিলাম চিকেন বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পেপসি, সিইও নিলো রাইস, চিকেন মাসরুম, মিনারেল পানি, ইস্টেফেন নিলো পর্কের একটা আইটেম, খাওয়া দাওয়ার পর্বে ইস্টেফেনকে জিজ্ঞেস করলাম ফেয়ারে যাওয়ার পদ্ধতি, ইস্টেফেন আমাদেরকে টেক্সি ক্যাব নিতে বললো যদিও হোটেলের লাগোয়া আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন আছে কিন্তু কিছু সুবিধার কারণে আগামীকাল টেক্সি ক্যাব নেওয়ায় শ্রেয়।

পরদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে দুজনেই রেডি হয়ে নিচে নামলাম, ব্রেকফাস্ট করে একটা টেক্সি ক্যাব নিয়ে ক্যান্টন ফেয়ার প্রাঙ্গণে এলাম, টেক্সি ছেড়ে দুজনে প্রবেশ করলাম মেইন প্রবেশ দ্বারে, কয়েকজন ফেয়ার কর্মকর্তা আমাদের পথ দেখাতে লাগলো, প্রথমে আমাদের ছবি তুলতে হলো অটোমেটেড ক্যামেরায়, ছবি তোলার এক মিনিটের মধ্য ছবি দিয়ে আমাদের আরেকটা পথে এগুতে বললো, আমরা নির্দেশিত পথে এগুলাম, এক বড় হল রুমে উপস্থিত হয়ে অবাক হলাম সারি সারি টেবেল দেখে, যেখানে প্রচুর ফেয়ার কর্মকর্তা আগত অতিথিদের হেল্প করছে, আমরা দুজন দুই টেবিলে গেলাম যেখানে আমাদের থেকে ছবি, পাসপোর্ট নিয়ে দ্রুত কম্পিউটারে সব ডিটেইলস নিয়ে আমাদেরকে আইডি কার্ড দিলো, আইডি কার্ড দিতে পাঁচ মিনিটও লাগলোনা ওদের, কোন ধাক্কাধাক্কি হলোনা, অথচ হলরুমে আগত অতিথি ঐ মুহুর্তে হাজারের উপরে হবে, আমরা এগিয়ে গেলাম মেলার কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে, যেখানেই দরকার কার্ড দেখেই পথ দেখিয়ে দিচ্ছে ওরা।

 

আমরা খেয়াল করলাম ফেয়ার বা মেলার মেইন বিল্ডিংয়ে নিচের গেইট দিয়ে কম প্রবেশ করছে আগতরা, বেশির ভাগ সামনের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে, আমরাও সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেলাম, উপর তলায় সেকি মহাযজ্ঞ, বিভিন্ন ধরণের আইটেম দিয়ে সাজানো, বিভিন্ন ধরণের টেক্সটাইল মেসিন, বড় বঅঅড় আইস্ক্রিম মেসিন, প্রিন্টিং মেসিন, খাবার (ফুড) প্রসেসিং মেসিন, বাথরুম ফিটিংস, শাওয়ার মেসিন, সিরামকস আইটেমস ও কাটলারিজ, বিভিন্ন ধরণের মোটর বা পানির পাম্পযন্ত্র ইত্যাদি।
আমরা হেটে হেটে বিভিন্ন আইটেম ঘুরে ঘুরে দেখছি, এক পর্যায় দ্বিতীয় বিল্ডিং এসে পড়লাম, দ্বিতীয় বিল্ডিংয়ের এপাশ থেকে ওপাশ যাওয়ার জন্য ব্যাটারিচালিত গাড়ী আছে যা প্পেসেঞ্জার তুলে এগুচ্ছে লাইন ধরে অপর পাশে নামিয়ে দিয়ে আবার ঘুরে ফিরে আসছে, অপর বিল্ডিংয়ে এসে দেখি বিভিন্ন ধরণের বিয়ারিং, পার্টসের শো হচ্ছে, আমরা সব স্টলে কিছুক্ষণ থামছি, দেখছি ক্যাটালগ নিচ্ছি, আমাদের ভিজিটিং কার্ড দিচ্ছি, এই করতে করতে আমরা ধরলাম নিচে যাওয়ার পথ, নিচেও প্রচুর আইটেমের স্টল দেখলাম, ক্যান্ডি, চকলেট ইত্যাদির মেশিনারি দেখলাম, দেখলাম।ক্ষুদ্র শিল্পের মেশিনারি, গার্মেন্টস এবং ঘরে ইউজের সেলাই মেসিন, ইলেক্ট্রনিকস আইটেম, মোবাইল ফোন সহ ইত্যাদির স্টল গুলো ঘুরে ঘুরে দেখলাম, আমরা যা দেখেছি তা হলো পুরা মেলার ১০% মাত্র, তাহলে বুঝুন কত বড় এই মেলা প্রাঙ্গণ, এই মেলায় এমন কিছুই নেই যা নেই, এইখানে ক্ষুদ্র শিল্প থেকে শুরু করে বৃহত শিল্পের সব মেসিনারিজ আছে, আছে আপনার জীবনে প্রতিদিনের দরকারি সকল জিনিষ আপনি নিজে দেখে দেখে অর্ডার করতে পারবেন, এরপর ইম্পোর্ট করে নিয়ে যআআন নিজ দেশে, চাইলে এজেন্সিও নিতে পারেন এইখানেই বসে।

চলবে।

0 Shares

২১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