ভালোবাসা,শ্রদ্ধা,স্বপ্ন ভঙ হলে মানুষ কি করে?এই প্রশ্ন নিজেকেই শুধু করেছি।কেন মানুষ কষ্ট পায় বা দেয়?সম্পর্ক কেন হয়?পারস্পরিক ভাললাগা,ভালবাসা কি?যা দেয় তা কতোটুকু পায়?একটা সময় এই ধরো বৈবাহিক সম্পর্কের শুরুটা যদি কষ্টের,ত্যাগের হয় তা কি সারাজীবন বয়ে বেড়াও? হ্যাঁ বেড়াতে হয়।
তারপরও মানুষ ভালবাসে,বেঁচে থাকে,সন্তান ধারন করে।সেই স্বামিরুপি মানুষটার মাঝে প্রেমিক পুরুষ খুঁজতে খুঁজতে একসময় ক্লান্ত হয়ে হার মানে।রয়ে যায় শুধু একটা সম্পর্ক।তার বাচ্চার মা,ঘরের বৌ।
সম্পর্ক শেষ হবার নয় তাই শেষ হয় না।
আমি আমরা কখন নারী?যদি বলি জন্মের পর থেকেই নারী।আচ্ছা সব মেয়ে কি নারী?
আমি আমিতে তখনই পূর্ণ নারী,আমি আমিতে তখনই সুন্দর যখন কারো অতি যত্নে,আদরে,ভালোবাসায়,স্নেহে সন্মানে,অপরিসীম প্রেম নিয়ে পরিপূর্ণ।আমার আমিতে পরিপূর্ণ হলে ভালোবাসা কেন পালালো?জীবন মানে আনন্দ,বেদনা,কষ্ট,বিরহ,ভালবাসা,ঘৃণার সংমিশ্রন।সুখের মূহুর্ত খুব তাড়াতাড়ি চলে যায়,কারণ তাকে আমরা কাছে রাখতে চাই,যেতে দিতে চাই না।দুঃখ তাকে তো রাখতে চাই না,তাই যেতেও চায় না।আসলে হয়ত একই সময় নেয়,কাছে থাকার সুখের মতো।শুধু মাপতে যা কষ্ট।
প্রতিটা মানুষের আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে,আছে ভিন্নতা।তার ভালবাসার প্রকাশটাও আলাদা।যেমন আমি হয়ত আলাদা আমার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী।মেয়েলি অনেক স্বভাব আমার ভিতর নেই।আমি পারিনা অকারন নেকামো,টিভি সিরিয়াল,জা জা অযাচিতো খুনসুটি।শাশুড়ি,মা,শশুর,বাবা,এদের কাজ গুলো লোক দেখানো করতে।স্বামির সাথে অযথা হাসিঠাট্রা আমার হয়না।আমার একান্ত অনুভূতিগুলো চোখেই পড়ে নিতে কি খুব অসুবিধে?সংসারেও নাকি অনেক রাজনিতি করতে হয়।এই সংসারের রাজনিতি আমার তো হয় না।স্বাভাবিক ভাবেই তো সব চলবে!তবে কেন অস্বাভাবিকতা?কেন এই তৃতিয় পক্ষের আগমন?
একটা সময় আমার মনে হত,আমার জন্মই হয়েছে এই লোকটার জন্য।এখন হয়ত তার মানেটা আলাদা।
প্রথম দেখাতে সেই যে ভাললাগার উথাল পাথালঢেউ আছড়ে পড়া,আমার বুকে,তা কি এখন হয়?সেই শ্রদ্ধা,লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া,হাতপা থরথর করে কাঁপা,হঠাৎ দেখাতে দম বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম।চোখ বন্ধ করে নিজেই স্বপ্ন বোনা।বৃষ্টিতে বৃষ্টিভেজা রাস্তায় হেঁটে চলা,মুখে কোনো কথা না বলা,নিরব নির্ভিগ্নে পাশাপাশি কোনো নদীর পাড়ে বসে নদির বয়ে যাওয়া দেখা।দূর থেকে ভেসে আসা কোনো প্রিয় গানের সুর।কখনও পূর্ণ চাঁদের আলোয় পাশে বসে থাকা আড় চোখে তাকে দেখা।আমার কেন যেন হয়ে উঠল না।বাস্তবতা আমাকে পুরাটাই মেরে ফেলল।দ্বায়িত্বগুলো পালনে আমায় সময়টা কবর দিলো।দ্বায়িত্ব পালনে হয়ে গেলাম কদম ফুল।কদম ফুল কি আমি?বর্ষায় ভেজা,সবুজে ঘেরা,আমি সাদা,বাদামি।গাছে থাকলে মৌ মৌ গন্ধ।নীচে পড়ে বিশ্রি গন্ধে সবার বিরক্তি।কেন এই গাছটা এইখানে,এইভেবে আক্ষেপ।আমি তো তোমার নই।আমি জীবনটা নদির মতো মনে করি।নদি চলতে অনেক আবর্জনা নিয়েই চলতো হয়।এই মেয়েরূপি তৃতিয় পক্ষকে আমি আবর্জনাই মনে করেছি।জীবনে তো প্রেম আসতেই পারে।তাই বলে আমায় কেন অপমান করো,আমাকে মেরে ফেলতে হবে!আচ্ছা নারির ভালবাসা কি?স্নেহ,মায়া মমতা,প্রেম।
আচ্ছা,তোমার প্রেমিকা কি আমায় বোলতে পারে,সে আমায় দয়া করেছে?তুমি কি সুখ খুঁজেছ জানিনা।তুমি নাকি আমায় খুব ভালবাস।এ কোন ভালবাসা?
