
একদিন তুমি হার জিতের খেলায় মেতেছিলে
তোমার মুখোবয়বে দেখেছিলাম নিজেকে জিতিয়ে নেবো দৃঢ় প্রত্যয়!
তোমার চোখে জলজল করছিল আগ্নেয় গিরির ফুটন্ত লাভা,
তোমার নিঃশ্বাসে ছিল হেমলক কিংবা বিষাক্ত সায়ানাইড,
তোমার ওষ্ঠে ছিল কালনাগিনীর গরল পূর্ণ বিষাক্ত ছোবল
সেদিন যেনো তেনো উপায়ে তোমার জিততেই হবে।
ওষ্ঠে ওষ্ঠ রেখে নিঃশ্বাসে বিষ ঢেলে দিয়ে হলেও জিততেই হতো!
সেদিন আমার তোমার অমন রক্তচক্ষু, বিষাক্ত নিঃশ্বাস এমনকি গরলে পূর্ণ ছোবলে এতোটুকুও ভয় হয়নি
বরং করুণা হয়েছিল, হ্যাঁ ভীষণ করুণা হয়েছিল
তাই তো স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে তোমার নিজেকে জিতিয়ে নেবার সুযোগ করে দিয়েছিলাম
তুমি কেমন নির্বোধের মতো বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত হলে
সে কী উল্লাস! আমার চতুর্দিক ঘুরে ঘুরে উল্লাস করলে
বনের হিংস্র পশু শিকারের পর যেমনটা করে শিকারী
স্বেচ্ছায় হেরে যাওয়া নিস্তেজ নিঃষ্প্রাণ অর্থব শরীরটাকে
খুবলে খুবলে খেলে ক্ষুধার্ত ভয়ানক হায়নার মতো
সেদিন নির্বাক নিস্তব্ধ আমি’র চোখের কার্ণিশ বেয়ে কেবল কয়েক ফোঁটা অশ্রু ঝরেছিল।
২:৫৫ এ এম, রাত্রির শেষ প্রহর। প্রচণ্ড জেদ চেপে বসলো আর ঘুমাবোই না। হঠাৎ হঠাৎ এমন জেদ চেপে বসে আমার। আমিই বুঝতেই পারি না কী এর কারণ? যা হোক অনেক রাগ আর জেদের সংশ্রিমণে গটগট করে লিখে ফেললাম উপরিউক্ত ঝাঁঝালো কথা গুলো! লেখাটা শেষ করে ফোনটা ধপ করে বিছানায় ছুড়ে দিলাম। বালিশের উপর একটা কুশন রেখে তাতে মাথা দিয়ে আরো একটা কুশন চাপিয়ে দিলাম মাথার উপরে। চোখ বন্ধ করে থাকলাম কিছুক্ষণ। নাহ্ ঘুম আসছে না। এপাশ ওপাশ করতে করতেই সকালের আলো ফুটলো। একেই হতচ্ছাড়া চোখের যা তা অবস্থা তার উপর দীর্ঘ রাত্রি জাগরণের ফলে মাথা যন্ত্রণা চোখের যন্ত্রণা বিশ্রী রকম বেড়ে গেলো। সারাদিন কেটে গেলো না খেয়ে। জানি না খিদে কেনো পেলো না সারাদিন? ৩ পি এম । ছাদে গিয়ে কম্প্রোস্ট করতে রাখা গবর মাটি গুলো ইট দিয়ে ইচ্ছে মতো পিঠালাম। তারপর মনে হয় কিছু ছাই দরকার মাটি গুলো সাথে মিশাতে। ঘরে যাবতীয় পুরো কাগজপাতি নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলাম।
তারপর বসে বসে দেখছিলাম পুরোনো কাগজ গুলোর পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার দৃশ্য। আর মনে মনে ভাবছিলাম
আহা! ফেলে/ছেড়ে আসা পুরোনো জরাজীর্ণ স্মৃতিগুলোকে যদি এই ভাবে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে উড়িয়ে দেওয়া যেতো। তবে এই এক জীবনে এতো দুঃখ যন্ত্রণা হতাশা খুবলে খুবলে খেতে পারতো না প্রতিনিয়ত।
ছবি-গুগল
২৫টি মন্তব্য
রেহানা বীথি
