করোনা ইফেক্ট

হালিম নজরুল ২০ এপ্রিল ২০২০, সোমবার, ১০:৪০:২৪অপরাহ্ন অণুগল্প ১৯ মন্তব্য

অফিসের গেটে হাতাহাতি হৈচৈ দেখে পুলিশ অফিসার এগিয়ে এলেন। কিন্তু দারোয়ান কাউকে ঢুকতে দিতে নারাজ। লতিফ সাহেব বললেন দেখুন তো পুলিশ অফিসার, আমারই অফিস, অথচ দারোয়ান ঢুকতে দিচ্ছেনা ! রাশেদ সাহেব বললেন, আপনিও তো আমাকে ঢুকতে দিচ্ছেন না! পাশে দাঁড়িয়ে হো হো করে কেঁদে যাচ্ছে কমলা বেগম। দশ বছর ধরে এই অফিসের এমএলএসএস। অথচ আজ তারই প্রবেশাধিকার নেই! অফিসার সব শুনে বুঝতে পেরে দাঁত কেলিয়ে বললেন, দিস ইজ করোনা ইফেক্ট। সবাই ভিতরে চলুন, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিলেই বুঝে নেব সমস্যাটা কি।স্বাক্ষর দেখে সবার চোখ চড়কগাছ!

নাস্তিক টাইপের লিকলিকে চেহারার লতিফ সাহেব করোনার ভয়ে খুবই পরহেজগার হয়ে গেছেন। বিশাল দাড়ি, টুপি, তসবি, পাজামা, পাঞ্জাবিতে একেবারে অচেনা। ঝাঁকড়া চুলের হালকা পাতলা রাশেদ সাহেব করোনার সময়গুলোতে শুধু খেয়ে আর ঘুমিয়ে ঢোল হয়েছে। মাথার চুল কামিয়ে টাক্কু হওয়ায় চেনারও কোন উপায় নেই। আর লম্বা গোফওয়ালা ইয়া মোটা শরীরের দারোয়ান অভাবের তাড়নায় না খেয়ে শুকিয়ে দড়ি হয়ে গেছে। গোফের বদলে গজিয়েছে লম্বা দাড়ি। আর সুন্দরী গোছের কমলা বেগমও শুকিয়ে কাঠি হয়ে গেছে। ঘরে যা মেকাপ ছিল তাও অনেক আগেই শেষ। ফলে যে ভূতকালো শরীরটাকে মেকাপে ঢেকে নায়িকা সাজিয়ে আসতো, সেটা আজ সত্যিকারের ভূত ভূতই লাগছে।

করোনার দীর্ঘ বিরতির পর অফিসে এসে তাই কেউ কাউকে চিনতে পারছে না। স্বাক্ষরশেষে পুলিশ অফিসার আবারও দাঁত কেলিয়ে হেসে উঠে বললেন, দিস ইস নাথিং বাট করোনা ইফেক্ট হো হো হো..........।

0 Shares

১৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