
আপনারা কে কী ভাবছেন জানি না। তবে আমি আমার মৃত্যু নিয়েই বেশি ভাবি। কারণ, কথায় আছে, ‘জন্মিলে মরিতে হয়’। আমারও একদিন মরতে হবে। আমার বর্তমান বয়স ৬০-এ ছুঁই ছুঁই করছে। যেখানে বর্তমান যুগে মানুষের গড় আয়ু ৪০বছর, সেখানে আমার বয়স ৫৬বছর চলছে। আর কোনরকমভাবে তিন বছর বেঁচে থাকতে পারলেই, আমি ষাটের দুয়ারে। তাহলে আর বাঁচবো ক’দিন? এসব নিয়ে সময় সময় ভাবি! ভাবি বর্তমান যুগের তথ্যপ্রযুক্তির অনলাইনবিত্তিক সাইটগুলো নিয়েও। যেসব সাইটে হয়েছিল আমার জন্ম এবং মৃত্যুর পর সেসব সাইটগুলোতে আমার প্রোফাইল অবস্থা কী হবে, তা নিয়েও ভাবি! আপনারা কেউ কী এমনটা ভাবেন?
আমি আজ ক’দিন ধরেই ফেসবুকে আমার জন্ম এবং মৃত্যু নিয়ে ভাবছি। কারণ, বর্তমান বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিগত অনলাইনবিত্তিক সাইটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট হলো হালের ফেসবুক। অনেকের কাছে বর্তমান ফেসবুক হলো স্বাদের ফেসবুক। ঘরে খাবার নেই, কিন্তু তাঁর ফেসবুক আছে। পকেটে টাকা নেই, তাঁর মোবাইলে ইন্টারনেট আছে। ইন্টারনেট আছে তো ফেসবুক আছে। অনেকের কাছেই ফেসবুক হলো মনের খোরাক, মনের শান্তি। ফেসবুক নেই তো মনে শান্তি নেই। পেটে ক্ষুধা নেই। রাতে ঘুম নেই। সংসারে শান্তি নেই। সবার বেলায় যদি এমনই হয়, তো আমার বেলায়ও একইরকম অবস্থা।
তাই আমার ভাবনাও ফেসবুক প্রোফাইল নিয়ে। এখন সুস্থ আছি। ভালো আছি। পকেটে টাকা আছে। দোকানে ইন্টারনেট আছে। মেগাবাইট কিনে ফেসবুক ব্যবহার করছি। একদিন পকেটে টাকা থাকবে না। মোবাইলে মেগাবাইট থাকবে না। মেগাবাইট নামের ইন্টারনেট নেই তো ফেসবুক নেই। একসময় মোবাইল বা ল্যাপটপ টেপাটেপি করার শক্তি এবং মন-মানসিকতা থাকবে না। তখন ফেসবুকে প্রবেশ করা হবে না। তাহলে আমার বর্তমান সখের ফেসবুক আইডির অবস্থা কী হবে? আবার জীবের সেরা মানুষ হয়ে এই পৃথিবীতে যখন জন্মগ্রহণ করেছি, একদিন তো মৃত্যু হবে। তখনই বা আমার স্বাদের ফেসবুক প্রোফাইল বা আইডির অবস্থা কী হবে? একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারি, আমার মৃত্যু পর আমার ফেসবুক প্রোফাইল কী হবে! যা হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে নিজের কিছু স্মৃতিচারণ নিয়ে আলোচনা করি। পরে নাহয় এবিষয়ের আলোচনায় আসি।
একসময় একটা ওয়ান ব্যান্ড রেডিওর পেছনে সারাক্ষণ ঘুরে বেড়াতাম। স্কুলে যেতাম আর না-ই-বা যেতাম, কিন্তু রেডিওর পেছনে সময় ঠিকই দিতাম। গান শুনতাম। খবর শুনতাম। টেলিভিশনের তো দেখাই মিলতো না। শীতলক্ষ্যা নদীর এপার-ওপার দুই পাড় মিলিয়ে মাত্র দুইটি সাদা-কালো টেলিভিশন ছিলো। সেই সাদাকালো টেলিভিশন এখন মনে হয় জাতীয় যাদুঘরেও সংরক্ষণ নেই। এখন বাংলার ঘরে ঘরে বড় এলসিডি কালার টেলিভিশন। রেডিও তো এখন এই যুগের শিশুরা খেলনা হিসেবেও ব্যবহার করে না। আগের রেডিওর চেয়ে বর্তমানে শিশুদের খেলনা সামগ্রী অনেক উন্নতমানের।
