মাহবুবুল আলম []

সারাবিশে^ করোনা ভাইরাস এক হাড়কাঁপানো আতঙ্কের নাম। সর্বশেষ তথ্য মতে এই ভাইরাসে বিশ্বের ২০৯ দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ লাখের বেশি মানুষ। আর মারা গেছেন ৮৮ হাজারের ওপরে। আর আইইডিসিআর তথ্যমতে, বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ২১৮ আর মারা গেছেন ২০ জন। তাই শোকে মুহ্যমান আজ সারাবিশ্ব। তিনমাস হয়ে গেলেও এই নিয়ে এখনও কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। আর তাই সারাবিশ্বের মানুষই এখন নিজে বাঁচার অন্যকে বাঁচানোর যুদ্ধে এককাতারে শামিল হয়েছেন। ভাইরাসের আক্রমণের প্রকোপ কমাতে দেশে দেশে লকডাউন, শাটডাউন করে রাখায় স্থবির হয়ে গেছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। করোনা ভাইরাস শুধু স্বাস্থ্য ঝুঁকি নয়, গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকেই নাড়িয়ে দিচ্ছে৷ এর ফলে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিও কমে যেতে পারে। চাকুরি হারাতে পারেন লক্ষ লক্ষ মানুষ । এর মধ্যেও বিশ^ব্যাপী ধেয়ে আসা চরম অর্থনৈতিক মন্দার হাত থেকে রক্ষার জন্য দেশে দেশে প্রস্তুতি নেয়া শুরু হয়েছে। দেশ-বিদেশের অর্থনীতিবিদ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০০৮ সালের মন্দাকে ছাড়িয়ে যাবে বর্তমানের করোনায় সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট। আগামী দিনগুলোতে অর্থনেতিক গতি প্রবাহ রাখতে মানুষের জীবন বাঁচানোর নানা উদ্যোগ নেয়া শুরু করেছে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব।

করোনা ভাইরাস আতঙ্কে একের পর এক নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্টেডিয়ামের খেলা থেকে শুরু করে বড় বড় সব বৈশ্বিক আয়োজন। স্কুল, কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কমে আসছে অর্থনৈতিক কর্মকা- । ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার কারণে লোকসানে পড়ছে বিশ্বের এয়ারলাইন্সগুলো। ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ার আশংকায় রয়েছে বড় বড় প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিনই ধ্বস নামছে প্রধান সব শেয়ার বাজারগুলোতে।

জেপি মর্গান, বলছে পরপর আগামী দুই প্রান্তিকে বিশ্ব অর্থনীতিতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি দেখা দিবে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে। চলতি বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২০১৯ সালের চেয়ে অর্ধেক কমে যাবে, জানিয়েছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সংগঠন ওইসিডি। ব্লুমবার্র্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিতে দুই দশমিক সাত ট্রিলিয়ন ডলারের লোকসান ঘটাবে, যা গোটা যুক্তরাজ্যের জিডিপির সমান। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জাপান মন্দায় পড়তে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই অভিঘাত বাংলাদেশের উপর কতটা পড়বে?

রপ্তানিতে প্রভাব  সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে রপ্তানি আয় এমনিতেই পড়তির দিকে। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি কমেছে চার দশমিক সাত নয় ভাগ। অব্যাহতভাবে কমছে পোশাক রপ্তানি। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এই পণ্যটির প্রধান বাজার। করোনা ভাইরাসের কারণে সেখানকার বাজারে এরিমধ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ইটালিতে মানুষ ঘর থেকেই বের হতে পারছে না। যেখানে ১৪৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ গত বছর। ধীরে ধীরে একই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে গোটা ইউরোপে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ৬২ ভাগ আসে ইউরোপ থেকে আর ১৮ ভাগই যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা মতে এরই মধ্যে চাহিদা কমে যাওয়ার আঁচ পেতে শুরু করেছেন। কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বাজারে শতকরা তিন দশমিক এক ভাগ বিক্রি এরইমধ্যে কমে গেছে, কমে যেতে শুরু করেছে ক্রেতাদের কার্যাদেশও। এফবিসিসিআই'র সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের ভয় হচ্ছে ইউরোপ নিয়ে। সেখানে যদি করোনা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে পোশাকের চাহিদা অনেক কমে যাবে। মানুষ যদি ঘর থেকে বেরই না হতে পারে তাহলে পোশাক কিনবে কিভাবে?’’