সবচেয়ে বেশি যা দরকার, নিজেকে ভালোবাসতে শেখা। ভালোবাসুন নিজেকে, একটু একটু করে বাড়ান সে ভালোবাসার পরিমাণ। আমি মনে করি, এর চেয়ে বড় ওষুধ আর নেই। আমি এ-ও মনে করি, আমার যন্ত্রণা, আমার কষ্ট, আমার আনন্দ সব আমার একান্ত। আমি যেভাবে সেগুলো উপলব্ধি করব, যতটা আপন সেগুলো আমার, অন্য কারও কাছেই তা ততটা নয়। কেউ হয়তো জেনে সাময়িক ব্যথিত হবেন, সমবেদনা জানাবেন, কিন্তু কতক্ষণ? কোনও না কোনও সময় গুরুত্ব হারাবে অন্যের কাছে, নিজের কাছে নয়।
নিজের যাবতীয় নিজের মধ্যে রেখে উপশম করার চেষ্টা করি, একসময় মন প্রশান্ত হবেই। জীবন সবসময়ই সুন্দর। একটা পরিপূর্ণ সুন্দরকে ধারণ করি আমরা।
ভালো থাকুন আপু।
নিজের যত্ন নিন।
সুরাইয়া পারভীন
একদম সঠিক ও সত্য কথা বলেছেন আপু। নিজেকে ভালোবাসতে শিখতে হবে। জানি তবুও মাঝে মাঝেই বেয়ারা হয়ে যায় জানা বোঝা সব সব কিছু।
আমিও মানি জীবন সুন্দর। অদ্ভুত সুন্দর সেটা যে কোনো অবস্থাতেই
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আপু
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
রেজওয়ানা কবির
যা পুরোনো আর যা আমার অতীতটাকে নষ্ট করে দিছে তা এভাবে পোড়াতে পারলে সত্যি জীবন থেকে সব বিষাদময় সময়গুলো একেবারেই শেষ হয়ে যেত।কিন্তু আদৌ আমরা তা পারি কি?পারি না, বরং যত ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করি তত বেশি বর্তমানে প্রভাব পড়ে।খুব ভালো লাগল আপু।ভালোবাসা❤❤❤
সুরাইয়া পারভীন
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপু
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়। ভালোবাসা অবিরাম ❤️
সাবিনা ইয়াসমিন
“ আহা! ফেলে/ছেড়ে আসা পুরোনো জরাজীর্ণ স্মৃতিগুলোকে যদি এই ভাবে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে উড়িয়ে দেওয়া যেতো। তবে এই এক জীবনে এতো দুঃখ যন্ত্রণা হতাশা খুবলে খুবলে খেতে পারতো না প্রতিনিয়ত”
জ্বলানো/পোড়ানো স্মৃতিগুলোর জ্বালানি ছাঁই বাতাসে উড়ানোর কি দরকার! সমাধান তো আপনার হাতেই, মানে লেখাতেই পেলাম! পোড়া কাগজের ছাঁই গুলো যেভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে মাটিকে আরও উর্বরতা দিলেন। তেমনি করে স্মৃতি পুড়িয়ে নিজেকে উর্বর করুন। সেখানে সোনালী স্বপ্ন এসে ধরা দিতে বাধ্য।
লেখাটি কাল্পনিক, তাই প্রতিকী মন্তব্য দিলাম।
আমরা পাঠকরা খুবই ইমোশনাল, কেউ কিছু লিখলেই ধরে নেই লেখক এগুলো তার জীবন থেকে লিখেছেন, বিশেষ করে যদি একান্ত অনুভূতি হয়! আর লেখক নারী হলেতো কথাই নেই, ষোল দু’গুণে আশি ভাবতেই ভালোবাসি 😀😀
লেখালেখির ধারা অব্যাহত থাকুক এটাই চাই। এই জন্য নিজেকে সুস্থ সমৃদ্ধ রাখুন। ব্লগার সুরাইয়া পারভীন শুধু তার নিজের নয়, সে আপনার কাছে রাখা আমাদের আমানত। তাই তার প্রতি কোনো অবহেলা আমরা মানি না, মানবো না।
ভালো থাকুন, সদা উৎফুল্ল থাকুন। ভালোবাসা নিরন্তর ❤❤
সুরাইয়া পারভীন
ষোল দু’গুণে আশি! বাব্বাহ!