১৯৮০ দশকের দিকে মোবাইল ছিল না। কেউ দেশের বাইরে থাকলে টেলিফোন এক্সচেঞ্জে গিয়ে প্রিয়জনের কাছে ফোন করতো। বিশেষ জরুরি প্রয়োজনে পোস্ট অফিসের টেলিগ্রাফের মাধ্যমে বার্তা প্রেরণ করতো। এখন আর সেইদিন নেই। সেই আমলের টেলিগ্রাফ বলতে আজকালকার ছেলে-পেলেরা বুঝেই না। এখন বুঝে মোবাইল, ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, কম্পিউটার।
এখন প্রতিটি মানুষের হাতে মোবাইল। একসময় এর নাম ছিল সেলফোন। তা ছিল বাটন সেলফোন। এখন আর সেলফোন কেউ বলে না। এখন সবাই বলে মোবাইল ফোন বা মোবাইল। তাও আবার টাচস্ক্রিন। যাকে বলে এন্ড্রোয়েড মোবাইল। আঙুলের স্পর্শেই চলে। এই মোবাইল এখন মনে হয় বাংলার বেশিরভাগ মানুষেই ব্যবহার করছে। অনেকের হাতে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্নরকম দামী দামী এন্ড্রোয়েড মোবাইল সেট। এই মোবাইল দিয়ে দেশ-বিদেশে মুহূর্তেই কথা বলা যায়। ছবি তোলা যায়। ভিডিও দেখা যায়, করাও যায়। আর ভিডিও কল-সহ বার্তা আদান-প্রদান-সহ থাকে আধুনিক প্রযুক্তির ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধা। মোটকথা মোবাইল এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটা অনুষঙ্গ। বর্তমানে মোবাইল ছাড়া মানুষ চলতেই পারে না। মোবাইল ছাড়া দেহ মন সবই মিছে মনে হয়। তাই বর্তমানে দেশের ধনী-গরিব সবার হাতেই মোবাইল। মানুষের আর কিছু থাকুক আর না থাকুক, কিন্তু মোবাইল থাকতে হবে। আছেও। তবে খুব কম মানুষেই বাটন মোবাইল ব্যবহার করে থাকে। জোয়ান বুড়ো অনেকেই ব্যবহার করে এন্ড্রোয়েড টাচস্ক্রিন মোবাইল।
এসব মোবাইল দিয়ে খুব সহজে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। তাই অনেকেই মার্কেট থেকে একটা মোবাইল কেনার সাথে সাথে ইন্টারনেট সংযোগ চালু করে ফেলে। এরপর বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগলের ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবে ভিডিও দেখা-সহ ফেসবুকে ফ্রি রেজিষ্ট্রেশন করে মনের আনন্দে ফেসবুক ব্যবহার করতে থাকে। অনেকে টুইটার-সহ আরও বিভিন্ন সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করে। কেউ ব্লগে, কেউ নিউজ সাইটে। যে যা-ই ব্যবহার করুক-না-কেন, মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে শতভাগ ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহার করে এবং সবার কাছে ফেসবুকই বেশি জনপ্রিয়। তাঁদের মধ্য আমিও একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী। তাই এই জনপ্রিয় ফেসবুকে আমার জন্ম এবং মৃত্যু নিয়েই আমার আজকের আলোচনা।
