
এই দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষের আচরন দেখে ভয়ানক রকম ভাবে হতাশ হতে হয়। আমরা আসলে মানুষের মত আচরন করি কিনা এটিই সন্দেহ জাগে।
চীনের উহান এ ছিলাম আমি পাঁচ দিন। ছবির মত একটি সুন্দর শহর এটি। এখানে যখন করোনা বিস্তার লাভ করে, সরকার শহরটি দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সমস্ত যোগাযোগ ব্যাবস্থা বন্ধ করে দেয়। ওই শহর থেকে কেউ বাইরে যেতে পারবেনা, অন্য অঞ্চল থেকেও কেউ ওই শহরে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। সাধারন জনতা সরকারের এই আদেশ মেনে নেয় এবং তারা যার যার বাসায় অবস্থান করতে থাকে। যার ফলে দ্রুতই চীন এই ভাইরাসটি আয়ত্বে এনে ফেলে।
এই আদেশ এখন ঢাকা সহ কয়েকটি শহরে চালু করার সরকারী ঘোষনা আসে। কিন্তু কে শুনে কার কথা? শহর থেকে বেড় হবার এবং শহরে প্রবেশ করা মানুষের ঢল সামলাতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মানুষ এক স্থান হতে অন্য স্থানে যাবার জন্য মাছের ড্রামে লুকিয়ে যাচ্ছে। দরকার হলে এরা রাতে পালিয়ে চোরের মত শহর থেকে বেড় হবে বা ঢুকবে। এমন মানসিকতা কেন আমাদের?
জনসাধারনের সামাজিক দায়িত্বের একটি নমুনা জানলাম আজ পত্রিকায়। এক করোনা রোগী করোনা সনক্তের পরে পালিয়ে গেছে। তাকে মাইকিং করে খুঁজছে পুলিশ। কতটা ঝুকি এই লোক বহন করছে! সে তো এখন একজন ভাইরাস বোমা হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যত বাসায় সে পালাবে সেই সব বাসার সবাই করোনা ভাইরাসে আক্রন্ত হবে। আক্রান্তদের কেউ বাইরে বেড় হলে তার সংস্পর্ষে আরো মানুষ আক্রান্ত হবে। তাদের মাধমে আরো …. আরো …… আরো আক্রান্ত হবে। এই মানুষ রূপী ভাইরাস বোমা কে খুঁজে পাওয়া যাবে কোথায় ?
শুধু দেশের বাংগালীরা এমন নয়। সভ্য দেশ আমেরিকায় থাকা বাংলাদেশীরাও কম নয়। বিদেশে বাস করেন এমন বাংলাদেশিদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশী মৃত্য হয়েছে আমেরিকায়। সময় টিভিতে দেখলাম, নিউইয়র্কে বসবাসকারী একজন বাংলাদেশী মাস্ক ছাড়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে সময় টিভির সাংবাদিককে বলছেন ” আল্লাহ্ মৃত্যু দিলে যতই মাস্ক ব্যবহার করিনা কেন, কোনো কাজ হবে না।” একারনেই মাস্ক ব্যবহার করেন না উনি। কি অবস্থা ভাবা যায়? এই ধরনের লোকের অভাব নেই আমাদের দেশে। তাদের কে কে বুঝাবে যে আল্লাহ্ নিশ্চয়ই আত্মহত্যা করতে বলেননি।
করোনা কোনো ধর্ম মানছে? মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সবাইই তো করোনার আঘাতে বিপর্যস্ত। ইউরোপে করোনা ছড়িয়েছে একটি চার্চ থেকে। খৃস্টানরা প্রার্থনায় মিলিত হয়েছিলেন এক চার্চে, সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিরা। ভারত , পাকিস্থান, মালয়েশিয়ায় ছড়িয়েছে মসজিদে তাবলীগ জামাত থেকে।
