একটি ব্রেসলেট

সুরাইয়া নার্গিস ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, রবিবার, ০৭:৫৭:১৩অপরাহ্ন ছোটগল্প ৭ মন্তব্য

একটি ব্রেসলেট..

স্যার একটা প্রশ্ন করবো বলেই একজন লোক পিচনে এসে দাঁড়াল অতিব পিচনে ফিরে তাকাল জ্বী শিওর বলুন কি বলতে চান।স্যার আমি এই দোকনের কর্মচারী প্রায় ১০ বছর এখানে আছি প্রায় প্রতিদিন এখানে ৩০/৫০ হাজার টাকার কসমেটিক্স বেচাকেনা হয়।তবে এই ফেব্রুয়ারী মাসটা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে বলে হয়ত ১-১৪ তারিখ পর্যন্ত সারা বছরের তুলনায় বেঁচাকেনা বেশি হয় বলতে ১ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়।ভেরী গুড, খুশি হলাম কিন্তু আপনি তো একটা প্রশ্ন করার অনুমতি নিয়েছিলেন আমাকে আপনার দোকান সম্পর্কে ধারনা দেওয়া নয় বলেই মুসকি হাসল আতিব।সো সরি স্যার প্রশ্নটা করার আগে আমরা কিছুটা আলাপতারিতা করতেই পারি বলেই কর্মচারী লোকটা হাসলো।অবশ্যই আপনি বলুন বলেই আতিব আরেকটা ব্রেসলেট হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিল আর ফোন গ্যালারীর সুন্দর দুটো হাতের সাথে মিলাছিলো।তারপর...জ্বী স্যার!বলছি,মাস শেষে এই শো-রুমে প্রায় ৮০ লক্ষ ১কুটি টাকার আসবাবপত্র কসমেটিক্স, পোশাক,ইলেকট্রনিক্স জিনিস আছে,সবাই আসে পছন্দ করে কিনে নিয়ে যায়।আপনি একমাত্র ব্যক্তি যে কিনা পাঁচ ঘন্টা ধরে খোঁজেও কোনকিছু পছন্দ করতে পারছেন না নাকি কিন্তু আগ্রহী নন। সেটা আমরা এখনো অনুমান করতে পারছি না, স্যার যদি আপনার সমস্যাটা বলতেন তাহলে আমরা সাহায্য করতে পারতাম বা অর্ডার দিলে তৈরি করে আনিয়ে দিতাম।ইসস্ সো সুইট এটাই তোকে মানাবে ভালো হয়েই আতিব কাঁচ খুলে ব্রেসলেটটা হাতে নিল, ধন্যবাদ পাঁচ ঘন্টায় পছন্দ করতে পারলাম।কর্মচারী সহ আশেপাশে প্রায় সকাল ক্রেতা, আতিবের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকাল মনে হচ্ছিল এই মুহূত্বে অন্যগ্রহের প্রাণী।সরি টু সে বলে আতিব টাকা দেওয়ার জন্য কাউন্টারের দিকে এগিয়ে আসল পিচন পিচন ওই দুজন কর্মচারী স্যার অনুমতি পেলে আরেকটা প্রশ্ন করতে চাই।প্লীজ বলুন,স্যার আপনি পাঁচ ঘন্টা সময় নিয়ে একটা ব্লেসলেট কিনলেন এই জন্য আমরা আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাছি।এত যত্নকরে যে গ্রিফ্টটা কিনলেন অবশ্যই তা আপনার স্পেশাল মানুষটার জন্য,কথাটা ব্যক্তিগত তবুও জানার কৌতুহল।সেই সৌভাগ্যবতী ব্যাক্তিটা কে?যার জন্য এটা কিনলেন।আতিব হা হা হা হা হেসে দিয়ে কাউন্টারে ১৯৯০টাকা জমা দিল।সেই সৌভাগ্যবতী ব্যক্তিটা আমার বেস্টফ্রেন্ড যাকে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি বলেই আতিব বের হয়ে আসল। বিকাল ৪.০০ টা বাজে রাত ১২ টা বাজতে এখনো অনেক বাকী অর্পিতা সকাল থেকে ফোন মেসেজ করেই যাচ্ছে অতিব রিসিভ বা কলবেক,মেসেজ রিপ্লেও করছে না,এবার অর্পিতা আতিবের বাসার ল্যান লাইনে ফোন দিল মাও কিছু জানাল না।অর্পিতা রাতে না খেয়েই শুয়ে পড়ল রাগ,অভিমানে দু-চোখের পাতা এক করতে পারল না কাল আমার জন্মদিন আতিব সেটা ভুলে গেছে ভাবতে ভাবতে কয়েক ফোঁটা চোখের জল গড়িয়ে পড়ল।রাত ১১ আতিব বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে সোজা অর্পিতার বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়াল অর্পিতার নাম্বারটা ডায়ালে রাখল পাগলিটা হয়ত সারাদিন খুব কষ্টে কেটেছে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারে নাই।রিং হয়েই যাচ্ছি অর্পিতা ফোন ধরে না,রাত ১১.৪৯ মিনিট আর মাত্র ১১ মিনিট বাকি!আতিব মেসেজ দিল পাগলি বেলকনিতে আয় অর্পিতা ছল ছল চোখে বিছানা ছেড়ে উঠে আসে।আতিব উপরে চেয়ে আছে পরিষ্কার আকাশ কিছু তারার আনাগোনা চাঁদটা বড় একা অর্পিতা আসলেই চাঁদটা হেসে ওঠবে কিন্তু তার দেখা নেই।আতিব হাতের গোলাপের তোড়াটার দিকে নিষ্পলক চেয়ে থাকে এই ফেব্রুয়ারীটাও গেল অর্পিতাকে ভালোবাসার কথা বলা হলো না।