আমি স্বার্থপর নই তাই আত্নহত্যা করতে পারি না।যে চারটি হাত আমায় শক্ত করে ধরে,দিন শেষে আমার বুকে আসে তাদের কেন ঠকাব বলো?
জীবনে সবার একটা ড্রয়ার থাকে।সেখানে তালা মেরে রাখাই উত্তম।
আমি একটা কচ্ছপের খোলসের মধ্য বাস করি।এ বড় শক্ত খোলস।আমিও মাথা বের করতে চাই।জানি পারব না।তাই আবারও লুকাই ঐ খোলসে।ততাই। তার দয়া নিয়েই বাঁচতে চাই।আমার সন্তান মানুষ হোক আমার শক্ত খোলসে।আমার জীবন বিলিন আমার সন্তানের মাঝে।তোমায় আমি ছাড়তে পারি না।এ আমার অপরগতা।
কিন্তু জান,আমিও হাপিয়ে যাই,আমারও ডুকরে কেঁদে উঠতে ইচ্ছা করে।কেউ আমায় বলুক,তুমি শান্ত হও,হাতটা শক্ত করে ধরো।কাঁদো জোরে কাঁদো এই বুকে।
Thumbnails managed by ThumbPress
১৫টি মন্তব্য
অনিকেত নন্দিনী
তারপরও মানুষ ভালবাসে, বেঁচে থাকে, সন্তান ধারন করে। সেই স্বামীরূপী মানুষটার মাঝে প্রেমিক পুরুষ খুঁজতে খুঁজতে একসময় ক্লান্ত হয়ে হার মানে। রয়ে যায় শুধু একটা সম্পর্ক। তার বাচ্চার মা, ঘরের বৌ। 🙁
আমিও মাথা বের করতে চাই। জানি পারব না।তাই আবারও লুকাই ঐ খোলসে। তাই তার দয়া নিয়েই বাঁচতে চাই। আমার সন্তান মানুষ হোক আমার শক্ত খোলসে। আমার জীবন বিলিন আমার সন্তানের মাঝে। 🙁
আমিও চাই কেউ আমায় বলুক, “তুমি শান্ত হও, হাতটা শক্ত করে ধরো, কাঁদো জোরে কাঁদো এই বুকে।” 🙁
মৌনতা রিতু
হুমমমম।পড়ার জন্য ধন্যবাদ। –
জিসান শা ইকরাম
আমাদের সামাজিক অবস্থার কারনে নারীদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে সব কিছুই মেনে নিতে হয়
বিদ্রোহের আগুন দাউদাউ করে জ্বলতে থাকলেও প্রয়োজনীয় উত্সাহের অভাবে তা একসময় নিভে যায়
একটি সময়ে আসে হাল ছেড়ে দেয়া নারীরা মেনে নেয় সবকিছু
নিজের আমিত্ব ধ্বংস করে দেয়া নারীরাই সমাজে ভালো এবং লক্ষ্মী নারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
ভালো লিখেছেন, নিয়মিত লেখুন
অন্যের লেখাও পড়ুন
শুভ কামনা।
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভোরের শিশির
বেশ গভীর ভাবনার কথা। নারী ও নারীত্ব নিয়ে গম্ভীর অথচ আবেগিক পোস্ট।
আপনি আরো লিখুন নিয়মিতভাবেই…
শুভেচ্ছা জানবেন… -{@
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ।
ভোরের শিশির
-{@
মোঃ মজিবর রহমান
জীবন মানে কি?
সংসার মানে কি?
সংসার শুধুই কি নারীর ?
সন্সার শুধুই কি পুরুসের?
সংসার শুধুই কি পুরুসের জন্য ভাংগে?
এখানে কি পুরুসই একা দায়ী ?
মৌনতা রিতু
না,কখনোই পুরুষ একা দ্বায়ি নয়।তৃতীয় যে, সে নারি পুরুষ দুজনই হতে পারে।
মোঃ মজিবর রহমান
আপু আমরা কি চাই তা অনুধাবন করতে ব্যারথ
আর আমরা একে অপরের সংগে মিল্মিশে বাস করতে
মানে সহবস্থান করা কস্টের মনে করি।
সকল কাজ সবাই যদি ভাগ করে মনের আনন্দে করতে পারতাম কি মজাই না হত
এটা কেউ ভাবে না।
অরুনি মায়া
দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ক্ষোভ ,হতাসা,কষ্ট একসময় আগ্নেয়গিরির রূপ নেয় | নারী সে যতই শান্ত স্বভাবের হোকনা কেন যার মাঝে আত্মসম্মান বোধ আছে সে বেশিদিন অন্যায় সহ্য করতে পারেনা | আর আমাদের মাথা মোটা সমাজে সংসার ত্যাগী নারীদের ভাল চোখে দেখা হয়না ,এটা আমাদের দূর্ভাগ্য |
আবু খায়ের আনিছ
আমার কথাগুলো তুমি বলে দিয়েছ আপু। আর কিছু বলার নাই।
মৌনতা রিতু
এটা জীবনের কোন বাস্তবতা,বোঝা মুশকিল।তবুও বেঁচে থাকা।সবার সন্তান একটা বন্ধনে থাকুক এই কামনা।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
শুন্য শুন্যালয়
কেমন করে যেন অনেকের কথা বলে দিলেন। ভেতরটা কেমন করে উঠলো আপু। শিক্ষা, সম্পদ সবকিছুর উর্ধ্বে নারী শুধুই নারী।
জীবনে সবার একটা ড্রয়ার থাকে। সেখানে তালা মেরে রাখাই উত্তম। চমৎকার বললেন আপু।
অনেক ভালো লাগা একটি পোস্ট।
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ সাহস দেবার জন্য।