
*জীবন আর আমার কথোপকথন __
জীবন:
পুষ্প পাপড়ির গালিচা নয় পথ, আছে কণ্টক আছে অগ্নিতপ্ত লাভা।
হেঁটে যেতে হবে হাঁটের দিকে সওদা শেষে গুনতে হবে মুনাফা।
আমি:
ঈশ্বর দিয়েছেন অন্ধকার, বলেছেন পথ খুঁজে নিস আলোর।
জীবন:
তাই তো হেঁটে চলেছি আলোর সন্ধানে আনমনে,
আমি:
কে ওখানে?
এই যে আমি আলো! এখানে।
জীবন:
হাতড়াতে হাতড়াতে খুঁজে পেলাম সন্তুষ্টির এককোনে।
আজ আমার নেমন্তন্ন অন্ধকারের অন্ত্যষ্টিক্রিয়া সম্পন্নের অনুষ্ঠানে।
আমিও জীবন অন্ধকারকে একসাথে ফুলেল শুভেচ্ছা জানালাম শেষবার।
জীবন:
এই শোন,চিনলেনা! আমিই অনির্বাণ।
নির্বিবাদে মিলন হবে আজ আমার আর প্রজ্জ্বলিত অনির্বাণের।
*অনির্বাণ আর আমার কথোপকথন __
আমি:
অনির্বাণ জানো, আমার একটি শিশির স্নাত সকাল ছিলো, মধ্য গগনে সূর্য এলে বিদায় নিলো।
অনির্বাণ:
সেটাই অমোঘ নিয়ম। এই আমাকে দেখো আমি অহর্নিশ জ্বলতে চাই, অথচ বৃষ্টি এলেই নিভে যাই।
আমি:
বৃষ্টি না হলে যে জমিন ফেটে চৌচির হবে। তুমি তো সব পুড়িয়ে খাক করে দেবে।
অনির্বাণ:
তাহলে তুমি কেন সকাল খুঁজে মরো?যার যাবার সে যাবে, পিছু ডেকোনা।
আমি:
জানো, আমার একটা শুকতারা ছিলো, ঐ ওখানটায়…
অনেক দিন হলো তাকে আর দেখতে পাইনা। তুমি দেখেছো কোথাও?
অনির্বাণ:
বোকা মেয়ে কবি কি বলেছেন শোননি?
আমি:
না তো শুনিনি। তুমি একটু বলে দাওনাগো কি বলেছেন।
অনির্বাণ:
“প্রেম ধীরে মুছে যায়…
নক্ষত্রের ও মরে যেতে হয়।”
আমি:
তুমি কিভাবে জানলে আমার প্রেম ছিলো!
অনির্বাণ:
প্রেম মুছে না গেলে কি আমি তুমি আমরা হতে পারতাম?
আমিঃ
(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে) আমি তো তোমায় চাইনি সুশীতল প্রেমের কানন চেয়েছি।
অনির্বাণ:
বন্ধু চাইলেই কি সব হয়!
আমি কিন্তু তোমায় ছেড়ে যাচ্ছিনা।
আমি:
আমায় ভালোবাস?
অনির্বাণ:
না, তা কি করে হতে পারে?
তুমি জল আমি অনল!
আমি:
ভালোবেসে যে দূরে ঠেলে দেয়,
তার চেয়ে ঢের ভালো ভালো না বেসেও যে সাথে রয়।
২৩টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
মোটেই এলেবেলে কথোপকথন না, আপনি তো জীবনের সার কথা বলে ফেলেছেন,
অবশ্য কথোপকথনের ঢংয়ে। আলোয় আলোয় সন্তুষ্টির পথ আমরা খুঁজতে চাই।
হয়ত পাই বা না, আর অন্ধকারটুকুই সব না, হয়ত আলো আসেনি বা ফেলতে পারিনি। সুন্দর সুন্দর উপলব্ধি।
দ্বিতীয় পর্বের আলাপে কিছু বলতে পারছি না, আনাড়ী হিসেবে।
খাদিজাতুল কুবরা
অসংখ্য ধন্যবাদ এবং আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন ভাইয়া। এমন উৎসাহ আমার মতো আনাড়িকেও লেখক বানিয়ে তুলতে পারে।
দ্বিতীয় পর্ব প্রথম পর্বের ছায়া। বোঝাতে চেয়েছি জীবন এক অনির্বাণ শিখা। জ্বলতে থাকা যার ধর্ম।
গাঁথুনিটা সেভাবে গড়তে পারিনি।
পরের লেখায় নিশ্চয়ই চেষ্টা করবো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অসাধারণ! অসাধারণ! অসাধারণ!!
জীবন আর বাস্তবতার এমন আলিঙ্গন। এটাকে যদি এলেবেলে বলে তাহলে আজ থেকে লেখালেখি বাদ দিলাম॥
কি বলব আর লিখব বুঝতে পারছি না।
শুভ কামনা রইলো অনেক অনেক।
খাদিজাতুল কুবরা
দুর্দান্ত লেখিকা রুকুর প্রশংসা অবশ্যই আমার জন্য বিশেষ অর্থ বহন করে।
তবে আর লিখবোনা কথাটি মজার ছলেও শুনতে চাই না।
ভালোবাসা ছাড়া আর কি দিতে পারি।
প্রীতি শুভেচ্ছা রইল প্রিয়।
হালিম নজরুল
এত সুন্দরভাবে জীবনের সারকথাগুলো শৈল্পিক কায়দায় তুলে ধরলেন, অথচ বললেন আগোছালো!