অর্পিতা জানলার কাঁচ সরিয়ে নিচে তাকায় সব অন্ধকার ভাবলো শুয়ে পড়বে,তবু একবার বেলকনিটা ঘুরে আসা যাক।অর্পিতা বারান্দায় এসে নিচে চোখ ফেরাল পাগলটা গোলাপের তোড়া হাতে হাঁটুঘেরে বসে আছে অর্পিতা নিচে নেমে আসে।

I love you. Many many happy returns of the birthday my sweet heard.অর্পিতে হেসে দিল Tnq u so much. সারাদিন..বলতেই আতিব মুখ চেপে ধরলো না,আজ তোমার জন্মদিন সারপ্রাইজ দিব বলে সারাদিন কষ্ট দিলাম।বলেই অর্পিতার কপালে চুমু একে দিল,অর্পিতা আবেগ আপ্লুত হয়ে আতিবকে জড়িয়ে ধরল আতিব ভালোবেসে অর্পিতাকে জড়িয়ে নিল।কয়েক মিনিটে অর্পিতা অনুভব করলো সে আর নিজের মাঝে নেই সবকিছু নতুন লাগছে আতিবের স্পর্শ,ভালো লাগার অনুভূতি গুলো রঙিন মনে হচ্ছে।আমরা তো বন্ধু তাহলে আতিবের ছোঁয়াটা আমার ফিলিং গুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে কেন!তবে কি আমি আতিবকে ভালোবেসে ফেলছি কখনো না আমরা তো প্রতিজ্ঞাবন্ধ বন্ধুত্ব থাকব এর বাইরে আমরা কোন সম্পর্কে জড়াব না।অর্পিতা নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়,আতিব লজ্জিতবোধ করে সাময়িক দূরত্বে অবস্থান নেয় শুভ জন্মদিন দোস্ত বলেই আতিব ব্রেসলেটটা অর্পিতার দিকে এগিয়ে দেয় ওয়াও দারুন বলেই অর্পিতা তার হাতটা এগিয়ে দেয় আতিবের দিকে।আমি চাইনি তোর আগে কেউ আমাকে জন্মদিনের উইস করুক,তাই কথা না বলাতে কষ্ট হচ্ছিল।হুম আমিও তাই!আমার আগে যাতে কেউ তোকে উইস করতে না পারে তাই রাতেই শুভেচ্ছা জানাতে চলে আসলাম।আতিব অর্পিতার হাতে ব্রেসলেট চুঁড়িটা পরিয়ে দেন, ধন্যবাদ বন্ধু বলেই ভিতরে যাবার তাড়া দেখাল অর্পিতা।আতিব আরো কিছু বলতে চেয়েও থেমে গেল,ওকে যাও বাই কাল জন্মদিনের পার্টিতে দেখা হবে,বাই।অর্পিতাও মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে চলে গেল,,,আতিব বাসায় ফিরে এলো।

