তবুও এই বেঁচে থাকা

রিতু জাহান ১২ জানুয়ারি ২০১৬, মঙ্গলবার, ১১:০৯:১৬পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৫ মন্তব্য

ভালোবাসা,শ্রদ্ধা,স্বপ্ন ভঙ হলে মানুষ কি করে?এই প্রশ্ন নিজেকেই শুধু করেছি।কেন মানুষ কষ্ট পায় বা দেয়?সম্পর্ক কেন হয়?পারস্পরিক ভাললাগা,ভালবাসা কি?যা দেয় তা কতোটুকু পায়?একটা সময় এই ধরো বৈবাহিক সম্পর্কের শুরুটা যদি কষ্টের,ত্যাগের হয় তা কি সারাজীবন বয়ে বেড়াও? হ্যাঁ বেড়াতে হয়।
তারপরও মানুষ ভালবাসে,বেঁচে থাকে,সন্তান ধারন করে।সেই স্বামিরুপি মানুষটার মাঝে প্রেমিক পুরুষ খুঁজতে খুঁজতে একসময় ক্লান্ত হয়ে হার মানে।রয়ে যায় শুধু একটা সম্পর্ক।তার বাচ্চার মা,ঘরের বৌ।
সম্পর্ক শেষ হবার নয় তাই শেষ হয় না।
আমি আমরা কখন নারী?যদি বলি জন্মের পর থেকেই নারী।আচ্ছা সব মেয়ে কি নারী?
আমি আমিতে তখনই পূর্ণ নারী,আমি আমিতে তখনই সুন্দর যখন কারো অতি যত্নে,আদরে,ভালোবাসায়,স্নেহে সন্মানে,অপরিসীম প্রেম নিয়ে পরিপূর্ণ।আমার আমিতে পরিপূর্ণ হলে ভালোবাসা কেন পালালো?জীবন মানে আনন্দ,বেদনা,কষ্ট,বিরহ,ভালবাসা,ঘৃণার সংমিশ্রন।সুখের মূহুর্ত খুব তাড়াতাড়ি চলে যায়,কারণ তাকে আমরা কাছে রাখতে চাই,যেতে দিতে চাই না।দুঃখ তাকে তো রাখতে চাই না,তাই যেতেও চায় না।আসলে হয়ত একই সময় নেয়,কাছে থাকার সুখের মতো।শুধু মাপতে যা কষ্ট।
প্রতিটা মানুষের আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে,আছে ভিন্নতা।তার ভালবাসার প্রকাশটাও আলাদা।যেমন আমি হয়ত আলাদা আমার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী।মেয়েলি অনেক স্বভাব আমার ভিতর নেই।আমি পারিনা অকারন নেকামো,টিভি সিরিয়াল,জা জা অযাচিতো খুনসুটি।শাশুড়ি,মা,শশুর,বাবা,এদের কাজ গুলো লোক দেখানো করতে।স্বামির সাথে অযথা হাসিঠাট্রা আমার হয়না।আমার একান্ত অনুভূতিগুলো চোখেই পড়ে নিতে কি খুব অসুবিধে?সংসারেও নাকি অনেক রাজনিতি করতে হয়।এই সংসারের রাজনিতি আমার তো হয় না।স্বাভাবিক ভাবেই তো সব চলবে!তবে কেন অস্বাভাবিকতা?কেন এই তৃতিয় পক্ষের আগমন?
একটা সময় আমার মনে হত,আমার জন্মই হয়েছে এই লোকটার জন্য।এখন হয়ত তার মানেটা আলাদা।
প্রথম দেখাতে সেই যে ভাললাগার উথাল পাথালঢেউ আছড়ে পড়া,আমার বুকে,তা কি এখন হয়?সেই শ্রদ্ধা,লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া,হাতপা থরথর করে কাঁপা,হঠাৎ দেখাতে দম বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম।চোখ বন্ধ করে নিজেই স্বপ্ন বোনা।বৃষ্টিতে বৃষ্টিভেজা রাস্তায় হেঁটে চলা,মুখে কোনো কথা না বলা,নিরব নির্ভিগ্নে পাশাপাশি কোনো নদীর পাড়ে বসে নদির বয়ে যাওয়া দেখা।দূর থেকে ভেসে আসা কোনো প্রিয় গানের সুর।কখনও পূর্ণ চাঁদের আলোয় পাশে বসে থাকা আড় চোখে তাকে দেখা।আমার কেন যেন হয়ে উঠল না।বাস্তবতা আমাকে পুরাটাই মেরে ফেলল।দ্বায়িত্বগুলো পালনে আমায় সময়টা কবর দিলো।দ্বায়িত্ব পালনে হয়ে গেলাম কদম ফুল।কদম ফুল কি আমি?বর্ষায় ভেজা,সবুজে ঘেরা,আমি সাদা,বাদামি।গাছে থাকলে মৌ মৌ গন্ধ।নীচে পড়ে বিশ্রি গন্ধে সবার বিরক্তি।কেন এই গাছটা এইখানে,এইভেবে আক্ষেপ।আমি তো তোমার নই।আমি জীবনটা নদির মতো মনে করি।নদি চলতে অনেক আবর্জনা নিয়েই চলতো হয়।এই মেয়েরূপি তৃতিয় পক্ষকে আমি আবর্জনাই মনে করেছি।জীবনে তো প্রেম আসতেই পারে।তাই বলে আমায় কেন অপমান করো,আমাকে মেরে ফেলতে হবে!আচ্ছা নারির ভালবাসা কি?স্নেহ,মায়া মমতা,প্রেম।
আচ্ছা,তোমার প্রেমিকা কি আমায় বোলতে পারে,সে আমায় দয়া করেছে?তুমি কি সুখ খুঁজেছ জানিনা।তুমি নাকি আমায় খুব ভালবাস।এ কোন ভালবাসা?
আমি স্বার্থপর নই তাই আত্নহত্যা করতে পারি না।যে চারটি হাত আমায় শক্ত করে ধরে,দিন শেষে আমার বুকে আসে তাদের কেন ঠকাব বলো?
জীবনে সবার একটা ড্রয়ার থাকে।সেখানে তালা মেরে রাখাই উত্তম।
আমি একটা কচ্ছপের খোলসের মধ্য বাস করি।এ বড় শক্ত খোলস।আমিও মাথা বের করতে চাই।জানি পারব না।তাই আবারও লুকাই ঐ খোলসে।ততাই। তার দয়া নিয়েই বাঁচতে চাই।আমার সন্তান মানুষ হোক আমার শক্ত খোলসে।আমার জীবন বিলিন আমার সন্তানের মাঝে।তোমায় আমি ছাড়তে পারি না।এ আমার অপরগতা।
কিন্তু জান,আমিও হাপিয়ে যাই,আমারও ডুকরে কেঁদে উঠতে ইচ্ছা করে।কেউ আমায় বলুক,তুমি শান্ত হও,হাতটা শক্ত করে ধরো।কাঁদো জোরে কাঁদো এই বুকে।

0 Shares

১৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