রেমিট্যান্সে প্রভাব সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির বেশিরভাগ সূচকই নিম্নমুখী। তার মধ্যেও ভাল করছিল রেমিট্যান্স। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ১০৪২ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ ভাগ বেশি। এই গতি ধরে রাখা এখন কঠিন হয়ে যাবে বাংলাদেশের জন্যে।

যেইসব দেশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সেখানে অর্থনৈতিক কর্মকা- এরইমধ্যে কমে গেছে। সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি শ্রমিক বা ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনমত আয় করতে না পারলে দেশে পরিবারের কাছে আগের মতো টাকা পাঠাতে পারবেন না। তাই স্বভাবতই রেমিট্যান্স কমতে থাকবে। এর প্রভাব পড়বে বৈদেশিক মুদ্রার রিজাভে।

করোনার প্রভাবে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দামে ২০০৮ সালের পর সবচেয়ে বড় পতন হয়েছে। শুধু চলতি বছর ৫০ ভাগ কমে অপরিশোধিত ব্রেন্ট বিক্রি হচ্ছে ৩৩ ডলারে। এই পরিস্থিতি খুব সহসায় কাটবে এমন আভাস মিলছে না। কারণ বৈশ্বিক অর্থনীতি ধীর হলে জ্বালানির চাহিদা এমনিতেই কমতে থাকে। অন্যদিকে তেলের উৎপাদন কমিয়ে বাজার সামাল দেয়ার বিষয়েও একমত হতে পারেনি সৌদি আরব ও রাশিয়া। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের লোকসান গুণতে হবে মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানি তেল নির্ভর অর্থনীতির দেশগুলোকে। বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের বড় অংশটাই কিন্তু আসে এই অঞ্চল থেকেই।

অভ্যন্তরীন অর্থনীতি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান দুই চালিকা শক্তি রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। রপ্তানি আয় কমে গেলে দেশের শিল্প কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের আয় কমে যাওয়া বা কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। অন্যদিকে প্রবাসীরা টাকা পাঠানো কমিয়ে দিলে তাদের পরিবার দেশে আগের মত খরচ করতে পারবেন না। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ব্যবসা বাণিজ্যে। কমে যাবে বেচাকেনা। চাহিদা কমে গেলে ভোক্তা পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির মুখে পড়বে।

আবার বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসের প্রভাবে অর্থনীতির গতি ধীর হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে চলতি বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ বড় চ্যালেঞ্জ হবে সরকারের জন্যে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি বলেছে বাংলাদেশের জিডিপি সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে এক দশমিক এক ভাগ কমে যেতে পারে। তাদের হিসাবে এতে মোট তিনশো কোটি ডলারের ক্ষতি হবে, আট লাখ ৯৪ হাজার ৯৩০ জন চাকুরি হারাবে। ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের এক প্রতিবিদনে এমন তথ্য দেয়া হয়েছে।

এমন অবস্থা মোকাবেলায় আগাম ব্যবস্থা হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। আগেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পোশাক খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বিষয়টি এখনই ভেবে ে দেখার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। করোনাভাইরাসের প্রকোপে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে একটি সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। করোনা সঙ্কট উত্তরণ ও পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছে সরকার। আগে মানুষের জীবন বাঁচানো পরে অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনাই মূল লক্ষ্য।