কেটে গেল বেশ কিছুদিন আতিবের মনে,কল্পনায় সবখানে অর্পিতার বসবাস একদিন অর্পিতাকে বললো সে তার পছন্দের মানুষকে ব্রেসলেট গ্রিফ্ট করছে।এক দুই কথায় অর্পিতা রাগ করলো আতিবকে কড়া করে শাসন করলো আমরা জাস্ট বন্ধু প্রেমিক / প্রেমিকা নই।আতিব মনে মনে কষ্ট পেল এক বন্ধুর কাছে জানল আতিব তাকে ভালোবাসে তাই সে রাগ করে আতিবকে ব্রেসলেটটা ফিরিয়ে দিল অর্পিতা বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে করবে তাই আতিবের সাথে ইচ্ছে করেই দূরত্ব তৈরি করল।ফোনে যোগাযোগ বন্ধ,মেসেজে কথা হয়নি দেখা করে না এক বান্ধবীর মাধ্যমে অর্পিতা ব্রেসলেটটা আতিবকে পাঠিয়ে দেয়।ব্লেসলেট হাতে পেয়ে আতিব খুব কান্না করে এটা আমার কাছে থাকলে আমার কষ্ট হবে আতিব ব্রেসলেটটা নিয়ে সোজা তিন তলার সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে যায়।একটা হাতুরি দিয়ে পিঠাতে পিঠাতে ব্রেসলেটটা প্রথমে তেতলে তারপর ভেঙ্গে ফেলে আর চোখের পানিতে সার্টের স্কলারটা ভিজে যায়।

অর্পিতা মামণি তোমার ফোন বাজেছে বলেই মা ফোনাটা অর্পিতার হাতে দেয়,আতিব ফোন করেছে নাও কথা বলো।অর্পিতা আতিবের হ্যালো শোনেই চমকে ওঠে, আতিব দোস্ত তুই কাঁদছিস তোর কি হয়েছে আমাকে বল প্লীজ গলাটা ভেজা মনে হচ্ছে।আতিব চোখের জল মুছে বললো তোকে অনেকদিন দেখিনা একবার ভিডিও কল দিবি প্লীজ তোকে দেখব।মৃদুস্বরে রাস্তায় গাড়ীর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, চারপাশে নিরবতা বিরাজমান আতিব তুই কোথায় চিন্তিত কন্ঠে প্রশ্ন করে অর্পিতা।দোস্ত তুই ভিডিও কল দে দেখতে পারবি আমি কোথায় আছি,কি করতে চলেছি।

অর্পিতা মা,বাবাকে আড়াল করে রুমে গেল নেট অন করে আতিবকে একটিভ দেখে ইমুতে ভিডিও কল দেয় রিসিভ করতেই অর্পিতা যা দেখল এটা দেখার জন্য সে মুটোই প্রস্তুত ছিলো না।অর্পিতাটা ছটফট করতে লাগলো তুই ছাদ থেকে নেমে আয় প্লীজ এত কিনারে দাঁড়িয়েছিস আমার ভয় করছে।ভয় করছে নাকি করুনা করছিস বলেই আতিব হা হা হা করে হেসে দেয় যেন ভিতরটা ফেটে কান্না আসছে কিন্তু প্রকাশ করতে পারছে না।ছাদের সাইডে হালকা বাতাস লাগলে ছাদ থেকে নিচে পড়ে মরে যাবি আমি বলছি তুই ছাদ থেকে নেমে আয় প্লীজ।করুনা নয় দোস্ত সত্যি সত্যি আমার ভয় করছে, প্লীজ সরে আয় তুই কি পাগল হয়েছিস!নিচে নেমে হয় প্লীজ তুই আর পাগলামী করিস না।তুই এমন করছিস কেন, কি হয়েছে আমাকে দেখবি বলছিস দেখ বলেই অর্পিতা মোবাইল ক্যামেরা নিজের দিকে ধরে রাখে।

