যখন আমার কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না তখন নিজের সাথে অনর্গল কথা বলি। আর যখন নিজের সাথেও কথা বলতে ইচ্ছে করে না তখন বেড়িয়ে পড়ি নির্জন নিস্তব্ধ কোনো স্থানে। নির্জন স্থানে গিয়ে হাটুর উপর মাথা রেখে চুপচাপ বসে থাকি অনেকটা সময়। আজও বেড়িয়েছিলাম নির্জনে একা বসে নিঃশ্বাস নেবো প্রাণ ভরে। বাসা থেকে বের হয়ে কয়েক পা হেঁটে একটা রিক্সা নিলাম। রিক্সা চালককে বললাম অমুক জায়গায় যাবো। সেই মেতাবেক উনি রিক্সা নিয়ে গেলেন।
গন্তব্যের কাছাকাছি আসতেই চোখ পড়লো লাল, হলুদ, আকাশী, সবুজ রঙের শাড়ি পরা কয়েকজন বালিকার উপর। বেশ পরিপাটি সাজগোজ, চোখে কাজল, ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক, হাতে ও চুলে হলুদ কমলা রঙের বাহারী ফুল। বেশ লাগছিলো মেয়েগুলোকে। রিক্সা থেকে নেমে বেশ কিছুক্ষণ চেয়ে চেয়ে দেখলাম তাদের। ওরা সেলফি তুলছিলো বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে।
হঠাৎ মনে পড়লো এভাবে চেয়ে রয়েছি কেনো? মেয়ে গুলো দেখলে কী ভাববে? দ্রুত প্রস্থান করলাম। একটু এগিয়ে যেতেই দেখলাম নির্জন স্থান আজ নির্জন নেই। একজন বাইক আরোহী আগে থেকেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। ধীর গতিতে সামনে এগিয়ে যেতেই আর একটা বাইকে দু’জন এলো। বুঝলাম আজ আর শান্তি মিলছে না। তবুও এগিয়ে চলেছি। দ্রুত গিয়ে অনেকটা দূরে একা জায়গা দেখে বসে পড়লাম। প্রায় পাঁচমিনিট হাটুর উপর মাথা রেখে বসে থাকলাম। না, ভালো লাগছে না। প্রচণ্ড অসস্তি হচ্ছে। এদিক সেদিক চেয়ে এবার লক্ষ্য স্থির করলাম পুকুরের দিকে। হঠাৎ চুমকে উঠলাম। মনে হলো পানিতে তার মুখটা ভেসে উঠেছে। দ্রুত চোখ সরিয়ে নিলাম। চোখ বন্ধ করে রইলাম বেশ কিছুটা সময়। কী যন্ত্রণা! এবার তার স্মৃতি গুলো ভেসে উঠলো । এরই মধ্যে আরো চার পাচঁটা বাইক এলো। তখন মনে হলো এ স্থান এখন নিরাপদ নয় আমার জন্য। ওখান থেকে উঠে দ্রুত হাঁটতে শুরু করলাম। এত ছেলে মানুষের সামনে দিয়ে হাঁটতে বেশ অসস্তি হচ্ছিল। তবুও হেঁটে সামনে এগিয়ে গেলাম। কিছু দূর হাঁটার পর রিক্সা নিয়ে কফিশপে গেলাম। কড়া করে এককাপ কফি খেয়ে ফিরে এলাম গৃহে।
রিক্সা ভাড়া ৪০ টাকা আর কফির বিল ৩০ টাকা। মোট ৭০ টাকা খরচ করলাম তবুও শান্তি মিললো না। শুধু শুধু টাকাটা মাটি । কথা হচ্ছে পালিয়ে শান্তি পাওয়া যায় না। যার থেকে পালাতে চেয়ে বেড়িয়ে পড়া তারই স্মৃতি প্রতি মুহূর্ত তাড়া করেছে। এক মুহূর্তের জন্যও একা ছাড়েনি আমায়।
২৩টি মন্তব্য
ইসিয়াক
কথা হচ্ছে পালিয়ে শান্তি পাওয়া যায় না।
ঠিকই বলেছেন আপু্।
বসন্তের শুভেচ্ছা রইলো।
ভালো থাকুন সবসময়।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সবসময়
ফয়জুল মহী
পরিপাটি লেখা । বেশ মন ছুঁয়ে গেল।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
তৌহিদ
কোথাও শান্তি নেই। আমরা সবাই পালিয়ে বেরোচ্ছি। অবশ্য আমি শান্তির খোঁজে বাসাতেই ফিরে আসি বারবার।
সুন্দর লিখেছেন আপু।
সুরাইয়া পারভীন
সব গৃহে শান্তি থাকে না গো
তাই শান্তির খোঁজে ছুটতে হয় দূরে
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
পালিয়ে সত্যিই বাঁচা যায় না। কারন আমাদের মন যে আমাদের সাথে সাথেই থাকে। ভালো থাকুন। শুভ কামনা ও ফাগুনের শুভেচ্ছা
সুরাইয়া পারভীন
একদম তাই দিদি
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
ছাইরাছ হেলাল
স্মৃতি থেকে পালিয়ে বেড়ানো সত্যি-ই কঠিন,
লেখা পড়ে তাই মনে হচ্ছে।
সুরাইয়া পারভীন
একদম তাই
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
সুপায়ন বড়ুয়া
“পালিয়ে শান্তি পাওয়া যায় না। যার থেকে পালাতে চেয়ে বেড়িয়ে পড়া তারই স্মৃতি প্রতি মুহূর্ত তাড়া করেছে। এক মুহূর্তের জন্যও একা ছাড়েনি আমায়। “
একদম সত্যি কথা।
অকপটে ভালবাসা দিবসে
সত্যিটাই বেরিয়ে এলো।
শুভেচ্ছা।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন দাদা
ফজলে রাব্বী সোয়েব
মন ছুঁয়ে গেল শেষের কথাগুলোতে। ভালবাসা অবিরাম।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
সঞ্জয় মালাকার
দিদি শান্তি তো এখন চিন্তা পুরে , কথা হচ্ছে পালিয়ে শান্তি পাওয়া যায় না।
ফাল্গুনী শুভেচ্ছা রইলো দিদি।
সুরাইয়া পারভীন
ফাল্গুনী শুভেচ্ছা রইলো দাদা
ভালো থাকবেন সবসময়
নিতাই বাবু
আমাদের এলাকার এক সেলুন মালিকের নাম শান্তিরঞ্জন শীল। একদিন উনার মা পরলোকে চলে গেলেন। মানে মৃত্যু হলো। লোকে বলে শান্তির মা মরে গেছে। কিছুদিন আগে সেলুন মালিকে শান্তিও মারা গেলেন! এখন মানুষ একটু অশান্তিতে থাকলেই একে অপরের কাছে আক্ষেপ করে বলে, “শান্তিও নেই! শান্তির মা-ও নেই! এই হলো আমাদের অবস্থা।
লেখা পড়ে ভালো লাগলো। শুভকামনাও থাকলো।
সুরাইয়া পারভীন
হা হা হা হা হা দাদাভাই
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
হালিম নজরুল
আসলেই পালিয়ে শান্তি পাওয়া যায় না
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সবসময়
কামাল উদ্দিন
আপনার পরিক্পনা বেশ মনে ধরেছে আমার। বিকেল বেলা একটু বের হবো ৭০ টাকা গচ্ছা গেলেও খারাপ লাগবে না মনে হচ্ছে।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
কামাল উদ্দিন
আপনিও ভালো থাকুন সব সময় আপু।