৭১ দেখিনি, তবে কে কোন ভূমিকায় ছিল তা জেনেছি যারা দেখেছেন সরাসরি তাদের কাছ থেকেই। রাজাকার-আলবদর-আলশামস। পতাকার অবমাননা কারীদের কারা নিজ হাতে পতাকা তুলে দিচ্ছে আবার অপমানের জন্য তাও চেয়ে দেখছি।
চলুন একজন সার্থক রাজাকারের সাথে পরিচিত হয়ে আসি। নাম এম এ হান্নান। পূর্ব পেশা রাজাকারি, পাকিদের সহযোগি। ৭১এ ময়মনসিংহে হত্যা-নির্যাতনের হোতা ছিলেন হান্নান। স্বাধীনতা যুদ্ধে ময়মনসিংহ জেলা শান্তি কমিটির অন্যতম নেতা ছিলেন। উর্দু আর ইংরেজি ভাল দখল থাকার দরুন পাকিদের আস্থাভাজন ও তৎকালীন মুসলিম লীগের এম্পি হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের নথিপত্র ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হান্নান একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে ময়মনসিংহ শহরে অস্ত্র হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। নেতৃত্ব দিতেন রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর। তারা পাকহানাদার বাহিনীর সদস্যদের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান জানানোর পাশাপাশি কামারুজ্জামানের (বর্তমানে যুদ্ধাপরাধ মামলায় ফাঁসির দন্ডে দন্ডিত) নেতৃত্বাধীন আলবদর বাহিনীর ডাকবাংলোয় (টর্চার সেল) মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসীদের তুলে দিতেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গ্রেফতার হয় এই কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল হান্নান। পরে সাধারণ ক্ষমার আওতায় সে জেল থেকে মুক্তি পায়। এরপর আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। মুক্তিযুদ্ধকালীন লুটপাট ও জবর দখল করা সম্পদ দিয়ে ময়মনসিংহ শহর ছাপিয়ে রাতারাতি চলে আসে ঢাকার প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতিদের কাতারে। অবশ্য এটুকুতেই ক্ষ্যান্ত থাকেনি সে। আগ্রহী হয়ে উঠে রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে। দীর্ঘদিন যাবৎ সে চেষ্টায় আছে রাজাকারি লেবাস পাল্টিয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে জাতির সেবা করতে। ৭৫ পরবর্তীতে ভুলপাল্টে বেছে নেন স্বৈরশাসক এরশাদের জাতীয় পার্টিকে। হয়ে গিয়েছেন রাজাকার হান্নান নাম বদলে আলহাজ্ব এম এ হান্নান সমাজসেবক। গত ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে ত্রিশাল (ময়মনসিংহ-৭) উপজেলা থেকে অংশ নেয় এই রাজাকার আব্দুল হান্নান। তবে জনপ্রতিনিধিত্ব করার খায়েশ এখনো অপূরণই রয়ে গেছে।
রাজাকার কামরুজ্জামানের বিচার হলেও এই রাজাকার হান্নান রয়ে গিয়েছেন বিচারের উর্দ্ধ্যে। উচ্চস্বরে নিজেকে সাচ্চা ভাল মানুষ ও ওইসব তার বিরুদ্ধে বানোয়াট মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন। কিন্তু ময়মনসিংহের মানুষ তো জানে সত্যটা।
এবার মহাজোটের তথাকথিত সংবিধান অনুযায়ী সর্বদলীয় নির্বাচন আয়োজনের সুযোগে মহাজোট থেকে মনোনয়ন পেয়ে হয়ে যেতে বসেছেন জনপ্রতিনিধি খোলামাঠে। আপনি কি এই রাজাকারকে আপনার প্রতিনিধি হিসেবে পাঠাবেন? আমাদের রাজনৈতিক দল গুলো সভ্য নয়, ক্ষমতায় যাওয়াই তাদের কাছে মূল কথা, চোর-লোভি-রাজাকার না দেশদ্রোহিকে মনোনয়ন দিয়েছে তা তাদের কাছে কিছুই না। নইলে বঙ্গবন্ধুর কণ্যা হয়ে এমন কাজ কিভাবে করেন মহাজোটের প্রধান? এরশাদ নির্বাচনে না আসলেও তার দল এলাকার মেয়ে রওশন এরশাদের মাধ্যমে নির্বাচনে আর তার আদরেই এই রাজাকার স্বপ্ন দেখছে ময়মনসিংহে নিজের স্বপ্ন চিরতার্থ করার।
