একটি খোলা চিঠি

শামীম চৌধুরী ১২ এপ্রিল ২০২০, রবিবার, ০৬:৩৭:৫৯অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৬৩ মন্তব্য

আজ আমার জন্মদিন। আবার সোনেলা ব্লগেও আমি সর্বকনিষ্ঠ সন্তান হয়ে জন্মেছি। এই পরিবারে জন্ম নিতে পেরে আমার অগ্রজ ভাইবোনদের কাছে যে ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছি তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।  কৃতজ্ঞতা স্বরূপ আমার অগনিত ভাইবোনদের জন্য ব্লগার তৌহিদের কাছে একটি খোলা চিঠি।

আদরের ছোট্ট ভাই তৌহিদ।
চিঠির আকারেই লিখছি। সোনেলাতে পদার্পন হয়েছে আমার অত্যন্ত প্রিয় লেখক ও শ্রদ্ধাভাজন শুভাকংখী ও ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ এম ইঞ্জা ভাইয়ের সুবাদে। উনিই আমাকে সোনেলার উঠানে ধপাস করে ফেলে দিয়ে বললেন, একটা ঘরের উঠানে আপনাকে দাঁড় করিয়ে দিলাম। আপনার কষ্টার্জিত কাজগুলি সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষির মানুষেরা জানতে পারবে আপনার কাজ ও গুনবলী সম্পর্কে। আরো অনেক কথা সেদিন সেলফোনে নিজের পকেটের অর্থ ব্যায় করে আমাকে বলেছিলেন। আমি অভিভুত হয়ে লোভে পড়ে যাই। তিনি নিজেই আমার একাউন্ট খুলে দিলেন এবং উনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমাকে শিশু শ্রেনীর ছাত্রের মতন হাতে ধরে অ, আ, ক, খ করে শিক্ষা দিলেন কিভাবে ব্লগে লিখতে হয়। আমি কৃতজ্ঞ আমার শ্রদ্ধেয়ানেষু এম ইঞ্জা ভাইয়ের কাছে।
সোনেলা ব্লগে সর্ব কনিষ্ঠ সন্তান হয়ে জন্ম নেবার পর নেমে আসলো কিছু দুঃচরিত্রের নোংরা মানুষের নিকৃষ্ট মনোভাব ও ভাষা। যা আমাকে ব্যাথিত করে। আমি কোন কুল-কিনারা না পেয়ে এম ইঞ্জা ভাইয়ের শরনাপন্ন হলাম। উনি উনার সুন্দর মন দিয়ে আমাকে শুধু একটাই কথা বললেন ভাইজান, ধৈর্য্য ধরুন আর অপেক্ষা করুন। স্বপ্নীল সুন্দর নীল আকাশে যে কালো মেঘের ভেলাগুলি ভাসছে তা এক সময় বৃষ্টি হয়ে ঝরে যাবে। চকচকা রোদ উঠবে। আর সেই রোদের ঝলকানিতে সোনেলা ব্লগ খিল খিল করে হাসবে।
উহু..!!
উনার কথায় আমি আশস্ত হতে পারলাম না। মনে মনে সব সময় ভাবতাম ভ্রুন থেকে জন্ম নেয়া অবুঝ নিষ্পাপ শিশুটি কোথায় এসে হাবুডুবু খাচ্ছে।
তারপর দিন আদরের ছোট্ট ভাই তৌহিদকে ফোন দিলে সে আমাকে বিস্তারিত জানায়। আমি আশস্ত হলাম। আর প্রতিজ্ঞা করি যে উঠানে আমার জন্ম সেই উঠানকে কাঁদা-মাটি  দিয়ে লেপন করে পৃথিবীর সুন্দরতম একটি উঠান হিসেবে গড়বো। যা দেখে বিশ্বের সকল বাংলা ভাষাভাষিরা বিমোহিত হবে। কুৎসা রটনাকারীরা আফসোস করবে জীবন থেকে কি হারালাম।