একজন পাঠকের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে পাঠকে নিজের মতো করে উদ্ধার করা। লেখার পাঠ উদ্ধার করতে গিয়ে যদি তা লেখকের জীবনের সাথে মিলিয়ে মিশিয়ে একাকার করে করুক।
পাঠকদের কাছে গিয়ে জনে জনে এটা বোঝানো সম্ভব নয় যে লেখা লেখকের, লেখক লেখা নয়।
এই লেখাটা সেই সমস্ত নারীদের নিয়ে সংসারে যাদের ইচ্ছের কোন মূল্য নেই। অনিচ্ছা সত্ত্বেও মনে নিতে হয় এক ধরাবাঁধা জীবন।
এক্ষেত্রে ব্লগার সুরাইয়া পুরোপুরি স্বাধীন। তার কাছে নিজের ইচ্ছের গুরুত্ব সবর্দা প্রাধান্য পায়।
চিন্তা করবেন না আপনাগো আমানতকে সামলে রাখবো আমি ইনশাআল্লাহ।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন আপু। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় অনেক অনেক ভালোবাসা জানবেন ❤️❤️
সুরাইয়া পারভীন
ষোল দু’গুণে আশি! বাব্বাহ!
একজন পাঠকের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে পাঠকে নিজের মতো করে উদ্ধার করা। লেখার পাঠক উদ্ধার করতে গিয়ে যদি তা লেখকের জীবনের সাথে মিলিয়ে মিশিয়ে একাকার করে করুক।
সমস্ত পাঠকের। পাঠকদের কাছে গিয়ে জনে জনে এটা বোঝানো সম্ভব নয় যে লেখা লেখকের, লেখক লেখা নয়।
এই লেখাটা সেই সমস্ত নারীদের নিয়ে সংসারে যাদের ইচ্ছের কোন মূল্য নেই। অনিচ্ছা সত্ত্বেও মনে নিতে হয় এক ধরাবাঁধা জীবন।
এক্ষেত্রে ব্লগার সুরাইয়া পুরোপুরি স্বাধীন। তার কাছে নিজের ইচ্ছের গুরুত্ব সবর্দা প্রাধান্য পায়।
চিন্তা করবেন না আপনাগো আমানতকে সামলে রাখবো আমি ইনশাআল্লাহ।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন আপু
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
প্রদীপ চক্রবর্তী
তারপর বসে বসে দেখছিলাম পুরোনো কাগজ গুলোর পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার দৃশ্য। আর মনে মনে ভাবছিলাম
আহা! ফেলে/ছেড়ে আসা পুরোনো জরাজীর্ণ স্মৃতিগুলোকে যদি এই ভাবে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে উড়িয়ে দেওয়া যেতো। তবে এই এক জীবনে এতো দুঃখ যন্ত্রণা হতাশা খুবলে খুবলে খেতে পারতো না প্রতিনিয়ত।
স্মৃতি কখনো ভুলে যাওয়ার নয়।
তা ছিন্ন করে দিতে চাইলেও তা পারা যায়না।
কিছু স্মৃতি মানুষকে ভালো থাকতে দেয়না।
সকলে অবজ্ঞা অবহেলা দূর হয়ে ভালোবাসায় অবগাহন করুন।
ভালো প্রকাশ, দিদি।
সুরাইয়া পারভীন
একদম সঠিক বলেছেন না
দূর হোক সকল দুঃখ ক্লেদ গ্লানি ছুড়ে ফেলে করতে হবে ভালোবাসায় অবগাহন।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
ছাইরাছ হেলাল
কঠিন অনুভূতির টানাপোড়েন এ লেখাটিতে।
তবুও বয়ে যাওয়া জীবনে স্রোতের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে ই নিজেকে পর`ম্যান করা জরুরি।
জীবন তো একটাই।
সুরাইয়া পারভীন
তাই তো! জীবন একটাই
তাই এই এক জীবনে মুখ বুঝে সয়ে যাও সবটা