বর্তমানে ফেসবুক প্রোফাইল বা ফেসবুক আইডি নেই এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী-সহ চাকরিজীবী, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, শ্রমজীবী যেকোন পেশার লোকেই হোক-না-কেন, ফেসবুকে একটা আইডি থাকবেই থাকবে। বিশেষ করে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে,তাঁরা। তাই দিন দিন দেশের প্রতিটি মানুষ বর্তমানে ফেসবুক নির্ভর হয়ে পড়ছে। এমনও দেখ যায় লেখাপড়া না জানা বহুলোকও বর্তমানে ফেসবুকে পারদর্শী হয়ে উঠছে। এমনও লোক আছে নিজের নাম লেখতে কলম বেঁকা হয় সে লোকও ফেসবুক ব্যবহারকারী। কেউ যদি জানতে চায় কীভাবে মেসেস দেন? কীভাবে আপনার অনুভূতি গুলো বন্ধুদের জানান? আর কীভাবে একটা ছবির উপর মন্তব্য দেন? উত্তর আসে এরকম– আরে বাবু এটা কোনও কোন ব্যাপারই না। শুধু nice, good, Good morning, fine এইসব লেখাগুলো ভাল করে মুখস্থ করলাম, ব্যাস হয়ে গেল। আর কী লাগে বাবু? উল্টা প্রশ্নকারীকে প্রশ্ন করে। এসব কথা শুনে অবাক না হয়ে শুধু ভাবতেই হয়। ভাবনা শুধু ফেসবুক নিয়ে আর মানুষের আগ্রহ নিয়ে। দেশের সিংহভাগ মানুষের আগ্রহ এখন ফেসবুক। ফেসবুক আছে তো সব আছে। ফেসবুক নেই তো কিছুই নেই। কিন্তু কেউ ভাবে না যে মৃত্যুর পরে ফেসবুক প্রোফাইলটার অবস্থা কী হবে? এটা নিয়ে ভাবার সময় হয়তো ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নেই। ভাবনা শুধু কীভাবে ফেসবুকে বেশি করে সময় দেওয়া যায়।
তাই দেখা যায় মানুষের জীবনের একটা বড় অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ফেসবুক। ব্যবসা, বাণিজ্য, খবর, বিনোদন, কেনা-বেচা, চিঠি-পত্র আদান-প্রদান, হিন্দুদের রামায়ণ পাঠ, গীতা পাঠ, মহাভারতের বাণী, পবিত্র বাইবেলের বাণী, সন্মানিত মুসলমানদের পবিত্র কোর’আন শরীফের আয়াত সংবলিত পোষ্ট। আবার সাহায্য চাওয়া, স্বজনদের সন্ধান করা, পাত্র-পাত্রীর খোঁজ করা, ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া, রাষ্ট্রনায়কদের সাথে যোগাযোগ করা। মোট কথা জীবন মরণ, ধর্মকর্ম, প্রেম-ভালবাসা, চোর ধরা ডাকাত ধরা, ঘোমড়ফাঁস করা, গুজব ছড়িয়ে দেওয়া-সহ এই ফেসবুক মানুষের কাছে এখন মহাকিতাবে পরিণত হয়েছে।
অনেক সময় লাইকের প্রতিযোগিতার বাহারও লক্ষণীয়। এই লাইক প্রতিযোগিতায় যুবতী মেয়েরাই সব চাইতে বেশি এগিয়ে থাকে। এই লাইকের প্রতিযোগিতায় আরও অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। তাদের আইডি বা পেইজে লাইকের পাহাড় তৈরী হয়। এছাড়াও লাইক প্রতিযোগিতায় আছে সুপারস্টার, মডেল তারকা, অভিনেতা অভিনেত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, মন্ত্রী এমপি, দেশের ভিআইপি ব্যক্তিবর্গ। লাইক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ নিজেও।
