যৌনতা বিকৃতভাবে উপস্থাপনই হচ্ছে ধর্ষণ। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে ধর্ষণের কারণ যৌনতা নয়, পুরোটাই পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
নবজাতক শিশু ধর্ষণ হচ্ছে, হুজুর ছাত্রকে ধর্ষণ করছে, একজন গৃহবধূ স্বামীর হাতে ধর্ষণ হচ্ছে, এমনকি ছেলেমেয়ে ধর্ষণ হচ্ছে নিজের বাবার কাছে। কারণ ধর্ষকের কোন ধর্ম নেই, সে উন্মাদ, তার চোখেমুখে যৌন ক্ষুধা। এমন মূল্যবোধের অবক্ষয়ে রয়েছে অবাধ পর্নোগ্রাফির বিস্তার, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব আর পুঁজিবাদের ঘেরাটোপে নারীকে ভোগ্যপণ্যে উপস্থাপন করা।
বিশেষত শিশুদের উপর যৌন নিপীড়নের বড় কারণ বিকৃত মানসিকতা, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় পিডোফিলিইয়া। যদিও ধর্ষণের জন্য মেয়েদের পোষাক কিংবা দেহের প্রকাশভঙ্গিমা যতটা মুখ্য বিষয়, তারচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ ধর্ষিতাদের বিচার না পাওয়ার সংস্কৃতি।
সমাজ ও রাষ্ট্রে পুরুষতন্ত্র যেভাবে নারীকে কেবল যৌন বস্তুতে পরিণত করেছে, প্রকৃত ক্ষমতা থেকে দূরে রেখেছে। নারীকে অবরুদ্ধ করে দুর্বল ও হেয়প্রতিপন্ন করেছে। তারা ধর্ষণের মতো বর্বরোচিত ঘটনাতে নারীদেরই দোষ খুঁজে ফিরে, আবার এই নারীরাই পুরুষের ওই চাওয়া-পাওয়ার প্রতিধ্বনি করে।
১৭টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
” যদিও ধর্ষণের জন্য মেয়েদের পোষাক কিংবা দেহের প্রকাশভঙ্গিমা যতটা মুখ্য বিষয়, তারচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ ধর্ষিতাদের বিচার না পাওয়ার সংস্কৃতি ”
ধর্ষণের ক্ষেত্রে নারীদের পোষাক বা দেহের প্রকাশ ভঙ্গিমা কি আদৌ মুখ্য বিষয়? ধর্ষকের যেমন কোন ধর্ম-জাতপাত, রুচিবোধ নেই, তেমনি ধর্ষণের প্রকৃত কারন সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আপনার লেখাটি ভালো লাগলো।
সোনেলা ব্লগ পরিবারে আপনি স্বাগত। নিয়মিত লিখুন।
ভালো থাকুন। শুভ কামনা 🌹🌹
সাফায়েতুল ইসলাম
ধর্ষণের জন্য অধিকাংশ মানুষই দায়ী করে নারীর পোশাককে। অবশ্য ধর্মান্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশে এর থেকে বেশি কী বা আশা করা যায়। বাংলাদেশে ধর্মান্ধতা এতটাই প্রকট যে ধর্ষণ আসলে কী তারা সেটাই জানে না। এরা পোশাকের যুক্তি আমলে নিবেই না বরং অহেতুক তর্ক করবে, তারচেয়ে বরং বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠুক বিচারবহির্ভূত ধর্ষণের চলমান সংস্কৃতি নির্মূলে।
সাবিনা ইয়াসমিন-আপনার গভীর অভ্যর্থনা আমার অনুপ্রেরণা, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফয়জুল মহী
শততম ধর্ষণের মালিক মানিক ইটালিতেই মরেছে দেশে মরতেও পারিনি। আল্লাহর বিচার শেষ বিচার।
সাফায়েতুল ইসলাম
ধর্ষকদের মত জঘন্য কালপ্রিট গুলো যুগে যুগে অবহেলিত ছিল এবং তাদের মৃত্যুও অবশ্যই কুৎসিত ও বীভৎস ভাবে হবে।
মোঃ মজিবর রহমান