খাদিজাতুল কুবরা
অমন সুন্দর মন্তব্যের লোভেই কলম ধরার দুঃসাহস করি।
অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন ভাইয়া
বন্যা লিপি
অগোছালো ভাবনারাই আপোসে কখন যেনো গোছানো জীবনের অকাট্য বাস্তব চিত্রের রুপায়ন চিত্রিত হয়ে যায় এভাবেই।কারো কাছে পরিহাস, কারো কাছে কাব্য
যে উপলব্ধির গভীর থেকে আছড়ে ফেলে শব্দের বাহানায় এভাবে! তাকে অন্যে কী বলে? আমার জানা নেই। ভালবাসা রেখে গেলাম।
খাদিজাতুল কুবরা
আপু আপনার মন্তব্য আমার কলমের জন্য শুধু অনুপ্রেরণা নয় শক্তি ও বটে।
আর আপনার ভালোবাসা আঁজলা ভরে নিতে চাই সবসময়।
আমার প্রাণভরা ভালোবাসা রইল।
রেজওয়ানা কবির
কিভাবে পারে একটা মানুষ এত সুন্দরভাবে এত গুছিয়ে কবিতা লিখতে??সত্যি জীবনের সার উঠে এসেছে। অসাধারণ। লেখাটি প্রিয়তে নিলাম। ভালো থাকবেন। শুভকামনা ।
খাদিজাতুল কুবরা
অমন মিষ্টি করে বললে আমার ঘরকুনো ও বাইরে বেরিয়ে খোলা হাওয়ায় উড়বে আকাশে ডানা মেলবে সেটাই তো স্বাভাবিক।
লেখা প্রিয়তে নেওয়ায় লেখাটি সার্থক হল।
অনেক ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা রইল।
ফয়জুল মহী
কবিতা পড়ে মনে চায় ফিরে যাই অতীতে । সাদা কবুতর হয়ে আকাশে উঠতে।
খাদিজাতুল কুবরা
বাহ্ কি সুন্দর বলেছেন!
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ মহী ভাইয়া
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এলোমেলো ভাবনার খেরোখাতা জীবনের বাস্তবতায় কখন যেন অপরিহার্য হয়ে উঠে মিশে যায়। চমৎকার কথোপকথন আপু। চমৎকার লিখেছেন বরাবরের মতই। বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
খাদিজাতুল কুবরা
প্রথমেই বলি জবাব দিতে দেরি হওয়ার জন্য দুঃখিত। গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম কিছু দিনের জন্য। সেখানে নেট পাইনি।
এতো সুন্দর মন্তব্য পেলে সত্যি উৎসাহ পাই।
ভালো থাকুন দিদি ভাই
সুপায়ন বড়ুয়া
অসাধারণ!
জীবন আর বাস্তবতার মাঝে কথোপকথন
এলেবেলে নয় সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন
দৃষ্টিনন্দন সাজিয়ে মাইরি বলছি।
শুভ কামনা রইলো
খাদিজাতুল কুবরা
দাদা আপনার মতো গুণিজনের প্রশংসা পেয়ে খুব ভালো লাগলো।
আপনাদের উৎসাহ পাই বলেই কলম ধরার সাহস পাই।
ভালো থাকুন দাদা সবসময়
শামীম চৌধুরী
আপনার অনুভুতির ছলে জীবনের কথাগুলি কবিতায় প্রকাশ হলো।
খাদিজাতুল কুবরা
অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন ভাইয়া লেখাটি পড়ে মন্তব্য করার জন্যে
আরজু মুক্তা
জীবন থেকে পলায়ন করলেই কি জীবন বোঝা যায়। না আরও জীবন আঁকড়ে ধরে। এটাও কিন্তু রোমান্টিক হিসেবে গণ্য সাহিত্যে। কবিরা আশাবাদী হয়। আর ভালোবাসা তো দুই ধরণের। অণির্বাণের ভালোবাসা চলে গেলেও। ঈশ্বর কিন্তু আছেন। তাঁকে প্রাণভরে ডাকি। আর দূর থেকে ধ্রুবতারার মতো উনি ভালোবাসেন।
আর হুমায়ুন আহমেদ বলেছেন। ছেলে মেয়ে একসাথে বন্ধু হয়ে থাকতে পারে না। প্রেম হবেই। তাহলে ভালো না বেসে কি কাছে থাকা যায়?
হা হা
শুভকামনা
আলমগীর সরকার লিটন
খুব সুন্দর লেখেছেন অনেক ভাল লাগল কবি আপু
মোঃ মজিবর রহমান
তার চেয়ে ঢের ভালো ভালো না বেসেও যে সাথে রয়।
সুন্দর ডায়ালগ। ভাল লাগল।
উর্বশী
সুন্দর গোছানো একদম পরিপাটি যাকে বলে, চমৎকার লিখেছেন প্রিয়।বেশ ভাল লাগলো।
দারুন অনুভূতির সুন্দর প্রকাশ। আরও পড়ার অপেক্ষায় । ভাল থস্কুন শুভ কামনা রইলো।
তৌহিদ
বাহ! চমৎকার। কথোপকথনরত নিজের জীবনকে আয়নায় দেখা সহজ কাজ নয়। আপনি তা চমৎকারভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন।
শুভকামনা আপু।