মার্ক জুকারবার্গের প্রতিযোগিতা শুরু হয় ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে। আজও তিনি প্রতিযোগিতা থেকে থেমে নেই। বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কাছে ফেসবুক সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে মার্ক জুকারবার্গের প্রতিযোগিতা চলছে। ফেসবুক প্রথম প্রথম শুধু আমেরিকায় বসবাসকারীরা ব্যবহার করতে পারলেও, ২০০৫ সাল থেকে সারাবিশ্বের মানুষের জন্য উম্মুক্ত হয়। সেই থেকে অদ্যপর্যন্ত সারা বিশ্বেই ফেসবুকের পদচারণা। দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে এই ফেসবুক। তবুও থামছেন না মার্ক জুকারবার্গ। প্রতিযোগিতা চলছে চলবে। ফেসবুক একসময় শিশু ছিল। মানে ফেসবুক যখন যাত্রা শুরু করলো। এখন দিন দিন ফেসবুক বড় হতে হতে লাগলো। আজকের শিশুতো সবসময় শিশু থাকবেনা। শিশুটির বয়স বাড়বে। বুড়ো হবে। এটাই তো নিয়ম! একদিন মৃত্যুকেও বরণ করবে।
তাহলে দিন যাচ্ছে, ফেসবুকেরও তো বয়স বাড়ছে। তাই এখানে একটা হিসাব কষে নেওয়া যায়। হিসাব কষে দেখা যায়, প্রথম যারা ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছে; তাঁদের বয়স এখন প্রায় সবার চল্লিশে ছুঁই ছুঁই করছে। কারণ, যারা ফেসবুকের জন্মলগ্ন থেকে ফেসবুকে রেজিষ্ট্রেশন করেছে, তখন তাদের বয়স আনুমানিক ভাবে ১৮ থেকে ২০ বছর বা তারও বেশি ছিল। তাহলে ২০০৪ সাল থেকে ২০১৯’, ১৬ বছর। ১৬+২০=৩৬ বছর। তাহলে ফেসবুকের বয়স ১৬ বছর, আর প্রথম থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বয়স হচ্ছে ৪০-এর কাছা-কাছি। এখন একটু চিন্তা করলে দেখা যায়, এখন থেকে একজন মানুষের ৮০ বছর হলে জন্মলগ্ন থেকে ফেসবুকের বয়স তখন কত হবে? হিসাব করলে দেখা যায়, তখন ফেসবুকের বয়স হয়ে যাবে ৯৬ বছরের উপরে। মানে ১০০ বছরের কাছা-কাছি। বর্তমান যুগে খুব কম মানুষেই ৯০বছর বেঁচে থাকে। শতবছর তো হাতে গোনা দুই একজন মাত্র। তাহলে আজ যাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে তাদের একদিন মৃত্যু হবে। তাহলে মনে করতে হবে এই মৃতব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টাও মৃত্যুবরণ করলো। হয়ে গেলো ফেসবুকে তার সমাধি বা কবর বা শ্মশান। আর ফেসবুক হলো সমাধিস্থান বা গোরস্থান বা শ্মশানঘাট। ফেসবুকের জন্মলগ্ন থেকে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীর মৃত্যু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে হবেও। তখন সেই মৃতব্যক্তিদের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে যাবে শুধুই একটি কবর বা সমাধি হয়ে।