মহী ভাই, মানিকের মামা পুরুস্কিত হয়ে ছিল প্রধানমন্ত্রী এর নিকট। মামা ভিসি আর ভাগ্নে ধর্ষক। ছিল।
সাফায়েতুল ইসলাম
অপরাধ বিশ্বের যেকোন প্রান্তেই হোক কিংবা বাংলাদেশে। মানুষের মানবিক অধিকার বিচার প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেওয়ার। সকল ধর্ষণ অপরাধের বিচার সুনিশ্চিত হোক।
রোকসানা খন্দকার রুকু
সোনেলা ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। বিচার ব্যবস্থা কঠোর করা জরুরি। শুভ কামনা। শুভ সকাল।
সাফায়েতুল ইসলাম
ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুদের পক্ষে প্রায় ৭৩ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। আর যে প্রায় ২৭ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে, নামে মাত্র কিছু সংখ্যক অপরাধীদের দণ্ড হয়েছে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা।
শুভ দুপুর রোকসানা খন্দকার রুকু। আপনার আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা বার্তা হয়ে উঠুক আমার লেখার সহযোগী ও অনুপ্রেরণা। আপনাকে সাধুবাদ জানাই।
আলমগীর সরকার লিটন
একটা সুষ্ঠু বিচার হয় না বিধায় বার বার অঘটন ঘটে যায়- সুষ্ঠু বিচার হলে অনেকখানি অঘটন ঘটে না
সাফায়েতুল ইসলাম
বাংলাদেশে ধর্ষিত নারীর সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়, যেন অপরাধের শিকার তিনি হননি, বরং ধর্ষিত হয়ে তিনি নিজেই অপরাধ করেছেন। ধর্ষণ সম্পর্কে আমাদের সমাজের এই সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি ধর্ষকদের বিচার ও শাস্তি দেওয়ার পথে এক মৌলিক প্রতিবন্ধকতা। পরিবারের আপনজন থেকে শুরু করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা পর্যন্ত সবাই ধর্ষণের শিকার নারীর সহমর্মী হয়ে তাঁর পাশে না দাঁড়ালে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়া খুব কঠিন। তবে ধর্ষণের বিচারপ্রক্রিয়ায় আইনি সহযোগিতা দেওয়া থেকে শুরু করে আইন প্রয়োগের প্রতি ধাপে দক্ষতা বাড়ানো এবং দুর্নীতি দূর করার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া দরকার।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অবশ্যই পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা দায়ী সাথে বিচারের নামে প্রহসন, কালক্ষেপণ করা ও দায়ী, মেয়েদেরকে যৌন আবেদনময়ী করে উপস্থাপন করাটাও দায়ী। পোষাক দায়ী হলে ভারতে সবাই ধর্ষিত হতো প্রতিদিন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইলো
সাফায়েতুল ইসলাম