হা হা হা অর্পিতা তুই যেমন কষ্ট পাচ্ছিস ঠিক ততটাই কষ্ট আমারও হচ্ছিল খুব কষ্টরে পাগলি যা তুই বুঝবি না।আমি তোকে বড্ড ভালোবাসি তুই কেন বুঝিস না,কেন আমার ভালোবাসাকে তুচ্ছ মনে করিস।ভালোবেসে তোর জন্মদিনে একটা ব্রেসলেট গ্রিফ্ট করলাম সেটাও ফিরিয়ে দিলি,জানিস আমি ছাদ থেকে পড়ে সুইসাইড করব ভেবে তোর যতটা কষ্ট হচ্ছে ঠিক ততটাই কষ্ট আমার হয়েছে তুই ব্রেসলেটটা ফিরিয়ে দেওয়াতে।অর্পিতা আর কাঁদতে পারছিলোনা শুধু চিৎকার করে বললো সব দোষ তোর সব ভুলে গেছিস.?মনে আছে আমাকে প্রমিস করিয়ে বলছিলো আমরা শুধু বন্ধু থাকবো কখনো প্রেমিক/প্রেমিকা হব না।অর্পিতার কথা শোনে আতিব কিছুক্ষনের জন্য কল্পনার জগৎ ফিরে যায় সত্যি তো আমি অর্পিতাকে ভালোবাসতে নিষেধ করেছিলাম।অর্পিতা আবার চিৎকার করে উঠে এবার বল এখানে আমার ভুলটা কোথায় তুই সুইসাইড করিস না প্লীজ আমি ব্রেসলেট নিব তোর বাসায় আসবো।

আতিব ছাদের রেলিং ছেড়ে নিচে নেমে আসে অর্পিতা দোস্ত আমি জানতাম না একজন ভালো বন্ধুই জীবনে একজন ভালো স্ত্রী হতে পারে আমি তোকে ভালোবাসি সারাজীবনের জন্য পাশে চাই।অর্পিতার চিৎকার শোনে বাবা,মা দু-জনেই রুমে চলে আসে আতিব,অর্পিতার সব কথা শোনে।মাকে দেখেই অর্পিতা কেঁদে বলে মা আতিব আমাকে ভালোবাসে,বিয়ে করতে চায় কিন্তু আমি তো তোমাদের পছন্দ ছাড়া বিয়ে করবো না বলেই মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে।আতিব ভিডিও কলে সব দেখছিলো অর্পিতার বাবা মোবাইল হাতে নেয় আতিব বাবা তুমি নিচে নেমে আস পাগলামী অনেক হয়েছে।কিন্তু আঙ্কেল আমি অর্পিতাকে বলতেই আশরাফ সাহেব অর্পিতার বাবা বলেন আতিব তুমি হয়ত জানো না তোমাদের বন্ধুত্ব দেখে আমরা মুগ্ধ।তোমার মম অর্পিতার জন্মদিনে তোমার বিয়ের জন্য আমার মেয়ে অর্পিতাকে পছন্দ করেছেন।এ মাসেই বিয়ের আনুষ্টানিকতা ঘোষনা দিব ইনশাল্লাহ।আতিব যেন বিশ্বাস করতেই পারছিলো না রাখছি আঙ্কেল বলেই ছাদ থেকে দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে মায়ের রুমে গেল মম মম কোথায় তুমি। মায়ের কাছে সবটা শোনে আতিব খুব খুশি হয় তুমি পৃথিবীর সেরা মম বলেই মায়ের কোলে মাথা রেখে আদর খায় আতিব, মা ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।

তারপর..

ভাবী আতিব চায় অর্পিতাকে নিয়ে ওর বিয়ের শপিং করতে সমস্যা নেই আমিও সাথে থাকবো ওরা দুজনে মিলে পছন্দ করবে।এসব কি বলছেন ভাবী অর্পিতা অবশ্যই যাবে মেয়ে তো আপনারেই দুদিন পরে আপনার ঘরে শোভা পাবে বলেই আঁচলে  মুখ ঢাকল।না না ভাবী মেয়েটা আমাদের দুজনেরই সমান আপনি গর্ভে ধারন করেছেন লালন পালন করেছেন,আর আমি সন্তানের মাধ্যমে আমার মেয়ে হয়ে এ বাড়িতে আসবে।