সবকাজ এ দেশের সাধারণ মানুষের। আমাদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে। এর মনের খায়েশে আগুণ দিতে হবে, ভোট চাইতে এলে থুথু দিতে হবে। সেইসাথে এদের যারা দুধ কলা দিয়ে পুষছে তাদেরকেও। সিদ্ধান্ত আপনার। রাজাকারকে ভোট দিবেন নাকি ৭১ এর মত জুতার মালা দিয়ে বরণ করবেন? সবাইকে জানিয়ে দিতে অনুরোধ করব। প্রতিরোধ করুন রাজাকারদের যেকোন অবস্থানে।
মহাজোট থেকে বেশ কয়েকজন রাজাকারকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। ফরিদপুর থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ফরিদপুর শান্তি কমিটির প্রধান মোশাররফ হোসেন। যশোর থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন শাখাওয়াত হোসেন। পিরোজপুরে জব্বার ইঞ্জিনিয়ার। নীলফামারীতে কাজি ফারুক কাদের। ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে রাজাকার হান্নান।
সব তো আমরা আমরাই। একবার এ দল রাজাকার সাথে নিয়ে এসেছে, আরেকবার ও দল। এখন আবার বলবেন না, ওরা বেশি আনছিল আমরা কম আনছি! রাজাকার তো রাজাকারই।
যেই হওক না কেন, ক্ষমতালোভী, স্বার্থপরদের কাছে কদর সবসময়ই বেশি। তাই দলে দলে ভোট দিয়ে রাজাকারের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসুন।
২০টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
খুব ভালো লেগেছে লেখাটি ভাইয়া. রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি জনগণের ও কিছু দায়িত্ব থাকে. আমরা সেটা পালন করিনা বলেই ওরা এমন করে..লেখাটি দুবার কপি হয়েছে মনে হয়.
এমন লেখা আরো অনেক চাই..সব মুখোশ ধারি উন্মোচন হোক.
আমার মন
হুম সব মুখোশ ধারি উন্মোচন হোক.
মোঃ মজিবর রহমান
ভালো লাগলো, তবে এলাকা ভিত্তিক তাদের ভোটের মাধ্যমে বয়কট করতে হবে।
এলাকায় প্রচার চালাতে হবে,
জাতে তাঁরা নিরবাচিত হতে না পারেন।
আমার মন
হুম তাই করা হচ্ছে।
নীলকন্ঠ জয়
এলাকার জনগণ এগুলোকে জুতা পেটা করে না কেনো? সাখাওয়াত আমাদের এলাকায় একবার এসেছিলো ঝাড়ু এবং জুতা পেটা করে বিদায় করেছিলাম রাজাকারটাকে।
বিবেক জাগ্রত হোক সকলের। শুভেচ্ছা।
আমার মন
আমরা উদার, আমরা ক্ষমশীল, আমরা মহত তাই পাশে নিয়ে চলি। জয়- বাংলা জাতি
বেলাল হোসাইন রনি
রাজাকারের ঠাই বাংলার মাটিতে যেন না হয়।
আমার মন
হুম
মা মাটি দেশ
অবাক হই যখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় এমন চিহ্নিত রাজাকাররা নির্বাচন করতে পারে (y) তাদের ভোটে বিতারিত করবেন অনেকেই বলেছেন কিন্তু আমি বলছি সে ভাবেও সম্ভব নয়।সময় সব বলে দেবে
আমার মন
হুম, সময় বলে দিবে।
জিসান শা ইকরাম
একবার যে রাজাকার চিরকালই সে রাজাকার
যে কোন রাজাকারের পুনর্বাসন প্রকৃয়া অত্যন্ত ঘৃণা সহকারে প্রত্যাখ্যান করি।
রাজাকারদের প্রতিরোধ করতেই হবে —
আমার মন
কিন্তু তারা তো করতে রাজি নয়, পাশে বসিয়ে সাথে নিয়ে চলে সুযোগ পেলেই।
লীলাবতী
ঘৃনা সমস্ত রাজাকারদের প্রতি
আমার মন
হৃম
নীলাঞ্জনা নীলা
রাজাকারের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে
আমার মন
মারবে। মারব। 🙂
স্বপ্ন
রাজাকার বাংলা ছাড়
আমার মন
ছাড়তে তো আমরা দিই না ^:^
খসড়া
ওদের স্বপ্ন তো খালপূরণই হয়
আমার মন
সেটাই ত সমস্যা ;?