
“প্রিয় লক্ষ্মী বউ”
খুব ভয় ভয় লাগতাছে, জানি বউ লেখাতে তুমি রাগ করবে হয়তো। কিন্তু জানো সত্যিই তোমাকে বউ ডাকতে আমার খুব ভাল লাগে। শান্তি লাগে মনে। আর আমার অবুঝ মনটা বারংবার স্বীকার করে তুমি আমার বউ। এসব শুনতে তোমার হয়তো রাগ লাগছে। কিন্তু এটাই সত্যিই।
তুমি কী আমার বউ হবে গো?
জানি তুমি আমার উপর ভীষণ রাগ করছো! কিন্তু বল না। একটা ঘটনা মনে পরেছে শুন,
আমাদের নবীজির (সঃ) স্ত্রী আয়েশা (রঃ) নবীজির (সঃ) উপর রাগ করেছে, নবীজি (সঃ) তার স্ত্রী আয়েশাকে প্রশ্ন করলো, তুমি কী আমার উপর রাগ করছো?
আয়েশা (রঃ) বললেন আপনি কীভাবে বুঝলেন?
নবীজি (সঃ) বললেন, আমার উপর রাগ থাকা অবস্থায় যখন নামাজ শেষ করে মোনাজাত কর, তখন দোয়া কর এভাবে, “হে ঈব্ররাহীমের খোদা তুমি সকলকে মাফ করে দেয়।
আর যখন আমার উপর কোন রাগ থাকে না, তখন দোয়া কর এভাবে ” হে মুহাম্মদের খোদা তুমি আমাদের সকলকে মাফ করে দেয়। রাগ থাকা অবস্থায় তুমি আমার নামটা মুখে পযন্ত আনো না।
পরমানুষকে ও জিজ্ঞেস করে,
“আপনি কেমন আছেন?
সময়মত কী খাবার খাইছেন?
দু’দিন যাবত আমি লক্ষ করছি, তুমি আমার উপর এতটাই রাগ করছো, আমি সময়মত খাবার খাইছি কিনা,রান্না করলাম কিনা, এসব কথা না হয় বাদী দিয়াম।
আমি ভালো আছি কিনা মন্দ তাও জিজ্ঞেস কর না।
তুমি আমার সঙ্গে অনেক গম্ভীর ভাষায় কথা বল। রাগের সুরে আমি বুঝতে পারি। সবার সঙ্গে নরম সুরে কথা বল। আর আমার বেলায় খুব অভিমান।
মানুষের অভাবে কেউ কখনো নিঃসঙ্গ ও একাকীত্ব হয় না। প্রিয় মানুষের অভাবে হয়। তুমি যখন রাগি কন্ঠে আমার সঙ্গে কথা বল, আমার কাছে মনে হয়। এই পৃথিবীতে আমার আপন বলতে কেউ নেই। বুকের বা’পাশটা খুব ব্যাথা করে। আমাকে কেন এত অবহেলা করতেছো? আমার খুব কষ্ট হয়৷ আমার বুকটা ছিঁড়ে তোমাকে কখনো দেখাতে পারবো না তোমাকে কতটুকু ভালবাসি। তুমি বারবার বল ভুলে যেতে, যদি ভালবাসার অভিনয় করতাম তাহলে হয়তো ভুলে যেতে পারতাম। কিন্তু আমি যে তোমাকে আমার প্রাণের চেয়েও বেশী ভালবাসি। আসলেই আমি একটা পাগল, প্রতিটা মুহুর্তে তোমাকে নিয়ে ভাবি। আমার ভাবনার পুরাটা জগত জুড়ে শুধু তুমি। আমাকে আর কষ্ট দিয় না। আমি আর নিতে পারছি না। কাজ করতে পারি না, মনটা উদাসীন, খাওয়া, ঘুম কিছুই হচ্ছে না।
জানি না কী আমার অপরাধ! কেন এত শাস্তি পাচ্ছি? তবুও ভুল স্বীকার করে নিলাম। “সরি” এবারের মত ক্ষমা করে দেয় আমাকে প্লিজ জান”