তৌহিদ,
ব্লগে আমার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানো  তোমার লেখাটি পড়ছিলাম আর আমার দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়িছিলো। এই দৃশ্য তুমি হয়তো তিনশত কিলোমিটার দূর থেকে দেখতে পাবে না। কিন্তু আমার বিশ্বাস তোমর সুন্দর হৃদয়টা আমার সুখের কান্নার জলে ধুয়ে গেছে। সোনেলা ব্লগের যে ভাইটিকে আমি সর্বপ্রথম স্বচক্ষে ও শারিরিক ভাবে দেখি সেটা হলে তুমি। সেদিন রাজশাহীতে শত কাজের ফাঁকে দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে আমার সাথে যখন দাঁড়িয়ে ছিলে তখন মনে হচ্ছিলো পৃথিবীটা আসলেও কমলা লেবুর মতন গোল ও সুন্দর। তারপর থেকে তোমার সহযোগিতা ও ভালোবাসা আমাকে আপ্লুত করে নিমগ্ন রেখেছে এই পরিবারের সাথে। অথচ আমি একজন অগুনী মানুষ। যার ফলশ্রুতিতে ব্লগকে দেবার মত কিছুই অর্জন করতে পারিনি। এই ব্যার্থতার দায়ভার আমার একার।
বেশ কয়েক মাস ধরেই সহবাস করছি সোনেলা ব্লগের অন্যান্য ভাই বোনদের সাথে। সর্ব কনিষ্ঠ সন্তান হিসেবে আমার অগ্রজ ভাইবোনদের ভালোবাসা, সম্মান ও আদর আমাকে দিন দিন আপ্লুত ও দূর্বল করে ফেলছে।
পরবর্তীতে গত ফেব্রুয়ারী মাসে সোনেলার অষ্টম জন্মদিনে সরাসরি দেখা পাই আমাার অগ্রজ ভাই বোনদের। দেখা মিললো ব্লগের পিতা জিসান ভাইয়ের সাথে। ছাইরাস হেলাল ভাই তার কনিষ্ঠ ছোট ভাইকে এত ভালোবাসেন ও আদর করেন সেদিন দেখা না হলে অজানাই থেকে যেতো। সেদিন গোলা ভরে আমার ভাই বোনদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাও  পেয়েছিলাম । অথচ সেদিন স্বার্থপরের মতন সব নিয়ে আসলাম। কিছুই দিয়ে আসিনি।

দেখা পেলাম বন্যা,রেহানা,সুরাইয়া আপুদের মতন অনেক বোনদের। নিতাই দাদা,মমি ভাই,বড়ুয়া দাদা, অনন্য অর্ণব ভাইয়া, আমাদের ডেভলপার ভাই ও ডাক্তার ভাবী, আমার অত্যন্ত প্রিয় লেখক ও কবি হালিম নজরুল ভাই সহ  এমন অনেক ভাইদের। (অনেকের নাম এই মহুর্তে আমার মনে পড়ছে না। তাই মনে না পড়া ভাইবোনদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।) আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। উনাদের আপ্যায়ন ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাকে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম।

অথচ সেই মহুর্তটায় তোমার সুন্দর ও সাবলীল চেহারার হাসিটা বার বার ফুটেঁ উঠছিলো আমার দুই চোখের সামনে। সেদিন তুমি থাকলে ভাইবোনদের মিলনমেলা আরো সুন্দর ও প্রানবন্ত হতো বলে আমার বিশ্বাস। তারপরও তোমার অনুপস্থিতি এক মূহুতের জন্যও অভাবে ফেলতে দেননি আমার অগ্রজ ভাই বোনরা।

পরিশেষে আমার অগ্রজ ভাই বোনদের সাথে সোনেলা ব্লগে আমি আছি ও থাকবো। যতদিন বেঁচে থাকবো আর সোনেলা থাকবে ততদিন আমিও বেঁচে আছি এই পরিবারের সাথে। আমার জন্মদিনে তোমাদের ভালোবাসা,আদর,সম্মান ও শ্রদ্ধায় আমি ঋনী হয়ে রইলাম। এই ঋন শোধ করবো ভালোবাসা ও আদর দিয়ে। যে ভাবে আজ তোমাদের ভালোবাসায় জড়িয়ে রেখেছো আমৃত্যু এমন ভালোবাসায় জড়িয়ে থাকতে চাই আমার ভাই বোনদের কোলে কোলে। তোমার মাধ্যমে সবাইকে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা। সবাই ভালো থাকুক এই সুন্দর প্রকৃতির বসুন্ধরায়।
আমার সব ভাই বোন সহ দেশের সকল মানুষকে একটি বার্তা দিয়ে চিঠিটা শেষ করলাম।
ঘরে থাকুন
সুস্থ্য থাকুন
করেনার ভয়াবহতা থেকে মুক্ত থাকুন।
আমরা সুরক্ষিত থাকলেই দেশ সুরক্ষিত থাকবে।
ইতি,
তোমার পাখি ভাই।

0 Shares

৬৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