ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট

সোনিয়া হক ২৯ নভেম্বর ২০১৪, শনিবার, ০৩:০৮:২৫অপরাহ্ন চিকিৎসা ২১ মন্তব্য

ওজন হ্রাস করার কয়টি সহজ পদ্ধতি: যেহেতু ওজন বৃদ্ধি, মেদ বা ভুঁড়ি প্রভৃতি সমস্যা সৃষ্টি করে সেহেতু আগে থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। প্রথমেই ওজন বাড়ার কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন এবং ধীরে ধীরে তা প্রতিরোধ করুন। সাধারণত খদ্যাভ্যাস অপ্রতুল কায়িক পরিশ্রম কিংবা অসুখই এর প্রধান কারণ। অতিরিক্ত ওজন কমানোর সহজ উপায় হল সঠিক ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ এবং প্রচুর কায়িক পরিশ্রম ব্যায়াম করা। যারা কায়িক শ্রম বেশি করেন তাদের ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই। নিয়মিত হাঁটা খুব ভালো ব্যায়াম। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে হাঁটতে পারেন, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, ত্রিকোণ আসন, উস্থান আসন প্রভৃতি ওজন কমানোর জন্য খুবই উপকারী।
চর্বি জাতীয় খাবার যেমন মাখন, তেল, গরু বা খাসির মাংস, বাটার প্রভৃতি থেকে দূরে থাকতে হবে। শরীরের জন্য এগুলো প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণে যার কম-বেশি হলে সমস্যার দেখা দেয়। এজন্য অনেক সময় দেখা যায় ওজন কমাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে অনেকে। এজন্য প্রয়োজন খাদ্য গ্রহণ পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া।
প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খাবেন এবং বেশি বেশি পানি পান করবেন। একবারে বেশি খাবেন না, একটু পরপর অল্প অল্প করে খাবেন। ক্ষুধা লাগলে শসা বা ফল খেয়ে নেবেন। কারণ শসা ও টক ফল ওজন হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আজকাল অপারেশনের সাহায্যে ভুঁড়ি বা বেদ কমানো হচ্ছে। লাইপোসাকশন বা অ্যাবডোমিনো ফ্লিস্টর সাহায্যে মেদ কমানো হচ্ছে। কিন্তু এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে অনেক।
ওজন হ্রাসকারী খাদ্যে ক্যালসিয়াম ও লোহার অভাব ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে ডিম ও কলিজা লোহার চাহিদা পূরণ করবে। চেষ্টা করবেন লবণবর্জিত খাদ্য গ্রহণ করতে। এক্ষেত্রে খাবার মেপে মেপে খাওয়ার প্রয়োজন নেই। মোটামুটি একটা হিসাব করলেই চলবে। শরবত, কোকা-কোলা, ফান্টা ইত্যাদি মৃদু পানীয়, সব রকম মিষ্টি, তেলে ভাজা খাবার, চর্বিযুক্ত মাংস, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম, শুকনা ফল, ঘি, মাখন, সর ইত্যাদি পরিহার করা প্রয়োজন। শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য ক্যালরির প্রধান উত্স। অধিক চর্বিযুক্ত কম ক্যালরির খাদ্যে স্থূল ব্যক্তির ওজন খুব দ্রুত কমে।
ওজন কমাতে পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সকাল : দুধ ছাড়া চা বা কফি, দুটো আটার রুটি, একবাটি সবজি সিদ্ধ, এক বাটি কাঁচা শসা। শসা ওজন কমাতে জাদুর মতো কাজ করে।

দুপুর : ৫০-৭০ গ্রাম চালের ভাত। মাছ বা মুরগির ঝোল এক বাটি। এক বাটি সবজি ও শাক, শসার সালাদ, এক বাটি ডাল এবং ২৫০ গ্রাম টক দই।

বিকাল : দুধ ছাড়া চা বা কফি, মুড়ি বা বিস্কুট দুটি।

রাত : আটার রুটি তিনটা, এক বাটি সবুজ তরকারি, এক বাটি ডাল, টকদই দিয়ে এক বাটি সালাদ এবং মাখন তোলা দুধ।

দৈনিক এক গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করলে দেহে প্রোটিনের অভাব থাকে না। ৬০ কিলোগ্রাম ওজনবিশিষ্ট ব্যক্তির খাদ্য ৬০ গ্রাম প্রোটিন হলেই ভালো হয়। প্রতিমাসে একদিন ওজন মাপতে হবে, লক্ষ্য রাখতে হবে ওজন বাড়ার হার কম না বেশি। ওজন বৃদ্ধি অসুখের লক্ষণ। মেদ বা ভুঁড়ি এদের অতিরিক্ত ওজন কোনোটাই স্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়। বরং নানা অসুখের কারণ হয়ে দেখা দেয় একথা সব সময় মনে রাখবেন এবং স্বাস্থ্যসচেতন হবেন।

লেখাটি লিখেছেনঃ ফাতেমা ইয়াসমীন (লিসি) খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাবি।
এটি এখান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে

0 Shares

২১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ

Thumbnails managed by ThumbPress