মৃতব্যক্তির ফেসবুক প্রোফাইল কবর হয়ে থাকার পেছনে কারণও আছে। এর মূলকারণ হলো এই জনপ্রিয় ওয়েবসাইট কারোর প্রোফাইল মুছে ফেলতে নারাজ। হোক সে জীবিত বা মৃত। এই ওয়েবসাইটি সকল ব্যবহারকরীদের সন্মান রক্ষার্থে, সবার প্রোফাইল চিরদিন স্মৃতি করে রাখতে চায়। যদি তা-ই হয়, তা হলে ফেসবুকের জন্মলগ্ন থেকে অদ্য পর্যন্ত সারাবিশ্বে কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রতি মাসে কিছু কিছু ব্যবহারকারী মৃত্যুবরণ করলে, ১০০ বছরে এর সংখ্যা কত হতে পারে? সংখ্যা যা-ই হোক-না-কেন, সেসব বা এসব মৃত্যুবরণকারীর সমাধি কিন্তু ভূমিতে থাকছে, ফেসবুকেও থাকছে।
এখন লক্ষ্য করা যাক বর্তমানে পৃথিবীতে বড় সমাধিস্থান কোনটি? গুগল অনুসন্ধানে দেখা যায়, বর্তমানে বিশ্বের বড় গোরস্থান হলো ইবাকের নাজাফ শহরের নিকটবর্তী “ভ্যালি অব পিস”। ইমাম ইবনে আবি তালিবের মাজারের পাশেই এই গোরস্থানটি অবস্থিত। স্থানীয় ভাষায় এই গোরস্থানটির নাম “ওয়াদি আল সালাম” বাংলায় যার অর্থ হয় “শান্তির উপত্যকা”। এখানে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রায় ১৪০০ বছর ধরে ৫০ লাখেরও বেশি মানুষকে এই গোরস্থানে কবর দেওয়া হয়েছে। গোরস্থানটি মোট ১ হাজার ৪৮৬ একর জায়গার উপর অবস্থিত। এখন দেখা যায় এসব বড় বড় সমাধি স্থানকে পিছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমাধি স্থানে পরিণত হবে বর্তমান যুগের এই জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুক। এটি নিশ্চয়ই আমার জন্য একটা খুশির খবর।
খুশির খবর হলো এই পৃথিবীতে যতদিন ফেসবুক থাকবে, আমি মৃত্যুবরণ করলেও আমার প্রোফাইলটা ফেসবুক সমাধিস্থানে ততদিন থেকে যাবে। তাহলে আমার আর ভাবনা কিসের? আমার জীবন থাকতেও ফেসবুক, মৃত্যুর পরেও ফেসবুকে হবে আমার সমাধি। জয়তু ফেসবুক!
ছবি সংগ্রহ ইন্টারনেট থেকে।
১৭টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
দাদা আমার ফেবু আছে আর ব্যাবহার করিনা। ইক্সচ্ছেও করেনা।একমাত্র এই সোনেলায় আমার পদচারনা। ইচ্ছা অইচ্ছায় খুব কমই ফেবু প্রবেশ করি। আর জীবন নিয়ে ভাব্লে। চুপ বইসা যান।
মরার পর কি হবে ভাবিনা, এখন ভাবি মরার পর আল্লাহ র শাস্তি কিভাবে সইব। আল্লাহ আমাকে তার শাস্তি থেকে রেহায় দেওয়ার জন্যি প্রারথনা করি।
আল্লাহ আপনাকে সুস্থ ও ভাল রাখুক আমিন।
নিতাই বাবু
মৃত্যুর পর কী হবে, কেমন হবে, কে কী করবে এসব নিয়েও জীবদ্দশায় ভাবতে হয়, দাদা। তাই আমি জীবন চলার মাঝে অনেককিছু নিয়েই ভেবে চলি। ফেসবুক নিয়েও ভাবি। ব্লগ নিয়েও ভাবি। ব্লগে আমার লেখাগুলো নিয়েও ভাবি। এসব নিয়ে শুধু ভেবেই যাচ্ছি।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় মজিবর দাদা।
মোঃ মজিবর রহমান
প্রিথবির কিছু নিয়ে ভাবতে গেলেই বেশ বেগে বিভ্রান্ত হতেই হই। তাই আমি মরবই তাই পরকালের শাস্তি সইব কিভাবে???