আজ থেকে তোমার পরিচিত কারো সঙ্গে কখনো যোগাযোগ করার চেষ্টা ও করবো না। সব নাম্বার কেটে দিলাম। রিমাকে ব্লক করে দিলাম। আমি জানি না, কী বলতে কী বলে ফেলি। আমি শুধু তোমাকে চাই আর কারো প্রয়োজন নাই। আমি তোমার জন্য সব সম্পর্ক মুহুর্তের মধ্যে ছিন্ন করতে পারি।
জানো বউ তোমাকে দু’দিন যাবত দেখি না, আমার কাছে মনে হচ্ছে তোমাকে যেন কত বছর ধরে দেখি না। তুমি জানো না তোমার চাঁদমাখা মুখটা না দেখে আমি থাকতে পারি না। আমার কতটা কষ্ট হচ্ছে। সেটা তোমাকে বুঝাতে পারবো না। রাত যখন এগারটা বাজে তখন তোমার ফোনের অপেক্ষায় থাকি। খুব অস্থির লাগে। এই সময়টা তোমাকে খুব মিস করি। তোমার সাথে একটু কথা বললে শান্তি লাগে। তা না হলে আমার কাজ করতে ভালো লাগেনা, মনে হয় যেন আমার বুকে কেউ বিশাল একটা পাথর চাপা দিয়ে রাখছে। প্রচন্ড বুক ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। মনে হয় না আমি বাঁচতে পারবো৷ এই যে লিখছি এখনো খুব ব্যাথা করছে।
এই অবচেতন পাগল মন তোমাকে নিয়ে কতশত স্বপ্ন দেখে রোজ, এই পৃথিবীতে নয়, অন্য কোন পৃথিবীতে তোমাকে নিয়ে ঘর বাঁধবে। যেখানে থাকবে না কোন মানুষ, থাকবে না কোন কোলাহল। থাকবে শুধু বৃক্ষরাজি।
আকাশে চির পূর্নিমার চাঁদ।
যে চাঁদের ছায়া পরেছে ময়ূরাক্ষী নামক এক নদীতে। সেই নদীর সচ্ছ জলে খেলা করছে জোসনার ফুল। তুমি আর আমি নদীর পাড়ে বসে আছি। আমার ঘাড়ে তোমার মাথা দিয়ে শুয়ে আছো, আমি তোমাকে গান শুনাচ্ছি—-
” আমারো প্ররাণে যাহা চায়,
তুমি তাই, তাই গো—
আমারো প্ররাণে যাহা চায়।
কত সুখময় জীবন, পৃথিবীটাই যেন স্বর্গ।
ইতি
(এই নামটা তুমি বসিয়ে নিও)
১০টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
চমৎকার একটা চিঠি পড়লাম ‘বউ’
অনেক শুভেচ্ছা রইল————-
মোহাম্মদ মামুন
অসংখ্য ধন্যবাদ
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দারুন ভালোবাসার, প্রেমের চিঠি পড়লাম। এতো আবেগী লেখা পড়ে মুগ্ধ হলাম। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা অফুরন্ত
মোহাম্মদ মামুন
অবিরাম ভালবাসা প্রিয়
ফয়জুল মহী
অনুপম লেখা ।
মোহাম্মদ মামুন
হুম
আরজু মুক্তা
বাহবা। ভালোবাসায় পরিপূর্ণ একটি চিঠি।
ভালো লাগলো
মোহাম্মদ মামুন
অবিরাম ভালবাসা প্রিয়
মোঃ মজিবর রহমান
সুখিময় জিবনের উত্তম্ভাবনার চিঠি বউ।
অনুভুতিশীল হৃদয়ে পোছে গেছে।
শুভেচ্ছা অবিরত।
নিতাই বাবু
চমৎকার ভাবনা নিয়ে লেখা একটা চিঠি পড়লাম। সত্যি ভালো লেগেছে। এভাবে আরও লিখুন, দাদা।
শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দাদা।