ধর্ম আমাদের চিন্তাকে সীমাবদ্ধ কেন করবে? এই সমস্ত মানুষের কোনো অধিকার নেই তাদের আত্মীয় স্বজন এবং সমাজে এই মরনব্যাধি করোনা ছড়ানোর।
২৫টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
একদম ঠিক বলেছেন দাদা ভাই। অন্যের ক্ষতি করার অধিকার বিধাতা দেয়নি কাউকে। এদের সুমতি হোক। পৃথিবী আবার আগের মত প্রাণ ফিরে পাক। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
জিসান শা ইকরাম
” পৃথিবী আবার আগের মত প্রাণ ফিরে পাক। ” – সুন্দর বলেছ।
ধন্যবাদ ছোটদি।
শুভ কামনা।
রেহানা বীথি
আসলে ভাইয়া, স্বভাব যায় না ম’লে। আমরা যে পরিবেশে যেভাবে বেড়ে উঠি, তার প্রভাব থেকে যায় আমৃত্যু। সে যত উন্নত দেশেই বাস করি না কেন, জ্ঞান গরিমা উন্নত হয় না।
জিসান শা ইকরাম
ঠিকই বলেছেন আপু।
ভালো থাকবেন সবসময়।
তৌহিদ
ভাই এতো চরম আতঙ্কজনক একটি খবর!! তার মাধ্যমে কত শতজন আক্রান্ত হতে পারে ভাবতেই ভীত হচ্ছি আমি। আমরা বাঙালিরারা আসলে অমানুষের জাত। নিউইয়র্কে এই বাঙালি কমিউনিটিতে এরাই করোনা ছড়িয়েছে।
অথচ উন্নত দেশের জনগন আইনের প্রতি কত শ্রদ্ধাশীল, তারা কত সচেতন ভাবতেই অবাক লাগে।
সেই মানুষটি তাড়াতাড়ি ধরা পড়ুক এটাই কাম্য। ভালো থাকবেন ভাই।
জিসান শা ইকরাম
আমি খবরটা পড়েই আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। এই লোক যেখানে যেখানে যাবে, সব স্থানে ভাইরাস ছড়াবে।
নিউইয়র্কে এই সব বাংলাদেশীই মারা যাচ্ছে শিউর।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
এখন ভয়ানক অবস্থার মধ্যে আছে এই দেশ, এই অবস্থায় ঘর বন্দী থাকাটায় সবার জন্য উত্তম, নয়তো বিপদ অনিবার্য ভাইজান।
ভালো লেকগা দিলেন।
জিসান শা ইকরাম
কিছু মানুষ নামের ছাগল এই ঘরে থাকাটাই থাকতে চাচ্ছে না।
শুভ কামনা ভাইজান।
ইঞ্জা
বলদ গুলোকে ইচ্ছে করে বেতিয়ে লাল করে দিই। 😐
ইঞ্জা
লেখা*
জিসান শা ইকরাম
বুঝতে পেরেছি 🙂
ইঞ্জা
😁
বন্যা লিপি
আজ জানলাম রাজশাহী , গাজিপুর লকডাউন করেছে। দু একদিনের মধ্যে ঢাকা পুরোপুরি লকডাউন করে দেবে। আমার মনে হয় না এ দেশ ইউরোপ আমেরিকার মতো পুরো অর্থে যাকে বলে লকডাউন! সেই অর্থে লকডাউন করতে করতে পারবে।
এ দেশের মানুষ-নাই- হুঁস টাইপ জনগোষ্ঠী ।
নিজ বিপদের কথা তো দূর অন্যের বিপদেন কথা থোরাই ভাববে? নিজ ঘরের কথাই যদি বলি? সাহেবের অফিস চলছে যথারিতী। টুকটাক প্রয়োজনে দোকানপাটে ঠিকই যাতায়াত হচ্ছে। আমাদের নিত্য প্রয়োজনই আমরা বাতিল করতে পারছি না।
আর এই রোগী পালিয়েছেন কিসের কারনে? এর আগেও এক ভিডিওতে দেখলাম এক রোগী হাসপাতাল থেকে পালাচ্ছেন।
আল্লাহ্ ভালো জানেন বাংলাদেশের কি অবস্থা দাঁড়াবে সামনে!