করোনা পরিস্থিতিতে সকল উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ৫ কোটির বেশি মানুষ এই খাতে কাজ করে। তাদের আয়ও মোটামুটি বন্ধ। মন্দা দেখা দিতে পারে, মূল্যস্ফীতি দেখা দেবে। এজন্য দেশকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হবে। সরকার সে বিষয়ে কাজও করছে। ইতোমধ্যেই পোশাক খাতে সহায়তা দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সহয়তাও যত সম্ভব নিতে হবে। অনানুষ্ঠানিক খাতে সহায়তা বেশি লাগবে বলে মনে করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা জারি করেই বসে থাকেননি, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব উত্তরণের লক্ষ্যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫ এপ্রিল ২০২০ রবিবার সকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেন তিনি। কর্মপরিকল্পনার আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় এ টাকা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজগুলো:

প্যাকেজ-১: ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা দেওয়া, ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পসুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দেওয়ার লক্ষ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে।

ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সংশ্লিষ্ট শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল হতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ দেওয়া।

এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। প্রদত্ত ঋণের সুদের অর্ধেক অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ঋণ গ্রহীতা শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে।

প্যাকেজ-২: ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদান: ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পসুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদানের লক্ষ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে।

ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল হতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ দেবে।

এ ঋণ সুবিধার সুদের হারও হবে ৯ শতাংশ। ঋণের ৪ শতাংশ সুদ ঋণ গ্রহীতা শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে।

প্যাকেজ-৩: বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ) সুবিধা বাড়ানো: ব্লক টু ব্লক এলসির আওতায় কাঁচামাল আমদানি সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইডিএফের বর্তমান আকার ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হবে।

ফলে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অতিরিক্ত ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ইডিএফ তহবিলে যুক্ত হবে।

প্যাকেজ-৪: প্র্রিশিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম (চৎব-ংযরঢ়সবহঃ ঈৎবফরঃ জবভরহধহপব ঝপযবসব) নামে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন ঋণ সুবিধা চালু করবে। এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৭ শতাংশ।

প্যাকেজ-৫: ইতঃপূর্বে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন/ভাতা পরিশোধ করার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি আপৎকালীন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্র্রধানমন্ত্রী। নতুন ৪টিসহ মোট ৫টি প্যাকেজে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ হবে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা যা জিডিপির প্রায় ২.৫২ শতাংশ।

মন্দা মোকাবেলায় এসব প্যাকেজ ঘোষণা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে বাংলাদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে আশ্চর্য এক সহনশীল ক্ষমতা এবং ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যে জাতি মাত্র ৯ মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে - সে জাতিকে কোন কিছুই দাবিয়ে রাখতে পারবে না।”

অবশ্য কিছু আশার জায়গাও রয়েছে। জ্বালানি তেলের পুরোটাই বাংলাদেশ বিশ্ব বাজার থেকে কেনে। দাম কমায় এখন আমদানি খরচ আগের চেয়ে অনেক কমে যাবে। সরকার যদি বাজারে সে অনুযায়ী দাম সমন্বয় করে তাহলে শিল্পের উৎপাদন ও পরিবহন খরচ কমবে। এতে সাধারণ মানুষও উপকৃত হতে পারেন। তবে সরকার জ্বালানি তেলে দাম না কমালে পুরো লাভটাই ভোগ করবে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন-বিপিসি। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে চীন থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ বা কমিয়ে দিয়েছে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। এর ফলে পোশাক খাতে বাংলাদেশের সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হংকংভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনেও এমন তথ্য উঠে এসেছে। ২০০ টি আন্তর্জাতিক ক্রেতা কোম্পানির উপর এই জরিপটি চালানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে তারা চীনের বদলে এখন অন্য দেশ থেকে পণ্য সংগ্রহের দিকে ঝুঁকছে। যার মধ্যে ভিয়েতনাম, ভারতের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশও। তবে করোনা ভাইরাস যদি বিশ্ব অর্থনীতিতেই গভীর প্রভাব ফেলে তাহলে এই সুবিধাগুলো বাংলাদেশ কতটা কাজে লাগাতে পারবে সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

যাক, আসন্ন অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এসব প্যাক ঘোষণা ও বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গিকার দেশের অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী সমাজ ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে বিপুল প্রশংসিত হয়েছে। তাই সবাই আশা করছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশের মানুষ সকল বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।

 

 

 

 

 

0 Shares

২৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