এটাই ভাবি বরতমান দুনিয়আ নিয়া ভেব্ব কি হবে।
নাজমুল আহসান
আমি ফেইসবুক খুব কম ব্যবহার করি। দিনে হয়তো একবার-দুইবার ঢু মারা হয়। কিন্তু আমি আশেপাশের অনেকেই দেখেছি, সারাদিন এই জিনিস নিয়ে মগ্ন।
নিজে ব্যবহার না করলে এর একটা দিক আমাকে মুগ্ধ করে। একটা সফটওয়্যার কীভাবে কোটি কোটি মানুষকে ব্যস্ত রেখেছে। কী এক মায়ার টানে দিন নেই, রাত নেই, মানুষ এখানে ছুটে আসে। কারিগরি দিক থেকে আহামরি কিছু না হলেও, ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করলে জাকির ভাই (জাকারবার্গ :p ) খুবই অসাধারণ একটা জিনিস বানিয়েছে!
আপনার লেখাগুলো সবসময়ই চিন্তার খোরাক যোগায়। সোনেলাতে খুব অল্প কিছু ব্লগারের লেখাতে ওজন থাকে, আপনি নিঃসন্দেহে তাঁদের একজন। শুভ কামনা দাদা।
নিতাই বাবু
ফেসবুক তো অসাধারণ আছেই, বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তিগত অনলাইন সাইটগুলোই অসাধারণ মনে হয়। এরমধ্যে বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগলও কম অসাধারণ নয়। ভাবতে গেলে মাথা ঘুরে।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদের সাথে আগমনী শারদীয় শুভেচ্ছা থাকলো।
তৌহিদ
দাদা, বিষয়টি সত্যিই ভাবিয়ে তোলে। এখন ফেসবুকে আছি কিন্তু যদি কখনো অপারগ হয়ে পড়ি তিখন ক হবে? কালের খেয়ায় নিত্যনতুন প্রযুক্তির অনেক কিছুই আসছে আমাদের নাগালে। এর সুবিধা অসুবিধা দুটোই আছে। একসময় ট্রানজিস্টার ব্যবহার করতো এখন এন্ড্রয়েড টিভি এসেছে। এটাকে মেনে নিতেই হবে।
ফেসবুক ব্যবহারকারীর হিসেবটা কিন্তু জটিল সুন্দর লাগলো। ভাবনায় ফেলে দিয়েছেন আমাকে। তবে আপনার জানার জন্য দুটো জিনিস বলি-
এক. আপনার আইডির পাসওয়ার্ড ডাইরীতে লিখে পরিবারের বিশ্বস্ত কারো কাছে দেবেন যাতে আপনার অবর্তমানে সেটিকে ডিএক্টিভেট করা যায়। ডিএক্টিভেট করার তিনমাসের মধ্যে লগইন না করলে আইডি রিমুভ করে দেবে ফেসবুক।
দুই. ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অপশন চালু করেছে লিগেসি কন্টাক্ট নামে। অনেকেই জানেননা। কারও মৃত্যু হলে সেই কন্টাক্ট এর মাধ্যমে ফেসবুক জানতে পারবে যে ব্যবহারকারী মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা আইডি সেই কন্টাক্ট চাইলে রিমুভ করে দেবে।
প্রযুক্তির সুবিধা অসুবিধা দুটোই আছে। এসব মেনে নিয়েই বিচরণ করতে হয়। আমি নিজেই অনলাইনে কম আসছি। বিরিক্তকর লাগে এখন।
ভালো থাকবেন দাদা। আর হ্যা লেখা কিন্তু দারুণ হয়েছে।
নিতাই বাবু
আমি দাদা, আমার নিবন্ধিত হওয়া সব সাইটের ইউজার নেম এন্ড পাসওয়ার্ড আমার ডাইরিতে লিখে রাখি। হঠাৎ যদি পরলোকে চলে যাই, তো আমার সাইটগুলো আমার তিন নাতি নাতিনরা দেখতে পারবে। অথবা চালাতেও পারবে। সময় করে ওঁদেরকেও বুঝিয়ে দিবো। যাতে ওঁরা বড় হয়ে আমার সাইটগুলো পরিচালনা করতে পারে। আর আমার লেখাগুলো পড়তে পারে।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় দাদা। সাথে আগমনী শারদীয় শুভেচ্ছা থাকলো।
তৌহিদ
আপনাকেও শুভেচ্ছা দাদা।
আরজু মুক্তা
ভালো লাগে ফেসবুকের খবর পড়তে। কে কত ভালো আছে, কে কতো মন্দ আছে? হাসিও আবার কাঁদিও।জীবন তো যান্ত্রিক! কখন কোথায় কি ঘটে? সে হিসেবে একটু ফেসবহকে ঢু মারা খারাপ কি?