জিসান শা ইকরাম
অন্যান্য দেশের মত লক ডাউন আমাদের দেশে সম্ভব না আসলে।
মানুষ বেড় হবেই বাসা থেকে।
কৌতূহল প্রচুর- কি অবস্থা বাইরের দেখে আসি, এই ভাবনার মানুষই দেশে বেশী।
একটা গুজব কিছুটা কম প্রচলিত, ‘ যাদের করোনা হয়, তাদের হাসপাতালে ইঞ্জেকশন দিয়ে মেরে ফেলে।’ এই গুজব ওই পালান লোকজন হয়ত বিশ্বাস করে ফেলছে।
অপেক্ষা করছি আতংক নিয়ে দেশের অবস্থা দেখার জন্য।
সুপায়ন বড়ুয়া
সহমত ভাইজান।
বাংলাদেশে বাস করে কমুনিষ্ট চীনের কথা ভাবা যায় ?
সেখানে ধর্ম কর্ম নিষিদ্ধ। আর অপ্রিয় হলে সত্য হেপাজতিরা এসেছিল ঢাকায় নামাজ পড়তে। পাকি মানষিকতার নেতৃত্ব উসকানি দিল ব্যাংক পাড়ায় আগুন দিতে। আর বিনারক্তপাতে যখন তাদের তাড়ানো হলো প্রচার হলো হাজার মুসল্লী হত্যা করে লাশ গুম করা হলো।
এটাই বাংলাদেশের আর এক পিট। এখানে সুযোগ সন্ধানীরা ওৎ পেতে থাকে আর মরিয়া প্রমান করতে হবে করোনা মরন ঘাতি। তার আগে কেউ বিশ্বাস করবে না।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
জিসান শা ইকরাম
এটা ঠিক, এদেশে বাস করে চীনের অবস্থা বুঝা যাবে না,
আমরা নিজেরা আসলে প্রচুর গুজবে বিশ্বাসী। বিশ্বাস করি বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা আলেমদের।
আজ একটা ভিডিওতে দেখলাম, মসজিদে নামাজ পড়তে নিষেধ করা হয়েছে- এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছে সে। অথচ মক্কা শরীফে পর্যন্ত নামাজ পড়া নিষেধ।
ভাল থাকবেন দাদা,
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
একজন করোনা রোগী পালিয়ে বেড়াচ্ছে এটা যে কতটা ভয়াবহ তা শীঘ্রই টের পাওয়া যাবে। এই বিবেকবর্জিত আর গোরা টাইপ মানুষগুলোর জন্যই দেশ আজ এমন করুণ পরিণতি দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে
জিসান শা ইকরাম
এমন করোনা ভাইরাস নিয়ে ঘুড়ে বেড়ানো অনেক মানুষ আছে দেশে,
এরাই দেশ এর বর্তমান পরিণতির জন্য দায়ী।
শুভ কামনা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
কিছুসংখ্যক পাগল ছাগল এখনো বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কী যে হবে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা জানেন।
ভালো থাকুন।
শুভকামনা দাদা।
জিসান শা ইকরাম
আজ টিভিতে দেখলাম রাস্তায় মানুষ বোঝাই, ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে একই অবস্থা।
দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
এদেরকে ঘরে রাখতে হলে কারফিউ ছাড়া উপায় নেই।
শুভ কামনা প্রদীপ।
ছাইরাছ হেলাল
কুপমন্ডুকতা রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে আছে আমাদের।
সে দেশে বা বিদেশে যেখানেই অবস্থান করি না কেন।
জিসান শা ইকরাম
দেশ হোক আর বিদেশ হোক, আমরা আমাদের চরিত্র পাল্টাতে পারছি না।
হালিম নজরুল
আমরা আসলেই খুব অসভ্য ভাই। কিছু সমন্বয়হীনতা তো আছেই। তবে আমাদেরকে সব রকমের নির্দেশনা দিলেও আমরা শুধু অন্যদেরকে দোষ দেব।
জিসান শা ইকরাম
নিজেদের দায়িত্ব আমরা এড়িয়ে যাই ভাই,
অন্যদের দোষ দিতে পারঙ্গম আমরা।
সাবিনা ইয়াসমিন
কেউ কারো কথা শুনছে না, সবাই নিজ নিজ বিশ্বাসে অটল। এমন শুধু আমাদের দেশে না, পার্শ্ববর্তী দেশ গুলোতেও হচ্ছে।সব দেখে মনে হচ্ছে, মানুষকে ঘরে ঢোকানোর মত কঠিন কাজ আর নেই।