আতিব,অর্পিতা আজ শপিংএ গিয়েছে যেখানে আতিব অর্পিতার জন্মদিনের ব্রেসলেট কিনেছিলো সেই শপিংমলে যেতেই লোকটা দৌড়ে এল স্যার প্লীজ আসুন স্বাগতম আপনাকে।আমি একা আসি নাই ওনি আপনাদের হবু ভাবী ওই যে পাঁচ ঘন্টায় যার জন্য একটা ব্রেসলেট পছন্দ করেছিলাম।জ্বী স্যার মনে পড়ছে কিন্তু আপনি তো বলেছিলেন সে আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড!হ্যাঁ সেই বেস্ট ফ্রেন্ডই আজ আমার বউ হতে চলেছে তবে সেটা আমার মম এর পছন্দে বলেই আতিব মাকে জড়িয়ে ধরল।পাগল ছেলে আমার, বউমা এখানে দেখছি সবই আছে যাও আতিবকে নিয়ে ঘুরে দেখে পছন্দ করে নাও আমি একটু বিশ্রাম করি।অর্পিতা মুচকি হেসে আতিব এর হাত ধরে শো-রুম ঘুরে দেখতে লাগল আর ওই লোকটা হাঁটতে হাঁটতে আতিবের ব্রেসলেট কেনার গল্পটা বললো।অর্পিতা মুগ্ধ হলো একটা মানুষ কাউকে পাগলের মতো এতটা ভালোবাসতে পারে আতিবকে না দেখলে জানাই হতো না।একে একে ওরা শপিং শেষ করে আতিব কাউন্টারে টাকা জমা দিয়ে ফেরার সময় ওই প্রশ্ন করা কর্মচারীটা আতিবের টাকা একটা পেকেট দিল স্যার এটা আপনার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সামান্য উপহার।আতিব মুচকি হেসে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় নিয়  ওরা তারপর শহরের নামকরা বড় রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেয়ে রাত ৯.০০টা অর্পিতাকে বাসায় পৌচ্ছে দিল।আজ আতিব, অর্পিতার গায়ে হলুদ হয়ে গেল আগামীকাল বিয়ে রাতটা যেন আতিবের কাটছিলোনা কখন বর সেজে অর্পিতার বাসায় যাবে ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেল।চারদিকে রঙিন আলো বুঝিয়ে দিচ্ছে এই শহরে কারো বিয়ে হচ্ছে,নিচের তলায় হৈ হুল্লুল চলছে বাসায় সব আত্মীয়-স্বজন আসছে আতিবের বিয়ে উপলক্ষে।

সবকিছু যেন খুব তাড়াতাড়ি হয়ে গেল তাইনা অর্পিতা আমার বিশ্বাস হচ্ছে না মম তোমাকে আমার জন্য পছন্দ করবে আর তোমার পরিবার সব মেনে নিল এ যেন স্বপ্ন।কি রে দোস্ত কথা বলছিস না কেন প্রশ্ন করলো আতিব!হুম বলেই অর্পিতা থেমে গেল।বুঝতে পেরেছি সে তো আজ নতুন বউ তাই কথা কম বলতে হবে ভেবেই হাসল আতিব।অর্পিতা বিছানা থেকে নেমে আতিবকে সালাম করে আবার লম্বা ঘোমটা টেনে বসে পড়ল।আতিব আস্তে করে বিছানায় উঠে বসল আলতু করে অর্পিতার ঘোমটা সরাল আমার সোনা বউ আজ আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ যাকে ভালোবেসেছিলাম তাকেই পেলাম বলেই আতিব অর্পিতার ঘোমটা খুলে কপালে একটা চুমু দিল। আর হাতে সেই ব্রেসলেটটা পরিয়ে দিল।অর্পিতা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো এটা পেলে কোথায়? ওই দোকানে আবার অর্ডার করেছিলাম আমাদের বিয়েতে ওরা সেইম ব্রেসলেটটা গ্রিফ্ট করলো।বুঝছি আমারা শপিং শেষে ফিরার সময় এটাই পেকেট করে দিয়েছিলো বললো অর্পিতা।হ্যাঁ বলেই আতিব মাথা নাড়াল। অর্পিতা আতিবের দিকে তাকিয়ে বললো আমি আজ পূর্ণ যাকে চেয়েছিলাম আজ তাকেই জীবন সঙ্গী হিসাবে পেলাম।আতিব চমকে উঠে অর্পিতা তুমিও আমাকে ভালোবাসতে তাহলে বলোনি কেন?রাজামশাই ভালো না বাসলে কি আব্বু,আম্মুকে বিয়েতে রাজী করাতাম বলেই মুচকি হাসল।আতিব তৃপ্তির হাসি দেয় মানুষ যা চায় বিধাতা শুধু তার দিক নির্দেষনা করেন বলেই অর্পিতার দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে।

0 Shares

৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