অদ্ভুত আঁধার নামিছে আজ বিশ্ব ধরায়
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশী দেখে তারা
যাদের হৃদয়ে প্রেম নেই প্রীতি নেই,
করুণার আলোড়ন নেই,
পৃথিবী আজ অচল তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।

কবি রবি ঠাকুরের পন্থি দিয়ে শুরু করলাম যখন করোনা আতঙ্কে পর্যুদস্থ সারা বিশ্বময়। বিশ্ব খাদ্যসংস্থা বলছে এরকম চলতে থাকলে করোনা নয় দুর্ভিক্ষে মারা যাবে ২ কোটির উপর মানুষ তখন সারা বিশ্বের নীতি নির্ধারকদের টনক নড়ে। তারা আজ এই অচলয়াতন ভাঙতে চায়। ফিরতে চায় কাজে জীবিকার সন্ধানে। অর্থনীতির চাকা সচল করতে চায়। বাংলাদেশ ও তা থেকে পিছিয়ে নেই।

আসুন দেখি বিশ্বে প্রতিদিন নানা রোগে লাখ লাখ মানুষ মারা যায় সেই সংখ্যাটা করোনার মৃত্যুর চেয়ে অন্তত ১২ গুণ বেশি। তবু করোনা আতঙ্কে সারাবিশ্ব অচল। থেমে গেছে অর্থনীতির চাকা। বেকার হয়ে পড়েছেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। স্থবির ব্যবসা-বাণিজ্য, উৎপাদন, যোগাযোগ ব্যবস্থা। বলা হচ্ছে, করোনা আতঙ্কই এখন বড় মহামারী।

ভয়াবহ এই আতঙ্কজনক পরিস্থিতির পেছনের কারণ করোনাভাইরাসের ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া। আর রাজনীতি যেটা ভবিষ্যৎ বলবে।

ইন্টারনেটে পাওয়া এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত তিন মাসে বিশ্বে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ মারা গেছে ক্যান্সার, সর্দি-কাশি, ম্যালেরিয়া, এইডস, ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদি কারণে।

গত তিন মাসের মৃত্যুর পরিসংখ্যান দেখি
1. করোনায় ৩,১৪,৬৮৭ জন।
3. ক্যান্সারে ১১,৬৭,০০০ জন
4. সর্দি-কাশিতে ৩,৬৯,৬০২, জন
6. ম্যালেরিয়ায় ৩,৪০,৫৮৪, জন
7. এইডসে ২,৪০,৯৫০, জন
8. মদপানে ৫,০০,০০০ জন
9. ধূমপানে ৮,১৬,০০০ জন
10. আত্মহত্যা ৩,৫৩, ৬৯৬ জন,
12. সড়ক দুর্ঘটনায় ৩,৯৩,৪৭৯ জন।
13. অন্যান্য রোগ তো আছে।

অথচ বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে করোনা আতঙ্ক এখন মহামারি।

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিদিন যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হন গড়ে ৯৭৮ জন এবং মারা যান ১২৯ জন। এ হিসেবে গত ৯০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ হাজারের কিছু কম বা বেশি মানুষ, আর মারা গেছেন হয়তো ১১,৬০০ জন মানুষ।
আর করোনার আক্রান্ত ৯০ দিন পরে ৪৪,৬০৮ জন
মৃত্যু ৬১০ জন।

বাংলাদেশে গড় মৃত্যু হার ৫.৪ প্রতি হাজারে। তাহলে ১৬ কোটি মানুষের দেশে প্রতিদিন মানুষ মরে গড়ে
১৬০০০০ x ৫.৪ /৩৬৫ = ২৩৬৭ জন।

কোন মৃত্যুই কাম্য নয়। একটি মৃত্যু একটি পরিবারের জন্য পুরো পৃথিবীর সমান। আজ করোনা আতঙ্কে ভুগে প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যবসায়ীরা চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়ে মানুষকে মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলছে।মিডিয়া লাশের মিছিল দেখাতে গিয়ে মানুষ রোগ লুকাতে গিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। অথচ সম্মুখ যোদ্ধা ডাক্তার ,পুলিশ, সেনা, জনপ্রতিনিধি করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হচ্ছে। ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে লাশ দাপন করা হচ্ছে।

আজ যতদিন ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হয় ও সহজ লভ্য না হয় ততদিন করোনাকে নিয়েই সহবাস করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে কাজে ফিরে। গৃহবন্দী থেকে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে মৃত্যু ঝুকি নেয়া যাবেনা। সুবিধাভোগীদের ফাঁদে পা দিয়ে দুর্ভিক্ষকে ও স্বাগত জানানো যাবেনা।

আজ থেকে অফিস আদালত খুলবে সাথে গনপরিবহন ও যদিও ২৬শে এপ্রিল থেকে পোশাক ও সহযোগী শিল্পসংস্থা গুলো কাজে ফিরেছে ৬৫% বেতন নিয়ে। পরিচ্ছন্ন কর্মী আর জরুরী সেবা সংস্থা গুলো নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করে গেছে আমরা যারা গৃহবন্দী ছিলাম তাদের জন্য।

আর সরকার, ৬৪ হাজার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন যন্ত্র একযোগে জনতার পাশেই ছিলেন। ত্রাণ কার্য পরিচালনা করেছেন ফসল ঘরে তুলেছেন। ৫০ লাখ পরিবার ২.৫ কোটি মানুষের কাছে ২,৫০০ টাকা ঈদ উপহার দিয়েছেন মোবাইলের মাধ্যমে। এক কোটি রেশন কার্ডের মাধ্যমে ৫ কোটি মানুষের কাছে ১০ টাকায় চাল পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছেন। এই সাফল্য ম্লান করার জন্য ৪৪ জনপ্রতিনিধি ত্রাণ চুরি করেছেন যাদের মেম্বরি চেয়ারম্যানি গেছে। এটা শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে প্রশাসনের চেক এন্ড ব্যালেন্স ও ডিজিটাল ব্যবস্থার কারনে।

এরপর ও একশ্রেনীর সুবিধাভোগী শ্রেনী শাস্তিপ্রাপ্ত চোরদের সামনে রেখে দেশের মুখে কালিমা লিপ্ত করতে চায়। ডাকাত, দুর্নিতীবাজ, লুটেরা, ধর্ষক, মানি লন্ডারিং ও সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের বাহবা নিতে চায়। এদের উদ্দেশ্য মানুষের মনোবল ভেঙে দিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া।

রক্তে কেনা স্বাধীন বাংলাদেশ দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ও মানুষ বলত দুর্নীতি সূচকে ১ম কেউ বলতোনা দুর্নীতির দেশ। বলেনা ধর্ষক দেশ।
আজ যারা চোরের দেশ বলে ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশকে ছোট করছেন। মানুষদের অপমান করে আত্নতুষ্টি পান আজ করোনার রোগীর পাশাপাশি তাদের রক্ত ও পরীক্ষা করে আইসোলেশন করার সময় আসছে। না হলে সমুহ বিপদ সামনে অপেক্ষা করছে।

অতএব এখন করোনা কাল, সাধু তুমি সাবধান।

* আজ করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য স্বর্গীয় মা কে মনে পড়ছে বাবা বাহির থেকে আসার পর বালতি পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন হাত-পা-মুখ ধোয়ার জন্য। আর আমরা খেলাধুলা করার পরে স্নান ছাড়া ঘরে ঢুকা নিষেধ। আর মা ধান উড়ানো বা চাল চালুনীর কাজ নাক মুখ ও চোখে কাপড় রেখেই করতো।

* তাই করোনা থেকে মুক্তি পেতে গৃহবন্দী থেকে রোগে শোকে মরার ছেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লড়াই করে বাঁচতে হবে। তার কোন বিকল্প নেই।

0 Shares

১৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