শিক্ষকের হাতের সুশ্রী হালকা গড়নের বেত্রদন্ড তাঁদের শোভাবর্ধন করত সবসময় ।এ কালের শিক্ষকের বেত্রাঘাত যেমন অনেক শিক্ষকের নিজের শরীরেই এমন ভাবে আছড়ে পড়ে তিনি চাকুরিটিই হারাতে বসেন। তখনকার দিনে এ রকম হবার সম্ভাবনাই ছিল না। এ কালের বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত বেত্রাঘাত দুরে থাক, বেত্রদন্ড দেখলেই নাকি শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ্য হয়। সে যাকগে – সম্ভবত ১৯৮৮ সাল নিউ টেনের কিশোর, বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে নতুন প্রতিষ্ঠিত নবমী সিনামা হলে অবিচার ছবি চলছে। মিঠুন চক্রবর্তী ও রোজিনা অভিনীত ছবি দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। সে সময় মিঠুন উঠতি ও নামকরা নায়ক। “পাছে লোকে কিছু বলে” এই তত্ত্বের উপর ভর করে, আগপিছ চিন্তা না করে, বেশ কয়েকজন স্কুল ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়লাম ছারপোকার সাগরে। আগেকার সিনেমা হল মানেই ছাড়পোকা অভয়ারণ্য। কেবল একটু জমে উঠেছে।হঠাৎ সিনেমা বন্ধ হয়ে গেল। ভীতরের লাইট জ্বলে উঠল।পিছন ফিরে তাকাতেই শরীরের ভীতরে ঠান্ডা স্রোত বইতে শুরু করল। শ্রদ্ধেয় হামিদ স্যার লম্বা বেত্রদন্ড নিয়ে টর্স লাইটের আলো ফেলে ফেলে বাছাই পর্ব সারছেন। আমি দাঁড়াতেই কানটা ধরে বলল – স্কুলে হেড স্যারের রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়া, আমি আর মালগুলোকে নিয়ে আসি। আমি স্কুলের সামনে গিয়ে চিন্তা করছি স্কুলে পঁচিশ ত্রিশ জনের শাস্তি এক সঙ্গে যেহেতু করবে, সে ক্ষেত্রে শাস্তির মাত্রা খুব একটা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই । সর্বোচ্চ পাঁচটা বেতের বাড়ি তা আবার প্যান্টের পিছনে ওটা কেউ টের পাবে না। কিন্তু বাড়ির যে শাস্তি তা রুধিব কি দিয়ে। শেষে সকল বন্ধুর সাথে আমার পশ্চাতপদ পাঁচটির অধিক বেতের বাড়ি সহ্য করল কিন্তু কোন উআ করল না।দশবারো জনের পরে আমার অবস্থান ছিল। প্রথমের কয়েকজনের ভাগ্যে দুতিনটি করে নিরাময় গাছন্ত ঔষধ জুটলেও আমার কাছে এসে সংখ্যাটা বেড়ে গেল।
চলবে - তবে লেখাগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে কেণ।
১১টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
ইশ অবিচার সিনেমার কথা মনে করিয়ে দিলেন? আহা সে একটা সময় ছিলো!
লেখাটা খুবই ইন্টারেস্টিং ভাবে লিখেছেন। বোঝা যাচ্ছে আপনি লেখায় সাবলীল।
শিরোনাম টা কী অস্ত্রপাচার? আই মিন বেত চুরি হবে নাকি শেষ নাগাদ?
লেখা ভেঙে যাচ্ছে? আমি কিন্তু ঠিকঠাক দেখছি। লেখা ভিজ্যুয়ালে এনে পোস্ট করবেন। লেখা অপশনে ভাঙা ভাঙা লাগতে পারে। সমস্যা হলে জানাবেন।
মামুন চৌধুরী
ভাই আমার লেখাটা পড়ে কোন ভুল ভ্রান্তি হলে পরামর্শ দিবেন। আমি শুধরে নেব। কারন আমি লেখায় নতুন। শুভ কামনা রইল।
নীরা সাদীয়া
পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিলো আমিই সেই কিশোর, বেতের বাড়ি বুঝি আমার পিঠেই পরবে।
সুন্দর স্মৃতিচারণ।
মামুন চৌধুরী
আমার লেখা কেউ পড়ছে এটাই ভাল লাগে। শব্দ বা বাক্যের কোথাও যদি সংযোজন বিয়োজন করতে হয় পরামর্শ দিয়ে আমার লেখাকে এগিয়ে নেওয়ার সহযোগীতা করবেন। শুভ কামনা।
মনির হোসেন মমি
চমৎকার ভাবে বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলছিলেন কিন্তু হঠাৎ থেমে গেলেন।লেখাটা আরেকটু এগিয়ে বা বড় হতে পারত।যাক লেখা চলুক।
মামুন চৌধুরী
আপা আমি ব্লগে নতুন মানুষ। প্রথমেতো পোষ্ট করতে গিয়ে সব গুলিয়ে একপোষ্ট দুইবার হয়ে গিয়েছিল। পরে অনেকের সহযোগীতায় ছোট রাস্তা থেকে বড় রাস্তায় ওঠার চেষ্টা করছি। শুভ কামনা পরামর্শ দেবার জন্য।
মনির হোসেন মমি
ঠিক যা ভেবেছিলাম।যাগগে আমরা আমরাইতো।যে কোন পরামর্শের জন্য আমরা আছি।লিখতে থাকুন।
রিমি রুম্মান
আমাদের একজন রওশন ম্যডাম ছিলেন, তাকে দেখলেই আত্না শুকিয়ে যেত। হাত পেতে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। উনি সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে সপাং সপাং মারতেন। গতবছর উনাকে ফেসবুকে দেখেও একই অনুভূতি হয়েছিল। আপনার লেখাটি পড়ে সেইসব মনে পড়ে গেল!
মামুন চৌধুরী
রিমি রুম্মান সবার জীবনে এরকম শিক্ষকের উপস্থিতি আছে। এখন অবশ্য শিক্ষকরা ছাত্র/ছাত্রীদের বেত্রাঘাত করলে জ্ঞান নাকি বিকশিত হতে বাধাগ্রস্থ্য হয়। বিজ্ঞান এগিয়েছে হয়ত হতেও পারে। তবে – শিক্ষকদের বেত্রাঘাতের ভীতি অনেকের জীবনে আজও অমিল। শুভ কামনা লেখাটি পড়ার জন্য।
মোঃ মজিবর রহমান
আমাদের হাই স্কুলের প্রধান স্যার ছিল, পড়া না হলে আর অন্যায় করতে রক্ষা নাই। আর প্রাইমারির প্রধান শিক্ষক ছিলেন বেয়াদবি শাস্তি টেবিলের নিচে মাথা। যতক্ষন না চোখে পানি না আসে।
মামুন চৌধুরী
মজিবর ভাই
আমার প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকের বেত্রাঘাত বললে ভুল হবে, আগেকার দিনে মাটির দেয়ালের স্কুল আর জানালায় রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার হত। সেই বাঁশের লাঠির পিটনে আজও প্রার্থনা কবিতা ভুলি নাই। আমার লেখাটি পড়বার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শুভ কামনা । ভালো থাকবেন।