যুগে যুগে পোশাকের ধরনে পরিবর্তন এসেছে। আদিমকালে ছিল পশুর চামড়া, গাছের ছাল আর এখন রয়েছে নানা ধরনের পোশাক। বর্তমানে দেশ, সংস্কৃতি, সমাজ ব্যবস্থা, কাজের ধরন, অনুষ্ঠান, পছন্দ ও ফ্যাশানের ভিত্তিতে বহু ধরনের পোশাক পরে থাকেন নারীরা। বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অহরহ। ঘরে কিংবা বাহিরে, নারী কোথাও কোন নিরাপত্তা পাবে না, যতদিন না পুরুষের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন আসবে। ভারতে বেশিরভাগ ধর্ষণ মামলায় দেখা গেছে, ধর্ষিতা সালোয়ার কামিজ বা শাড়ি পরেছিল। অর্থাৎ যাকে বলা হয় ভারতীয় নারীর আদর্শ পোশাক, অর্থাৎ এ জরিপ থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, শরীর প্রদর্শন না করে বা তথাকথিত ‘আধুনিক’ পোশাক না পরলেও শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছেন নারীরা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী- আপনার আন্তরিক অভ্যর্থনা আমার লেখার অনুপ্রেরণা যোগাবে, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মোঃ মজিবর রহমান
যদিও ধর্ষণের জন্য মেয়েদের পোষাক কিংবা দেহের প্রকাশভঙ্গিমা যতটা মুখ্য বিষয়, তারচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ ধর্ষিতাদের বিচার না পাওয়ার সংস্কৃতি।
আপনার এই বাক্যের প্রতি অনেক দ্বিমত করবে, তা নিশ্চিত কিন্তু এই দুঈটাই সমগুরুত্বপুর্ণ। সামাজিকভাবে আমি বিশ্বাস করি।
এখানে অনেক ইউরোপ ভারত উদাহারণ দেবে কিন্তু আমি বাংগালী হয়ে একই ঘরে বাপ মেয়ে আলাদা বয়ফ্রেন্ড ও গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে থাকতে পারব না, পারব না।
বাংগালী ভাই বোনেরা পারবেন???
আমার সহপাঠি ইংরেজিতে অনার্স পড়ে সে ইউরোপ স্টাইলে হোস্টেলে থাকবে অর্ধেক প্যান্ট বুক বাহির করে গেঞ্জি। আবার মা বাবা এলে সুন্দর স্বাভাবিক পোশাক, এটাকে কি বলবেন?
সবার আগে দ্রত বিচার চাই।
আপয়াঙ্কে সোনেলা পরিবারে স্বাগতম। লিখুন পড়ুন ।
সাফায়েতুল ইসলাম
ছয় বছরের দেবশিশুতুল্যকে ধর্ষণ করা কিংবা ৬০ বছরের বৃদ্ধার ধর্ষিত হওয়ার মেডিকেল গবেষণা বহু পুরনো।
অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলেও সত্য ১৩৮ বছর আগে রাশিয়ান বিজ্ঞানী পাভলভ “কন্ডিশন্ড রিফ্লেক্স” নামে একটি কনসেপ্ট দিয়ে গেছেন। গবেষণায় তিনি দেখিয়েছেন ব্রেইন এমন একটি স্টিমুলেশনের প্রতি সাড়া দিচ্ছে, যেটিতে ব্রেইনের আদৌ রেসপন্স করা উচিত না, কিন্তু করছে।
ব্রেইন এই স্টিমুলেশনকে আরেকটি স্টিমুলেশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ফেলেছে।
মানুষ কুকুর নয় যে, মেয়ে দেখলেই তাকে ধর্ষণ করবে। তবে মানুষের মধ্যে পশুত্ব আছে বলেই বলাৎকার কিংবা ধর্ষণ হচ্ছে।
আরজু মুক্তা
আইনের কঠোর প্রয়োগ হোক।
সাফায়েতুল ইসলাম
জয় হোক সত্যের জয় হোক মানবতার। সংগ্রাম যত দীর্ঘ হয় জয়ের আনন্দ তত বেশি।
সুরাইয়া পারভীন
যদিও ধর্ষণের জন্য মেয়েদের পোষাক কিংবা দেহের প্রকাশভঙ্গিমা যতটা মুখ্য বিষয়…. তাই যদি হবে তবে এর থেকে শিশু কিশোরী এমনকি ছেলে বাদ যায় না কেনো? আসলে মস্তিষ্ক বিকৃতি নিকৃষ্ট জঘন্য মানুষরূপী হায়নাদের কুরুচিপূর্ণ মনোভাবই বেশি দ্বায়ী
সোনেলায় আপনাকে স্বাগতম
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে