করোনা কালের দীর্ঘ এক মাস গৃহবন্দী থাকার পর যখন হাঁপিয়ে উঠছি তখন বন্ধুরা একাত্তর টেলিভিশনের একটি টক শো ভাইরাল হওয়া ভিডিও শেয়ার করেছে। এটা দেখে বা শুনে হাসতে হাসতে দম বন্ধ হওয়ার যোগাড়। বন্ধুরা ১০ বার হল দেখা। পণ করেছি যখনি মন খারাপ হবে আমি এটা দেখব। আপনি ও দেখেন মন খারাপ লাগলে। ভিডিও যেহেতু চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় আমি আপনাদের জন্য সাধু বা চলিত ভাষায় লেখার চেষ্টা করব।

তার আগে করোনার ক্রিয়েটিভিটি দিয়ে শুরু করছি। আমার অফিস এই লকডাউনের কারনে WFH (বাড়ি থেকে কাজ) চালুকরেছে। আমাদের কান্ট্রিম্যানেজার একদিন পর পর ভিডিও কনফারেন্সের করে বিজনেস আপডেট ও মনোবল চাঙা রাখেন। তিনি বললেন কিছু না কিছু ক্রিয়েটিভ (লেখালেখি) কাজ করার জন্য। এখন সবাই কিছু না কিছু করছে ঘরে বসে। কেউ WHO র ট্রেনিং নিচ্ছে কেউ গার্ডেনিং, কেউ রান্না আর সাহায্য সহযোগীতা তো আছে।

আবার এই ক্রিয়েটিভিটা কেউ পজেটিভলি নেয় আবার কেউ নেয় নেগেটিভলি। এবার আসি ভাইরাল ভিডিওর কথায়।

চট্টগ্রামের ছেলেটি আলোচকদের কাছে পরামর্শ চাচ্ছে তার চিটার বন্ধু ধার করে একটি পেন্ট পড়াতে তার পায়ু পথে এক ফোঁড়া হল সেটা অপারেশন করার জন্য টাকা ধার লাগবে। এখন তাকে টাকা ধার দেয়া যায় কিনা। আলোচকরা হাসতে হাসতে লাইনটি কেটে দিল। অর্থাৎ কথাটি নেগেটিভলি নিয়ে লাইনটা কেটে দিল। আর পজেটিভলি নিলে কথাটা প্রগাঢ় অর্থ আছে।
আজকে আমরা ও সে অবস্থায় পড়ছি। কেউ যদি মরার জন্য নিজেরা কবর খুড়ি তাহলে তাকে কে রক্ষা করবে।

২২ শে এপ্রিল পরিসংখ্যান দেখি করোনরঃ
টেষ্ট ৩০০০০ হাজার আক্রান্ত ৩৩৮২, হার ১১%
মৃত্যু ১১০, হার ৩.২৫%
সুস্থ ৮্‌৭, হার ২.৬%
এখন মৃত্যু হার বেশী কারন ১০ দিন আগে থেকে মৃত্যু শুরু। যেহেতু সুস্থ হতে ১০ দিন লাগে।

আসুন নেগেটিভ প্রচারটা কি মৃত্যু হার ১১০/১৯৭ = ৫৬% সুস্থের হার ৪৪% অর্থাৎ পরিকল্পিত ভাবে আপনার মনোবল ভেঙে দেয়া।

সারা বিশ্বে যখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সমস্ত মন্দির মসজিদ, গীর্জা উপাসনালয়ে সভা সমাবেশ বন্ধ। আমরা করলাম শ্রমিক জমায়েত , নেত্রীর মুক্ত মিছিল ১০ মিনিটের পথ ১.৫ ঘন্টা করে। কারন সেদিন ঢাকা শহর লক ডাউন ছিল। আর সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌ: যুবায়ের আনসারির লাখ মানুষের নামাজে জানাজা যা ছিল পরিকল্পিত (অডিও ফাঁস)। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষের ১ মাসের ত্যাগকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে সবাই কে বিপদে ফেলে দিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র সুমন চাকমা বিনা চিকিৎসায় মারা গেল ৮টি হসপিটাল ঘুরে। করোনা বলে মিথ্যা সন্দেহে চিকিৎসা বঞ্চিত করাটা আজ বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগী মিথ্যা তথ্য দিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি হচ্ছে, ডাক্তারদের করোনা রোগী করে হাসপাতাল লক ডাউন করতে হচ্ছে।
আইনমন্ত্রীর মায়ের জানাজার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে লোক বেশী দেখিয়ে বি.বাড়িয়ার জানাজা জায়েজ করার জন্য। যেটা সত্য নয়।

৬৪ হাজার জনপ্রতিনিধি ত্রাণ বিতরণ করছে প্রশাসনের সহযোগিতায় তার মধ্যে ১০/১১ জন চুরি করেছে তারা ধরাও পড়েছে। ডিজিটাল বাংলায় কেউ পাড় পাবে না। তা সম্ভব ও নয় কারণ কোন লোক সহ্য করবে না। নেগেটিভ খবর বেশী প্রচার করে যারা মানবতার সেবায় এগিয়ে আসছে তাদেরকে ছোট করা হয়।

সবশেষে দুইটি পজেটিভ খবর দিয়ে শেষ করব।
দেশে ভেন্টিলেটর তৈরী করছে মিনিস্টার যা সহজলভ্য ও মানবতার সেবায় স্বল্পমূল্যে দেবে।
সারাদেশের মানুষ যখন গৃহবন্দী খাবার জোগাড় হবে কিনা সন্দেহ। তখন সারাদেশে পাকা ধানে মৌ মৌ করছে। কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না শ্রমিক ত্রাণ সংগ্রহে ব্যস্ত। তখন কক্সবাজারের ছাত্রলীগের ধান কাটার দৃশ্যটা প্রশংসা কুড়িয়েছে।৩০ জন ছাত্রলীগের কর্মী হাফেজ নামক কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে। শুধু তাই নয় একজন নেতার মা আলুভর্তা ডাল–ভাতের ব্যবস্থা করেছে। আজ তাদের অনুসরন করে সারাদেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ , কৃষকলীগ ধান কাটছে আর চট্টগ্রাম থেকে প্রশাসন ১৫০০ শ্রমিক হাওড়ে পাঠাচ্ছে ধান কাটার জন্য।

 

সবশেষে শেষ করব চট্টগ্রামের ছেলেটির কথাটির অর্থের ব্যাখ্যা করে, যারা রাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধা ভোগ করে মানব বোমা তৈরী করে মানুষ হত্যার পায়তারা করছে রাস্ট্র এখন ও তাদের ভার বহন করবে কিনা। ৭০ এ ওরা ৩০% পাকিস্থানের পক্ষে ভোট দিয়েছিল ওরা ও আজও বাংলাদেশের বিপক্ষে কাজ করে সুযোগ পেলে। ৭৪এ স্মৃতিশক্তি হীন বাসন্তীকে মাছ ধরার জাল পড়িয়ে৭৫এ মুজিব হত্যার প্লট তৈরী করেছিলেন।

আজ যখন মুজিব হত্যার খুনীরা ধরা পড়ছে।তার দোসর যারা কেক কেটে উৎসব করে আর ১/১১ কুশীলবরা আজ বসে নেই।

অতএব “ এখন করোনা কাল সাধু তুমি সাবধান “

0 Shares

২৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