নিতাই বাবু
ফেসবুকে খারাপের কিছুই নেই। ফেসবুক খারাপ তা আমি আমার লেখায় প্রকাশও করিনি দিদি। আমি ফেসবুক নিয়ে ভবিষ্যৎ চিন্তা করেছি মাত্র। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানবেন।
রেহানা বীথি
ভাবনা তো হয়ই দাদা। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আইডি রিমুভ করে দিই। কিন্তু কেমন এক মায়া পড়ে গেছে ফেসবুকের ওপর। সময় পাই কম। যেদিন সময় পাই, মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি সবার লেখা পড়বো। কিন্তু এত এত লেখা, কোনটা ছেড়ে কোনটা পড়ি? শেষ পর্যন্ত দেখা যায় সময় শেষ, কিছুই পড়া হয়নি তেমন।
খুব ভালো লাগলো দাদা আপনার লেখা।
ভালো থাকবেন সবসময়।
নিতাই বাবু
আপনিও ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয় দিদি।
ছাইরাছ হেলাল
আপনার ভাবনা সঠিক, ফেসবুক নেই তা কেউ আর ভাবতে পারে না।
প্রাত্যহিকতার সাথে মিলে-মেশে একাকার। এ থেকে বেরোবার আর উপায় নেই।
আমি ফেস বুকার না। তাও অনেক কিছু খুঁজতে এখানেই আসতে হয়। পড়ার প্রচুর বিষয় এখান থেকে নিয়েছি
প্রথমত। আর আমি না থাকলে কী হবে তা নিয়ে ভাবি না।
খুব সুন্দর ভাবনা আপনার।
নিতাই বাবু
আমিও ফেসবুক নিয়ে থাকি! তো একেবারে না থাকার মতোই। সবাই যখন থাকে, তাই আমিও তাঁদের মতো একজন।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদের সাথে শুভকামনা থাকলো।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমি ফেসবুক ব্যবহার করি। আসক্ত নই। চেনা-অচেনার সাথে যোগাযোগের সেরা মাধ্যম এখন ফেসবুক। ভালো-মন্দ মিলিয়েই এই জগৎ। যে যেভাবে ব্যবহার করবে, তার কাছে তেমনি লাগবে। অপব্যবহার যে করবে, সে তদ্রুপ ফল ভোগ করবে। আপনার লেখাটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে দাদা। আপনি এর ভালো-মন্দ, উপকারীতা-অপকারীতা সবগুলো দিকই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
নিতাই বাবু
আপনার জন্যও শুভকামনা সারাক্ষণ। আশা করি ভালো থাকবেন দিদি।
শাহরিন
খুবই সত্যি কথা বলেছেন দাদা। ফেসবুকে কয়দিন না থাকলে সবাই ম্যাসেঞ্জার বা ওয়ালে লিখে কি খবর কোথায়? কিন্তু কেউ ফোনে খবর নেয়না যে কি খবর। আর্থিক ভাবে সচ্ছল যারা তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী বেশি।