গুরুজন সেটাই বলেন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
সুপায়ন বড়ুয়া
সত্যিই তো তাই ফেলে/ছেড়ে আসা পুরোনো জরাজীর্ণ স্মৃতিগুলোকে যদি এই ভাবে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে উড়িয়ে দেওয়া যেতো। তবে এই এক জীবনে এতো দুঃখ যন্ত্রণা হতাশা খুবলে খুবলে খেতে পারতো না প্রতিনিয়ত।
মানুষ থাকত সুখে গাইত গান দেখত স্বপ্ন অবিরত।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
আরজু মুক্তা
এভাবেই পুড়ায় পুড়ায় ছাই থেকে নতুন কিছুর জন্ম হোক।
সুরাইয়া পারভীন
হোক তবে তাই। আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপু
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সব সময়
মনির হোসেন মমি
ঠিক ঝাঝালোর মতই ঝাঝে ভরা কবিতা কিন্তু জীবন কী পারে কখনো লেখার শেষ প্যারার মতন জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হতে! পারে না বার বার বিষাক্ত ছোবলে ক্ষতবিক্ষত হয় দেহ মন। চমৎকার অনুভুতি।
সুরাইয়া পারভীন
পারে না বলেই তো এতো বিষণ্ণ বিষাদে ঢেকে যায় কারো কারো জীবন।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
শামীম চৌধুরী
মনোমূগ্ধকর লেখা। সত্যিই বলেছেন। জীবন একটাই।
সুরাইয়া পারভীন
ধন্যবাদ অশেষ দাদাভাই
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
তৌহিদ
কি পেলাম আর কি হারালাম এসব ভেবে সময় নষ্ট কিংবা রাগ করা বৃথা। জীবন অংক কষে হয়না। সে তার নিয়মেই চলে।
ভালোবাসার গুরুত্ব জীবনে অপরিসীম। না পেলে বঞ্চিত মনে হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে রাগকেও দমন করতে হবে কিন্তু।
ভালো থাকুন আপু।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
শেষাংশ টুকু অসাধারণ লেগেছে। এভাবেই যদি সব দুঃখ কষ্ট, স্মৃতি গুলো পুড়িয়ে ছাই করা যেত তাহলে আর এতো দুঃখ কষ্ট সহ্য করতে হতো না।সেই সাথে নতুন দিগন্তের সূচনা হলে আরো ভালো হতো। তানাহলে তো জীবন থমকে যাবে। ভালো থাকবেন অহর্নিশি। 💓💓
সুরাইয়া পারভীন
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দিদিভাই
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
রোকসানা খন্দকার রুকু
সত্যিই এমন করে সব পুড়ে ফেলতে পারলে ভালো লাগে। শান্তি অনুভূত হয়।
কিন্তু আসলেই কি সেটা করতে পারি?
তবে পারা উচিত। নিজেকে ভালবাসলে সম্ভব হয়।
সময়টা এত খারাপ যে সবার মাঝেই এমন অনুভূতি কাজ করে।
সব কম্পোস্ট বানিয়ে ফুল গাছ লাগাতে পারলে ভালো হতো।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
স্মৃতি বিস্মৃত গুলো হয়তো পুড়ি কম্প্রোস্ট বানানো সম্ভব নয় কিন্তু মাটি কম্প্রোস্ট বানিয়ে ফুল লাগিয়েছি অনেক। প্রিয় কাঠগোলাপ, শিউলি আরো অনেক অনেক ফুল গাছ
আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়